ইয়াবাসহ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া দুই ছাত্রলীগ নেতাকে বহিস্কার করেছে সংগঠনটি।
সারাদেশ
ফেনী প্রতিনিধি
ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায় ইয়াবাসহ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া দুই ছাত্রলীগ নেতাকে বহিস্কার করেছে সংগঠনটি।
বুধবার (২২ জুলাই) রাতে পাঠান নগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন টিটু ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আরাফাত হোসেন সাদ্দামকে বহিষ্কার করা হয়।
উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জিয়াউল হক দিদার ও সাধারণ সম্পাদক শওকত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সংগঠন পরিপন্থী ও শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত ধাকায় তাদের পাঠাননগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার (২১ জুলাই) রাত পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার শুভপুর সাহেবের হাট থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৯৬ পিচ ইয়াবা, ১৫ হাজার ৫শ টাকা, ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামাদি, একটি হকিস্টিক এবং স্টিলের চেইন জব্দ করা হয়।
চম্পক নগর বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার আবদুল করিম বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে থানায় মাদক আইনে মামলা করেছেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সবার জন্য মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পরিপত্র প্রত্যাহার চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (২২ জুলাই) রাজধানীর আল মুতমাইন্নাহ মা ও শিশু হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার ডা. মুহম্মদ আব্দুল আলী মারুফের পক্ষে আইনজীবী শেখ ওমর শরীফ এ নোটিশ পাঠান। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, গত ২১ জুলাই স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে মাস্ক ব্যবহার সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। পরিপত্রে প্রতিটি কর্মস্থলে কর্মরত ব্যক্তি ও জনসমাবেশ চলাকালীন আবশ্যিকভাবে মাস্ক পরা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমন ঢালাওভাবে মাস্ক পরিধানের নির্দেশনা কোনোক্রমেই বিজ্ঞানসম্মত ও স্বাস্থ্যসম্মত কোনো পদক্ষেপ নয়।
নোটিশে আরও বলা হয়, ঢালাওভাবে মাস্ক ব্যবহার করা বিপজ্জনক হতে পারে বলে জানিয়েছে খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। নোটিশ পাওয়ার ৩ কার্যদিবসের মধ্যে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারিকৃত এ সংক্রান্ত পরিপত্রটি প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।
বরিশাল নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার আন্তঃজেলা ডাকাত দলের তিন সদস্যকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদি হয়ে ডাকাতি মামলা দায়ের করেছে। বুধবার (২২ জুলাই) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
ডাকাতরা হলেন, বরিশালের বাকেরগঞ্জের কর্ণকাঠী ইউনিয়নের বারেক হাওলাদারের ছেলে ৩ ডাকাতি মামলার আসামি ফিরোজ হাওলাদার, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের শাজাহান মাতুব্বরের ছেলে ডাকাতিসহ ১৪ মামলার আসামি লিটন মাতুব্বর ও বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানাধীন হরিপাশা এলাকার শাজাহান মোল্লার ছেলে ডাকাতিসহ ৭ মামলার আসামি লিটন মোল্লা।
কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৩টার দিকে সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার রাসেল আহম্মেদের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। এ সময় নগরীর বিএম কলেজ রোডস্থ সোবহান মিয়ার পুল এলাকাসহ আরও কয়েকটি এলাকা থেকে ওই তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে রাম দা, বগি দা ও বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন করে নগরীতে ডাকাতি কার্যক্রম চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল তারা।
ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় এসআই রুমান বাদি হয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
পূর্ব আফগানিস্তানে এক বিমান হামলায় ৪৫ জন নিহত হয়েছে। বুধবারের (২২ জুলাই) ঐ হামলায় নিহতদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক ও তালেবান যোদ্ধা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পূর্ব আফগানিস্তানে এক বিমান হামলায় ৪৫ জন নিহত হয়েছে। বুধবারের (২২ জুলাই) ঐ হামলায় নিহতদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক ও তালেবান যোদ্ধা রয়েছে।
হেরাতে বিভিন্ন হামলার সঙ্গে জড়িত ছয়জন গুরুত্বপূর্ণ তালেবান কমান্ডার ছিল এই আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু।
হেরাত প্রদেশের আদরাস্কান জেলার গর্ভনর আলী আহমেদ ফারিকের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে আটজন বেসামরিক নাগরিক।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর বিমান হামলায় খাম জিয়ারাট এলাকায় ৪৫ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে তালেবান যোদ্ধাও রয়েছে। তবে বাকি ৩৭ জনের মধ্যে কতজন বেসামরিক নাগরিক বা তালেবান এটা স্পষ্ট নয়।
এক বিবৃতিতে তালেবান মুখপাত্র ক্কারী মোহাম্মদ ইউসেফ আহমাদী বলেন, হেরাতে দুটি বিমান হামলায় আটজন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছে।
দুই দফা হামলার কথা স্থানীয় দুইজন কর্মকর্তাও নিশ্চিত করেছেন। আহমদীর মতে, এই ধরনের হামলার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে যারা জেল থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায় তাদের অস্ত্র তুলে নিতে বাধ্য করছে।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়, আফগান বাহিনীর হাতে বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের ফলাফল প্রকাশ্যে জানানো হবে।
পার্শ্ববর্তী গুজারা জেলার কর্মকর্তা হাবিব আমিনিও এই ঘটনায় ৪৫ জন নিহত ও অনেক আহতের খবর নিশ্চিত করেছেন। তবে দেশটিতে অবস্থান করা মার্কিন বাহিনীর এক মুখপাত্র জানান, বুধবারের হামলার সঙ্গে তারা জড়িত নয়।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে শান্তি চুক্তির জন্য আফগানিস্তান, মার্কিন বাহিনী ও তালেবানদের মধ্যে অস্ত্র বিরতিও চলে। ওই সময় বন্দিমুক্তির দাবি ওঠে। এই প্রক্রিয়াও ধীরে ধীরে বাস্তবায়িত হচ্ছিল।
বিশ্বে আবারো বেড়েছে করোনায় মৃত্যু। করোনায় বিশ্বে ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৭ হাজারের বেশি মানুষ। এ নিয়ে বিশ্বে মোট প্রাণহানি ছাড়ালো ৬ লাখ ২৯ হাজার। এসময়ে শনাক্ত হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৭৯ হাজার। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৩৬ লাখের বেশি।
ভারতে একদিনে রেকর্ড ৪৫ হাজার ৫৯৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নতুন করে প্রাণ গেছে ১ হাজার ১শ ২০ জনের। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০ হাজার। দেশটিতে মোট শনাক্ত হয়েছে ১২ লাখ ৩৯ হাজারের বেশি।
