২০২১ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে প্রায় ৭০ লাখ কপি বইয়ের চাহিদা কমেছে। তবে প্রাথমিক স্তরে বইয়ের সংখ্যা কমছে না বলে জানা গেছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক স্তরের জন্য মোট ২৪ কোটি সাত লাখ কপি বই মুদ্রণের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ হিসেবে গতবারের চেয়ে এবার প্রায় ৭০ লাখ কপি বই কম ছাপা হচ্ছে।
এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক প্রফেসর জিয়াউল হক বলেন, বিগত সময়ে ম্যানুয়ালি বইয়ের চাহিদাপত্র সংগ্রহ করা হতো, মাউশি কর্তৃপক্ষ শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে স্কুল থেকে চাহিদাপত্র সংগ্রহ করে এনসিটিবিকে দিতো। এতে অনেকেই বাড়তি বইয়ের চাহিদা জমা দিত। কিন্তু প্রথমবারের মতো এবার আমরা নিজ উদ্যোগেই বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে সরাসরি স্কুল প্রধানদের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহ করেছি। এতে সঠিক তথ্য এসেছে। এছাড়া মাধ্যমিকে বাফার স্টকের (আপদকালীন মজুদ) জন্য বই ছাপার প্রয়োজন পড়ছে না। এ কারণে এবার ৫০/৬০ লাখ কপি বই কম ছাপতে হচ্ছে।
চলতি শিক্ষাবর্ষে সারাদেশের চার কোটি ২৭ লাখ ৫২ হাজার ১৫৮ জন শিক্ষার্থীর কাছে ৩৫ কোটি ৩৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৯৭ কপি পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়। এরমধ্যে প্রাথমিকের ১০ কোটি ৫৪ লাখ ২ হাজার ৩৭৫ কপি এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ২৪ কোটি ৭৭ লাখ ৪২ হাজার ১৭৯ কপি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।
অধীনস্ত জুনিয়র নারী কর্মীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে বরখাস্ত হলেন নিউজিল্যান্ডের এক মন্ত্রী। ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, এক বছর ধরে ওই কর্মীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন দেশটির অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী ইয়াইন লেস গেলওয়ে। এর জেরে তাকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন।
মঙ্গলবার (২১ জুলাই) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, অফিসে কর্মরত এক নারী কর্মীর সঙ্গে ইয়াইন লেস গেলওয়ের এক বছর ধরে অনৈতিক সম্পর্কের কথা জানতে পেরেছি। সে কারণে তাকে বরখাস্ত করা হলো।'
লেস গেলওয়ের বিরুদ্ধে জাসিন্ডার অভিযোগ, তিনি তার নিজের ভূমিকা সঠিকভাবে রক্ষা করতে পারেননি। তার দায়িত্ব ছিল কর্মক্ষেত্রের সম্পর্ক ও সুরক্ষার তদারকি করা কিন্তু তা তিনি করেননি। এই ধরনের কাজ একজন মন্ত্রী হিসাবে তার প্রতি আস্থা হারাতে আমাকে বাধ্য করেছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ৪১ বছর বয়সী লেস গেলওয়ে নিজেই। পাশাপাশি কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
বরখাস্ত হওয়া এই মন্ত্রী জানান, সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত দেশটির আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে তিনি পুনরায় নির্বাচন করবেন না। আমি আমার পদের পুরোপুরি অনুপযুক্ত এবং একজন মন্ত্রী হিসেবে আমি আর দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারি না।
এই ঘটনার মাত্র একদিন আগে যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় দেশটির বিরোধী দলের এমপি অ্যান্ড্রু ফ্যালন পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীসহ বেশ কয়েকজন নারীকে অশালীন ছবি পাঠানোর অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। তবে এই অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি ফ্যালন।
বিশ্বকাপ স্থগিত হওয়ায় এবার সেই সময়টাকে কাজে লাগাতে উঠে পড়ে লেগেছে বিসিবি। এরইমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে স্থগিত হওয়া শ্রীলংকা সফর নিয়ে। আলোচনার তালিকায় রয়েছে আয়ারল্যান্ড সিরিজও।
অবশ্য দেশের করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ড সিরিজ নিয়ে ভাবতে চাইছে না বিসিবি, বলে জানিয়েছেন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।
চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিত করার সাথে আরও দুটি বিশ্ব আয়োজনের নতুন সময় ঘোষণা করেছে আইসিসি। আর তাতেই স্থগিত হয়ে যাওয়া দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলো নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে বাংলাদেশসহ অন্যরা।
শুরুতেই বিসিবির বিবেচনায় শ্রীলংকা সফর। দ্বীপদেশটাতে করোনার প্রকোপ প্রবল নয় বলে এরইমাঝে সিরিজ নিয়ে আলোচনাও শুরু করে দিয়েছে দুই বোর্ড।
শ্রীলংকা ছাড়াও স্থগিত টাইগারদের আয়ারল্যান্ড সফর। অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড দলের বাংলাদেশ সফরও। অচিরেই আয়ারল্যান্ড সফর নিয়ে স্বাগতিক বোর্ডের সাথে যোগাযোগ শুরুর ভাবনা আছে বিসিবির। তবে দেশের করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত অজি-কিউইদের সফর নিয়ে ভাববে না বিসিবি…সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী।
এসব আন্তর্জাতিক সূচির বাইরে ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে গভীরভাবে ভাবছে বিসিবি। শ্রীলংকা সফর নিয়ে সিদ্ধান্ত হলেই জানা যাবে ঘরোয়া ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ।
Post Written by : Rubel Islam
Original Post URL : https://ift.tt/2ZOFpF4
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ
