বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন ও আর্দশকে বাস্তবায়ন করতে পেছন থেকে যিনি কাজ করেছিলেন তিনি শেখ মুজিবের প্রিয় ‘রেণু’। এই মহীয়সী নারী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। আজ তার ৯০তম জন্মদিন। স্বাধীনতাপূর্ব আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ আর পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর সকল কাজের প্রেরনাদাত্রী হিসেবে ইতিহাসের পাতায় তিনি এখন ‘বঙ্গমাতা’।
১৯৩০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা, যিনি পরিবারে পরিচিত ছিলেন রেণু নামে। শৈশবে অভিভাবক হারানো রেণুকে মাতৃস্নেহে আগলে রাখেন তার চাচি এবং পরবর্তীতে শাশ্বড়ি সায়েরা খাতুন। মাত্র ১৩ বছর বয়সে শেখ মুজিবের সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন তিনি।
বঙ্গবন্ধূর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে বার বার উঠে এসেছে তার জীবনের শ্রেষ্ঠ ছায়াসঙ্গী প্রিয় রেণূর অবদানের নানা গল্প। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে কারাগারে। তখন তার সঙ্গে দেখা করে প্রতিটি রাজনৈতিক ঘটনা অবহিত করতেন বেগম ফজিলাতুন্নেসা।
বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে প্রায়ই নিজের ঘরের আসবাবপত্র, অলংকার, পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে ক্রান্তিকালে দল ও নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ান তিনি।
আগরতলা যড়ষন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু কারাগারে গেলে লাহোর গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেবার জন্য শেখ মুজিবকে প্যারোলে মুক্তি দেবার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান সরকার। কিন্তু সহধর্মিনীর পরামর্শে প্যারোলে মুক্তিতে অসম্মতি জানান বঙ্গবন্ধু।
স্বাধীনতার পর আন্তর্জাতিকভাবে দেশকে তুলে ধরতে বিশ্বনেতারা বাংলাদেশ সফরে এলে বঙ্গবন্ধুর পাশে থাকতেন শেখ ফজিলাতুন্নেসা।
শুধু সহধর্মিনী হিসেবে নয়, রাজনৈতিক সহকর্মী হিসেবে আজীবন প্রিয়তম স্বামী শেখ মুজিবের ছায়াসঙ্গী ছিলেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা। ১৯৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধুর সপরিবার হত্যাযজ্ঞে তিনিও শহীদ হন।
Post Written by : Rubel Islam
Original Post URL : https://ift.tt/2C7zh1x
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ
পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে ১০ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এই রুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়। দুর্ঘটনা এড়াতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
তবে পদ্মার তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় ফেরি পারাপারে সময় অনেক বেশি লাগছে। সেই সাথে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়ায় দুটি ঘাট ভেঙে যাওয়ায় বিকল্প পথ রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে যানাবাহনের জট সৃষ্টি হয়েছে।
এই রুটে ১৬ টি ফেরি চলাচল করছে। তবে গতকাল থেকে বন্ধ থাকায় আজ শিমুলিয়া ঘাটে পারের অপেক্ষায় তেমন গাড়ি ছিল না। আজ সকাল থেকে শিমুলিয়ার শুধুমাত্র এক নম্বর ফেরিঘাট দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার পুনরায় শুরু করেছে ফেরিগুলো।
সপ্তাহের ব্যবধানে এখনও চড়াই রয়েছে সবজির বাজার। অপরবির্তিত আছে মসলা জতীয় পণ্য আদা, পেঁয়াজ, চাল, ডাল ও ভোজ্য তেলের দাম।
সবজি ভেদে কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে দাম। তবে কিছুটা কমেছে গাজর, বেগুন ও করলার দাম। অধিকাংশ সবজির বাজার চড়া হলেও নিম্নমুখী শাকের দাম। গত কয়েকদিন ধরে দাম ওঠা-নামা করছে কাঁচা মরিচের। বর্তমানে ২০০ থেকে আড়াইশ'র ঘরে রয়েছে রান্নায় অতি প্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম।
শুক্রবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর মগবাজার, মালিবাগ, মালিবাগ রেলগেট বাজার, খিলগাঁও, শান্তিনগর ও সেগুনবাগিচা কাঁচা এবং এসব এলাকার অস্থায়ী বাজার ঘুরে এ চিত্রই দেখা গেছে।
এসব বাজারে প্রতি কেজি ঝিঙা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, কচুর লতি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়, কাকরোল আকার ভেদে ৫০ থেকে ৮০ টাকায়, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, কচুর ছড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, দেশি শসা ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, হাইব্রিড শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, আলু ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে দাম কমেছে করলা, বেগুন ও গাজরের। দু’দিন আগে করলা ১২০ টাকা পর্যন্ত কেজি বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। আর গাজর কেজিতে ২০ টাকা কমে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। গত দু’দিনের ব্যবধানে বেগুনের কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে গোল সাদা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় আর লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।
আর হালিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়ে প্রতি হালি কাঁচকলা ৪০ টাকায়, প্রতিহালি লেবু ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেড়ে প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে জালি কুমড়া।
অপরিবর্তিত আছে আলু, মিষ্টি কুমড়া, ধনিয়া পাতা, পুদিনা পাতার দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি দেশি কাঁচা মরিচের দাম ২০০ টাকা আর আমদানি (ভারতীয়) করা কাঁচা মরিচের দাম ১৬০ টাকা।
তবে দাম কমেছে শাকের। দাম কমে এসব বাজারে প্রতি আঁটি লাল শাকের দাম চাওয়া হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকা, মূলা ও কলমি শাক ১০ থেকে ১২ টাকা, লাউ ও কুমড়া শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পুঁই শাক ২৫ থেকে ৩০ টাকা।
আগের দাম রয়েছে আদা ও পেঁয়াজের বাজারে। তবে কিছুটা কমেছে রসুনের দাম। এসব বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে (মান ভেদে) ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে (মান ভেদে) ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। তবে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে বর্তমানে প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। রাজধানীর বাজারগুলোতে দাম বেড়েছে সবজির, ছবি: শোয়েব মিথুন
