২শ টাকার জন্য ৪ জনকে হত্যা
টাঙ্গাইল প্রতিনিধিমাত্র ২’শ টাকা সুদে ধার না দেওয়াকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলের মধুপুরে ওসমান গনি মিয়া ও তার স্ত্রী-সন্তানসহ চারজনকে হত্যা করা হয়। রোববার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী সাগর আলী (২৭) র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর এইসব তথ্য।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাগর র্যাবের কাছে দেয় হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা। হত্যার আগে ওই চারজনকে চেতনানাশক দ্রব্য দিয়ে অচেতন করা হয়। তারপর সেই বাড়িতে থাকা কুড়াল ও হত্যাকারীদের নিয়ে যাওয়া ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয় স্বামী-স্ত্রী ও তাদের দুই সন্তানকে। আর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন অপেশাদার দুই খুনি।
টাঙ্গাইল র্যাব- ১২ এর ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানী (সিপিসি-৩) এর কোম্পানী কমান্ডার মেজর আবু নাঈম মো. তালাত জানান, গ্রেপ্তার সাগর মধুপুর পৌরসভার ব্রাহ্মণবাড়ি এলাকার মগবর আলীর ছেলে। তার সঙ্গে নিহত ওসমান গনি মিয়ার সুদের লেনদেন ছিলো। ওসমান গণি সুদের ব্যবসা করতেন। গত (১৪ জুলাই) মঙ্গলবার সাগর ওসমান গণির কাছে সুদে ২শ টাকা ধার চাইতে যান। কিন্তু এর আগেও একাধিকবার সুদে টাকা ধার নিয়ে পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ওসমান গণি সেদিন তাকে টাকা ধার দিতে অস্বীকৃতি জানান। এই সময় আগের টাকার জন্য সাগরকে গালি দিয়ে বাসা থেকে তাড়িয়েও দেয় ওসমান গণি। আর এই অপমানবোধ থেকেই প্রতিশোধ নিতে ওসমান গণি ও তার পরিবারকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন সাগর। তার আরেক সহযোগীর সঙ্গে সেই পরিকল্পনা আলোচনা করে হত্যা করার রূপরেখা আঁকেন তিনি।
পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী এই ঘটনার পরদিন গত (১৫ জুলাই) বুধবার রাত ১০টার দিকে সেই সহযোগীকে নিয়ে ওসমান গণির বাড়িতে গিয়ে যায়। সুযোগ বুঝে চেতনানাশক দ্রব্য ছিটিয়ে ওসমান গণিকে অচেতন করে ফেলেন সাগর ও তার সহযোগী। পরে ঘুমিয়ে থাকা বাড়ির অপর তিন সদস্যকেও অচেতন করা হয়। ওসমান গণির বাড়িতে থাকা কুড়াল ও সাগরের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ওসমান গণি, তার স্ত্রী তাজিরন বেগম, মেঝো ছেলে তাজিল ও ছোট মেয়ে সাদিয়াকে হত্যা করেন কিলিং মিশনে যাওয়া সাগর ও তার সহযোগী।
এর আগে গত ১৭ জুলাই সকালে মধুপুর পৌরসভার উত্তরা আবাসিক এলাকার একতলা একটি বাসা থেকে ব্যবসায়ী ওসমান গনি মিয়া (৪৫), তার স্ত্রী তাজিরন বেগম (৩৭), ছেলে তাজেল (১৬) ও মেয়ে সাদিয়ার (৮) লাশ উদ্ধার করা হয়। রাত ১০টার দিকে নিহত ওসমান গণি মিয়ার বড় মেয়ে সোনিয়া বেগম বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
এ ঘটনার পর থেকেই তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাগরকে সনাক্ত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে তাকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এই ঘটনায় তার সঙ্গে জড়িত আরও একজনের নাম বলেছেন সাগর আলী। আরও কয়েকজন জড়িত ছিল বলে মনে করছে র্যাব।
পূর্বপশ্চিমবিডি/জেডআই
Post Written by :
Original Post URL : https://ift.tt/3hhCLO1
Post Come trough : PURBOPOSHCIMBD