নরসিংদীর পলাশে প্রাণ ফ্যাক্টরিতে অনুমোদনহীন হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি ও বাজার জাতকরণের অভিযোগে দশ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার ডাঙ্গা এলাকায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রাণ চরকা ফ্যাক্টরিতে অভিযান চালিয়ে এ অর্থদণ্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পারভেজ মল্লিক।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা ড্রাগস সুপারসহ র্যাব ১১ এর একটি অভিযানিক দল নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় অনুমোদন না থাকায় প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। বিপুল পরিমাণ অনুমোদনহীন হ্যান্ড স্যানিটাইজার জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে।
এছাড়া কোম্পানির হবিগঞ্জ কারখানায় উৎপাদনের অনুমতি থাকলেও সার্জিক্যাল মাস্ক পলাশের চরকা কারখানায় উৎপাদন করছিলো প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে এসব পণ্য অনুমোদন ছাড়া উৎপাদন না করার শর্তে মুচলেকা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) মোস্তাক আহমেদ জানান, অফিসের বাইরে থাকায় তিনি বিস্তারিত কিছু জানেন না।
Post Written by : Rubel Islam
Original Post URL : https://ift.tt/3hlMWky
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ
না ফেরার দেশে চলে গেলেন প্রবাসের জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী অনুপ কুমার দাস (৫৬)। চলতি মাসেই অর্থাৎ আগামী ৩১ জুলাই তার বয়স ৫৭ বছর পূর্ণ হতো। সোমবার (২০ জুলাই) সকালে নিজ ফ্ল্যাটে তাকে মৃত পাওয়া যায়। তার মৃত্যুর কারণ জানা না গেলেও তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে তিনি দীর্ঘ দিন ধরে কিডনী সমস্যায় ভুগছিলেন। তার দুটো কিডনি নষ্ট ছিল। ময়নাতদন্তের পর তার প্রকৃত মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। মৃত্যুকালে তিনি বাবা অমূল্য দাস, মা সুপ্রিয়া দাস, দুই ভাই আর এক বোন সহ বহু শুভাকাঙ্খী রেখে যান। তার আকস্মিক মৃত্যুতে নিউইয়র্কের বাংলাদেশী কমিউনিটি বিশেষ করে সংস্কৃতি মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উল্লেখ্য, অনুপ কুমার দাস কমিউনিটির পরিচিত মুখ শিতাংশু গুহ’র শ্যালক।
জানা গেছে, অনুপ কুমার দাস নিউইয়র্কের বাংলাদেশী অধ্যুষিত ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার শায়ারের একটি ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। ছিলেন চিরকুমার। তার অসুস্থ বাবা-মা দীর্ঘদিন ধরে নার্সিংহোমে। তাদের নিয়মিত দেখতে যেতেন অনুপ কুমার। তিনি বাপা’র প্রতিষ্ঠাদের অন্যতম এবং সংগঠনটির নৃত্য শিক্ষক ছিলেন। তার মৃতদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী কুইন্সের করোনার একটি ফিউনেরাল হোমে তার শেষকৃত্যু অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে। খবর ইউএনএ’র। বাফা সভাপতি ফরিদা ইয়াসমীন জানান, বিগত নয় বছর ধরে উনি আর আমি এক সঙ্গে বাফায় কাজ করছি। তিনি আমার পরিবারের সদস্য হয়ে গিয়েছিলেন। মনে হচ্ছে তার মৃত্যুতে যেন নিজের ভাইকে হারালাম।
তিনি জানান, অনুপ দাদা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গত মঙ্গলবার (২১ জুলাই) হাসপাতালে অনুপ কুমারের ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। নিজেই বাসায় ডায়ালাইসিস করতেন। ব্রুস নামে তার এক বন্ধু অনুপের নিয়মিত খোঁজখবর রাখতেন। ডাক্তারের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট থাকলে ব্রুস-ই এসে তাকে নিয়ে যেতেন। ব্রুসের কাছে অনুপের বাসার চাবি ছিল। ব্রুস জানান, সোমবার দিন (২০ জুলাই) বন্ধুকে দেখতে বেলা দুইটার দিকে অনুপকে গিয়ে ঘরে তাকে মৃত পড়ে থাকতে দেখেন। অনুপের মোবাইলের কললিস্ট দেখে ব্রুস আমাকে ফোন জানান।
নিউইয়র্কের কমিউনিটি নেতা শিতাংশু গুহ মিডিয়াকে জানান, অনুপ কুমার দাস সর্বশেষ গত ১৮ জুলাই জুমে ছাত্রীদের ক্লাস নিয়েছেন। আগের দিন ১৭ জুলাই ফোনে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। ১৯ জুলাই কারও সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর দুটি কিডনিই নষ্ট। প্রতিদিন রাতে নিজের ডায়ালাইসিস নিজেই করতেন। ধারনা করা হচ্ছে যে, ১৯ জুলাই গভীর রাতে ডায়ালাইসিস করার সময় সম্ভবত তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর সোমবার (২০ জুলাই) দুপুরে তাকে ম্যানহাটনের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার জানান, ‘প্রায় ১০ ঘণ্টা আগে’ তার মৃত্যু হয়েছে।
চট্টগ্রামের হাটহাজারীর সন্তান ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স শেষ করার পর উচ্চ শিক্ষার জন্য দিল্লীতে স্কলারশিপ পান। পরবর্তীতে তিনি মাস্টার্স শেষ না করেই চলে যান ভারতে। শান্তিনিকেতনে প্রথম এক বছরে কথাকলি ও মণিপুরী শিক্ষার পর ‘নাট্যম ও কত্থক নৃত্য’ শিখতে দিল্লি চলে যান। সেখানে শ্রীরাম ভারতীয় কলা কেন্দ্রে লীলা স্যামসনের কাছে ভরত নাট্যম ও মুন্নালাল শুক্লার কাছে কত্থক শেখেন অনুপ কুমার। অনুপ কুমার দাসের মৃত্যুর খবর জানার পর, নিউইয়র্কের পিএস-২০০ স্কুলের শিক্ষক অ্যানি কাপুয়া ২০ জুলাই ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন- ‘আমি ওনার সঙ্গে স্কুলে কাজ করেছি। ওনার মতো চমৎকার মানুষ খুব কম দেখেছি। ছাত্র-ছাত্রীদের এত দরদ দিয়ে নাচ শেখাতেন যে, বলার নয়। ভারতীয় নাচ ও কোরিওগ্রাফি নিয়ে বহুবার কথা হয়েছে তাঁর সঙ্গে। উনি নিউইয়র্ক বাঙালী কমিউনিটি নিয়ে খুব গর্বিত ছিলেন। খুব গর্ব ও ভালোবাসা নিয়ে তিনি সবার কথা বলতেন। ওনার আত্মার শান্তি কামনা করছি। আমাদের স্কুলের প্রত্যেকে তার মৃত্যুতে শোকাহত। তার খুব সুন্দর একটা মন ছিল।’
