করোনা ঝুঁকির মধ্যেও বিনোদন প্রেমীদের ভিড়
পূর্বপশ্চিম ডেস্ককরোনার কারণে দর্শনীয় স্থানের বদলে তিস্তা নদীর তীর প্রকৃতি প্রেমীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। ঈদ বিনোদনের অংশ হিসেবে করোনা ঝুঁকি উপেক্ষা করে নানা বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখোর হয়ে উঠেছে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ।
রোববার (২ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদ উপলক্ষে তিস্তার বুকে দ্রুত বেগে এক পাশ থেকে আরেক পাশে ছুটে চলছে স্পিডবোট ও নৌকা। হৈ-হুল্লোড়ে মেতে উঠছেন সবাই। বড় বড় ঢেউ এসে ধাক্কা দিচ্ছে তিস্তার কূলে। ছিটে আসা জলরাশি ছুঁয়ে মজা করছেন সকলেই। ঈদের আনন্দে রঙিন হয়ে উঠেছে ছোট-বড় সব বয়সী মানুষের মন।
তিস্তা নদীতে বিনোদনের জন্য স্পিডবোটে উঠতে জনপ্রতি খরচ হচ্ছে মাত্র ৩০ টাকা। ফলে মুহূর্তেই ভরে যাচ্ছে বোটগুলো। এলাকার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র হওয়ায় তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় প্রতিদিন পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের ঢল নামছে। শিশু কিশোর, তরুণ-তরুণী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে তিস্তা পাড়।
বিনোদন প্রেমী মানুষগুলোকে বহনকারী বিভিন্ন সাজে সজ্জিত গাড়িগুলোতে শোভা পাচ্ছিল জরি লাগানো নানা রংয়েরর বর্ণিল কাগজ ও ‘চল না ঘুরে আসি কোথাও থেকে’ ঈদ আনন্দে মেতে উঠি লেখা ব্যানার। ব্যারেজ এলাকায় আসা জেলা-উপজেলা শহর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের নামে লেখা ব্যানার সংবলিত গাড়িগুলোতে বিনোদন প্রেমীদের মাইক বাজিয়ে ও নেচে গেয়ে আনন্দ করতে দেখা গেছে।
তিস্তা ব্যারেজ জুড়ে বসেছে অস্থায়ী হাট। নানা রকম পণ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে দোকানগুলো। বিভিন্ন খেলনা, বাঁশি, বেলুন, মাটির গাড়ি, খাবারের দোকান রয়েছে এখানে। এ ছাড়া নদীর বুকে ভাসমান বিলুপ্ত আশির দশকের বেশ কিছু পাল তোলা নৌকা নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের। অনেকেই ক্যামেরা ও মোবাইল ফোনে বন্দী করছেন প্রিয় মুহূর্তগুলো।
ঈদেরদিন দুপুরের পর থেকে শুরু হয় উপচেপড়া ভিড়। ঈদের দ্বিতীয় দিনে তিস্তা ব্যারেজে প্রকৃতি প্রেমীদের উপস্থিতি আরও বাড়তে থাকে। দিনদিন তিস্তা ব্যারেজের সোলার প্লান্ট ও বোল্ডারের মাথায় ভ্রমণ প্রেমীদের আনাগোনা বাড়ছে। গত কয়েক বছর ধরে ঈদের সময় শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ প্রাকৃতিক বিনোদনের খোঁজে তিস্তা নদীর তীরে ছুঁটে আসেন। ফলে ভ্রমণ পিপাসুদের পদচারণায় তিস্তার তীর মুখরিত হয়ে উঠেছে। নদীর তীর ঘেঁষে বাঁধের আদলে তৈরি সড়ক দিয়ে হেঁটে বিনোদন পিপাসুরা তিস্তার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।
তিস্তা ব্যারেজে ঘুরতে আসা কামরুজ্জামান কাজল, আলামিন হুসাইন, তহিদুল ইসলাম তাহু, আজিজুল ইসলাম বুলেট, রায়হান, মনিরুজ্জামান তিস্তা ব্যারেজ ঘুরে খুব মজা পাওয়ার কথা বলেন।
দিনাজপুর থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা আফজাল হোসেন বলেন, ব্যস্ততার মাঝে একটু সময় করে পরিবার নিয়ে ঈদ আনন্দে ঘুরতে এসেছি এখানে।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক সোহেল বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দীর্ঘদিন ধরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়নি। ঈদকে কেন্দ্র করে বাড়ির পাশের এই এলাকায় একটু ঘুরতে আসা। করোনা ঝুঁকি থাকলেও আমার মতো অনেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে আসছেন।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, ভ্রমণ পিপাসু মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য তিস্তা ব্যারেজে বিনোদন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সূত্র: ইউএনবি
পূর্বপশ্চিমবিডি/জেডআই
Post Written by :
Original Post URL : https://ift.tt/3gij6xj
Post Come trough : PURBOPOSHCIMBD