বিশ্বে ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে ব্রাজিলে। দেশটিতে ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ গেছে প্রায় ১৩শ জনের। নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৬৫ হাজারের বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে করোনায় আক্রান্ত ৭১ হাজারেরও বেশি মানুষ। মৃত্যু ১২শর বেশি মানুষের। মোট প্রাণহানি ছাড়িয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার।
দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরো ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো দুই হাজার ৭৫১ জনে। ২৪ ঘণ্টায় আরো দুই হাজার ৭৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশে মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ২ লাখ ১৩ হাজার ২৫৪ জন।
Post Written by : Admin
Original Post URL : https://ift.tt/2ON7YMN
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ
করোনাভাইরাসের অন্যতম হটস্পট ব্রাজিলে সংক্রমণের প্রকোপ বেড়েই চলছে। সবশেষ চব্বিশ ঘণ্টায় রেকর্ড শনাক্ত দেখল দেশটি। এই সময়ে প্রায় ৬৮ হাজার মানুষের শরীরে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
করোনাভাইরাসের অন্যতম হটস্পট ব্রাজিলে সংক্রমণের প্রকোপ বেড়েই চলছে। সবশেষ চব্বিশ ঘণ্টায় রেকর্ড শনাক্ত দেখল দেশটি। এই সময়ে প্রায় ৬৮ হাজার মানুষের শরীরে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার (২২ জুলাই) পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ব্রাজিলে ৬৭ হাজার ৮৬০ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের শনাক্ত করা হয়েছে।
তাতে বৈশ্বিক তালিকায় দ্বিতীয়স্থানে থাকা লাতিন আমেরিকার দেশটিতে সরকারি হিসেবে মোট আক্রান্ত দাঁড়িয়েছে ২২ লাখ ৩১ হাজার। তালিকায় ব্রাজিলের ওপরে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, ৪১ লাখ ছাড়িয়েছে।
চব্বিশ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ব্রাজিলে ১ হাজার ২৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮২ হাজার ৭৭১ জন। মৃত্যুর বৈশ্বিক তালিকায়ও অনেক আগে থেকে শীর্ষে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের বৃহত্তম দেশটি।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ব্রাজিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত-মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। দেশটিতে প্রয়োজনের তুলনায় পরীক্ষা করা হচ্ছে খুব কম।
অন্যদিকে, বিশ্বজুড়েও বেড়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। আক্রান্ত ১ কোটি ৫৩ লাখ ছাড়িয়েছে, মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৩০ হাজার। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থদের সংখ্যা ৯৩ লাখ ৫০ হাজার ছুঁই ছুঁই। বর্তমানে বিশ্বে ‘অ্যাকটিভ’ করোনারোগী আছে ৫৪ লাখ ৯৪ হাজারের কিছু বেশি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। তাতে ভেঙে যাচ্ছে দৈনিক আক্রান্তের পূর্বের সব রেকর্ড। মাত্র ১৪ দিনে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ১০ লাখ!
আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। তাতে ভেঙে যাচ্ছে দৈনিক আক্রান্তের পূর্বের সব রেকর্ড। মাত্র ১৪ দিনে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ১০ লাখ!
জানুয়ারির ২১ তারিখ করোনাভাইরাস ছড়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখান থেকে প্রথম ১০ লাখ আক্রান্ত হতে সময় লেগেছিল ৯৯ দিন। পরবর্তী ১০ লাখ আক্রান্ত হতে সময় লেগেছিল ৪৩ দিন। তৃতীয় ১০ লাখ আক্রান্ত হতে সময় লেগেছিল ২৮ দিন। ৮ জুন দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়ায়।
বিস্ময়কর তথ্য হচ্ছে ২২ জুলাই দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ শেষ ১০ লাখ আক্রান্ত হয়েছে মাত্র ১৪ দিনে!
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ৪১ লাখ ৮৭৫ জন। মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৪৬ হাজার ১৮৩ জন। সেরে উঠেছে ১৯ লাখ ৪২ হাজার ৬৩৭ জন।
মৃত চিকিৎসকের স্বাক্ষর ব্যবহার করে প্যাথলজি রিপোর্ট প্রদান করায় বরিশালের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দুই মালিককে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বরিশাল প্রতিনিধি
মৃত চিকিৎসকের স্বাক্ষর ব্যবহার করে প্যাথলজি রিপোর্ট প্রদান করায় বরিশালের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দুই মালিককে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পাশাপাশি নামের শেষে ভুয়া ডিগ্রি ব্যবহার করায় এক চিকিৎসককেও সেই অভিযানে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রতারণার দায়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
বুধবার (২২ জুলাই) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত নগরের জর্ডন রোডে ‘দ্য সেন্ট্রাল মেডিকেল সার্ভিসেস’ নামের এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালান।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন সেন্ট্রাল মেডিকেল সার্ভিসেসের চিকিৎসক নূর এ সরোয়ার ওরফে সৈকত, ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক এ কে চৌধুরী ও জসিম উদ্দিন ওরফে মিলন।
জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার সন্ধ্যায় ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে র্যাব সদস্যদের নিয়ে অভিযান চালানো হয়। অভিযান চলাকালে দেখা যায়, ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আসা খাদিজা নামের এক রোগীকে মৃত চিকিৎসক গাজী আমানুল্লাহ খানের স্বাক্ষরিত একটি প্যাথলজি রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু ওই চিকিৎসক তিন মাস ধরে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ১৯ জুলাই ঢাকায় মারা যান।
আরও জানা গেছে, প্যাথলজির সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন জায়গায় করোনায় মৃত্যুবরণ করা চিকিৎসক ইমদাদ উল হকের নাম ব্যবহার করা হচ্ছিল। একই সঙ্গে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নূর এ সরোয়ার নামের একজন চিকিৎসক পাওয়া যায়। যিনি রোগীকে দেওয়া ব্যবস্থাপত্রে নামের শেষে বেশ কিছু ভুয়া ডিগ্রি উল্লেখ করেন এবং শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের নাম ব্যবহার করেন। এসব অনিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক এ কে চৌধুরী, জসীম উদ্দিন এবং ভুয়া ডিগ্রিধারী চিকিৎসক নূর এ সরোয়ারকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করে দেওয়া হয়।
এ সময় সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসা কর্মকর্তা মুবিনুল হক উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান অভিযানের বিষয়ে বলেন, ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বেশ কিছু গুরুতর অনিয়ম পাওয়া গেছে। এ জন্য তিনজনকে কারাদণ্ড এবং সেন্টারটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
হাইব্রিড মুক্ত একটি সুস্থ ধারার রাজনীতি দেখতে চাইলে...