ফুটপাতে অন্যের জুতা মেরামত করে চলে নারী মুচি সবিতার জীবন
নিজস্ব প্রতিবেদক
সবিতা রানি দাস। যিনি ফুটপাতে বসে অন্যের জুতা-স্যান্ডেল মেরামত করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ঝালকাঠি শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে নবগ্রাম ইউপি ভবনের সামনে ফুটপাতে বসে জুতা মেরামতের কাজ করেন সবিতা রানি দাস। বর্ষা মৌসুমে ইউপি ভবনের সামনের বারান্দার এক কোণে বসে এ কাজ করেন। তিনি ৯ বছর ধরে ফুটপাতে বসেই জুতা মেরামতের কাজ করছেন।
সবিতা রানি জানান, ছোটবেলায় মা-বাবা মারা গেছেন। বাবা জুতা সেলাই করে আয় করতেন। তার কাছে বসে জুতা সেলাই দেখতেন। বাবা-মা মারা যাওয়ার পর লেখাপড়াও করতে পারেননি। জায়গা-জমি, অর্থ-সম্পদ কিছু নেই। তিনি অবিবাহিত হওয়ায় এ কাজ ছাড়া আর কোনো পথ নেই।
সবিতা রানি বলেন, ‘এইটা আমার বাপ-দাদার পেশা। কেউ আমারে নিন্দা করে না। আমার কাজ দেইখা সবাই খুশি। মাঝে মাঝে কাজ হয়, আবার হয় না। সিজনাল কাজ হয়। বর্ষায় ফুটপাতে বইসা কাজ করলে এদিক-ওদিক থেকে পানি আসে।’
স্বপ্নের কথা জানান সবিতা। তিনি বলেন, ‘কিছু বেইচ্চা-কিন্যা একটা দোকান দেওয়ার স্বপ্ন ছিল। সামনে একটু আগানোর আশা ছিল। এখানকার দশ জনে আমারে চায়। একবেলা না এলে সবাই আমারে না আসার কারণ জিজ্ঞাসা করে। যেহেতু আমি একজন দোকানদার।’
করোনার মধ্যে কাজ করার ঝুঁকি সম্পর্কে সবিতা বলেন, ‘এমন দুর্যোগের সময় ঝুঁকি নিয়াও মুখে মাস্ক দিয়া কাজ করছি। কিন্তু মানুষজন ঘরের বাইরে কম বের হচ্ছে। তাই এখন আয়ও কম হচ্ছে। এ ছাড়া আমারে কেউ কোনো সহায়তাও দেয় নাই।’
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক আকন্দ বলেন, ‘সবিতা রানি দাস জুতা মেরামতের কারিগর হিসেবে পুরুষের মতোই কাজ করছেন। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে ভিজিডি সহায়তা দিচ্ছি। এছাড়াও তার পেশাকে উন্নত করতে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।’
জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (উপপরিচালক) মো. আলতাফ হোসেন বলেন, ‘সবিতা রানি দাস একজন আদর্শবান সংগ্রামী নারী। জয়িতার তালিকায় তাকে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে মহিলা বিষয়ক অধিদফতর থেকে তাকে কোনো সহায়তা দেওয়া হচ্ছে না।’
খুলনা বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৪৮৪ জনে। এই বিভাগের ১০টি জেলায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৭১ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৭৩৩ জন। বুধবার (২২ জুলাই) খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ বিষয়টি জানিয়েছেন।
উপাধ্যক্ষ জানান, খুলনা জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৭৩৭ জন। যশোরে ১ হাজার ৪২৬, কুষ্টিয়ায় ১ হাজার ২৩৬, ঝিনাইদহে ৬৬৪, নড়াইলে ৫২৪, সাতক্ষীরায় ৫৪৭, চুয়াডাঙ্গায় ৪৪৬, বাগেরহাটে ৪৩৩, মাগুরায় ৩৩৪ ও মেহেরপুরে ১৩৭ জন।
ডা. মেহেদী নেওয়াজ আরও জানান, মঙ্গলবার (২১ জুলাই) খুমেকের পিসিআর মেশিনে ২৮২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে খুলনার নমুনা ছলি ১৪৫টি। মোট পজিটিভ হয়েছে ১১৩ জনের। এর মধ্যে খুলনার ৬৩টি, বাগরেহাটের ৩২ জন, সাতক্ষীরার ১৭ ও নড়াইলের একজনের করোনা শনাক্ত হয়।
খুলনার সিভিল সার্জনের দপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, খুলনা জেলায় মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ২৯৮ জনের। এর মধ্যে পজিটিভের সংখ্যা ৩ হাজার ৭৩৭জন। মারা গেছেন ৫৬ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮১৫জন।
উপজলোভিত্তিক করোনা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মহানগরে আক্রান্ত ২ হাজার ৯৩৬, দাকোপ উপজেলায় ৯৩, বটিয়াঘাটায় ৩৩, রূপসায় ১৭৫, তেরখাদায় ৪০, দিঘলিয়ায় ৮৬, ফুলতলায় ১৬৭, ডুমুরিয়ায় ১০০, পাইকগাছায় ৮২ ও কয়রায় ২৫ জন।
খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. সাদিয়া মনোয়ার উষা জানান, খুলনা জেলায় মোট করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৮০০ জন। শনাক্তদের বেশির ভাগই খুলনা মহানগরীর, ২ হাজার ৯৩৬ জন। আর নয় উপজলোয় মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা ৮০১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৫৯৮ জন এবং নারী ১ হাজার ১৩৯ জন। আক্রান্তদরে মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮১৫ জন। মারা গেছেন ৫৬ জন।
যশোরের মণিরামপুরে সরকারিভাবে বোরো ধান সংগ্রহ এগুচ্ছে না। গত দুই মাসে মাত্র পাঁচ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ করতে পেরেছে গুদাম কর্তৃপক্ষ। ফলে নির্ধারিত সময়ে চলতি মৌসুমে এই অঞ্চল থেকে কাঙ্খিত বোরো ধান সংগ্রহ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বৈরি আবহাওয়া ও খোলা বাজারে ধানের চড়া দাম থাকায় কৃষক গুদামে ভিড়ছেন না বলে দাবি মণিরামপুর সরকারি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার। তবে, কৃষক বলছেন, ধান দেওয়া তো সমস্যা না। গুদামে গেলে আমাদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়। সেই কারণে আমরা সরকারকে ধান দিচ্ছি না। তারা গুদামের পুরনো চিরাচরিত রুপকে দায়ী করছেন।
চলতি বোরো মৌসুমে লটারির মাধ্যমে মণিরামপুর থেকে চার হাজার এক মেট্রিকটন ধান ও দুই হাজার ৬৮০ মে. টন চাল সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গত ২৬ এপ্রিল থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু লটারি সম্পন্নসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে প্রায় একমাস পর ২০ মে দুই মে.টন ধান ও এক মে.টন চাল সংগ্রহের মাধ্যমে ক্রয় কাজের উদ্বোধন করা হয়।
