প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাচ্ছেন ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার
নিজস্ব প্রতিবেদকপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাসের ‘কথিত’ সাক্ষাৎ না হওয়ার প্রসঙ্গে যখন উভয় দেশের মিডিয়া সরগরম ঠিক সেই মুহূর্তে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের তরফে প্রধানমন্ত্রীর অ্যাপয়েনমেন্ট চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সরকার প্রধানের সঙ্গে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের তরফে একটি নোটভারবাল পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চাওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগ কাল বিলম্ব না করে রাষ্ট্রাচার অনুবিভাগের মাধ্যমে সেটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের বিবেচনায় পাঠিয়েছে।
সূত্র বলছে, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপড়েনের যে গল্প প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চলছে, তা অচিরেই ব্যর্থ হবে। ভারতীয় দূত তো বটেই, এ পর্যন্ত যত বিদেশি দূত সাক্ষাৎ চেয়েছেন করোনা পরিস্থিতির খানিক উন্নতি হলেই তারা সরকার প্রধানের মুখোমুখি সাক্ষাৎ পাবেন।
এদিকে রীভা গাঙ্গুলী দাস ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। বাংলাদেশে তার স্থলাভিষিক্ত হবেন বিক্রম দোরাইস্বামী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ চাননি। তার অ্যাপয়েনমেন্ট সংক্রান্ত কূটনৈতিক পত্রে ‘বিদায়’ বিষয়ক কোনো কিছুরই উল্লেখ নেই। ফলে চাহিত সাক্ষাৎকে সৌজন্য সাক্ষাৎ হিসেবেই বিবেচনা করছে সরকার। তাছাড়া চূড়ান্তভাবে বিদায়টি প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে চাওয়া বা নেয়াই রেওয়াজ। রাষ্ট্র প্রধানের অ্যাপয়েনমেন্ট এখনো চায়নি হাইকমিশন। ফলে সরকার প্রধানের প্রস্তাবিত সাক্ষাৎকে সৌজন্য সাক্ষাৎ বলেই বিবেচনা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সাথে বিদায়ী সাক্ষাতে ঢাকায় নিয়োজিত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাস বলেছেন, বাংলাদেশ -ভারত সম্পর্ক এতো হালকা নয়। গত কয়েক বছরে ছিটমহল, সমুদ্র সীমানা বিরোধসহ দু’দেশের মধ্যে জমে থাকা সমস্যার সমাধান হয়েছে। দুই দেশ উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন তারা। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলেও দু’জন আশা প্রকাশ করেন। ভারতীয় হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ণ উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের উপর লিখিত বই হিন্দিতে অনুবাদ করার জন্য অনুরোধ করেন। এছাড়া ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশের জনগণের আনন্দের অংশীদার হতে ভারত ইচ্ছুক বলেও জানান।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হয়, ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস চার মাস ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না। পরে এমন খবর নাকচ করে দেয় সরকারি সূত্রগুলো।
ঢাকার একটি সূত্র ইকোনমিক টাইমসকে বলেছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে যেখানে সাক্ষাতের অনুরোধই করা হয়নি, সেখানে সাড়া না দেওয়ার প্রশ্ন অবান্তর। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী করোনা সংক্রমণ এড়াতে ‘সামাজিক দূরত্ব’ মেনে চলছেন। বিদেশি কোনো ব্যক্তির সঙ্গেই তিনি সশরীরে বৈঠক করছেন না।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনার সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না, শেখ হাসিনার সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ফোনালাপ এবং চীনের ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগে ঢাকা-নয়াদিল্লি সম্পর্কে টানাপড়েন- এ ধরনের অনেক প্রচারণা চলছে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা ও নয়াদিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো এসবকে স্বার্থান্বেষী মহলের ‘অপপ্রচার’ হিসেবে অভিহিত করে তা নাকচ করে দিয়েছে।
পূর্বপশ্চিমবিডি/জেডআই
Post Written by :
Original Post URL : https://ift.tt/2Du33OD
Post Come trough : PURBOPOSHCIMBD