ড. ওহিদুর রহমান টিপু
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে আজ হাইব্রিড ও সুবিধাবাদী ভরপুর। এর জন্য কিছু মন্ত্রী, এমপি, কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা কোনভাবেই দায় এড়াতে পারবেন না। আমাদের মত কিছু মানুষ রাজনীতিতে এখনও টিকে থাকার চেষ্টা করছি কিছু কেন্দ্রীয় নেতার পাশে থাকার সুযোগ অথবা স্নেহ ভালবাসার কারণে।
মুল কথা- পুলিশের আইজি হতে হলে তাকে প্রথম এএসপি হতে হয়, সেনাপ্রধান হবার জন্য সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে যোগদান করতে হয়, সচিব হবার জন্য সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কোনও কালেক্টরেট অফিসে সংযুক্ত হতে হয়। তাহলে রাজনীতি করতে হলে প্রথমে কেন সে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্রলীগ হবে না?
আমার প্রস্তাব হলো-
১. কাউকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মিনিমাম সদস্য হতে হলে তাকে অবশ্যই দেশের যেকোনও কলেজ, হল, বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির নেতা অথবা/পরীক্ষিত কর্মী, জেলা ছাত্রলীগের স্মার্ট ও শিক্ষিত নেতা হতে হবে।
২. যদি ছাত্রলীগ করার বয়স না থাকে অর্থাৎ পুনর্বার কমিটিতে যাওয়ার সুযোগ না থাকে, তাহলে ছাত্রলীগের অতীত পোস্টের ভিত্তিতে বা অবদান স্বরুপ তার পছন্দ অনুযায়ী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগসহ অপরাপর সহযোগী সংগঠনে নির্ভীক, ভদ্র ও মার্জিত আচানের অধিকারী সাবেক ছাত্রনেতাদের জায়গা করে দিতে হবে। (বিশেষ ক্ষেত্রে মাননীয় নেত্রী কাউকে মূল যায়গায় নেওয়া একান্ত উনার এখতিয়ার)
এরজন্য একটি মনিটরিং সেল থাকতে হবে, অবশ্যই তারা হবেন একসময়কার ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালনকারী তুখোড় নেতা যেমনটি রয়েছেন- আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বর্তমান আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি বর্তমান আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। উনারা দু'জনেই অতি বিচক্ষণতার সহিত উভয় সংগঠনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের সাথে বিশেষ বিশেষ সময়ে মতবিনিময় করে সুপরামর্শ প্রদান করেন।
এমনিভাবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি করার জন্য একটি মনিটরিং সেল গঠন এখন সময়ের দাবি। যেমনটি হয়েছিল ১৯৯৪ সালে ও আমাদের সময়ে ২০০২ সালে। নির্ভেজাল একটি কমিটি মাত্র ২৪ ঘন্টায় ওবায়দুল কাদের ও বাবু সুজিত রায় নন্দী দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। হয়তো কমিটির কলেবর ছোট ও বয়স হবার কারনে অনেকেই ঠাঁই পায়নি সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, করোনা মোকাবিলায় শুরু থেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। একদিকে তাদের ব্যর্থতা অন্যদিকে দুর্নীতি আর সমন্বয়হীনতায় পুরো স্বাস্থ্য বিভাগ ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। এখন করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এ জন্য পুরো দায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। বিশেষ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর। শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডিজি বা দুই-একজন কর্মকর্তার পদত্যাগই যথেষ্ট নয়, ব্যর্থতার দায় নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে।
বুধবার (২২ জুলাই) নাটোর শহরের আলাইপুরে বিএনপি কার্যালয়ে জেলা যুবদল আয়োজিত ভার্চুয়াল কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক এই ভূমি উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জেলা যুবদল সভাপতি এ হাই তালুকদার ডালিমের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন- জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শহিদুল ইসলাম বাচ্চু, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি গোলাম রাব্বানী, বিএনপি নেতা জিল্লুর রহমান বাবুল চৌধুরী, আনিসুর রহমান আনিস প্রমুখ।
রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, গণমাধ্যমে করোনার ফলাফল জালিয়াতির বিষয়টি বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। বিশ্বে এখন আমরা প্রায় একঘরে হয়ে পড়েছি। এটা দেশের জন্য কতটা অপমানজনক, তা এই সরকারের বোধগম্য হবে না। শুধু স্বাস্থ্য বিভাগই নয়, সব সেক্টরে সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম, লুটপাট ও বহির্বিশ্বে দেশের সুনাম নষ্ট করার জন্য এ সরকারের সরে যাওয়া উচিত।
তিনি বলেন, বর্তমান শাসক শ্রেণির লুটপাটকারীরা শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী টেন্ডারবাজি করেন। তার ছেলের নেতৃত্বে পিপিই দুর্নীতি ও মাস্ক দুর্নীতি হয়েছে। মিঠু বাহিনীর সঙ্গে মিলে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী শুধু পদত্যাগ করলেই হবে না, সংশ্লিষ্ট সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে। সবাইকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।
গণমাধ্যম আমার কাছে আয়নার মতো। আমি নিজেকে গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেখি। সাংবাদিকরা অবশ্যই ভালো কাজের সংবাদ প্রকাশ করবেন। খারাপ কাজ হলেও তার গঠনমূলক সমালোচনা করবেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, গণমাধ্যম আমার কাছে আয়নার মতো। আমি নিজেকে গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেখি। সাংবাদিকরা অবশ্যই ভালো কাজের সংবাদ প্রকাশ করবেন। খারাপ কাজ হলেও তার গঠনমূলক সমালোচনা করবেন। সংবাদের কোনো সেন্সরশিপ আমি প্রত্যাশা করি না। তবে অবশ্যই সাংবাদিকদের সেলফ সেন্সরশিপ থাকতে হবে।
বুধবার (২২ জুলাই) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত আইজিপি মইনুর রহমান চৌধুরী, শাহাবুদ্দীন কোরেশী, ইব্রাহীম ফাতেমী, ক্র্যাব সভাপতি আবুল খায়ের, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত কাওসার, দফতর সম্পাদক শহিদুল রাজী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাহীনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আইজিপি বলেন, মিডিয়া কর্মীদের আমরা সহকর্মী মনে করি। গত তিন মাসে বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান মুখচ্ছবি মানুষের কাছে তুলে ধরেছে মিডিয়া। সাংবাদিকদের কাছে বিভিন্ন সোর্স থেকে তথ্য আসবে এটাই স্বাভাবিক। তবে সংবাদ প্রকাশ করলে যদি তা দেশের এবং সমাজের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় তাহলে অবশ্যই আমার প্রত্যাশা থাকবে সাংবাদিকরা তার বিবেকের কাছে প্রশ্ন রেখে তা প্রকাশ করবেন।
পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, অবসর-পরবর্তী জীবনে যেভাবে পুলিশকে দেখতে চাই, ঠিক সেই টার্গেট নিয়েই কাজ করছি আমরা। এরই মধ্যে আমরা পাঁচটি টার্গেট করেছি। আমার সহকর্মীরা এর বাস্তবায়নে প্রাণান্তর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের মিডিয়া সম্পর্কে উচ্চাশা প্রকাশ করে পুলিশপ্রধান বলেন, আমাদের মিডিয়া কর্মীরা এক দিন আন্তর্জাতিক মান অর্জন করবে। এক সময় আমাদের দেশের সংবাদকর্মীদের বিদেশিরা প্রশংসা করবে। অতীতের মতো ভবিষ্যতেও সাংবাদিকদের পাশে থাকবে পুলিশ।
আইজিপি বেনজীরকে অত্যন্ত উঁচুমানের ‘আইকনিক লিডার’ হিসেবে আখ্যায়িত করে আবুল খায়ের বলেন, গত তিন মাসে মানুষ জেনে গেছে আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশ কীভাবে বদলে যাচ্ছে। এখন সর্বত্রই মানুষ পুলিশের প্রশংসা করছে, সুনাম করছে। আমাদের প্রত্যাশা এই ধারা অব্যাহত থাকবে। আইজিপি তার বক্তব্যের শুরুতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পুলিশ, সাংবাদিকসহ দেশে-বিদেশে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। অসুস্থদেরও দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। চিকিৎসকরা বলছেন তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। পরিবারও ক্রমাগত দাবি জানিয়ে আসছে তাকে বিদেশ যেতে দেয়া হোক। বিএনপির নেতারাও একই দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া কী চান তা জানা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ তিনি মুক্তি পাবার পর কোনো শব্দ করেননি। মিডিয়া অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে।
২৫ মাসের কারাবাসের মধ্যে একবছর খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। গত ২৫শে মার্চ স্বাস্থ্যগত কারণে তাকে শর্ত সাপেক্ষে ৬ মাসের জন্য মুক্তি দেয়া হয়।
তখন অবশ্য দু’টি শর্ত ছিল। এক. নিজের বাসায় থাকতে হবে। দুই. বিদেশ যেতে পারবেন না। এই শর্ত দু’টি তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। বিদেশ যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন সময় মিডিয়ায় খবর হয়েছে। কখনো পরিবার সূত্রে। আবার কখনো দলীয় নেতাদের আভাস ইঙ্গিতে। কিন্তু খালেদা জিয়ার কাছ থেকে কোনো বক্তব্য না আসায় সবকিছু জল্পনার মধ্যেই থেকে গেছে।
তবে সর্বশেষ একাধিক সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়া তার ঘনিষ্ঠজনদের বলেছেন তিনি আপাতত বিদেশ যেতে চাচ্ছেন না। কিন্তু কেন? তা তিনি খোলাসা করেননি। তবে একাধিক সূত্রের দাবি দেশের মানুষকে এই অবস্থায় রেখে তিনি বিদেশ না যাবার পক্ষেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদিকে ছয় মাসের মুক্তির মেয়াদ শেষে তার অবস্থান কী হবে তা এখনো অস্পষ্ট।
নারায়ণগঞ্জে ইজারা ছাড়াই হাট বসিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের বাড়িরটেক এলাকার পশুর হাটটির দরপত্র এখনও সম্পন্ন হয়নি। ইজারা না পেলেও হাটের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন। তার লোকজন নদীপথে জোর করে বেপারিদের ট্রলার থামিয়ে রেখে দিচ্ছেন পশু। বুধবার (২২ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে ২৬টি গরু ও ৪টি ছাগলবোঝাই ট্রলার আটকে জোর করে নামানো হয় এই হাটে।
সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এবার ১১টি পশুর হাটের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। গত ২১ জুলাই ৯টি হাটের ইজারা সম্পন্ন হয়েছে। গোগনগর ইউনিয়নের বাড়িরটেক এলাকার দেলোয়ার হোসেনের নিজস্ব ভূমির হাটটির ইজারা এখনও সম্পন্ন হয়নি। আগামী ২৬ জুলাই এই হাটের দরপত্র উন্মুক্ত করা হবে। তবে ইজারা না পেলেও হাটের সব কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন দেলোয়ার হোসেন। জোর করে নামিয়ে রাখছেন পশু। একই স্থানে গতবছরও হাটের ইজারা পেয়েছিলেন তিনি।
সরেজমিনে বেপারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের শাহ্জাদপুর থেকে ট্রলারবোঝাই পশু নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গোদনাইলের ইব্রাহিম টেক্সটাইল মিলসংলগ্ন বালুর মাঠের পশুর হাটের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন তারা। ওই হাটের ইজারাদার শাহ্ আলমের কাছ থেকে দাদনও (অগ্রিম টাকা) নিয়েছেন বলে জানান। কিন্তু জোর করে তাদের ট্রলার নিয়ে আসা হয়েছে সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের বাড়িরটেক এলাকার হাটে।
পশুর বেপারি শাহাদাত হোসেন জানান, ট্রলার নিয়ে যাবার সময় মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিমে তাদের থামিয়ে দেয়া হয়। তারপর জোর করে নিয়ে আসা হয় এই হাটে। সাত বেপারির ২৬টি গরু ও ৪টি ছাগল নামানো হয়েছে এই হাটে।
তিনি বলেন, গেছেবারও জোর কইরা এইখানে নামানো হইছিল। এইদিকে থাইকা অনেক ট্যাকা লস হইয়া গেছে। তাই চাইছিলাম বালুর মাঠের দিকে যাইতে। ওই হাটের মহাজনের থেইকা দাদনও নিছি। হেরা জোর করে নামাইছে এইখানে। যার যেইখানে জোর সে সেইখানে নামাইয়া দেয়। আমরা তো জোর খাটাইতে পারি না।
গোদনাইলের ইব্রাহিম টেক্সটাইল মিলসংলগ্ন বালুর মাঠের ইজারাদার শাহ্ আলম বলেন, আমার হাটে আসা গরু জোর করে গোগনগরের দেলোয়ারের হাটে নামিয়ে রাখা হয়েছে। আমি থানায় জানিয়েছি। প্রতি বছরই বিভিন্ন হাটে জোর করে গরু নামিয়ে রাখা হয়। এ বিষয়ে প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপ এবং নদীপথে পুলিশি টহল দাবি করেন এই ইজারাদার।
এদিকে মুঠোফোনে অভিযুক্ত গোগনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, মঙ্গলবার সকালে ইজারার জন্য কাগজপত্র জমা দেয়া হইছে। আমিই পাবো হাট। আর না পেলে যে পাবে তাকে দিয়ে দেব।
ইজারা পাবার আগেই আপনি হাটের কার্যক্রম শুরু করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। জোর করে গরু নামানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আসছি সিরাজগঞ্জ। আমার লোকজন এমন কিছু করছে কিনা তা জানা নেই।’
এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিকের মুঠোফোনের নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
তবে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, জোর করে পশু নামানোর বিষয়টি জানা নেই। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। হাট অবৈধ হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সারাদেশে ১৫ হাজার হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, অনুমোদন আছে ৪১৬৪টির