ধান সংগ্রহের শুরুতে তালিকাভুক্ত কৃষকদের পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাধ্যমে পাঁচ শতাংশ লাভে ২০ হাজার টাকা করে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সমবায় মন্ত্রণালয়। সেই হিসেবে মণিরামপুরে এই পর্যন্ত ২৯ জন কৃষক ২০ হাজার টাকা করে ঋণ নিয়েছেন বলে জানান উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের জুনিয়র কর্মকর্তা আবু মাসউদ। কিন্তু মঙ্গলবার (২১ জুলাই) পর্যন্ত মাত্র পাঁচজন কৃষক গুদামে ধান দিয়েছেন।
মণিরামপুরে বোরো ধান সংগ্রহের শুরুতে উপজেলা খাদ্য অফিসের মাধ্যমে মাইকিং করে ব্যাপক প্রচারণার সিদ্ধান্ত নেন ক্রয় কমিটি। কিন্তু কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগই নেয়নি এই দপ্তরটি। শুধুমাত্র স্ব স্ব ইউপি'র দেওয়ালে তালিকা সেঁটে দায়িত্ব শেষ করেছেন তারা।
লটারির তালিকাভুক্ত কৃষক মাহমুদকাটি গ্রামের আবুল ইসলাম বলেন, সরকার ধানের মণপ্রতি দেবে একহাজার ৪০ টাকা। গুদামে ধান দিতে গেলে নানা অজুহাত দেখিয়ে কৃষকদের ঘুরানো হয়। কিন্তু আমরা বাড়িতে বসে সাড়ে নয়শ থেকে একহাজার টাকায় ধানের মণ বিক্রি করতে পারছি। সেইক্ষেত্রে ধানের আদ্রতা মাপার দরকার হচ্ছে না; চিটা থাকলেও সমস্যা নেই।
বর্তমানে খোলাবাজারে ধানের মণ ৯৩০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান টেংরামারী বাজারের আড়ৎদার ফয়েজ উদ্দিন।
এদিকে গুদামে বোরো ধানের চাল দেওয়ার ক্ষেত্রে অহীনা দেখানোয় জেলা খাদ্য অফিস ইতোমধ্যে মণিরামপুরে তালিকাভুক্ত মিলারদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। তারপরও কাঙ্খিত চাল সংগ্রহ হয়নি। মঙ্গলবার (২১ জুলাই) পর্যন্ত মাত্র ২৭০ টন চাল সংগ্রহ হয়েছে।
মণিরামপুর চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের হাতে এখনো একমাস সময় আছে। এই সময় পার হলে আরও একমাস সময় বাড়তে পারে। তারমধ্যে আমরা গুদামে নির্ধারিত চাল দিতে পারবো।
মণিরামপুর উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেলিম বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় এবং বাজারে ধানের দাম চড়া হওয়ায় কৃষক গুদামে ধান দিচ্ছেন না। তবে চাল সংগ্রহ বাড়ছে। ইতোমধ্যে ২৭০ টন চাল সংগ্রহ হয়েছে। সামনে আরও একমাস সময় আছে। পরবর্তীতে সময় বাড়বে কিনা সেটা এখন বলা যাচ্ছে না।
মেক্সিকোতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমছে না। অতি ছোঁয়াচে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৪০ হাজার। বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যাও।
আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মেক্সিকোতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমছে না। অতি ছোঁয়াচে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৪০ হাজার। বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যাও।
সরকারি হিসেবের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২১ জুলাই) পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে নতুন করে ৯১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাতে কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ৪০০।
চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মেক্সিকোতে প্রথম ধরা পড়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি। দেশটিতে শনাক্তের সংখ্যা এরই মধ্যে ছাড়িয়েছে ৩ লাখ ৫৬ হাজার। বৈশ্বিক আক্রান্তের তালিকায় সপ্তমস্থানে আছে দেশটি।
১২ কোটি ৭০ লাখ জনগণের দেশ মেক্সিকো লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের অন্যতম হটস্পট। আক্রান্ত ও মৃত্যুতে এই অঞ্চলে শীর্ষে থাকা ব্রাজিলের পরেই অবস্থান তাদের।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় কোটি ছাড়িয়েছে, মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ১৯ হাজার। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৯১ লাখ ১০ হাজার।
ভোলার চরফ্যাশনে ঝড়ে ঘরের নিচে চাপা পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা সম্পর্কে মা-ছেলে। মঙ্গলবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-উপজেলার চর মানিকা ইউনিয়নের চর কচ্চপিয়া গ্রামের হানিফ পাটোয়ারির স্ত্রী রিংকু বেগম (৩০), ও তার দুই ছেলে জুনায়েদ (৫) এবং তানজীদ (৩)।
দক্ষিণ আইচা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ জানান, মঙ্গলবার রাতে দুই ছেলেকে নিয়ে রিংকু বেগম ঘুমিয়েছিলেন। হঠাৎ ঝড় শুরু হলে তাদের ঘরটি বিধ্বস্ত হয়। এতে ঘরের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মা ও দুই ছেলের মৃত্যু হয়। পুলিশ মরদেহগুলো উদ্ধার করেছে।
