‘কিছু পুরুষ বাসায় ডাকেন... ভাবেন আমি সব প্রস্তাবেই রাজি’
কিছু পুরুষ শুধু আমাকে তাদের বাসায় ডাকেন... ভাবেন আমি সব প্রস্তাবেই রাজি হব, অনলাইন ডেটিং অ্যাপের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে পাকিস্তানে
নিজস্ব প্রতিবেদকপাকিস্তানে দিন দিন বাড়ছে অনলাইন ডেটিং অ্যাপের ব্যবহার। দেশটির নতুন প্রজন্ম ক্রমশ অনলাইন ডেটিংয়ের দিকে ঝুঁকছে। তবে অ্যাপটি নতুনভাবে সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে চ্যালেঞ্জ করছে।
লাহোরের নারী অধিকারকর্মী নাবিহা মেহের শেখ বলেন, একটি অনলাইন ডেটিং অ্যাপ নারীর হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়৷ সে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে অপর প্রান্তের মানুষের কাছে তার কী চাওয়া-পাওয়া। আমাদের সমাজে এটা জনসমক্ষে করার স্বাধীনতা না থাকায় নারীদের পক্ষে নিজেদের মতো করে সম্পর্ক গড়া কঠিন হয়ে পড়ে।
তবু কিছু নারী এখনো খোলামনে টিন্ডার ব্যবহার করা নিয়ে সংশয়ে ভোগেন। ২৫ বছরের আলিশবা লাহোরের বাসিন্দা। তার মতে, আমাদের আসল নাম বা ছবি দিলে অনেক সময় পুরুষরা আমাদের পিছু নেয়, আমাদের ধাওয়া করে। আমরা পাত্তা না দিলে সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের খুঁজে বের করে নানা কুপ্রস্তাব দেয়।
৩২ বছরের ফায়কার মতো আরো কম বয়সীরাও ‘টিন্ডার’ অ্যাপ ব্যবহার করে ডেটিং জগতে পা রাখছেন। ফায়কা দুই ছর ধরে টিন্ডারের নিয়মিত ব্যবহারকারী। তিনি বলেন, এই অ্যাপ পাকিস্তানে নারীদের নিজের পছন্দের সঙ্গী বাছাই করার সুযোগ দিচ্ছে। তার পরও, পুরুষরা এখনো নারীদের এতটা স্বাধীনতার সাথে অভ্যস্ত নন।
ফায়কা বলেন, আমি টিন্ডারের মাধ্যমে এমন অনেক পুরুষের সাথে পরিচিত হয়েছি, যারা নিজেদের খোলামনের নারীবাদী বলেন। কিন্তু তবুও অনেকে আমায় প্রশ্ন করেন যে আমার মতো তথাকথিত ভদ্র, শিক্ষিত মেয়ে কেন টিন্ডার ব্যবহার করছে।
২৮ বছরের ফারিহা জানান, আমি সব সময় কোনো পাবলিক প্লেসে দেখা করতে পছন্দ করি। তাতে নিরাপদ বোধ করি। কারণ মাঝেমধ্যে আমি দেখি যে কিছু পুরুষ শুধু আমাকে তাদের বাসায় ডাকেন। তারা মনে করেন, যেহেতু আমি অনলাইন ডেটিং করছি, সুতরাং আমি সব প্রস্তাবেই রাজি হব।
ইন্দোনেশিয়ান জার্নাল অব কমিউনিকেশন স্টাডিজের একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে, পাকিস্তানের ইসলামাবাদ, লাহোর ও করাচিতে সবচেয়ে বেশি টিন্ডার ব্যবহারকারীর সংখ্যা, যাদের বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।
কিন্তু টিন্ডারের বাজারে ভাগ বসাচ্ছে আরেকটি ডেটিং অ্যাপ ‘মুজম্যাচ’। যার মূল আকর্ষণ ডেটিং করতে আগ্রহী ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের একে অন্যের সাথে পরিচিত করানো। এখানে রয়েছে পশ্চিমা দেশগুলোতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা নারীবাদী অ্যাপ ‘বাম্বল’৷
অ্যাপের বৈচিত্র্যের প্রশ্নে লাহোরের শিক্ষার্থী নিমরা বলেন, বাম্বল ব্যবহারকারীদের মধ্যে পুরুষ সংখ্যায় খুব কম। তাই সেটা ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। টিন্ডার তুলনায় অনেক বেশি পরিচিত, তাই সেখানে হঠাৎ করে পরিচিত কেউ আমায় খুঁজে বের করে নিতে পারেন, তাই কিছুটা অস্বস্তিতে থাকি৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে।
পূর্বপশ্চিমবিডি/জেডআই
Post Written by :
Original Post URL : https://ift.tt/31YYVyB
Post Come trough : PURBOPOSHCIMBD