মানব শরীরে রাশিয়ান ভ্যাকসিন কার্যকর দাবি
আন্তর্জাতিক ডেস্করাশিয়ার তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ‘কার্যকর ও নিরাপদ’ বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
বিশ্বে শতাধিক ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে অল্প কয়েকটি ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট পর্যায়ে পৌঁছাতে পেরেছে। ১২ জুলাই রাশিয়ার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, গামালেই ইনস্টিটিউট অব এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজির উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সফলভাবে শেষ করেছে তারা।
গত বুধবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ই-মেইল বিবৃতিকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, একটি সামরিক হাসপাতালে প্রথম ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অংশ নেয়া ১৮ জন স্বেচ্ছাসেবীকে ২৮ দিন পর্যবেক্ষণে রাখার পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভ্যাকসিন প্রয়োগের ২৮ দিন পরে ওই স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে গুরুত্বপূর্ণ সব লক্ষণই স্বাভাবিক সীমার মধ্যেই ছিল। তাদের শরীরে মারাত্মক ক্ষতিকর কোন প্রভাব বা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতা তৈরি হয়নি। কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা যায়নি।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এখন ‘আমরা জোর দিয়ে এটা বলতে পারছি, এই ভ্যাকসিনটি নিরাপদ।’
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশ করা এক ভিডিওতে শ্বেতলানা ভোলোচিকিনা নামে এক গবেষক দাবি করেছেন, ওই স্বেচ্ছাসেবকদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো কাজ করছে। শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। ওরা সবাই এখন করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত। দ্বিতীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের উপরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয় গত ২৩ জুন। তারা এখন ওই সামরিক হাসপাতালেই আইসোলেশনে রয়েছেন। পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছেন চিকিৎসক-গবেষকরা।
রাশিয়া আশা করছে, জুলাই মাসের শেষনাগাদ তাদের ভ্যাকসিনের সামগ্রিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হয়ে যাবে।
এদিকে অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের টিকা বাজারে আনতে ৮০ শতাংশ আত্মবিশ্বাসী তারা। তাদের পরীক্ষামূলক টিকা প্রয়োগে মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি বেড়েছে এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম টি সেল নামের শ্বেত রক্তকণিকার হারও দেখা গেছে উল্লেখযোগ্য হারে।
ভারতে করোনার সম্ভাব্য টিকার মানব পরীক্ষা শুরু করেছে ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট আহমেদাবাদের জাইদাস ক্যাডিলা। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের জন্য ড্রাগ কন্ট্রোলের অনুমতি মিলেছিল আগেই।
জাইদাস জানিয়েছে, দুই পর্যায়ে ১০৪৮ জনকে টিকা দেয়া হবে। ভারতে ভ্যাকসিনের দৌড়ে এগিয়ে জাইদাস ক্যাডিলার তৈরি জাইকভ-ডি ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট এবং ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের তৈরি কোভ্যাক্সিন।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের (আইসিএমআর)-এরডিরেক্টর জেনারেল ডক্টর বলরাম ভার্গব বুধবার জানিয়েছিলেন, দেশটির বিভিন্ন জায়গায় এই দুই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হবে। প্রতিটির জন্য প্রায় হাজার জন করে স্বেচ্ছাসেবক বেছে নেয়া হয়েছে।
রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ফাউচি বলেন, আশা করছি এ বছরই করোনাভাইরাসের একটি টিকা আনতে সক্ষম হবেন বিজ্ঞানীরা। মার্কিন বায়োটেক প্রতিষ্ঠান মডার্নার তৈরি করোনার টিকা প্রথম ট্রায়ালে আশা জাগানোর পর ফাউচি এমন মন্তব্য করলেন।
তিনি বলেন, মডার্নার টিকার ফলাফল খুব আশা জাগিয়েছে। কারণ প্রাকৃতিক একটি সংক্রমণের ক্ষেত্রে শরীরে যে ধরনের সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হয়, এই টিকা তেমনই প্রতীয়মান হয়েছে। ২৭ জুলাই শেষ ধাপের ট্রায়াল শুরু হবে মডার্নার টিকার।
পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএস
Post Written by :
Original Post URL : https://ift.tt/30bYBve
Post Come trough : PURBOPOSHCIMBD