‘চুরির জন্য ইউএনওর ঘরে ঢুকলে বাধা দেয়ায় হামলা’
চুরির উদ্দেশ্যে ঘরে ঢুকেছিল দুর্বৃত্তরা। এসময় বাধা দেয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদা খানমের ওপর তারা হামলা চালায় বলে জানিয়েছে র্যাব।
দিনাজপুর প্রতিনিধিচুরির উদ্দেশ্যে ঘরে ঢুকেছিল দুর্বৃত্তরা। এসময় বাধা দেয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদা খানমের ওপর তারা হামলা চালায় বলে জানিয়েছে র্যাব।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র্যাব-১৩ এর অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ইউএনওকে হত্যাচেষ্টা মামলার সন্দেহভাজন প্রধান আসামি আসাদুল ইসলাম, সান্টু ও নবীরুল। এ ঘটনায় জড়িত বলে এরই মধ্যে তারা দায় স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসবাদে জানিয়েছে চুরির জন্য তারা ভেন্টিলেটর দিয়ে ঘরে ঢোকেন।
রেজা আহমেদ ফেরদৌস জানান, এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মোট ছয় জনকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গাীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।
তিনি বলেন, জবানবন্দিতে আসাদুল দাবি করেছে ইউএনও মহোদয়ের বাসায় চুরির উদ্দেশ্যে প্রবেশ করে তারা। তবে আরো তদন্ত করে ঘটনার মোটিভ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো যাবে।
এদিকে শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের উপ-পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম বলেন, ইউএনও ওয়াহিদার মাথায় অস্ত্রোপচার শেষে রাতেই অপারেশন থিয়েটার থেকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। রাতেই তার জ্ঞান ফিরে এসেছে। তিনি বর্তমানে আইসিইউতে পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
তিনি বলেন, এখনই তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় আসেনি। শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে আমাদের মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বসবেন, এরপর এ বিষয়ে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেবেন। পরবর্তীকালে এ বিষয়ে আপনাদের জানানো হবে। তবে বর্তমানে ইউএনও ওয়াহিদার শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানান তিনি।
নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের নিউরো ট্রমা বিভাগের প্রধান নিউরোসার্জন মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন জানান, আমরা আশা করছি শনিবার ইউএনও ওয়াহিদাকে আইসিইউ থেকে বের করতে পারব। তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে এখনই কিছু জানাব না। শনিবার এ বিষয়ে আমরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাব।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ৬ সদস্যের চিকিৎসক দল প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ইউএনও ওয়াহিদার মাথায় জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করে। অস্ত্রোপচার শেষেই তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকরা। তাৎক্ষণিকভাবে তার সেরে ওঠার বিষয়ে আশাবাদী হলেও তিনি এখনো শঙ্কামুক্ত নন বলে জানানো হয়।
অস্ত্রোপচার শেষে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ইউএনও ওয়াহিদার মাথায় ভাঙা হাড়ের সাত-আটটা টুকরা ছিল, সেগুলো আমরা জোড়া দিয়েছি। জোড়া দিয়ে হাড়গুলোকে জায়গামতো বসিয়ে দেয়া হয়েছে। বাকি যে আরো ছোট ছোট কাটা ছিল, সেগুলোর সবগুলোকেও রিপেয়ার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী কিন্তু এটা হেড ইঞ্জুরির ব্যাপার, তার মাথার ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং মস্তিষ্কে আঘাত লেগেছে। মস্তিষ্কের ওপর একটা চাপ ছিল, সেটা আমরা রিলিফ করেছি। তবে এখনই ক্লিয়ারলি আমরা বলতে পারব না যে রোগী ভালো হয়ে যাবেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে ইউএনও ওয়াহিদার সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা ও তার বাবার ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ইউএনওর মাথায় গুরুতর আঘাত এবং তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়।
পরে ইউএনওকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) নিয়ে ভর্তি করা হয়। এরপর তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে তাকে ঢাকায় আনা হয়।
পূর্বপশ্চিমবিডি/জেডআই
Post Written by :
Original Post URL : https://ift.tt/2GpWBt7
Post Come trough : PURBOPOSHCIMBD