ঝিনাইদহ পৌর মেয়র করোনায় আক্রান্ত
সারাদেশ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রোববার (১৯ জুলাই) তার করোনার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। করোনা পজিটিভ আসার পর সাইদুল করিম মিন্টু সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেছেন।
তিনি বলেছেন, জরুরি প্রয়োজনেও মাস্ক ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হবেন না। নিজে সচেতন হয়ে অন্যকে সচেতন করুন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির শুরু থেকেই আমি আপনাদের মঙ্গলের জন্য দিন-রাত কাজ করে গেছি। কিন্তু তারপরও মনে হচ্ছে কিছুই করতে পারলাম না।
তিনি আরো বলেন, নিজের কাছে নিজেকেই তাই অপরাধী মনে হচ্ছে। তারপরও সাধ্যানুযায়ী এই মুহূর্তে ঘরে থেকেও আমি আপনাদের জন্য কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করবো।
প্রসঙ্গত, ঝিনাইদহ জেলা দেশের একমাত্র গ্রীন জোন জেলা হিসাবে ঘোষনা করা হয়েছিল। কিন্তু ক্রমেই জেলাটির করোনা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে । লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। আগে ৫ থেকে ১০/১২ জনে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪৫/৪৭ জন আক্রান্ত হচ্ছে। জেলায় এ পর্যন্ত মোট ১০ জন মারা গেছে করোনা আক্রান্ত হয়ে। জেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬০ জন। সদর উপজেলায় আক্রান্তের হার সবচেয়ে বেশি, এখানে ২১৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। জেলায় এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১৯২ জন।
গত ১৪ জুলাই থেকে ঝিনাইদহ পৌরসভার আদর্শপাড়ার ৩টি এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। সেখানে চলছে ৭ দিনের লকডাউন। সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তারা কোনো স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না। লকডাউন এলাকায় নেই কোনো স্বেচ্ছাসেবক দল, পুলিশ সদস্য। ফলে আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরাও ঘুরছে বাজার-ঘাটে।
অবশ্য ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, এখন পুলিশই আক্রান্ত হতে শুরু করেছে, তারপরও আক্রান্ত এলাকায় পুলিশ টহল দিচ্ছে। আর সদর উপজেলার ইউএনও দরুদোজা শুভ জানান, জনগনের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি না পেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।
বৃহস্পতিবার থেকে কালীগঞ্জ উপজেলা শহরেও এলাকা ভিত্তিক লকডাউন শুরু হয়েছে। কালীগঞ্জ শহরের ২ নং ওয়ার্ড (কলেজপাড়া), ৩ নং ওয়ার্ড (ফয়লা আলু পট্টি) এবং ৫ নং ওয়ার্ডের নিশ্চিন্তপুর (বনানীপাড়া) এই ৩টি এলাকা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন করা হয়। ওই ৩ টি এলাকার মোড়ের রাস্তায় বাঁশ বেধে বন্ধ করা হয়েছে।
আগামী ৭ দিন প্রাথমিকভাবে এলাকা লকডাউন থাকবে। এ সময় ওই এলাকা থেকে কেউ বের হতে বা প্রবেশ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। লকডাউনকৃত এলাকায় পৌরসভার স্বেচ্ছাসেবক দল কাজ করবে। আগামীতে শহরের অন্যান্য এলাকার কয়েকটি স্থানে পর্যায়ক্রমে লকডাউন করা হবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের করোনা সেলের মুখপাত্র ডাক্তার প্রসেনজিৎ পার্থ বিশ্বাস জানান, ঝিনাইদহে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রতিদিন স্যােশাল মিডিয়াতে জেলায় করোনার আপডেট তথ্য দিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
এদিকে পরিস্থিতির ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলাতে করোনা আক্রান্ত যে সকল রোগী হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন তাদের জন্য বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। সকলের সুচিকিৎসা ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে ঝিনাইদহ জেলার সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম বিশেষ এই মেডিকেল টিম গঠন করেছেন।
এর ফলে হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের চিকিৎসা সেবা আরো সুন্দর ভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে বলে জানান সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম।
পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএস
Post Written by :
Original Post URL : https://ift.tt/3hjSegi
Post Come trough : PURBOPOSHCIMBD