তিনি আরও জানান, নিহতের পরিবারের সদস্যরা ঢালচর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। কিছুদিন আগে চর কচ্চপিয়া গ্রামে তারা নতুন ঘর তুলেছিলেন। ঝড়টি অত্যন্ত শক্তিশালী হওয়ায় বিধ্বস্ত হয় নতুন ঘরটি। এছাড়াও ঝড়ে আশ-পাশে বেশকিছু গাছ-পালা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নিহতের ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা এলাকায় মঙ্গলবার (২১ জুলাই) দুপুরে তানিয়া বেগম (২৬)নামে এক গৃহবধূর পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়। নিহত তানিয়া বেগম পাগলা মেদনার টেক এলাকার ইসহাকের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে তানিয়া বেগম মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন। তিনি তাঁর দুই সন্তান নিয়ে পিতার বাড়িতে বসবাস করতেন। তার স্বামী প্রবাসী। সোমবার রাতে পরিবারের সবার অগোচরে তানিয়া বেগম বাড়ি থেকে বের হয়। পরে পরিবারের লোকজন রাতেই টের পেয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোনো খোঁজ পাইনি। স্থানীয় লোকজন মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে পার্শ্ববর্তী বিলের পানিতে একটি মৃতদেহ ভাসতে দেখে। পরে লাশটি স্থানীয়রা উদ্ধার করে নিয়ে আসে। পরিবারের লোকজন তানিয়ার লাশ চিহ্নিত করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য তাজউদ্দীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রবাসীর স্ত্রী তানিয়া মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিল। তার নয় মাসের একটি বাচ্চা আছে।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়ালো
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগী শনাক্তের সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়ে গেল। আন্তর্জাতিক জরিপকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারের হিসাব অনুযায়ী, বুধবার (২২ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সকাল আটটা পর্যন্ত দেশটিতে ৪০ লাখ ২৮ হাজার ৫৬৯ জন শনাক্ত হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগী শনাক্তের সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়ে গেল। আন্তর্জাতিক জরিপকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারের হিসাব অনুযায়ী, বুধবার (২২ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সকাল আটটা পর্যন্ত দেশটিতে ৪০ লাখ ২৮ হাজার ৫৬৯ জন শনাক্ত হয়েছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায়ও প্রায় ৬০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে গত সাতদিনে গড়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬৬ হাজার করে!
রয়টার্সের হিসাব অনুযায়ী, তালিকায় শীর্ষে থাকা দেশটিতে মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছে ১ হাজারের বেশি মানুষের। জুনের সেই শুরুর দিকের পর এই প্রথম একদিনে হাজারের বেশি মানুষ মারা গেল সেখানে। মোট মারা গেছেন ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯৫৩ জন। বিপরীতে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৮ লাখ ৮৬ হাজার ৫৮৩ জন।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ২১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৩২ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৪ লাখ ৬৫ হাজার ৯৭০ জন।
গোটা পৃথিবীতে মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ ৯১ হাজার ৮৮০ জন। নতুন এই রোগটি থেকে মোট সুস্থ হয়েছেন ৯১ লাখ ১০ হাজার ২০৮ জন। মারা গেছেন ৬ লাখ ১৯ হাজার ৪১০ জন।
তিন নম্বরে থাকা ভারতে প্রায় প্রতিদিন রোগী বাড়ছে। দেশটিতে মোট ১১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৫ জন কভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন, মৃত্যু ২৮ হাজার ৭৭০ জনের।
রাশিয়ায় এখন পর্যন্ত ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩২৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১২ হাজার ৫৮০ জন। পাঁচ নম্বরে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩ লাখ ৮১ হাজার ৭৯৮ জন শনাক্ত হয়েছেন। দেশটিতে মারা গেছেন ৫ হাজার ৩৬৮ জন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ রোগের ভ্যাকসিন গবেষণাগারগুলোতে সাইবার হামলা চালিয়ে তথ্য চুরি করছে চীনা হ্যাকাররা। আর এসব হ্যাকারকে মদদ দিচ্ছে দেশটির সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ সংক্রান্ত মন্ত্রণালয় এমন অভিযোগ তুলেছে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ রোগের ভ্যাকসিন গবেষণাগারগুলোতে সাইবার হামলা চালিয়ে তথ্য চুরি করছে চীনা হ্যাকাররা। আর এসব হ্যাকারকে মদদ দিচ্ছে দেশটির সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ সংক্রান্ত মন্ত্রণালয় এমন অভিযোগ তুলেছে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে।
বিবিসির খবরে বলা হচ্ছে, চীনের সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চলমান একটি অভিযানের মধ্যেই এমন অভিযোগের খবর আসলো। এর আগে গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাজ্য এবং কানাডা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গবেষণা সংক্রান্ত তথ্য চুরির জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিল।
মার্কিন বিচার বিভাগ সংক্রান্ত মন্ত্রণালয় চীনের ইলেট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দুই শিক্ষার্থী লি জিয়াওউ এবং ডং জিয়াঝির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ মঙ্গলবার (২০ জুলাই) প্রকাশ্যে জানিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বাণিজ্য সংক্রান্ত গোপন তথ্য চুরি এবয় প্রতারণার অভিযোগও তোলা হয়েছে।
কৌসুলিঁরা বলছেন, ওই দুই চীনা নাগরিক গত জানুয়ারিতে ম্যাসাচুসেটস বায়োটেক ফার্মের ওপর গুপ্তরচরবৃত্তি করে। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করছিল ওই প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া ম্যারিল্যান্ডের একটি কোম্পানি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা করছে এমন ঘোষণা দেওয়ার পর সেখানেও হামলা চালায় তারা।
