বাড্ডায় দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের দ্বন্দ্ব, আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে গুলি
নিজস্ব প্রতিবেদকঢাকার বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোরসালিন বাবুর বাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড্ডার হোসেন মার্কেটের পিছনে ময়নারবাগের বাসার সামনে প্রকাশ্যে অস্ত্রধারীরা এ গুলি চালায়। এতে কোন হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য এ গুলি চালানো হতে পারে বলে ধারণা পুলিশের। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আফতাব নগরের পশুর হাটে চাঁদা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ গুলির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার নেপথ্যে মালয়েশিয়ায় আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী ডালিম ও রবিন গ্রুপ জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে বাড্ডা থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, বিকেলের দিকে কয়েকজন সন্ত্রাসী মোরসালিন বাবুর বাসার সামনে গিয়ে গুলি করে মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি থানায় একটি জিডি করেছেন। আমরা জিডি তদন্ত করছি। ধারণা করছি তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীরা গুলি চালিয়েছিল। তবে ওই সময় মোরসালিন বাবু বাসায় ছিলেন না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধীন ঈদুল আজহায় আফতাবনগর পশুর হাট ১ কোটি ১০ লাখ ৩০ হাজার টাকায় ইজারা নেন বাড্ডার আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ রায়হান। বিগত বছরেও এই পশুর হাটটি তিনি ইজারা নিয়েছিলেন। এবারের পশুরহাট ইজারায় সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো চাঁদার হার নির্ধারণ করে দেয় ১ কোটি টাকা। আমেরিকায় আত্মগোপনকারী শীর্ষ সন্ত্রাসী মেহেদীর কাছে এই চাঁদার টাকা দিতে হবে। এর আগে ২০১৪ সালে এই পশুরহাটের চাঁদাবাজির ১ কোটি টাকা দিতে অস্বীকার করায় মেহেদী গ্রুপের সন্ত্রাসীরা হাট ইজারাদার ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান গামাসহ ৪ জনকে গুলি করে হত্যা করে।
আফতাবনগর পশুর হাট ইজারাদার সূত্র জানায়, করোনা মহামারীর কারণে পশুর হাটে আশানুরূপ বিক্রি হয়নি। ফলে তাদের সেই টার্গেট অনুযায়ী লাভ হয়নি। আমেরিকা থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসীর দাবিকৃত ১ কোটি টাকা চাঁদা মেহেদীর ক্যাশিয়ার মোরসালিন বাবুর কাছে পৌঁছানোর কথা ছিল। চাঁদার কিছু টাকা বাবুর কাছে দেয়া হয়েছে। ওই টাকা মেহেদীর কাছে দেয়া হয়নি বলে সন্ত্রাসীরা তার বাসায় গুলি করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে গুলি বর্ষণের ঘটনায় ময়নারবাগ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সন্ত্রাসীরা গুলি ছুঁড়ে ৩টি মোটরসাইকেলে করে চলে যায়। যাওয়ার সময় তারা চিৎকার করে বলে, ভাইয়ের নির্দেশ, তুই চাঁদার টাকা আমেরিকায় না পাঠালে তোর লাশ ফেলে দিব।’ ঘটনার পর পর রাতেই মোরসালিন বাবু বাড্ডা থানায় একটি জিডি করেন।
সূত্রমতে, আফতাবনগর পশুর হাটের চাঁদাবাজির টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এ গুলির ঘটনা ঘটেছে। শীর্ষ সন্ত্রাসী মেহেদী গ্রুপের সঙ্গে চাঁদার ভাগ বাটোয়ারার মধ্যস্থতার দায়িত্ব দেয়া হয় বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোরসালিন বাবুকে। বিষয়টি মালয়েশিয়ায় আত্মগোপন করা ডালিম-রবিন গ্রুপ মনিটরিং করছিল। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে এবারের কোরবানির হাট লাভজনক না হওয়ায় চাঁদা বিষয়টি নিয়ে টানাপোড়নের সৃস্টি হয়। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে এক গ্রুপ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাড্ডার হোসেন মার্কেটের পিছনে ময়নারবাগে থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোরসালিন বাবুর বাড়ি লক্ষ্য করে পর পর কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে।
পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএস
Post Written by :
Original Post URL : https://ift.tt/2F41MhT
Post Come trough : PURBOPOSHCIMBD