অপরিবর্তিত রয়েছে চাল, ডাল ও ভোজ্য তেলের দাম। এসব বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়, মিনিকেট (পুরনো) ৫৫ টাকায়, বাসমতী ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়, গুটিচাল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪২ টাকায়, পায়জাম চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকায়, স্বর্ণ ৪০ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে, আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে, আতোপ চাল ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়, এক সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪২ টাকায়, প্রতি কেজি পোলাওয়ের চাল বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়।
প্রতিকেজি ডাবরি ডাল ৪৫ টাকায়, অ্যাংকর ৫০ টাকায়, প্রতি কেজি দেশি মসুর ডাল ১২০ টাকায় ও মসুর (মোটা) ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন (লাল) বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০৫ টাকায়, খোলা (সাদা) সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। খোলা সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা লিটার।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫৭ জনে দাঁড়িয়েছে। বন্দরের কাছে হওয়া ওই বিস্ফোরণে আহতের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এমটাই জানানো হয়েছে। খবর আল জাজিরার।
বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের জন্য এখনো চলছে উদ্ধার তৎপরতা। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
লেবাননের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) বিকেলে ঘটা ওই বিস্ফোরণে বৈরুতের ৩ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। বুধবার দুই সপ্তাহের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে। যাদের গাফিলতিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তাদের ১৬ জনকে বৃহস্পতিবার আটক করা হয়েছে। বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
বিস্ফোরণে বৈরুত শহরজুড়ে আতঙ্ক তৈরি হয়। শহরের বাসিন্দারা বলেছেন, বিস্ফোরণে তাদের শহরটি ভূমিকম্পের মতো কেপে ওঠে।
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, বৈরুতের বন্দর এলাকা থেকে বড়ু গম্বুজ আকারে ধোঁয়া উড়ছে, এর কিছুক্ষণের মধ্যে বিকট বিস্ফোরণে গাড়ি, ভবন উড়ে যেতে দেখা যায়।
ভিডিওতে মানুষের চিৎকার ও ছুটোছুটি করতে দেখা যায়। বাড়িঘরের জানালার কাচ ও বেলকনি ভেঙেও অনেকে আহত হন।
দেশের নদ নদীর পানি কমায় বিভিন্ন জেলার বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। তবে এখনও ১৪ নদীর পানি দেশের ২০টি অঞ্চলের বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সার্বিকভাবে দেশের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে। তবে এখনও ১৪ নদীর পানি দেশের ২০টি অঞ্চলের বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সবচেয়ে বন্যাপ্রবণ নদ-নদীগুলোর অন্যতম নদ ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে গেছে। তবে যমুনার পানি সারিয়াকান্দি, সিরাজগঞ্জ ও আরিচায়, সিংড়ায় গুড় নদীর পানি, বাঘাবাড়িতে আত্রায়ের পানি, এলাসিনে ধলেশ্বরীর পানি, ডেমরায় বালু নদীর পানি, নারায়ণগঞ্জে লাক্ষ্যার পানি, মিরপুরে তুরাগ নদীর পানি, টঙ্গীতে টঙ্গী খালের পানি, তারাঘাটে কালিগঙ্গার পানি, জাগিরে ধলেশ্বরীর পানি, নায়েরহাটে বংশী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া পদ্মার পানি ভাগ্যকুল, মাওয়া ও সুরেশ্বরে, মাদারীপুরে আড়িয়াল খাঁর পানি, ব্রাহ্মবাড়িয়ায় তিতাসের পানি এবং চাঁদপুরে মেঘনার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এক পূর্বাভাসে পাউবো জানায়, ব্রহ্মপুত্রের পানি আরো কমছে। কমছে যমুনার পানিও। এই নদ-নদীর পানি আগামী শনিবার পর্যন্ত কমার প্রবণায় থাকবে।
পদ্মার পানিও শুক্রবার পর্যন্ত কমবে। মনু নদী ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীর পানি কমবে আগামী শনিবার পর্যন্ত। এছাড়া রাজধানীর আশপাশের নদী-খালের পানিও কমতে শুরু করবে।
অন্যদিকে শুক্রবারের মধ্যে উন্নতি হবে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নাটোর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদুপর, মাদারীপুর, চাঁদপুর, রাজবাড়ি, শরীয়তপুর, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি।
চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘন্টায় ১২৮ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ৮১২টি নমুনা পরীক্ষায় এসব নমুনা পজিটিভ আসে। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৪ হাজার ৮৭৪ জনে।
বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) রাতে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এইদিন কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবসহ চট্টগ্রামের ৬টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়।
এরমধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ১১০টি নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয়েছেন ১৫ জন।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) ১৭৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে শনাক্ত হন ৪ জন।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ১৬৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ২০ জন করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ৮৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১৯ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়।
এছাড়া ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ৯৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩১ জন এবং শেভরণ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ১৬৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৮ জনের করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে।
কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১২টি নমুনা পরীক্ষা করে একজনের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় ১২৮ জন নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। এইদিন নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৮১২টি।
নতুন আক্রান্তদের মধ্যে নগরে ১০৩ জন এবং উপজেলায় ২৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে ২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১১৮ জন।
মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী পর্যন্ত নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। ১০ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর শুক্রবার (৭ আগস্ট) ভোর সাড়ে ৫টায় ফেরি চলাচল শুরু হয়। এর আগে পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বন্ধ হয়ে যায় ফেরি চলাচল।
শিমুলিয়া ঘাটের বিআইডাব্লিউটিসি'র ব্যবস্থাপক সাফায়েত আহমেদ জানান, ভোর সাড়ে ৫টায় চারটি ছোট ফেরি চালুর মাধ্যমে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। তবে পদ্মার তীব্র স্রোতের কারণে ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। ফেরিতে করে অনেকে নদী পার হচ্ছেন। শিমুলিয়া ঘাটে পারের অপেক্ষায় তেমন গাড়ি নেই। তবে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে যাত্রীদের ভিড় রয়েছে। বর্তমানে এক নম্বর ফেরিঘাট দিয়েই যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করছে ফেরিগুলো। মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাটে পারের অপেক্ষায় ৩০টির মতো গাড়ি রয়েছে।
বিআইডাব্লিউটিএ'র নৌ পরিদর্শক মো. সোলেমান জানান, সকাল থেকে লঞ্চ চলাচল করছে। যাত্রীদের উপস্তিতিও বেশি।
মালয়েশিয়ার সাবেক অর্থমন্ত্রী লিম গুয়ান ইঞ্জিকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করেছে দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশন।
বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) রাতে আন্ডারসেট টানেল প্রকল্পে ৬.৩ বিলিয়ন রিঙ্গিত দুর্নীতির অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া ২০১৬ সালে, লিমের উপর একটি জমি চুক্তি অনুমোদন এবং বাজারের নিচে দামে একটি বাংলো কেনার ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহারের ও দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন এক বিবৃতিতে জানায়, ৭ আগস্ট সকাল ১০টায় এমএসিসি আইন ২০০৯ এর ধারা ১৬ (ক) (এ) এর অধীনে দুর্নীতির মামলায় বিশেষ আদালতে জ্যেষ্ঠ বিরোধীনেতা লিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে।
এদিকে এমএসিসি জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) পেনাং দায়রা আদালতে এমসিসি আইনের ২৩ ধারায় লিমের বিরুদ্ধে পৃথক মামলার জন্যও চার্জ করা হবে।এমএসিসির চিফ কমিশনার দাতুক সেরি আজম বাকির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, মামলার তদন্তের কাগজপত্র অ্যাটর্নি-জেনারেল চেম্বারে জমা দেওয়া হবে।
গত ৩০ জুন, এমএসিসি আন্ডারসেট টানেল প্রকল্পে দুর্নীতির তদন্তে সহায়তা করতে পেনাং বন্দর কমিশনের (পিপিসি) প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তাকে আটক করেছে কমিশন। পেনাংয়ের মুখ্যমন্ত্রী চৌ কন কন ইয়াও, পাশাপাশি বর্তমান এবং সাবেক রাজ্য নির্বাহী কাউন্সিল সদস্যদেরও মেগা প্রকল্প সম্পর্কে এমএসিসির কাছে তাদের বক্তব্য দেওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছিল।
পেনাং রাজ্যের একটি আন্ডারসির টানেল প্রকল্পের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে মাসব্যাপী তদন্ত শুরু হয়, যা তিনি ২০০৮ সাল থেকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এবং ২০১৮ সালে অর্থমন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত হওয়া পর্যন্ত। লিম মাহাথির মোহাম্মাদ নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের অর্থমন্ত্রী ছিলেন, যা ফেব্রুয়ারিতে ভেঙে পড়ে।
তিনি মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় তহবিল ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ (ওয়ান এমডিবি) থেকে চুরি হওয়া কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের প্রচেষ্টাতে অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন। গত মাসে নাজিবকে ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থ পাচার ও বিশ্বাসভঙ্গের অপরাধের সাতটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে ১২ বছরের কারাদন্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
দেশের ১৯টি অঞ্চলে আজ ঝড়বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের ১৯টি অঞ্চলে আজ ঝড়বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। শুক্রবার (৭ আগস্ট) ভোর সাড়ে ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের আবহাওয়ার এক পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, রংপুর,পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া,খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলের উপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সাথে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সময়ের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন ২০২০: কে এগিয়ে ট্রাম্প না বাইডেন?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আমেরিকার ভোটাররা ৩রা নভেম্বর নির্ধারণ করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তারা আরও চার বছরের জন্য হোয়াইট হাউজে দেখতে চান কি-না।
নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টকে চ্যালেঞ্জ জানাবেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জো বাইডেন, যিনি বারাক ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে অনেক বেশি পরিচিত, যদিও তিনি গত শতাব্দীর ৭০’র দশক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন।
নির্বাচনের সময় যতোই ঘনিয়ে আসছে জনমত যাচাইকারী কোম্পানিগুলো সারা দেশে লোকজনের পছন্দ অপছন্দ জানতে ততোই ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। ভোটারদের তারা প্রশ্ন করছে তারা কোন প্রার্থীকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে আগ্রহী।
প্রার্থীরা জাতীয়ভাবে কে কেমন করছেন?
