কোভিড-১৯ মহামারির এই সময়ে এক গ্রাহকের সীম আরেক গ্রাহকের কাছে রেজিস্ট্রেশন করে বিক্রি করায় ক্ষুব্ধ হয়ে গ্রামীনফোনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন আব্দুল বাশার হিমু নামে জনৈক গ্রামীনফোন গ্রাহক।
তিনি অভিযোগ করেন, করোনা মহামারীর কারনে কয়েক মাস অফিস বন্ধ থাকায় তার অফিসিয়াল সীম বন্ধ থাকে, কিন্তু অফিস আংশিকভাবে খোলার পর তিনি সীমটি চালু করতে গেলে দেখেন যে, তার সীমটি গ্রামীনফোন অন্য গ্রাহকের কাছে মালিকানা পরিবর্তন করে বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে বিক্রি করে দেয়। তিনি মনে করেন, তাকে না জানিয়ে অন্যজনের কাছে তার অফিসিয়াল সীম বিক্রি করা একটি আইনবহির্ভূত কাজ এবং এর ফলে তাঁর ব্যাবসায়িক সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি তাঁর সাংবিধানিক অধিকারও ক্ষুন্ন হয়েছে। তাই গ্রামীনফোনের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে না এই মর্মে তিনি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।
এদিকে সারাদেশব্যাপী ১৪টি গ্রামীনফোন সেন্টার করোনাকালীন সময়ে গ্রামীনফোন কর্তৃক বন্ধ করে দেয়ার ফলে গ্রাহকসেবা পেতে ব্যাপক বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গ্রাহকগন। ইতিমধ্যে হয়রানীর শিকার হয়ে প্রচুর গ্রাহক এই মর্মে বিটিআরসি বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন:
খুলনার মহিলা কলেজ রোডের আনোয়ার চৌধুরী অভিযোগ করেন, জাতীয় দুর্ভোগের এই সময়ে তাঁর একটি সংযোগ অকার্যকর দেখে গ্রামীনফোনের খুলনা ও যশোরে থাকা দুইটি সেন্টারে গিয়ে সেন্টারগুলো বন্ধ দেখতে পান, পরবর্তীতে হটলাইনে ফোন দিলে তাঁকে ঢাকার গুলশান সেন্টারে যেতে বলা হয়, অবশেষে নানা ভোগান্তি পার হয়ে তিনি ঢাকা গিয়ে সার্ভিসটি পেতে সক্ষম হন।
রাজশাহী স্টেশন রোডের আজিজুর রহমান অভিযোগ করেন, এই করোনাকালীন সময়ে একটি সীমের মালিকানা পরিবর্তনের জন্য তিনি রাজশাহী সেন্টারে গিয়ে সেটি বন্ধ পান, তারপর পুটিয়ায় গিয়ে সেবা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত বগুড়া সেন্টারে যান, কিন্তু বগুড়ায় গিয়ে দেখতে পান, সেই সেন্টারটিও স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রামীনফোনের মত এত বড় গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান তাদের অফিস বন্ধ করার আগে গ্রাহকদের অবহিত করা উচিত ছিলো, কিন্তু তা না করায় তিনিসহ প্রচুর গ্রাহক অনাকাঙ্খিত ভোগান্তির শিকার হন।
রংপুর ধাপ মোড়ের মো: হেলালউদ্দীন ও একই রকম ভোগান্তির শিকার হয়ে অভিযোগ করেন, বাবার মৃত্যুর পর তিনি বাবার সীমটি ব্যাবহার করে আসছিলেন, কিন্তু হঠাৎ সীমটি নষ্ট হওয়ার ফলে তিনি গ্রামীনফোনের রংপুর সেন্টারে গিয়ে অফিস বন্ধ পান এবং তাঁকে এই সার্ভিসটি পেতে ঢাকা যেতে বলা হয়।
সিলেট জিন্দা বাজারের সুহাগ রানা অভিযোগ করেন, তাঁর নামে রেজিস্ট্রেশন করা সীম তার লন্ডনপ্রবাসী ভাই ব্যাবহার করেন, করোনার কারনে ফ্লাইট বন্ধ থাকায় সেই সীমে ইন্টারন্যাশনাল রোমিং সার্ভিস চালু করতে সিলেট শহরের সব কয়টা গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে গিয়েও তিনি কাঙ্খিত সেবাটি পাননি, তাঁকেও এই সার্ভিসটি নিতে ঢাকা যেতে বলা হয়।
উল্লেখ্য, দেশে মহামারির প্রাদুর্ভাব ঘটার সাথে সাথেই গ্রামীনফোন তার সকল কর্মীকে ঘরে বসে অফিস করার নির্দেশ দেয়ার পরপরই দেশব্যাপী ১৪টি স্থায়ী গ্রাহকসেবা কেন্দ্র বন্ধ ঘোষনা করে এবং নেটওয়ার্ক ও টাওয়ার পরিচালনার কাজে নিয়োজিত স্থায়ী কর্মীদের কাজ থেকে বিরত রেখে অস্থায়ী ভেন্ডর কর্মীদের হাতে তুলে দেয়। এর মাধ্যমে গ্রামীনফোনের প্রায় দুইশত স্থায়ী কর্মীকে কর্মচ্যুত করা হয় এবং হুমকির মুখে ফেলে দেয়া হয় গ্রাহকের তথ্য এবং জাতীয় নিরাপত্তা।
Post Written by : Admin
Original Post URL : https://ift.tt/3jvEH6Q
Post Come trough : নাচোল নিউজ