শেয়ার কারসাজি: ৩ প্রতিষ্ঠান ও ২ ব্যক্তিকে ৫ কোটি টাকা জরিমানা
নিজস্ব প্রতিবেদককাসেম ড্রাইসেল লিমিটেডের শেয়ারের দাম কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ঠকিয়ে মুনাফা অর্জন করায় তিন প্রতিষ্ঠান ও ২ ব্যক্তিকে মোট ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তাদের নিয়মিত কমিশন সভায় জরিমানার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
নারায়ণ চন্দ্র পাল এন্ড এসোসিয়েটসকে ৩ কোটি টাকা, প্রাইম ইসলামী সিকিউরিটিজ লিমিটেডকে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, সোলায়মান রুবেল এন্ড এসোসিয়েটসকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া মো. মাহমুদুজ্জামানকে ও মহিবুল ইসলামকে ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কাসেম ড্রাইসেল লিমিটেডের বর্তমান নাম কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
বিএসইসি জানিয়েছে, সাজাপ্রাপ্তরা ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারির মধ্যে এই কারসাজি করেছে। তখন দুই মাসে কাশেম ড্রাইসেলের শেয়ারের দাম ৬৯ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৩১ টাকা ৭০ পয়সায় নিয়ে গিয়েছিল।
সাজাপ্রাপ্তরা কৃত্রিমভাবে লেনদেন করে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে তা বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করে বাজার থেকে সরে গিয়েছিল বলে বিএসইসি প্রমাণ পেয়েছে। যেহেতু শেয়ারের দাম তার মৌল ভিত্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না, ফলে তা কমে গিয়েছিল। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল অনেক বিনিয়োগকারী।
কমিশন বিভিন্ন আইন ভঙ্গ করার কারণে ৭টি ব্রোকারেজ হাউজকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নেয়েছে।
ব্রোকারেজ হাউজগুলো হলো- এসিই ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস, রিল্যায়েন্স ব্রোকারেজ সার্ভিসেস লিমিটেড, এসআর ক্যাপিটাল লিমিটেড, প্রিমিয়ার লিজিং সিকিউরিটিজ ব্রোকিং লিমিটেড, লতিফ সিকিউরিটজ লিমিটেড, এসআইবিএল সিকিউরিটজ লিমিটেড এবং কাইউম সিকিউরিটিজ লিমিটেড।
পুঁজিবাজার থেকে আইপিওর মাধ্যমে টাকা তুলে, সেই টাকার সঠিক ব্যবহার না করে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় কাট্টলী টেক্সটাইল মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকদের জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিএসইসির নিয়মিত সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
কাট্টলী টেক্সটাইল মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকে ১ কোটি টাকা এবং স্বাধীন পরিচালক বাদে অন্য পরিচালকদের ৫০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
কাট্টলী টেক্সটাইলের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলেন এমদাদুল হক চৌধুরী। পরিচালক হিসেবে আছেন আনয়ারুল হক চৌধুরী, মোকাররম হক চৌধুরী, ওয়াদুদ সাবরিনা, সিফাট সাবরিনা। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নাসরিন হক।
কাট্টলী টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০১৮ সালে। আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে তারা মোট ৩৪ কোটি টাকা তুলেছিল। তারা জানিয়েছিল, ৩৪ কোটি টাকার মধ্যে ৫১ শতাংশ টাকা খরচ করবে নতুন কারখানা ভবনের জন্য, ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ টাকা খরচ করবে কর্মীদের ডর্মিটরি তৈরির জন্য, ২৬ দশমিক ৪১ শতাংশ টাকা খরচ করবে নতুন যন্ত্রপাতি কেনার জন্য, বাকি টাকা খরচ করবে ব্যাংক ঋণ ফেরত দিতে।
২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল কাট্টলী টেক্সটাইল একটি প্রতিবেদন দেয়, যাতে উল্লেখ করা হয় তারা ৭ কোটি ৬২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা ৬৪৫ টাকা খরচ করেছে। আর ২৬ কোটি ৩৭ লাখ ২১ হাজার ৩২৫ টাকা খরচ করতে পারেনি। কিন্তু বিএসইসি তদন্ত করে দেখতে পায়, কাট্টলী টেক্সটাইল মিলস টাকা খরচ তো করেইনি, বরং তারা মিথ্যা তথ্য দিয়েছে এবং জাল দলিল তৈরি করে নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে দিয়েছে।
পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএস
Post Written by :
Original Post URL : https://ift.tt/3eCm51Y
Post Come trough : PURBOPOSHCIMBD