সবার কাছে শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন রফিক-উল হক
জাতীয়
নিজস্ব প্রতিবেদকখ্যাতিমান আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হক চলে গেলেন। শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
আদ-দ্বীন হাসপাতালের পরিচালক ডা. অধ্যাপক নাহিদ ইয়াসমিন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দেশের আইনাঙ্গনের নক্ষত্র ছিলেন প্রবীণ এই আইনজীবী। দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন তিনি।
আইন পেশায় ৬০ বছর পার করা এই খ্যাতিমান আইনজীবী ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনি লড়াই করেন। নিজের প্রজ্ঞা ও মেধা দিয়ে দেশের উচ্চ আদালতকে সহযোগিতা করে অনেকবার হয়েছেন (অ্যামিকাস কিউরি) আদালতের বন্ধু। দেশের জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবীর সান্নিধ্যে এসে আইন পেশায় সফল হয়েছেন অনেকেই। তার জুনিয়র দেশের প্রধান বিচারপতিও হয়েছেন। জীবনের দীর্ঘ পথচলায় শুধু বাংলাদেশই নয়, ভারত, পাকিস্তান ও ব্রিটেনের নাগরিক হওয়ার বিরল অভিজ্ঞতা অর্জন করেন রফিক-উল হক।
ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত থাকার প্রেক্ষাপটে ইন্দিরা গান্ধী, নেহরু ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সান্নিধ্য পেয়েছেন তিনি। হিন্দু আইন নিয়ে বার-অ্যাট-ল করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দু আইন বিষয়ে ক্লাসও তিনি। এছাড়া বিভিন্ন সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে পরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রথিতযশা এই আইনজীবী নিজের উপার্জিত অর্থের একটা বড় অংশই ব্যয় করেছেন সেবামূলক কর্মকাণ্ডে। দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠা করেছেন বেশ কয়েকটি হাসপাতাল, এতিমখানা, মসজিদ ও মেডিক্যাল কলেজ। এছাড়া যেখানে সুযোগ পেয়েছেন, সেখানেই হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন মানবতার সেবায়।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে। ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৫৮ সালে এলএলবি পাস করেন। ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার এট ল সম্পন্ন করেন। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন তিনি।
১৯৯০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রফিক-উল হক। কিন্তু কোনো সম্মানী নেননি। পেশাগত জীবনে তিনি কখনো কোনো রাজনৈতিক দল করেননি। তবে, নানা সময়ে রাজনীতিবিদরা সব সময় তাকে পাশে পেয়েছেন।
চলে গেলেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক
পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম
Post Written by :
Original Post URL : https://ppbd.news/national/177801/সবার-কাছে-শ্রদ্ধার-পাত্র-ছিলেন-রফিক-উল-হক
Post Come trough : PURBOPOSHCIMBD