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক
সারাদেশে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ১৫ হাজার। এরমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমোদন আছে মাত্র ৪ হাজার ১৬৪টির। অবশিষ্ট ১০ হাজার ৮৩৬টির কোন অনুমোদন নেই। লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন এসব প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসার নামে চলছে প্রতারণা ও রোগী হয়রানি। ইতোমধ্যে অভিযান চালিয়ে কয়েকটি হাসপাতালের প্রতারণার চাঞ্চল্যকর তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানা গেছে, দেশে প্রাইভেট হাসপাতালের অনুমোদনের জন্য অধিদফতরে আবেদন জমা পড়েছে ১০ হাজার ৯৪০টি। এরমধ্যে ঢাকায় আবেদন জমা পড়েছে ৩ হাজার ৭৭টি। বর্তমানে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল ১ হাজার ৬৫৪টি। অন্য আবেদনগুলো এখনও তদন্ত পর্যায়ে আছে।
বিভাগীয় পর্যায়ে আবেদনের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে প্রাইভেট হাসপাতালের জন্য আবেদন জমা পড়েছে ২ হাজার ২২৭টি। বর্তমানে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ৭০৩টি। অন্যগুলো তদন্ত পর্যায়ে। রাজশাহী বিভাগের প্রাইভেট হাসপাতালের জন্য আবেদন জমা পড়েছে ১৫৮৫টি। তারমধ্যে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ৭৫৪টি। অন্যগুলো তদন্ত পর্যায়ে। রংপুরে আবেদন জমা পড়েছে ৮৪১টি। লাইসেন্সপ্রাপ্ত ১১৯টি। অন্য আবেদনগুলো তদন্ত পর্যায়ে।
খুলনা বিভাগে লাইসেন্সের জন্য আবেদন জমা পড়েছে ১৪৭৩টি। বর্তমানে লাইসেন্স আছে ৩৯১টি। বরিশাল বিভাগে আবেদন জমা পড়েছে ৬৫৮টি। বর্তমানে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ২৭৪টি। সিলেট বিভাগে হাসপাতালের জন্য আবেদন জমা পড়েছে ৪৪৮টি। বর্তমানে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ১৯৩টি। অন্যগুলো তদন্ত পর্যায়ে আছে। ময়মনসিংহ বিভাগে প্রাইভেট হাসপাতালের জন্য আবেদন জমা পড়েছে ৬৩৮টি। লাইসেন্সপ্রাপ্ত ৭৬টি। অন্যগুলো তদন্ত পর্যায়ে আছে।
এদিকে মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে গত ২১ জুলাই রাজধানীর শ্যামলী ঢাকা ট্রমা সেন্টার অ্যান্ড স্পেশালাইজড হসপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে কারণ দর্শানো নোটিস দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিদর্শন কমিটি গত ১৮ জুলাই সরেজমিন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে নানা অনিয়ম ধরা পড়ে। তারা হাসপাতালের কোন লাইসেন্স প্রদর্শন করতে পারেনি। অনলাইনে যাচাই করে দেখা যায় হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদ ২০১৮ সালের ৩০ জুনের আগেই শেষ হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকা শর্তেও কোন প্রকার মূল্য তালিকা উন্মুক্ত স্থানে প্রদর্শন করা হয়নি। পরিদর্শনকালে শয্যা সংখ্যা পাওয়া যায় ২৬টি (আইসিইউ ব্যতিত)। শয্যা সংখ্যা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জনবলের ঘাটতি দেখা গেছে। আইন অনুযায়ী প্রতি শিপটে কমপক্ষে ৩ জন চিকিৎসক, ৬ জন নার্স থাকা দরকার। তারমধ্যে মাত্র একজন চিকিৎসক পাওয়া গেছে। কোন নার্সিং কাউন্সিল কর্তৃক রেজিস্ট্রেশনের প্রাপ্ত নার্স পাওয়া পাওয়া যায়নি।
১৯৮২ সালের প্রাইভেট হাসপাতাল অর্ডিন্যান্সের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিল সংক্রান্ত বিবরণীতে কোন সার্ভিসের কত মূল্য তা উল্লেখ করা হয়নি। এ সংক্রান্ত অনিয়মের সম্ভবনা রয়েছে। হাসপাতালের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর। বিপজ্জনকভাবে অক্সিজেন রাখা হয়েছে। আইসিইউতে তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে। হাসপাতালটি আইসিইউ পরিচালনার জন্য উপযুক্ত নয়। হাসপাতালটির লাইসেন্স হাল নাগাদ নবায়ন না করা পর্যন্ত সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না তার সুস্পষ্ট জবাব আগামী ৭ দিনের মধ্যে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। গত ২১ জুলাই এ কারণ দর্শনানো নোটিস জারি করা হয়।
এ সম্পর্কে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মবিন খানের সঙ্গে তার মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি। তাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানা গেছে, লাইসেন্সের জন্য আবেদনকৃত নতুন প্রায় ২ হাজার প্রাইভেট হাসপাতাল এখনও অনুমোদনের অপেক্ষায় (পাইপ লাইনে) আছে। প্রয়োজনীয় কাজ চলছে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো লাইসেন্সের জন্য আবেদন জমা দিয়ে অনুমোদন অপেক্ষা না করে আগেই কাজ শুরু করে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। অধিকাংশ প্রাইভেট হাসপাতালের বিরুদ্ধেই অনিয়ম, প্রতারণা ও অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। পরীক্ষা থেকে অপারেশন, আইসিইউতে রোগী রাখাসহ সব কিছুতে অনিয়ম। দুই-একটি হাসপাতাল ছাড়া অধিকাংশই অর্থ বানিয়ে নেয়ার নানা অপকৌশল প্রয়োগ করে।
এক বছর পর পর নবায়ন করতে হয় হাসপাতালগুলোর লাইসেন্স। অনেকেই তা করে না। প্রাইভেট হাসপাতালের লাইসেন্সের জন্য পরিবেশ ছাড়পত্রসহ নানা কাগজ জমা দিতে হয়। এসব কাগজপত্র অনেকে দিতে না পারলেও তারা তড়িঘড়ি করে হাসপাতাল চালু করে দেয়।
এ সম্পর্কে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি প্রফেসর ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, আইনকে অমান্য করা একটা কালচারে পরিণত হয়েছে। যেহেতু স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে ঠিকমতো তদারকি করে না। এ সুযোগে সরকারের ফি ফাঁকি দেয়াসহ তারা নানা অনিয়ম করছে। প্রতিটি প্রাইভেট হাসপাতালে প্রকারভেদে ২৫ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ফি দিতে হয়। অনেকেই এটাও দেয় না। শুধু তাই না। হাসপাতালের প্রতি ১০ জন রোগীর জন্য ৩ জন ডাক্তার, ৬ জন নার্স ও ৩ জন ক্লিনার রাখতে হয়। ১৯৮২ সালের প্রাইভেট হাসপাতালের অর্ডিন্যান্সে এমন তথ্য থাকলেও বাস্তবে কিছুই মানা হয় না।