সারাদেশে জনপ্রিয়তার দৌড়ে কোন প্রার্থী কতোটা এগিয়ে আছেন সে বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে পরিচালিত জরিপ বা সমীক্ষা থেকে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। তবে এসব জরিপ থেকে নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে আগে থেকে আন্দাজ করা কঠিন।
উদাহরণ হিসেবে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। ওই নির্বাচনের আগে জাতীয় পর্যায়ে পরিচালিত জনমত জরিপে এগিয়ে ছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়ে তিনি ৩০ লাখ ভোট বেশি পেয়েছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি হেরে যান এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ নির্বাচনী ব্যবস্থা ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতির কারণে এরকম হয়েছে। ফলে বেশি ভোট পেলেই নির্বাচনে জয়ী হবেন সেটা সবসময় নিশ্চিত করে বলা যায় না। এ বছর জাতীয় পর্যায়ে যতো জরিপ হয়েছে তার বেশিরভাগ ফলাফলেই জো বাইডেন ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে এগিয়ে আছেন।
গত কয়েক সপ্তাহে যেসব জরিপ হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে বাইডেনের প্রতি সমর্থন ৫০% এর কাছাকছি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে এগিয়ে আছেন ১০ পয়েন্টে।
তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত কয়েকদিনে এই দূরত্ব কিছুটা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। চৌঠা আগস্টের জরিপে দেখা যচ্ছে জো বাইডেনের প্রতি সমর্থন যেখানে ৪৯%, সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পেছনে সমর্থন ৪৫%।
গত নির্বাচনের আগে হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প কার অবস্থান কোথায় এই চিত্রটা ততোটা পরিষ্কার ছিল না।
এবার দুই প্রার্থী জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ব্যবধান অনেক বেশি, কোথাও কোথাও ৫% থেকে ১০%। অথচ ২০১৬ সালের জনমত জরিপগুলোতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হিলারি ক্লিনটনের মধ্যে ব্যবধান ছিলো সামান্য কিছু পয়েন্ট।
ফলাফল নির্ভর করবে কোন কোন রাজ্যের ওপর?
গত নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের পরাজয় থেকে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে কোনও প্রার্থী কতো বেশি ভোট পেয়েছেন তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কোন রাজ্যে কোন প্রার্থী বেশি ভোট পেয়েছেন। সাধারণত বেশিরভাগ রাজ্যেই সবসময় একই রকমের ভোট পড়ে। কিছু কিছু রাজ্য আছে যেখানে দুজন প্রার্থীর যে কেউ বিজয়ী হতে পারেন।
এসব রাজ্যেই নির্ধারিত হবে কে নির্বাচনে জয়ী আর কে পরাজিত হবেন। জয় পরাজয়ের যুদ্ধটা হয় সেখানেই আর তাই এসব রাজ্যকে বলা হয় ব্যাটেলগ্রাউন্ড স্টেটস।
ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয় যুক্তরাষ্ট্রে। এই পদ্ধতিতে প্রত্যেকটি রাজ্যের হাতে থাকে কিছু ভোট। কোন রাজ্যের কতো ভোট সেটা নির্ভর করে ওই রাজ্যের জনসংখ্যার ওপর। সবচেয়ে বেশি ভোট টেক্সাস রাজ্যের- ৩৮।
ইলেকটোরাল কলেজে মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮। কোনো প্রার্থীকে বিজয়ী হতে হলে তাকে ২৭০টি ভোট পেতে হবে। তাই প্রত্যেক নির্বাচনের সময় দেখা গেছে যেসব রাজ্যের ভোট বেশি, প্রার্থীরা সেসব রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারণার পেছনে অনেক বেশি সময় ব্যয় করে থাকেন।
এসব রাজ্যে কে এগিয়ে
বর্তমান জরিপের ফলাফল জো বাইডেনের পক্ষে। কিন্তু নির্বাচনের এখনও অনেক সময় বাকি। যে কোনও সময় এই ফলাফল দ্রুত বদলে যেতে পারে।
জনমত জরিপের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, বাইডেন মিশিগান, পেনসালভেনিয়া এবং উইসকন্সিন রাজ্যে এগিয়ে আছেন। এই তিনটি শিল্প এলাকা। এসব রাজ্যে ২০১৬ সালের নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী ১% এরও কম ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছিলেন।
এখনকার জরিপে ডোনাল্ড ট্রাম্প যেসব রাজ্যে এগিয়ে আছেন সেগুলো হচ্ছে – জর্জিয়া, আইওয়া এবং টেক্সাস। কিন্তু এখানে ব্যবধান খুব সামান্য।
গত নির্বাচনেও এসব রাজ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু ভোটের ব্যবধান ছিল আরো অনেক বেশি।
জো বাইডেন এগিয়ে আছেন যেসব রাজ্যে: অ্যারিজোনা, ফ্লোরিডা, মিশিগান, মিনেসোটা, নেভাদা, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওহাইও, পেনসালভেনিয়া, ভার্জিনিয়া এবং উইসকন্সিন।
জো বাইডেনের জন্যে ভালো খবর হচ্ছে এসব রাজ্যে তিনি বড় রকমের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। শুধু তাই নয়, ২০১৬ সালের নির্বাচনে এসব রাজ্যের অধিকাংশগুলোতেই ব্যপক ভোটে জয়ী হয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু এসব রাজ্যে এখন এগিয়ে গেছেন জো বাইডেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য এখন এটাই দুশ্চিন্তার কারণ।
২০১৬ সালের নির্বাচনে আইওয়া, ওহাইও এবং টেক্সাসে তিনি ৮% থেকে ১০% ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু এখন জো বাইডেনের সাথে তার অবস্থান প্রায় সমান সমান।
এসব পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায় ডোনাল্ড ট্রাম্প কেন গত জুলাই মাসে তার নির্বাচনী প্রচারণার দলের ম্যানেজার বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এছাড়াও ট্রাম্প এসব জনমত জরিপকে প্রায়শই ‘ভুয়া’ বলে উল্লেখ করে থাকেন। বেটিং কোম্পানিগুলো অবশ্য এখনই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বাতিল করে দিচ্ছেন না। কেউ কেউ বলছে, তার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা এখনও এক তৃতীয়াংশ।
করোনাভাইরাসের কারণে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমেছে?
