নারায়ণগঞ্জে ইজারা ছাড়াই হাট বসিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিনারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের বাড়িরটেক এলাকার পশুর হাটটির দরপত্র এখনও সম্পন্ন হয়নি। ইজারা না পেলেও হাটের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন। তার লোকজন নদীপথে জোর করে বেপারিদের ট্রলার থামিয়ে রেখে দিচ্ছেন পশু। বুধবার (২২ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে ২৬টি গরু ও ৪টি ছাগলবোঝাই ট্রলার আটকে জোর করে নামানো হয় এই হাটে।
সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এবার ১১টি পশুর হাটের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। গত ২১ জুলাই ৯টি হাটের ইজারা সম্পন্ন হয়েছে। গোগনগর ইউনিয়নের বাড়িরটেক এলাকার দেলোয়ার হোসেনের নিজস্ব ভূমির হাটটির ইজারা এখনও সম্পন্ন হয়নি। আগামী ২৬ জুলাই এই হাটের দরপত্র উন্মুক্ত করা হবে। তবে ইজারা না পেলেও হাটের সব কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন দেলোয়ার হোসেন। জোর করে নামিয়ে রাখছেন পশু। একই স্থানে গতবছরও হাটের ইজারা পেয়েছিলেন তিনি।
সরেজমিনে বেপারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের শাহ্জাদপুর থেকে ট্রলারবোঝাই পশু নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গোদনাইলের ইব্রাহিম টেক্সটাইল মিলসংলগ্ন বালুর মাঠের পশুর হাটের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন তারা। ওই হাটের ইজারাদার শাহ্ আলমের কাছ থেকে দাদনও (অগ্রিম টাকা) নিয়েছেন বলে জানান। কিন্তু জোর করে তাদের ট্রলার নিয়ে আসা হয়েছে সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের বাড়িরটেক এলাকার হাটে।
পশুর বেপারি শাহাদাত হোসেন জানান, ট্রলার নিয়ে যাবার সময় মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিমে তাদের থামিয়ে দেয়া হয়। তারপর জোর করে নিয়ে আসা হয় এই হাটে। সাত বেপারির ২৬টি গরু ও ৪টি ছাগল নামানো হয়েছে এই হাটে।
তিনি বলেন, গেছেবারও জোর কইরা এইখানে নামানো হইছিল। এইদিকে থাইকা অনেক ট্যাকা লস হইয়া গেছে। তাই চাইছিলাম বালুর মাঠের দিকে যাইতে। ওই হাটের মহাজনের থেইকা দাদনও নিছি। হেরা জোর করে নামাইছে এইখানে। যার যেইখানে জোর সে সেইখানে নামাইয়া দেয়। আমরা তো জোর খাটাইতে পারি না।
গোদনাইলের ইব্রাহিম টেক্সটাইল মিলসংলগ্ন বালুর মাঠের ইজারাদার শাহ্ আলম বলেন, আমার হাটে আসা গরু জোর করে গোগনগরের দেলোয়ারের হাটে নামিয়ে রাখা হয়েছে। আমি থানায় জানিয়েছি। প্রতি বছরই বিভিন্ন হাটে জোর করে গরু নামিয়ে রাখা হয়। এ বিষয়ে প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপ এবং নদীপথে পুলিশি টহল দাবি করেন এই ইজারাদার।
এদিকে মুঠোফোনে অভিযুক্ত গোগনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, মঙ্গলবার সকালে ইজারার জন্য কাগজপত্র জমা দেয়া হইছে। আমিই পাবো হাট। আর না পেলে যে পাবে তাকে দিয়ে দেব।
ইজারা পাবার আগেই আপনি হাটের কার্যক্রম শুরু করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। জোর করে গরু নামানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আসছি সিরাজগঞ্জ। আমার লোকজন এমন কিছু করছে কিনা তা জানা নেই।’
এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিকের মুঠোফোনের নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
তবে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, জোর করে পশু নামানোর বিষয়টি জানা নেই। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। হাট অবৈধ হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএস
Post Written by :
Original Post URL : https://ift.tt/3jvm43n
Post Come trough : PURBOPOSHCIMBD