কর্মকর্তার বলছেন, অভিযুক্তরা ব্যক্তিগতভাবে এই হ্যাংকিংয়ের কাজ করলেও মাঝেমধ্যেই চীনের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টদের কাছ থেকে সহায়তা পান। চীনের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তাও এসব হ্যকারাকে সহায়তা করেন বলে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ তুলেছে।
কৌসুলিঁদের আরও অভিযোগ, ২০০৯ সালের শুরুতে অভিযুক্তরা হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্য সংক্রান্ত গোপন তথ্য, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ এবং মূল্যবান ব্যাবসায় সংক্রান্ত তথ্য চুরির সঙ্গেও যুক্ত। চীন থেকেই দেশটির সরকারের এমন মদদে তারা এই অপকর্ম করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, জার্মানি, জাপান, লিথুয়ানিয়া, নেদারল্যান্ডস, স্পেন সুইডেন এবং যুক্তরাজ্যের মতো দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন সাইবার হামলা চালানো হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ফার্ম, স্পেনের ডিফেন্স কনট্রাক্টর ও অস্ট্রেলিয়ার সোলার এনার্জি কোম্পানিতেও সাইবার হামলা হয়েছে।
ভারতের গুজরাত রাজ্যের ভুপালে পর্যাপ্ত কাপড় দেয়া সত্ত্বেও প্রত্যাশার চেয়ে অনেক ছোট অন্তর্বাস বানানোর অভিযোগে এক দর্জির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গালফ নিউজ থেকে জানা যায়, কৃষ্ণ কুমার দুবে নামে এক ব্যক্তি এক দর্জির কাছে কাপড় কিনে অন্তর্বাস বানাতে দিয়েছিলেন। তার দাবি অনুযায়ী, পর্যাপ্ত কাপড় দেয়া সত্ত্বেও ওই দর্জি প্রত্যাশার চেয়ে অনেক ছোট করে একটি অন্তর্বাস বানিয়ে দিয়েছেন তাকে। এ কারণে তিনি ওই দর্জির নামে মামলা করেছেন। এর কারণ, কৃষ্ণ কুমার দুবে করোনাভাইরাসের কারণে তার কাজ হারিয়েছেন। ভুগছেন প্রচণ্ড অর্থকষ্টে।
প্রত্যাশা অনুযায়ী অন্তর্বাস না পেয়ে কৃষ্ণ কুমার দুবে বৃহস্পতিবার পুলিশ স্টেশনে যান। সেখানে অভিযোগ দিয়ে বলেন, দুই মিটার কাপড় দেয়া সত্ত্বেও ওই দর্জি তাকে আকারে অনেক ছোট দুটি বক্সার শর্টস বানিয়ে দিয়েছেন।
৪৬ বছর বয়সী কৃষ্ণ কুমার দুবে পুলিশে বলেন, আমি ওই দর্জিকে আমার অন্তর্বাস সেলাই করে দিতে দুই মিটার কাপড় দিয়েছি। কিন্তু তিনি আমাকে অনেক ছোট অন্তর্বাস বানিয়ে দিয়েছেন। আমি তাকে সেটা খুলে নতুন করে বানিয়ে দিতে বলেছি। কিন্তু তিনি আমার সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এ বিষয়ক একটি ভিডিও এবং মামলা করার ছবি টুইটারে বহুবার শেয়ার দেয়া হয়েছে।
মিডিয়ার কাছে কৃষ্ণ কুমার দুবে বলেছেন, অন্তর্বাস সেলাই করে দিতে ওই দর্জি আমার কাছ থেকে ৭০ রুপি নিয়েছেন। পরে তিনি আমাকে অনেক ছোট অন্তর্বাস দিয়েছেন। একজন নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে চাকরি করতেন কৃষ্ণ কুমার দুবে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সেই চাকরি হারিয়েছেন। এখন বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করছেন।
সম্প্রতি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে এক বন্ধুর কাছ থেকে এক হাজার রুপি ধার করেছেন। সেই অর্থে তিনি ওই কাপড় কিনেছিলেন। অভিযোগ নিয়ে তাকে স্থানীয় আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ।
মানব ও অর্থপাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলকে সহায়তা করার অভিযোগ কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশি প্রবাসীদের কেউ তার অপকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুললে আর রক্ষা নেই। কিংবা কারো সঙ্গে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব হলে তাদের উপর নির্মম নির্যাতনের পর করতেন দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা। কুয়েতস্থ বাংলাদেশি দূতাবাসের মাধ্যমে অভিনব কৌশলে তাকে কুয়েত ছাড়া করা হতো।
অভিযোগ রয়েছে, রাষ্ট্রদূতের মদতে দূতাবাস পাপুলের দেয়া নাম অনুযায়ী প্রবাসীদের কালো তালিকাভুক্ত করতে চিঠি দিতো কুয়েত সরকারকে। বিশ্বে যেখানে দেশের মানুষের জন্য দূতাবাসগুলো লড়াই করে, সেখানে বাংলাদেশ দূতাবাস নিজ দেশের মানুষকে কালো তালিকাভূক্ত করতে কুয়েত সরকারকে চিঠি দেয়।
গত দেড় বছরে কমপক্ষে এমন ১৫ জনকে কালো তালিকাভুক্ত করে দেশে পাঠিয়েছে দূতাবাস। এর মধ্যে ৮ জনের নাম ও প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে কামরুল হাসান বাবুল, মিজানুর রহমান, এহসানুল হক খোকন, আবদুস সাত্তার, সফিকুল ইসলাম সফিক, জাফর আহম্মেদ, আব্দুস সাত্তার ও আরেক শ্রমিক। তাদের প্রথম তিনজন গণমাধ্যমকর্মী ও বাকি পাঁচজন ব্যবসায়ী। অভিযোগ রয়েছে, ব্যবসায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার ও তার অপকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তাদের এই কালো তালিকাভুক্ত করতে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশস্থ কুয়েত দূতাবাস।
কুয়েতে প্রবাসী সূত্রে জানা যায়, গত বছর নভেম্বরে কুয়েত মসজিদ কমপ্লেক্স পরিচ্ছন্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং জাতীয় বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাজের দরপত্র আহ্বান করে কুয়েত সরকার। তিনবছর চুক্তিতে মসজিদ কমপ্লেক্স কাজের জন্য প্রায় ১ হাজার এবং বিমান চলাচল কাজের জন্য ৩০০ কর্মী নিয়োগ দেয়া হবে। এই উন্মুক্ত দরপত্র অহ্বান করলে অংশ নেয় দুই দেশের যৌথ মালিকানা কোম্পানি জেএম গ্রুপ অব কোম্পানি কুয়েত। এ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম মালিক ও প্রবাসী বাংলাদেশি জাফর আহম্মেদকে সরে আসার জন্য চাপ দিতে থাকে পাপুল। কিন্তু তারপরও তিনি দরপত্রে অংশ নেন। এ ঘটনার এক মাস পর জাফর আহম্মেদকে কুয়েত সিআইডিতে তলব করা হয়। সিআইডি ডেকে তাকে জানান, তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে মামলা আছে। তাকে দেশে ফিরে যেতে হবে। বাংলাদেশ দূতাবাস তার মামলার বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেয়। পরে তাকে ২১ দিন আটকে রেখে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। অথচ বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। জাফর আহম্মেদ বলেন, পাপুল ব্যবসায়ীকভাবে আমার সাথে না পেরে রাষ্ট্রদূতকে ব্যবহার করেছে।