এ বছরের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যমে শিরোনাম দখল করে আছে করোনাভাইরাস। মহামারির পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভূমিকা নিয়ে তার পক্ষে বিপক্ষে কথা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেসব ব্যবস্থা নিয়েছেন তার পক্ষে সমর্থন তুঙ্গে ওঠে মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে। তখন তিনি সারা দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন এবং ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে রাজ্যগুলোর জন্য ঘোষণা করেছিলেন পাঁচ হাজার কোটি ডলার।
শীর্ষস্থানীয় একটি জরিপ কোম্পানি ইপসসের হিসেব অনুসারে সেসময় ৫৫% আমেরিকান তার গৃহীত পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন।
ডেমোক্র্যাট দলের যারা তাকে সমর্থন দিয়েছিলেন পরে তারা সমর্থন প্রত্যাহার করে নিতে শুরু করেন। কিন্তু রিপাবলিকানরা তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখেন। তবে অধিকাংশ মানুষই বর্তমানে তার গৃহীত পদক্ষেপের সমালোচনা করছে।
সর্বসাম্প্রতিক জরিপে দেখা যাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থকরাও এখন তার নেওয়া পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। বিশেষ করে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পর ট্রাম্প প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তারা সমালোচনায় সরব হয়েছে।
জুলাই মাসের শুরুতে তার প্রতি রিপাবলিকানদের সমর্থন কমে ৭৮%-এ নেমে এসেছে।
অনেকেই বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হয়তো একারণে করোনাভাইরাস সম্পর্কে তার বক্তব্য পরিবর্তন করছেন।
শুরুতে তিনি বলেছিলেন এই ভাইরাস একসময় ‘আপনা আপনি চলে যাবে’ কিন্তু এখন তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, ‘পরিস্থিতি ভালো হওয়ার আগে মহামারি আরো খারাপ রূপ’ নিতে পারে।
শুধু তাই নয়, এর আগে তিনি মাস্ক পরার সমালোচনা করতেন কিন্তু এখন তিনি নিজেই মাস্ক পরছেন। এবং আমেরিকানদের প্রতি মাস্ক পরার আহবান জানিয়ে ‘দেশপ্রেমের’ পরিচয় দেওয়ার কথা বলছেন।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মডেল অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের মাত্র দু’দিন আগে অর্থাৎ ১লা নভেম্বরের মধ্যে করোনাভাইরাসে দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
এসব জরিপ কি আমরা বিশ্বাস করতে পারি?
আগের নির্বাচনের জনমত জরিপ ভুল প্রমাণ হয়েছিল- এটা বলে আমরা খুব সহজেই এসব সমীক্ষা বাতিল করে দিতে পারি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও প্রায়শ একাজটা করে থাকেন। কিন্তু এটা পুরোপুরি সত্য নয়। বেশিরভাগ জাতীয় জরিপে হিলারি ক্লিনটনকে সামান্য পয়েন্টে এগিয়ে রাখা হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তারা ভুল করেছে।
এটাতো ঠিক যে তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে ৩০ লাখ ভোট বেশি পেয়েছিলেন।
আগের নির্বাচনের জনমত জরিপগুলোতে কিছু সমস্যা ছিলো। সেসব জরিপ ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতির গুরুত্ব তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে।
জরিপ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এবার তাদের সেই ত্রুটি কাটিয়ে উঠেছে। কিন্তু তারপরেও এবারের পরিস্থিতি আরো কঠিন, আরো অনিশ্চিত। এর কারণ করোনাভাইরাস।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এবং নভেম্বরে মানুষের ভোটের ওপর এই মহামারি কী ধরনের প্রভাব ফেলবে সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। কেননা নির্বাচনের এখনও আরো কয়েক মাস বাকি। খবর: বিবিসি বাংলা।
আমার ধারণা চাপে পরে আমরা আজকাল অনেক বেশি আন্তর্জাতিক হয়ে উঠছি। আগে কাউকে কোনো সেমিনার, কনফারেন্স বা ওয়ার্কশপে বিদেশ থেকে আমন্ত্রণ জানাতে হলে আয়োজকরা দশবার চিন্তা করতেন। আজকাল চোখ বন্ধ করে ই-মেইল পাঠিয়ে দেন! আমাদের আমন্ত্রণ জানালেও আগে নানাভাবে ছুতো খুঁজে বের করতাম যেন যেতে না হয়—আজকাল সেটাও করা যায় না। যারা আয়োজক তাদেরও অনেক সুবিধা, হলঘর ভাড়া করতে হয় না, হোটেল খুঁজতে হয় না, লাঞ্চের ব্যবস্থা করতে হয় না, প্রধান অতিথির পেছন পেছন ঘুরতে হয় না। কয়দিন আগে সেরকম একটি অনুষ্ঠানে আমার থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল।
