বেনাপোলে ২৬৩৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকার রাজস্ব আদায়
সারাদেশ
বেনাপোল প্রতিনিধিদেশের সবচেয়ে বড় আর বেশি রাজস্ব দাতা বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে ২০ লাখ ৩৮ হাজার ৬৪ মেঃটন পণ্য আমদানি হয়েছে। এসময় বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানী হয়েছে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৯৫০ মেঃটন পণ্য। এসময় আমদানি পণ্য থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ হাজার ৬৩৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ বন্দরটি দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছিল ২১ লাখ ৮১হাজার ১২৩ মেঃটন পণ্য এবং ভারতে রফতানি হয়েছিল ৪ লাখ ১ হাজার ১৭৭ মেঃ টন পণ্য। এসময় আমদানি পণ্য থেকে সকারের রাজস্ব আয় হয় ৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা।২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমদানির পরিমান কমেছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৯ মেঃটন। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে ১ হাজার ৪০৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
২০২০-২১ অর্থ বছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ বন্দরে আমদানি পণ্য থেকে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৬ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা।
জানা যায়, দেশে সরকার অনুমোদিত ২৪টি স্থলবন্দরের মধ্যে চলমান ১২টি বন্দরের সবচেয়ে বড় আর বেশি রাজস্ব দাতা বেনাপোল স্থলবন্দর। বেনাপোল বন্দর থেকে ভারতের প্রধান বাণিজ্যিক শহর কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। ভারতের কলকাতা শহর থেকে একটি ট্রাক আমদানি পণ্য নিয়ে মাত্র ৫ ঘন্টায় কাস্টমস ও বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে পৌছাতে পারে বেনাপোল বন্দরে। তেমনি একই সময় বেনাপোল বন্দর থেকে রফতানি পণ্য নিয়ে ট্রাক পৌছায় কলকাতা শহরে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ার কারনে এপথে প্রথম থেকে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের আমদানি,রফতানি বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। এবন্দরে বাণিজ্যের সাথে কাস্টমস,বন্দর,সিঅ্যান্ডএফ ও ট্রান্সপোর্টসহ বিভিন্ন সরকাররী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। আমদানি পণ্যের মধ্যে শিল্ককারখানার কাঁচামাল, তৈরী পোশাক,গার্মেন্টস সামগ্রী,কেমিক্যাল ও খাদ্য দ্রব উল্লেখ্য যোগ্য। রফতানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পাট, পাটজাত দ্রব,তৈরী পোশাক,কেমিক্যাল, জুট,গার্মেন্টমস ও মাছ উল্লেখ্য যোগ্য।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানির চাহিদা থাকলেও বন্দরের বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন সমস্যার কারনে ব্যবসায়ীরা এবন্দর ছেড়ে অন্য দিয়ে আমদানি করছেন। বিশেষ করে বন্দরে আমদানি পণ্যের মান পরীক্ষনের ভাল ব্যবস্থা না থাকায় সময় ক্ষেপনে দ্রুত পণ্য খালাস করতে না পেরে ব্যবসায়ীরা মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এতে আটকে থাকা পণ্যে ব্যবসায়ীরা যেমন লোকশানে পড়ছেন তেমনি পণ্যের গুণগত মানও নষ্ট হচ্ছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনে সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বাণিজ্যের সিংহভাগই সম্পন্ন হয় দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে। বছরে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার আমদানি বাণিজ্য থেকে সরকারের ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আসছে। কিন্তু দুঃখ জনক বিষয় বন্দরে আমদানি পণ্য রক্ষনা বেক্ষনের ভাল ব্যবস্থা নাই। খোলা আকাশের নিচে রোদ, বৃষ্টিতে ভিজে আমদানি পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। এখানে প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর উন্নয়ন হলে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় সম্ভব হবে।
সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান বলেন, সাম্প্রতি শুল্কফাঁকি দিয়ে এবন্দরে আমদানি বেড়েছে। বৈধ পথে ভারত থেকে আসছে ভায়াগ্রার মত মাদক দ্রবের চালান। গত বছরে ৩ হাজার মেঃটন ওজনের ভায়াগ্রার দুটি চালান বেনাপোল বন্দরে আটক হলেও এখন পর্যন্ত পাচারকারীরা রয়েছে ধরা ছোওয়ার বাইরে। এসব কারণে গেল ৪ বছর আমদানি পন্য থেকে সরকারের কাঙ্খিত রাজস্ব আদায় হচ্ছে না।
পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম
Post Written by :
Original Post URL : https://ift.tt/34nVdkI
Post Come trough : PURBOPOSHCIMBD