তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, জনগণ এমনকি কর্মীদের থেকেও বিচ্ছিন্ন বিএনপি নেতারা। তাঁরা অস্তিত্ব প্রমাণের জন্যই শুধু টিভির পর্দায় কথা বলেন।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক মিয়া আলাউদ্দিন, কার্যনির্বাহী সদস্য আওলাদ হোসেন প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের সরকার দুর্নীতিতে বেসামাল মন্তব্যের প্রতি তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, সীমাহীন দুর্নীতি- দুঃশাসনের কারণে যারা দেশকে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল, একবার অবশ্য আফ্রিকার একটি দেশের সঙ্গে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন, সেই বিএনপির মুখপাত্র হচ্ছেন রিজভী আহমেদ। তাঁরা যখন দুর্নীতির কথা বলেন, তখন লোকে হাসে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, পেট্রলবোমার রাজনীতি করার কারণে তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শুধু জনগণ থেকেই নয়, বিএনপি নেতারা তাঁদের কর্মীদের কাছ থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। টেলিভিশনে উপস্থিতির মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের অস্তিত্বটা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন এবং সেই লক্ষ্যেই বিভিন্ন কথা বলেন, এ ছাড়া অন্য কিছু নয়।
বন্যা মোকাবিলায় সরকারের তৎপরতা সম্পর্কে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বন্যা-দুর্যোগ মোকাবিলায় অতীতেও সক্ষমতা দেখিয়েছেন, এখনো সফলভাবে বন্যা মোকাবিলা করছেন। ১৯৯৮ সালে যে ভয়াবহ বন্যায় দেশের ৭৫ ভাগ স্থল তিন মাস পানির নিচে ছিল, তখনো অনাহারে মানুষ মৃত্যুবরণ করেনি। এবং সেই বন্যাকে সফলভাবে মোকাবিলা করে তিনি বিশ্ববাসীকে তাঁর সক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে গত সাড়ে ১১ বছরে যত প্রাকৃতিক দুর্যোগ-বন্যা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সেগুলো সফলভাবে মোকাবিলা করে দুর্যোগের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করেছেন। এখনো বন্যা মোকাবিলায় তাঁর নেতৃত্বে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়সহ পুরো সরকার কাজ করছে, বন্যার্তদের কাছে সাহায্য পাঠানো থেকে শুরু করে সবকিছু করা হচ্ছে। আর যাঁরা এ নিয়ে টেলিভিশনে বসে বসে কথা বলছেন, তাঁরা কিন্তু বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াননি, মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দলের নেতা–কর্মীরা স্ব স্ব জায়গায় যেখানে বন্যা হয়েছে, সেখানে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি আবারও আমাদের দলের নেতা–কর্মীদের কাছে অনুরোধ জানাব, যত দিন বন্যা থাকবে, তত দিন তারা যেন মানুষের পাশে থাকে।
করোনা কমলে হল পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত
চলচ্চিত্র শিল্প প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার হাত ধরে ১৯৫৭ সালে যে শিল্পের যাত্রা শুরু, সেই শিল্পের স্বর্ণালি যুগ ফিরে আনতে আমরা কাজ করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে এই শিল্পকে কীভাবে বাঁচানো যায়, কীভাবে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়, কীভাবে আমাদের দেশের বাংলা ছবি আন্তর্জাতিক বাজারেও স্থান করে নিতে পারে, সে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সব সময় চিন্তা করেন, আমাকেও নানা নির্দেশনা দিয়েছেন, আমি তাঁর সাথে আলোচনাও করেছি, জানান হাছান মাহমুদ।
বর্তমান পরিস্থিতিতে সিনেমা হল খোলার প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বন্যা পরিস্থিতি ও করোনার কারণে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার বাধ্যবাধকতার ফলে এ বিষয়ে আরেকটু ধীরে সুস্থে এগোনো ভালো হবে বলে মনে হয়। করোনার প্রকোপ যখন একেবারে কমে যাবে, তখন আমরা সিনেমা হল পুনরায় চালু করার বিষয়টি আবার আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারি। বিপুল দর্শক থাকা সত্ত্বেও এখনো ভারতে সিনেমা হল খুলে দেওয়া হয়নি, পাকিস্তানেও তা–ই।
এ সময় চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাসের প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রী জানান, সিনেমা হলগুলোর বিদ্যুৎ বিল বাণিজ্যিক হারের পরিবর্তে শিল্প হারে নির্ধারণের জন্য ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আর বিদেশি চলচ্চিত্র আমদানির বিষয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্যের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিনেমা হল আধুনিকায়ন ও নতুন করে চালু করার জন্য স্বল্প সুদে ব্যাংকঋণের বিষয়ে অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গেও আলোচনা চলছে।