আয়োজকদের প্রধানকে যখন শুভেচ্ছা বক্তব্য দেওয়ার কথা বলা হলো আমি স্পষ্ট দেখলাম তিনি বিছানায় এলোমেলো হয়ে শুয়ে আছেন। একটা বালিশকে বুকে চেপে ধরে উঠে বসলেন, ল্যাপটপের ক্যামেরার সামনে মুখটা এনে কিছুক্ষণ ভালোভাবে কথা বলে ‘হাই’ তুলে আবার শুয়ে পড়লেন! আমি যখন বক্তব্য দিচ্ছি তখন আমি খুব দুশ্চিন্তার মাঝে ছিলাম, আমার কথা কী আদৌ কেউ শুনছে না কী আমি একা একা নিজের মনে কথা বলে যাচ্ছি? (ভাগ্যিস বক্তব্যের শেষে প্রশ্নোত্তরের ব্যবস্থা ছিল, অনেক প্রশ্ন দেখে বুঝতে পেরেছিলাম কেউ কেউ নিশ্চয়ই কথা শুনছে!)
আজকাল শুধু যে দেশ বিদেশে “শর্টকাট” সেমিনার, কনফারেন্স হচ্ছে তা নয়, আমরাও দেশ বিদেশের খবর অনেক বেশি রাখছি। করোনার খবরই বেশি, এমনকি যখন রাজনীতির খবর নিই সেটাও ঘুরেফিরে হয়ে যায় করোনাভাইরাস নিয়ে রাজনীতি! অনেক দেশে মাস্ক পরা এবং না পরা এখন হচ্ছে রাজনৈতিক পরিচয়। বিষয়টা যেহেতু প্যানডেমিক তাই শুধু একটা দেশ ভাইরাস মুক্ত হয়ে গেলে হবে না, পুরো পৃথিবীর সবাই মিলে একসাথে সবাই মিলে ভাইরাস মুক্ত হতে হবে।
এতদিন শুধু নিজের দেশ নিয়ে দেশের মানুষের সমালোচনা শুনে এসেছি, এই দেশের মানুষজন স্বাস্থ্যবিধি মানেনা, মাস্ক পরে না, অকারণে এখানে সেখানে ভিড় জমায়, ইত্যাদি ইত্যাদি! এখন দেখছি এটা শুধু আমাদের দেশের নয়, অন্য দেশেরও সমস্যা। জার্মানির বার্লিন শহরে হাজার হাজার মানুষ আমাদের দেশের বৈশাখী মিছিলের মতো রাস্তায় বের হয়ে চিৎকার করছে, তারা মাস্ক পরবে না, নিয়ম নীতি মানবে না! আমেরিকা রীতিমত বিপদজনক, এই দেশে সবার কাছে অস্ত্র, যারা মাস্ক পরে নেই তাদেরকে মাস্ক পরার কথা বললে রেগেমেগে গুলি করে দেয়। করোনার সংক্রমণ এবং মৃত্যুর দিকে তারা পৃথিবীর এক নম্বর।
সুইডেনের বুড়ো মানুষদের বাঁচিয়ে রাখতে নিশ্চয়ই সেই দেশের অর্থনীতির উপর খুব চাপ পড়ছিল তাই এই ধাক্কায় তারা তাদের দেশের সব বয়স্ক মানুষকে মেরে ফেলে ঝাড়া হাত পা হয়ে গেছে। ভিয়েতনামকে দেখে আমরা সবসময়ই মুগ্ধ হই, এবারেও তারা যেভাবে দেশকে ভাইরাস মুক্ত রেখেছিল সেটা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম কিন্তু মনে হচ্ছে শেষ রক্ষা হলো না, এখন তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। সেদিন দেখলাম তারা আস্ত একটা শহরের সব মানুষকে করোনার জন্য টেস্ট করবে। রাশিয়া অক্টোবর মাস থেকে তাদের দেশের মানুষকে করোনার জন্য টিকা দিতে শুরু করবে, মনে হচ্ছে সবার আগে। পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের নাক সিটকানো এবং সমালোচনা শুরু হয়েছে, তারা বলছে তাদের থেকে আগে কেউ নেই, তাদের থেকে ভালো টিকা কারো নেই! (রাশিয়া বলছে তারা সবার আগে টিকা দেবে ডাক্তার এবং শিক্ষকদের। ডাক্তারদের ব্যাপারটা আমরা বুঝি কিন্তু শিক্ষকদের গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টা আমাকে খুব আনন্দ দিয়েছে! সত্যিই তো, একটা সমাজে শিক্ষক থেকে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ আর কে আছে?) পৃথিবীর অন্যান্যদের মাঝে যারা টিকা বানাচ্ছে তাদের মাঝে একটা কোম্পানি খোলাখুলি ঘোষণা দিয়েছে টিকা বিক্রি করে তাদের টাকা বানানোর মতলব আছে! পোলিও রোগের টিকা আবিষ্কার করেছিলেন জোনাস সাল্ক, তাঁকে তাঁর আবিষ্কারটি পেটেন্ট করার জন্য সবাই পীড়াপীড়ি করেছিল, তিনি রাজি হননি, বলেছিলেন, সবকিছু পেটেন্ট করা যায় না। সূর্যকে কেউ পেটেন্ট করতে পারবে? অস্ট্রেলিয়া এতদিন ভালোই ছিল এখন ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের জন্য ভিক্টোরিয়া রাজ্যে তারা মিলিটারি নামাচ্ছে। তবে সবচেয়ে দুঃখজনক মনে হয় ব্রাজিলের অবস্থা, সেখানকার প্রেসিডেন্টের একগুঁয়েমির কারণে কোনো স্বাস্থ্যমন্ত্রী সেখানে টিকতে পারে না, শেষবার যখন খোঁজ নিয়েছি তখন কোনো স্বাস্থ্যমন্ত্রীই ছিল না। সেখানে দিনে প্রায় একহাজার মানুষ করোনায় মারা যাচ্ছে।
যাই হোক, সারা পৃথিবী এখন একটা বিচিত্র সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। শত বছরেও পৃথিবীর এরকম অভিজ্ঞতা হয়নি। অভিজ্ঞতা বিষয়টি খারাপ নয়, কিন্তু এই অভিজ্ঞতাটি না হলেও মনে হয় চলতো!