শহিদ ইসলাম পাপুলের অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও অনিয়মের খবর প্রকাশের জন্য বাংলাদেশি প্রবাসী সাংবাদিকদের একটি অংশের ওপর দূতাবাস ও পাপুল বরাবরই ক্ষিপ্ত ছিলেন। শুধু তাই নয়, পাপুলের ব্যবসায়ীক প্রতিদ্বন্দ্বীর ওপর ক্ষিপ্ত ছিলো দূতাবাস।
কুয়েতে গ্রোসারি ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম। দীর্ঘ ২৫ বছর ছিলেন কুয়েতে। তার সঙ্গে প্রত্যক্ষ কোনো দ্বন্দ্ব ছিলো না দূতাবাস বা পাপুলের। কিন্তু বিস্মিল্লাহ ট্রাভেলসের মালিক আব্দুস সাত্তারের সঙ্গে পাপুলের ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এর সূত্র ধরেই সফিকুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার, বাংলাদেশি আরেক শ্রমিককে দেশে পাঠিয়ে দেয় দূতাবাস।
সফিক বলেন, পাপুলের সঙ্গে আমার চেনা-পরিচয় ছিল। এর বাইরে কিছু ছিল না। অথচ সাত্তারের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক তাই আমাকে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। সাত্তারের অফিসে একদিন আড্ডা দিচ্ছিলাম। এ সময় সিআইডি’র লোকজন বিনা কারণে আমাদের ধরে নিয়ে যায়। এখনো আমার পরিবার কুয়েতে অথচ আমি দেশে।
দূতাবাসের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কালো তালিকাভুক্ত করে প্রবাসীদের সিআইডি’র মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালাম বলেন, এটা আমি করতে পারি না। আমি সিআইডিকে কখনো এমন অভিযোগ করিনি। আমি সর্বোচ্চ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠাতে পারি। কালো তালিকাভুক্ত কয়েকজনের নাম বললে, তিনি তাদের চিনেন না বলে জানান।
পাঁচ দিনের রিমান্ডে ডা. সাবরিনা চৌধুরী নিজের অপরাধ ও প্রতারণা কবুল করেছেন। দিয়েছেন অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানিয়েছেন তার প্রতারণার কাজে সহযোগীদের নাম। সাবরিনা ছাড়া তার স্বামী জেকেজি’র সিইও আরিফ চৌধুরীও তার অপরাধ কবুল করেছেন। ডিবি এখন তাদের দেয়া তথ্য যাচাই- বাছাই করে দেখছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ডা. সাবরিনা প্রথম থেকে জেকেজি’র সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করে আসছিলেন। রিমান্ডে এসেও তিনি তাই করেছেন। রিমান্ডের প্রথম দিকে সাবরিনা ও আরিফ একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়েছেন। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তাদের কৌশলী জিজ্ঞাসাবাদে শেষ পর্যন্ত দায় স্বীকার করেছেন। আরিফ চৌধুরীর চতুর্থ স্ত্রী দিনাজপুরের মেয়ে ডা. সাবরিনা চৌধুরী। আর সাবরিনার তৃতীয় স্বামী আরিফ চৌধুরী। সাবরিনার সঙ্গে বিয়ের পরেই আরিফ জেকেজি হেলথ কেয়ার নামের প্রতিষ্ঠানটি খুলেন। মূলত ওই প্রতিষ্ঠানটির কোনো বৈধতা ছিল না। তবে আরিফ চৌধুরীর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওভাল গ্রুপ জয়েন্ট স্টক থেকে রেজিস্ট্রেশন নেয়া ছিল। এই প্রতিষ্ঠানটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ আরো বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের কাজ করেছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে কাজ বাগিয়ে নিতে সাবরিনাই মূল ভূমিকা পালন করতেন। চিকিৎসক হওয়াতে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে তার জানাশোনা ছিল। অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে সখ্যতা ছিল। আর চিকিৎসক সমাজেও তার বেশ পরিচিতি ছিল। কাজ আদায়ে তিনি বিভিন্ন কৌশল বেছে নিতেন। যখন যে কাজে যাকে ব্যবহার করা দরকার ছিল তখন তাই করেছেন। করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর নমুনা সংগ্রহের আইডিয়া সাবরিনা আরিফের মাথায় আসে। রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহেদের সঙ্গে সাবরিনার আগে থেকেই ঘনিষ্ঠতা ছিল। শাহেদও করোনার নমুনা সংগ্রহের অনুমতি পেয়েছিলেন। তাই সাবরিনাও শাহেদের মতো নিজের প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারের নামে নমুনা সংগ্রহের কাজ বাগিয়ে আনেন। ট্রেড লাইসেন্স নেই এমন একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ আনার ক্ষেত্রে তিনি মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে ব্যবহার করেছেন। এছাড়া সহযোগিতা করেছেন সাবরিনার ঘনিষ্ঠ ও সরকার দলীয় চিকিৎসক সংগঠনের কয়েকজন নেতা। যাদের সঙ্গে সাবরিনা আর্থিক চুক্তি করে নিয়েছিলেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতারণার মিশন নিয়েই যোগসাজশ করে তারা মাঠে নেমেছিলেন। এজন্য কোনো বৈধ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া, নামমাত্র প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও তদারকি ছাড়াই তারা স্পর্শকাতর কাজটি পেয়েছিল। কাগজে কলমে ছিল শুধুমাত্র তিতুমীর কলেজে একটি মাত্র বুথ স্থাপন করে নমুনা সংগ্রহ করবে। কিন্তু তিতুমীর কলেজ থেকে যাত্রা শুরু করে তার অল্পদিনেই ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জ, সাভার, নরসিংদী ও গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে ৪০টি বুথ বসিয়ে মাঠকর্মী দিয়ে সংগ্রহ শুরু করে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তাদেরকে