বিশিষ্ট আইসিইউ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. দেবব্রত বণিক বলেন, প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে অবশ্যই লাইসেন্স হালনাগাদ করতে হবে এবং হালনাগাদ থাকাও উচিত। আর হালনাগাদের প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে হবে। লাইসেন্স করতে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬টি সংস্থার ছাড়পত্র লাগে। আর স্পেশালাইজড হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের আরও গতিশীল হতে হবে। প্রতিটি হাসপাতালের ইনস্পেকশন করে রিপোর্ট হালনাগাদ করা দরকার। হাসপাতালগুলোর ল্যাবরেটরি, পরীক্ষাগার, অপারেশন থিয়েটার সব কিছু মানসম্মত কিংবা তদারকির পর ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে এ বিশেষজ্ঞ মনে করেন।
নিউরো স্পাইন সোসাইটি অফ বাংলাদেশের সভাপতি প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ হোসেন বলেন, প্রাইভেট হাসপাতালে প্রথমত অবশ্যই লাইসেন্স থাকতে হবে। চিকিৎসকরা রোগী দেখতে যেমন বিএমডিসির অনুমোদন লাগে। তেমনি লাইসেন্স ছাড়া হাসপাতাল চালুর অনুমোদনও বন্ধ রাখতে হবে। আর সেখানে চিকিৎসক নার্স হিসেবে যারা কাজ করবেন তাদের লাইসেন্সসহ অন্যান্য সুবিধা আছে কিনা তা জেনেই কাজ করতে হবে। আর অনেক হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার ভালো উন্নতমানের আবার অনেক হাসপাতালের নিম্নমানের। তা সরকারের অবশ্যই তদারকি করে মান উন্নত করা- এতে রোগীরাও যথাযথ চিকিৎসা পাবে এবং দেশের চিকিৎসা সেবারও মান আরও বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞের অভিমত।
এ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, দেশের অনেক প্রাইভেট হাসপাতাল নিয়ম-কানুন মানে না। স্বাস্থ্যসেবা সার্ভিসের জন্য এটা দুর্ভাগ্যজনক। কেউ কেউ আছে লম্পট। তারা প্রতারক সাহেদের মতো হাসপাতাল করে চিকিৎসা নিয়ে চরম প্রতারণা করছে। এ সব প্রাইভেট হাসপাতালের সরকারের কঠোর নজরদারি থাকা উচিত।
অন্য একজন চিকিৎসক বলেন, হাসপাতাল নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়। হাসপাতাল হবে চিকিৎসাকেন্দ্র। সেখানে চিকিৎসা ছাড়া অন্য কোন কিছু করা ঠিক হবে না। যারা চিকিৎসার নামে প্রতারণা করবে দেশের প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও কন্ট্রোলরুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বলেন, প্রাইভেট হাসপাতালের অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে দেশজুড়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞ তদন্ত টিম সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন। কোন কোন প্রাইভেট হাসপাতালে করোনাভাইরাস টেস্টসহ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিনিধিরা কাজ করছেন। প্রতিটি প্রাইভেট হাসপাতালের দুর্নীতি তদন্তে তারা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি কাজ করছেন। সম্প্রতি রাজধানীর যে কয়টি প্রাইভেট হাসপাতালে অনুসন্ধান করে অনিয়ম পাওয়া গেছে সে সবের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অধিদফতরের তদন্ত অব্যাহত আছে। অন্যান্য সংস্থাও প্রাইভেট হাসপাতালের অনিয়ম নিয়ে তদন্ত করছে। লাইসেন্স নবায়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রাইভেট হাসপাতালের নবায়নের কাজও চলছে। ইতোমধ্যে ২ হাজার ২শ’ হাসপাতাল নবায়ন করা হয়েছে।
পুলিশের একজন অপরাধ বিশেষজ্ঞ বলেন, যারা হাসপাতাল করতে লাইসেন্স দেয়। তারা আবেদনকারীদের নানাভাবে হয়রানি করে। আর অনেক প্রাইভেট হাসপাতাল তদন্ত ছাড়াই অনুমোদন দেয়া হয়। এ জন্য লাইসেন্সধারীদের অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া উচিত। না হলে অনিয়ম বন্ধ হবে না। জাল জালিয়াতি চলতে থাকবে। অনিয়ম ঠেকাতে আগে স্বাস্থ্য সেক্টরের অনিয়ম দূর করতে হবে। যে শর্ত দেয়া হয়, শর্ত পূরণ করতে গেলে সেখানে পদে পদে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। প্রক্রিয়া আরও সহজ করা দরকার বলে পুলিশের এ অপরাধ বিশেষজ্ঞ মনে করেন।
অপরাধবিষয়ক বিশিষ্ট আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ গাজী বলেন, যারা প্রাইভেট হাসপাতাল করার অনুমতি দেয়। তাদের অবৈধ কাজেরও সুযোগ করে দেয়া হয়। উভয়ের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন।
এ সম্পর্কে র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, যে সব প্রাইভেট হাসপাতালের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সে সব হাসপাতালের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রমাণসাপেক্ষ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত রিজেন্ট সাহাবউদ্দিন মেডিকেল হাসপাতালসহ কয়েকটি হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে তাদের জালিয়াতি ও করোনা টেস্ট রিপোর্ট জালিয়াতি, অপারেশন থিয়েটারে মেয়াদোত্তীর্ণ সার্জিক্যাল আইটেম ব্যবহারসহ নানা অনিয়ম উদ্ঘাটন করে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে। র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলমান আছে। র্যাবের এ অভিযান সফল হওয়ায় সাধারণ মানুষ প্রশংসা করছেন। জালিয়াত প্রতারক সাহেদ ধরা পড়ার ফলে অন্য হাসপাতালের জালিয়াতি ও অনিয়ম নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে।
ইতিহাসের উজ্জ্বল নক্ষত্র তাজউদ্দীন আহমদের জন্মদিন আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা তাজউদ্দীন আহমদের ৯৫তম জন্মদিন আজ। ১৯২৫ সালের এই দিনে (২৩ জুলাই) গাজীপুর জেলার অন্তর্গত কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
মৌলভী মো. ইয়াসিন খান ও মেহেরুননেসা খানের এই সন্তান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী বাংলাদেশ বা মুজিবনগর সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সহধর্মিণী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন আমৃত্যু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ছিলেন।
তাজউদ্দীন আহমদ ১৯৪৩ সালে মুসলিম লীগের রাজনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হন। ১৯৪৪ সালে তিনি বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি গঠিত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের (বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। ১৯৫০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন।
রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে তিনি ভাষা আন্দোলনকালে গ্রেপ্তার হন এবং কারা নির্যাতন ভোগ করেন।
তিনি পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ১৯৫১ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত এ সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন এবং পরে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬৪ সালে রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে কারাগারে থাকা অবস্থায় এলএলবি পাস করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৯৬৬ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।