কয়দিন আগে আমাদের বাংলাদেশ নিয়ে একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেখতে পেয়েছি। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির কাছে নয়শ এন্টিবডি কিট পাঠানো হয়েছে, এটা দিয়ে একজনের শরীরে করোনার এন্টিবডি আছে কী নেই, বের করা যাবে। যদি এন্টিবডি থাকে তাহলে ধরে নেওয়া যায় তার এর মাঝে করোনার সংক্রমণ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি তাদের এই কিটগুলো দিয়ে তাদের পরিচালিত হাসপাতালে স্বাস্থ্য কর্মী এবং সাধারণ কর্মীদের পরীক্ষা করেছে। ফলাফলটি আমার জানামতে বাংলাদেশের প্রথম বার প্রকাশিত এরকম একটি তথ্য। যারা স্বাস্থ্যকর্মী তাদের ভেতর শতকরা ২৫ জনের এর মাঝে করোনার সংক্রমণ হয়ে গেছে, যারা সাধারণ কর্মী তাদের মাঝে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ। যার অর্থ গড়ে এখানে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ মানুষের এর মাঝে করোনা হয়ে গেছে। (কলকাতা শহরে এর সংখ্যা হচ্ছে ১৭ শতাংশ। মুম্বাইয়ের বস্তিতে প্রায় ৬০ শতাংশ!)
যদি আরো বেশি করে আরো বিভিন্ন এলাকায় আরও অনেক মানুষকে এভাবে পরীক্ষা করা যেত তাহলে সংখ্যাটি আরো নিশ্চিতভাবে বলা যেত। কিন্তু আমরা মোটামুটি অনুমান করতে পারি এই এলাকায় প্রায় ১৫ শতাংশ মানুষের নিশ্চয়ই করোনা হয়ে গেছে। যার অর্থ বাইরে আমরা যাদেরকে ঘোরাঘুরি করতে দেখি নিশ্চয়ই তাদের ভেতরে একটা অংশ আসলে করোনায় সংক্রমিত, তাদের দর্শনীয় কোন উপসর্গ নেই তাই আমরা তাদের আলাদা করে চিহ্নিত করতে পারি না, তারা নিজেরাও হয়তো জানে না। কিন্তু হয়তো সবার অগোচরে তারা অন্যদের কম বেশি সংক্রমিত করে যাচ্ছে! আমি অন্তত দুই জনের কথা জানি যারা পুরোপুরি সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেও করোনায় সংক্রমিত হয়েছে এবং যথেষ্ট ভোগান্তির ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।
কলকাতায় শুধু যে এন্টিবডি টেস্ট হচ্ছে তা নয়, সেখানে এন্টিজেন টেস্টও শুরু করা হচ্ছে, যেটা করে দ্রুত কোভিড সংক্রমণ বের করা যায়, যদিও এই পদ্ধতিটা অনেক কম নির্ভরযোগ্য। কিন্তু অনেক দ্রুত, অনেক কম খরচে, অনেক বেশি টেস্ট করা যায় বলে জনস্বাস্থ্যের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এটা খুবই কার্যকরী। বিশেষজ্ঞরা বলে যাচ্ছেন এন্টিজেন টেস্ট করে যাদের করোনা আক্রান্ত পাওয়া যাবে তাদের যদি কিছুদিন ঘরে থাকতে বলা হয় তাহলেই রোগটা অনেক নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
আমি আমাদের কমনসেন্স দিয়ে বুঝতে পারি একটা সমস্যা সম্পর্কে যত বেশি খুঁটিনাটি জানা যায় সমস্যাটা ততো ভালোভাবে সমাধান করা যায়। তাহলে কেন আমরা আমাদের দেশের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ শুনি না? কেন আমরা ব্যাপকভাবে এন্টিবডি টেস্ট শুরু করি না? কেন আমরা এন্টিজেন টেস্টও শুরু করি না? সবচেয়ে বড় কথা আমাদের দেশের গণস্বাস্থ্য থেকে এই দুটি টেস্টেরই কিট তৈরি করা হয়েছে। এই সুযোগটি কেন আমরা গ্রহণ করছি না? যদি সত্যিই কর্মকর্তাদের দেশের প্রযুক্তির উপর বিশ্বাস না থাকে তাহলে কিটগুলো বাইরে থেকে আমদানি করলে কী হয়? সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপ হচ্ছে সমস্যাটাকে বোঝা! সমস্যা বোঝার জন্য প্রয়োজন হল তথ্য এবং তথ্য। কেন সেই তথ্য আমরা সংরহ করি না? আমরা সমস্যাটা বুঝতে চাই না? সবকিছু ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিতে চাই?
