গণমাধ্যম তুমি কার???? জনগণের, না কি বিত্তশালী বৈভব বেশ্যাদের তল্পিবাহক????তুমি কি জনতার কথা বলো? না কি, জি হুজুরনামা রচনায় ব্যস্ত। হে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ তুমি আজ কার ওপর ভর করে চলছো?????—————-অনেকে বলবেন, সরকার বিজ্ঞাপন সেক্টরে হাত দিয়ে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল হাতে নিয়েছে। হতে পারে। তবে এই ভগ্ন দশায় মধু চেটে খাওয়া মৌমাছিদের তো সুদিন ফিরছে।
সম্রাটের নাম যখন চারদিকে সয়লাব, এক টেলিভিশন টকশোতে দেখলাম বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা সাংবাদিক নেতাদের আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ, বটগাছ থেকে জোড়া বটগাছ হওয়ার ইঙ্গিত দেয়ায় সাংবাদিক নেতার সেই চোটপাট-হুঙ্কার। ওই কথায় না কি পুরো সাংবাদিক সমাজকে অপমান করা হয়েছে। না জনাব; আপনি ভুল বুঝেছেন। সেদিন ওই বিএনপি নেতা পুরো সাংবাদিক সমাজকে অপমান করেন নি। শুধু প্রশ্ন রেখেছিলেন। আজ দেখুন কি অবস্থা গণমাধ্যম নামক সমাজ দর্পনের? শুধু ধোঁয়া আর ধোঁয়াশা। দ্বায় নেবেন না?? নাই বা নিলেন।————আমরা গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে লজ্জ্বিত ও বিক্ষুব্ধ।
গণমাধ্যমে ফুটে উঠার কথা ছিলো সেইসব চিকিৎসকের জীবনগাথা, মূল্যবোধ ও সংগ্রামের গল্প, যারা করোনা মোকাবেলা জীবন বিসর্জন দিয়েছেন এবং অদ্যাবধি দিয়ে যাচ্ছেন। করোনা আক্রান্ত সন্দেহে যখন বাবা-মার লাশ ফেলে সন্তানদের পালিয়ে যাওয়ার খবর পাচ্ছি। ঠিক তখনই সমাজে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে গিয়ে প্রায় শতকের ঘরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন বহুল সমলোচিত চিকিৎসক সমাজ।
আমরা শুধু সমালোচনা করেছি। নিজ দেশের চিকিৎসা সেবা পাওয়া যে আমার নাগরিক অধিকার, সেই অধিকার ভুলে বসে পালের গরুর মতো পার্শ্ববর্তী দেশে নগদ টাকায় চিকিৎসা সেবা পেতে নির্লজ্জ্বের মতো ধর্না দিয়েছি বারংবার। কাঁচা রাস্তা আধা পাঁকা হয়েছে; আধা পাঁকা রাস্তা পাঁকা হয়েছে। আবার সেই পাঁকা রাস্তা ভেঙ্গে ব্যবহার অনুপোযোগি হয়েছে। তবুও আমাদের বোধে আসেনি। সব পরিবর্তন হয়েছে, শুধু আমার চিকিৎসা খাতের কোন উন্নয়ন ঘটে নি।
গণমাধ্যম স্বাস্থ্যখাতের ত্রাণ কর্তা হিসেবে রিজেন্ট হাসপাতাল খ্যাত টকশো শাহেদ ও জেকেজি হাসপাতালের ডা. সাবরীনা আরিফ চৌধুরীদের নাম জপেছে। হয়তো জেনে-বুঝে, নয়তো না বুঝেই। খুড়িয়ে খুড়িয়ে টিকে থাকা লড়াইয়ে গণমাধ্যমের ত্রাণ কর্তা হয়েছে রিজেন্ট শাহেদ ও জেকেজি ডা. সাবরীনা আরিফ চৌধুরি। দেশে প্রথম নারী সার্জন হিসেবে ডা. সাবরীনার নামে বিশেষ প্রতিবেদন হয়েছে প্রথম সারির দৈনিকে। ঠিক আছে, সেটি সংবাদযোগ্য। এতেই দায়িত্ব শেষ। আর কিছু নেই। আজ কি ম্যাসেজ দিচ্ছে????
প্রবাসী শ্রমিক ভাইদের পাঠানো রেমিটেন্স আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো। গণমাধ্যমের কল্যাণে ফুলেফেঁপে উঠা এসব ত্রাণ কর্তারা স্বাস্থ্যখাতের বারোটা বাজিয়ে সংকটকালে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা খাতেরও বারোটা বাজালো। দ্বায়ভার কি গণমাধ্যমের উপর বর্তাবে না???? শুধু কি রাজনীতিবিদরাই পচে গিয়ে বিলীন হয়ে গেছে???
কেন সম্রাট, পাপিয়া, শাহেদ ও সাবরীনাদের নামের সাথে সাথে গণমাধ্যমের পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ আসছে??? একি শুধুই অভিযোগ?
আজকে দেখি- দুর্নীতিবাজ সরকারী কর্মকর্তা, হালি-গন্ডা হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ আছে, প্রমোশন কিংবা মেডেলের লোভে মৃত যুদ্ধাপরাধীকে জীবিত দেখিয়ে ক্ষমা চেয়ে পার পেয়েছেন, নিম্নবিত্ত (আর্থিক বিচারে) পরিবার থেকে উঠে সরকারী চাকুরির সুবাধে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া এসব কর্মকর্তারা গণমাধ্যমে জবাবদিহিতার কাঠগড়ায় দাড়ায় না। তারা দেবদূত হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে উল্টো গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে। গণমাধ্যমও ব্যবহার হয়। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ আজ বিত্তশালীদের শিড়দাড়া। আর সমাজের দর্পনে চলে আয়নাবাজির খেলা।
একটা সময় ছিলো জনগণ ভেলকিবাজির খেলায় ধরা খেয়েছে, আজ কাঠগড়ায় সংবাদপত্র। আমরা লজ্জ্বিত হতে ভুলে গেছি। আসুন, আমরা লজ্জ্বিত হই। জাতির কাছে ক্ষমা চাই।
আসলাম-উদ-দৌলা
সাধারণ সম্পাদক
রাজশাহী প্রেসক্লাব
ও আহ্বায়ক
অরাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ চাই’
Post Written by : Admin
Original Post URL : https://ift.tt/2Cz4jPG
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