১৯৭০ সালে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ভারতে যান এবং প্রবাসী সরকার গঠনের চিন্তা করেন। ৪ এপ্রিল দিল্লীতে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তাজউদ্দীনের আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়। ১০ এপ্রিল আগরতলায় সরকার গঠন করার উদ্যোগ নেন। এই সরকার স্বাধীন সার্বভৌম ‘গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’। স্বাধীনতার সনদ (Charter of Independence) বলে এই সরকারের কার্যকারিতা সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে তাজউদ্দীন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তিনি মুক্তিযুদ্ধকে সফল সমাপ্তির দিকে নিয়ে যেতে অসামান্য অবদান রাখেন।
তাজউদ্দীন আহমদ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন একজন সৎ ও মেধাবী রাজনীতিবিদ। দেশের মানুষ তাকে ভালোবেসে ডাকতেন বঙ্গতাজ বলে।পাকহানাদারদের কাছ থেকে দেশ মুক্ত হলে ১৯৭১ সালের ২২ ডিসেম্বর তাজউদ্দিন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে এলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সালে ঢাকা-২২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় বাজেট পেশ ও প্রথম পাঁচশালা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন তাজউদ্দীন আহমদ।
১৯৭৪ সালের ২৬ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এরপর তাজউদ্দীন আহমদ গ্রেপ্তার হন এবং ৩ নভেম্বর কারাগারের ভেতরে আরও তিন জাতীয় নেতাসহ নিহত হন।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড (বেক্সিমকো ফার্মা বা বিপিএল) জেনেরিক ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য উৎপাদন ও অ্যান্টি-ভাইরাল রেমডেসিভির (ব্র্যান্ডের নাম বেমসিভির) ইনজেকশন রপ্তানি করে আসছে। আজারবাইজান, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন এবং ভেনিজুয়েলাসহ বেশ কয়েকটি দেশের হাসপাতালে ভর্তি কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে এই ইনজেকশন। মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক গিলিয়াড সায়েন্সেস দ্বারা উৎপাদিত রেমডেসিভির একটি অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ যা সরাসরি ভাইরাল আরএনএ প্রতিরোধে কাজ করে এবং মার্কিন এফডিএ গুরুতর কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য এই ড্রাগটিকে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে।
গত ২১শে মে ডিজিডিএ’র কাছ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর বেক্সিমকো ফার্মা বাংলাদেশে রেমিডেসিভি’র জেনেরিক তৈরি শুরু করে। ওষুধের জেনেরিক তৈরির প্রবর্তনকারী হিসেবে বিশ্বে প্রথম রেমডেসিভি’র উৎপাদন করে বাংলাদেশ। সংস্থাটি বিনামূল্যে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোভিড-১৯ চিকিৎসায় পরিচালিত হাসপাতালগুলোতে রেমডেসিভির সরবরাহ করে আসছে।
এক বোতল রেমডেসিভিরের দাম পড়ছে ৫৫ ডলার থেকে ৬৫ ডলার। করোনা রোগের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে এই ওষুধ ৬ থেকে ১১ বোতল প্রয়োজন হয় প্রত্যেক রোগীর।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান এমপি বলেন, দেশে উৎপাদিত রেমডেসিভির দ্বারা বাংলাদেশের পাশাপাশি অন্যান্য দেশের রোগীদের জীবন বাঁচাতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্বের প্রথম জেনেরিক রেমডেসিভির উৎপাদন করে এই ওষুধটি মধ্যম ও নিম্নআয়ের দেশের রোগীদের কাছে স্বল্পমূল্যে পৌঁছে দিতে পেরে আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করেছি।
কোভিড-১৯ মহামারির প্রতিক্রিয়া হিসেবে এরই মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মা করোনা রোগীদের চিকিৎসায় বিভিন্ন সক্রিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সংস্থাটি বর্তমান মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সম্ভাব্য সকল উপায়ে বেক্সিমকো ফার্মা এর মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক গবেষণা, উন্নয়ন ও উৎপাদনে মনোনিবেশ করেছে। বেক্সিমকো ফার্মা ইতিমধ্যে সম্ভাব্য চিকিৎসার জন্য অ্যান্টি ভাইরাল ড্রাগ ফ্যাভিপিরাবির (ব্র্যান্ডের নাম ভিরাফ্লু) চালু করেছে।
পাশাপাশি করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত ‘অ্যান্টিমালারিয়াল ড্রাগ হাইড্রোক্সাইক্লোরোকুইন (ব্র্যান্ডের নাম কোভিসিন) এবং এন্টি-প্যারাসাইটিক ইভারমেক্টিন (ব্র্যান্ডের নাম ইভেরা) উৎপাদন করছে।’
বেক্সিমকো ফার্মা বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যালসের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এই সংস্থা ৫০ টিরও বেশি দেশে নিজেদের তৈরি ওষুধ রপ্তানি করছে। ইউএস এফডিএ, মাল্টা মেডিসিন কর্তৃপক্ষ (ইইউ), টিজিএ (অস্ট্রেলিয়া), হেলথ কানাডা, জিসিসি (উপসাগরীয়) এবং টিএফডিএ (তাইওয়ান)সহ শীর্ষস্থানীয় আর্ন্তজাতিক নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের দ্বারা অনুমোদিত।
সরকারি নির্দেশনা, সুরক্ষানীতি মেনে আসন্ন ঈদুল আজহায় গণপরিবহন চলাচল করবে। এবার ঈদ উপলক্ষে নতুন করে বাসের ভাড়া বৃদ্ধি পাচ্ছে না।
জানা গেছে, গত সোমবার (২০ জুলাই) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কার্যালয়ে মালিক-শ্রমিক সংগঠন, বিআরটিএ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরা বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে দুই সিটে একটি ফাঁকা রাখায় লোকসান হচ্ছে উল্লেখ করে ভাড়া বৃদ্ধির দাবি উত্থাপন করা হলেও তা কর্ণপাত করেনি বিআরটিএ। বরং চলাচলের অনুমতির শর্তগুলো কঠোরভাবে মানার নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি।
বৈঠকে অংশ নেয়া বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, বিআরটিএ-এর সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, সুরক্ষানীতি মেনেই গণপরিবহন চলবে। সুরক্ষানীতি মানার জন্য আমরা মালিকপক্ষকে চিঠি দেব।
