মণিরামপুরে দুই মাসে পাঁচ মেট্রিকটন বোরো সংগ্রহ
আনোয়ার হোসেনযশোরের মণিরামপুরে সরকারিভাবে বোরো ধান সংগ্রহ এগুচ্ছে না। গত দুই মাসে মাত্র পাঁচ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ করতে পেরেছে গুদাম কর্তৃপক্ষ। ফলে নির্ধারিত সময়ে চলতি মৌসুমে এই অঞ্চল থেকে কাঙ্খিত বোরো ধান সংগ্রহ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বৈরি আবহাওয়া ও খোলা বাজারে ধানের চড়া দাম থাকায় কৃষক গুদামে ভিড়ছেন না বলে দাবি মণিরামপুর সরকারি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার। তবে, কৃষক বলছেন, ধান দেওয়া তো সমস্যা না। গুদামে গেলে আমাদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়। সেই কারণে আমরা সরকারকে ধান দিচ্ছি না। তারা গুদামের পুরনো চিরাচরিত রুপকে দায়ী করছেন।
চলতি বোরো মৌসুমে লটারির মাধ্যমে মণিরামপুর থেকে চার হাজার এক মেট্রিকটন ধান ও দুই হাজার ৬৮০ মে. টন চাল সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গত ২৬ এপ্রিল থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু লটারি সম্পন্নসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে প্রায় একমাস পর ২০ মে দুই মে.টন ধান ও এক মে.টন চাল সংগ্রহের মাধ্যমে ক্রয় কাজের উদ্বোধন করা হয়।
ধান সংগ্রহের শুরুতে তালিকাভুক্ত কৃষকদের পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাধ্যমে পাঁচ শতাংশ লাভে ২০ হাজার টাকা করে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সমবায় মন্ত্রণালয়। সেই হিসেবে মণিরামপুরে এই পর্যন্ত ২৯ জন কৃষক ২০ হাজার টাকা করে ঋণ নিয়েছেন বলে জানান উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের জুনিয়র কর্মকর্তা আবু মাসউদ। কিন্তু মঙ্গলবার (২১ জুলাই) পর্যন্ত মাত্র পাঁচজন কৃষক গুদামে ধান দিয়েছেন।
মণিরামপুরে বোরো ধান সংগ্রহের শুরুতে উপজেলা খাদ্য অফিসের মাধ্যমে মাইকিং করে ব্যাপক প্রচারণার সিদ্ধান্ত নেন ক্রয় কমিটি। কিন্তু কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগই নেয়নি এই দপ্তরটি। শুধুমাত্র স্ব স্ব ইউপি'র দেওয়ালে তালিকা সেঁটে দায়িত্ব শেষ করেছেন তারা।
লটারির তালিকাভুক্ত কৃষক মাহমুদকাটি গ্রামের আবুল ইসলাম বলেন, সরকার ধানের মণপ্রতি দেবে একহাজার ৪০ টাকা। গুদামে ধান দিতে গেলে নানা অজুহাত দেখিয়ে কৃষকদের ঘুরানো হয়। কিন্তু আমরা বাড়িতে বসে সাড়ে নয়শ থেকে একহাজার টাকায় ধানের মণ বিক্রি করতে পারছি। সেইক্ষেত্রে ধানের আদ্রতা মাপার দরকার হচ্ছে না; চিটা থাকলেও সমস্যা নেই।
বর্তমানে খোলাবাজারে ধানের মণ ৯৩০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান টেংরামারী বাজারের আড়ৎদার ফয়েজ উদ্দিন।
এদিকে গুদামে বোরো ধানের চাল দেওয়ার ক্ষেত্রে অহীনা দেখানোয় জেলা খাদ্য অফিস ইতোমধ্যে মণিরামপুরে তালিকাভুক্ত মিলারদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। তারপরও কাঙ্খিত চাল সংগ্রহ হয়নি। মঙ্গলবার (২১ জুলাই) পর্যন্ত মাত্র ২৭০ টন চাল সংগ্রহ হয়েছে।
মণিরামপুর চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের হাতে এখনো একমাস সময় আছে। এই সময় পার হলে আরও একমাস সময় বাড়তে পারে। তারমধ্যে আমরা গুদামে নির্ধারিত চাল দিতে পারবো।
মণিরামপুর উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেলিম বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় এবং বাজারে ধানের দাম চড়া হওয়ায় কৃষক গুদামে ধান দিচ্ছেন না। তবে চাল সংগ্রহ বাড়ছে। ইতোমধ্যে ২৭০ টন চাল সংগ্রহ হয়েছে। সামনে আরও একমাস সময় আছে। পরবর্তীতে সময় বাড়বে কিনা সেটা এখন বলা যাচ্ছে না।
পূর্বপশ্চিমবিডি/আরএইচ
Post Written by :
Original Post URL : https://ift.tt/32Jy4Zs
Post Come trough : PURBOPOSHCIMBD