কোনো টার্গেটও দেয়া হয়নি। তাই তারা গড়ে ৫০০-৬০০ নমুনা সংগ্রহ করতো। এসব নমুনা কোনো রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে ফেলে দিতো। পরে গুলশানের কনফিডেন্স টাওয়ারের ১৬ তলার জেকেজি’র অফিস থেকে ইচ্ছামতো পজেটিভ নেগেটিভ রিপোর্ট দিতো। অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের কথা থাকলেও তারা প্রতিটি নমুনার বিপরীতে ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে আরো বেশি টাকা নিতো। বিদেশিদের কাছ থেকে ১০০ ডলার নিতো। এভাবে তারা রাতারাতি কয়েক কোটি টাকা বাগিয়ে নেয়। রিমান্ডে এসব বিষয় স্বীকার করেছেন তারা। এছাড়া তিতুমীর কলেজে বুথ বসিয়ে নমুনা সংগ্রহের নামে রাতভর মাদকতা, ডিজে, গান বাজনা বিষয়ে মুখ খুলেছেন। এসবের প্রতিবাদ করায় তারা তিতুমীর কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সংবাদকর্মীদের ওপরও তারা হামলা চালিয়েছিল। এই দায়ও স্বীকার করেছেন।
ডিবি সূত্র জানায়, জেকেজির সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই দাবি করলেও ডজনখানেক প্রমাণ হাজির করা হয়। এসব থেকে প্রমাণিত হয় তার সম্পৃক্ততা ছিল। তিতুমীর কলেজে হামলার পর সাবরিনা সেখানে বক্তব্য দিয়েছেন। জেকেজি থেকে মাসে মাসে বেতন নেয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। জেকেজি’র চেয়ারম্যান হয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের কথাও স্বীকার করেছেন সাবরিনা। রিমান্ডে সাবরিনা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা না করে অবৈধভাবে জাল সনদ ও রিজেন্টের শাহেদের সঙ্গে তার আগে থেকেই পরিচয় থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
এদিকে, রিমান্ডে ডিবির জেরার মুখে সাবরিনা ও আরিফ তাদের সহযোগীদের নাম জানিয়েছেন। কারা তাদের কীভাবে সহযোগিতা করেছেন। বিনিময়ে তাদেরকে কি দিতে হয়েছে। ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টসূত্র জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে সাবরিনা ও আরিফ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের বর্তমান ও সাবেক মিলিয়ে অন্তত আটজন কর্মকর্তার নাম বলেছেন। তাদের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন সাবেক সচিব রয়েছেন। বর্তমান কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন দুইজন অতিরিক্ত সচিব। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন সর্বোচ্চ পদধারী ব্যক্তি রয়েছেন। অধিদপ্তরের একজন পরিচালক রয়েছেন যিনি হাসপাতাল-ক্লিনিকের দায়িত্বে আছেন। এর বাইরে পদধারী আরো দুজন কর্মকর্তা রয়েছেন। সাবরিনা চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) চারজন চিকিৎসকের নাম বলেছেন। ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন চার্জশিটে সাবরিনার সহযোগী ও তাদের কার কি ভূমিকা ছিল এসব বিষয়ে উল্লেখ করা হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হবে।
মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, পাঁচ দিনের রিমান্ডে সাবরিনার কাছ থেকে আমরা জানার চেষ্টা করেছি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া জেকেজি’র মতো প্রতিষ্ঠান কীভাবে কাজ পেয়েছে। কাজ পেতে তাদেরকে কারা সহযোগিতা করেছে। তাদের সঙ্গে কি ধরনের চুক্তি ছিল। যতটুকু নমুনা সংগ্রহের অনুমতি ছিল তার চেয়ে বেশি নমুনা কেন সংগ্রহ করেছে। এছাড়া জেকেজি’র করোনা সনদ দেয়ার অনুমতি না থাকলেও কেন তারা সনদ দিয়েছে।
বাতেন বলেন, সাবরিনা ও তার স্বামী আরিফ চৌধুরীকে আলাদাভাবে ও মুখোমুখি করে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের দুজনের কথাবার্তা ক্রসচেক করে দেখা হয়েছে। দুজনই তাদের সব অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে সহযোগীদের নাম পেয়েছি। যারা তাদেরকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছে।
কারাগারে সাবরিনা
প্রতারণা মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জন ডা. সাবরিনা চৌধুরীর রিমান্ড শেষ হয়েছে। মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি) কার্যালয়ে দুই দফায় পাঁচ দিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করেছিলেন ডিবির তদন্ত কর্মকর্তা। তবে এদিন ডিবি নতুন করে সাবরিনার রিমান্ড আবেদন করেনি। আদালতে দেয়া প্রতিবেদনে ডিবি জানায়, রিমান্ডে সাবরিনার পক্ষ থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে আবার তাকে রিমান্ডে আনার আবেদন করা হতে পারে। তাই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে রাখা প্রয়োজন। এ সময় সাবরিনার পক্ষে আদালতে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম জামিনের আবেদন নাকচ করে সাবরিনাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া করোনার জাল সনদ দেয়ার অভিযোগে ২৩শে জুন সর্বপ্রথম জেকেজি’র দুই কর্মী হুমায়ুন কবির হিমু ও তার স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার দুইজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গুলশানের কনফিডেন্ড টাওয়ারের ১৬ তলায় অভিযান চালিয়ে ২৫শে জুন গ্রেপ্তার করা হয় জেকেজি’র সিইও আরিফ চৌধুরীসহ আরো কয়েকজনকে। প্রতারণসহ আরো কিছু অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা হয়। তারপর পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে জেকেজি’র একের পর এক প্রতারণার তথ্য। প্রতারণায় সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীর। পরে ১২ই জুলাই সাবরিনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।