তিনি আরও বলেন, শর্ত অনুযায়ী, এক সিট খালি রেখে বাস চলছে। কিন্তু তাতে মালিকদের লোকসান হচ্ছে। এমনিতেই যাত্রী কম, ঈদে তো আরও বেশি লোকসানের সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ ফিরতি যাত্রী থাকবে না। এভাবে চলাচল করা খুবই কঠিন। তবুও আমরা সেটা মানার এবং বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, আগের নির্দেশনার মতোই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদেও সামাজিক দূরত্ব ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে গণপরিবহন চলবে। রাস্তায় যেখানে খানাখন্দ রয়েছে, যানজট থাকছে, সেখানে ঈদের আগেই বাড়তি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। সওজ, ট্রাফিক বিভাগ, হাইওয়ে পুলিশকে সেদিকে নজর দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন সচিব মহোদয়।
বিআরটিএ-এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সরকার এবার তিনদিনের বেশি ছুটি দিচ্ছে না। তাছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলেই থাকতে বলেছে। এমনিতে যাত্রী কম। সবমিলে ঈদকেন্দ্রীক এবার গণপরিবহনে চাপ কম থাকবে। যাদের ঈদে বাড়ি যাওয়া খুব দরকার, তারা যাবে। পরিবহনের মালিকদের যদি পোষায় গাড়ি চালাবে। লোকসান হলে চালাবে না। কিন্তু ভাড়া আর বৃদ্ধি করা যাবে না।
এর আগে গত ৩ মে করোনাকালীন ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। গত ৩০ জুন রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত অফিস, গণপরিবহনসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কীভাবে পরিচালিত হবে এবং কোন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে সেই বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে গণপরিবহনে যাত্রী পরিবহনের বিষয়ে বলা হয়, গণপরিবহনসহ সব ধরনের যানসমূহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করে চলাচল করবে। আসন্ন ঈদুল আজহায় প্রথমে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকার সিদ্ধান্ত হয়। তবে সুরক্ষানীতি বাস্তবায়নের শর্তজুড়ে দিয়ে গণপরিবহন চলাচলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে সরকার।
এদিকে পরিবহন মালিকদের সংগঠন বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতি ঈদেই কমপক্ষে ২০/২৫ দিন আগে থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। কিন্তু এবার প্রেক্ষাপট একেবারেই ভিন্ন। এবার তারা ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রির কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
করোনার নমুনা পরীক্ষায় প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের বিচরণ ছিল প্রতারণার প্রতিটি স্তরেই। প্রতারক সাহেদ জড়িত ছিল মাদক কারবারেও।
রিজেন্টকাণ্ডে গ্রেপ্তার সাহেদ এখন ঢাকা মহানগর উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের রিমান্ডে আছে। বুধবার (২২ জুলাই) তার রিমান্ডের ষষ্ঠদিন অতিবাহিত হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদরত কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, রিমান্ডে সাহেদ নানা টালবাহানা করছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, অনলাইনে সাহেদ মাদক কারবার পরিচালনা করতো। অনলাইনে অর্ডার দিয়ে বিদেশ থেকে আনতো মাদক ‘ব্লু আইশ’। অনলাইনে মাদক ব্যবসার বিষয়টি দেখভাল করতো রিজেন্ট গ্রুপের ট্রান্সপোর্ট শাখার জেনারেল ম্যানেজার নাজিম উদ্দিন। আর নিয়ন্ত্রণ করতো তার কর্মচারী রাহিদ এবং সুমন। দুইটি অনলাইন ঠিকানায় মাদকের কারবার চালাতো সাহেদ। সেগুলো হচ্ছে- ইন্টারেস্ট বিডি.কম এবং আরেকটি কক্সবিডি.কম। কক্সবাজারের সীমান্ত এলাকা থেকে ঢাকায় ইয়াবা নিয়ে আসতো সে।
সাহেদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার লোকজন অনলাইন দুইটির ঠিকানা বন্ধ করে দিয়েছে। মাদকের কারবারে সাহেদের সঙ্গে আরো যারা জড়িত তাদের কয়েকজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়ানোর জন্য সাহেদ অনলাইনে মাদকের কারবার চালিয়ে গেছে। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে সাহেদ কক্সবাজার ভ্রমণ করার সময় সেখানে একটি অভিজাত হোটেলে টেকনাফের অশ্বিন কুমার নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে সাহেদকে সে অনলাইনের মাধ্যমে মাদকের কারবার করার পরামর্শ দিলে সে তা লুফে নেয়। অশ্বিন কুমার মূলত তাকে মাদক সরবরাহ করতো। সাহেদ মাদক পরিবহনে এম্বুলেন্স ব্যবহার করতো। অনলাইনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বিদেশ থেকে অভিজাত শ্রেণির মাদক ব্লু আইশ দেশে নিয়ে আসতো। সেই মাদক সে ঢাকার একাধিক অভিজাত হোটেলগুলোতে সরবরাহ করতো। মাদকের টাকা লেনদেন হতো হুন্ডি ও বিকাশে।
এ বিষয়ে মামলার মুখ্য তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) এডিসি বদরুজ্জামান জিল্লু জানান, রিমান্ডে সাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই চলছে।
এছাড়াও রুপালি পর্দা সিনেমা জগতের প্রযোজক হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। তার ফাঁদে পড়ে দুই তারকা দম্পতির সংসার তছনছ হয়ে গেছে। তাদের সংসার ভাঙার পেছনে সাহেদ দায়ী। একই জগতে প্রেমে ব্যর্থও হয়েছেন তিনি। এক নায়িকার প্রেমে পড়ে তাকে বিয়ে করতেও চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়ে উঠেনি। জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দিয়েছেন সাহেদ।
জানা গেছে, চুক্তিতে ব্যবসা করা, কোম্পানি খোলা, অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ব্যবসা, বড় বিজনেসের ট্রেড লাইসেন্স করে দেয়ার নামে অনেক ব্যবসায়ী তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন। অনেকেই তার কাছে টাকা চাইতে এসেছিলেন। কিন্তু, তাদের টাকা দেয়ার বদলে হুমকি দিয়েছে। কাউকে রিজেন্ট হাসপাতালের একটি কক্ষে অনেকক্ষণ বসিয়ে রেখে মানসিক নির্যাতন করেছে। অথবা পাওনাদারকে তার গ্যাং বাহিনী দিয়ে এক রুমে নিয়ে টর্চার করেছে। কাউকে ভুয়া চেক দিয়েছে।
করোনাভাইরাসের পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া, সরকারের কাছে বিল দেওয়ার পর আবার রোগীর কাছ থেকেও অর্থ নেওয়াসহ রিজেন্ট হাসপাতালে নানা অনিয়মের খবর সম্প্রতি প্রকাশ্য হয়েছে র্যাবের অভিযানের মধ্য দিয়ে। গত সপ্তাহে ওই অভিযানের পর রিজেন্টের দুটি হাসপাতাল বন্ধ করে দেয় র্যাব। ওই হাসপাতালের অনুমোদনও বাতিল করা হয়।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ১৫ জুলাই সকালে সাতক্ষীরা দেবহাটা সীমান্ত এলাকা থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।পরে ১৬ জুলাই তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। সাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গোয়েন্দা পুলিশ এখন তাকে দশ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।