খবরে দেখেছি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। একসময় পরিচিত কাউকে কারোনায় আক্রান্ত হতে দেখতাম না। এখন প্রায়ই দেখছি। আশা করছি, অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ তার স্ত্রীকে নিয়ে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন, তাদের জন্য রইলো অনেক শুভকামনা।
০৫ অগাস্ট, ২০২০
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
লেখক ও অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করায় পাশ্চাত্যমতে আপনি সিংহ রাশির জাতব্যক্তি। আপনার ওপর আজ গ্রহপিতা রবি বিঘ্ন সৃষ্টিকারী গ্রহ কেতু ও দৈত্যকুল গুরু শুক্রের প্রভাব বিদ্যমান। আপনার সঙ্গে ধনু রাশির বন্ধুত্ব শুভফল প্রদান করবে। শিক্ষার্থীদের জন্য নিত্যনতুন সুযোগ এসে হাজির হবে। পিতামাতার স্বাস্থ্য নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। দ্বিচক্রযান বর্জনীয়।
মেষ [২১ মার্চ-২০ এপ্রিল]
আয় বুঝে ব্যয় করুন নচেৎ সঞ্চয়ে হাত পড়বে। দূর থেকে আসা কোন অপ্রিয় সংবাদে মন বিষণ্ন হয়ে পড়বে। বাড়ির ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী বৈদ্যুতিক মিটার জলের কল ও যানবাহন মেরামতে নাজেহাল হতে হবে। মন ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট থাকবে।
বৃষ [২১ এপ্রিল-২০ মে]
হারানো ধন সম্পদ সম্পত্তি ব্যবসা ফিরে পাওয়ার পথ প্রশস্ত হবে। বিদেশে অবস্থানরত স্বজনদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পথ খুলবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে পরিবারে ছোট্ট নতুন মুখের আগমন ঘটতে পারে। প্রেমীযুগলের হাতে নিত্যনতুন সুযোগ আসবে।
মিথুন [২১ মে-২০ জুন]
বেকার যুবক যুবতীদের কর্ম প্রাপ্তির বাসনা পূরণ করবে। অংশীদারদের সঙ্গে মতানৈক্যে দূর হবে। মামলা মোকদ্দমার রায় পক্ষে আসবে। শিক্ষার্থীদের মনে অলসতা দানা বাধবে। বিদেশ গমনেচ্ছুদের জন্য অচিরেই শুভ সংবাদ।
কর্কট [২১ জুন-২০ জুলাই]
দুর্যোগের মেঘ সরে গিয়ে সুদিনের সূর্য উদিত হবে। নিত্যনতুন প্ল্যানপ্রোগ্রাম আর স্বপ্নস্বাধ পূরণের পথ খুলবে। গৃহবাড়িতে নতুন আসবাবপত্র বস্ত্রালঙ্কার ও ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীর পসরা সাজবে। পিতামাতার স্বাস্থ্য ভালোর দিকে যাবে।
সিংহ [২১ জুলাই-২০ আগস্ট]
টাকা-পয়সা হাতে আসার আগেই খরচের খাত তৈরি হয়ে যাবে। চোরচিটিংবাজ অজ্ঞানপার্টি লুটতরাজ প্রভৃতির খপ্পর থেকে বাঁচতে নিজেকে গুটিয়ে রাখা সমীচীন হবে। সংকটকালে বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-পরিজন মজা দেখবে।
কন্যা [২২ আগস্ট-২২ সেপ্টেম্বর]
বিবাহযোগ্যদের পূর্ব প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রেমীযুগলের জন্য দিনটি স্মরণীয় বরণীয় ও রেকর্ড সৃষ্টিকারী দিবস হিসেবে গণ্য হবে। গৃহবাড়ি অতিথি সমাগমে মুখর হয়ে থাকবে। অপরিচিত কাউকে আশ্রয় দেওয়া নির্বুদ্ধিতার পরিচয় হবে।
তুলা [২৩ সেপ্টেম্বর-২২ অক্টোবর]
দুর্ঘটনা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিজেকে গুটিয়ে রাখা শ্রেয় হবে। শরীর স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে পড়ায় চিকিৎসানির্ভর হয়ে পড়তে পারেন। অবশ্য শ্রমিক কর্মচারীদের মনে মালিকপ্রীতি দেখা দেবে। প্রেম বন্ধুত্ব বিনোদন শুভ।
বৃশ্চিক [২৩ অক্টোবর-২১ নভেম্বর]
শিক্ষার্থীদের জন্য নিত্যনতুন কলহ বিবাদের মীমাংসা হবে। হারানো পিতৃমাতৃ ধন সম্পত্তি ব্যবসা ফিরে পাওয়ার পথ প্রশস্ত হবে। কর্মের সুনাম যশ পদোন্নতির পথ সুগম করবে। ব্যবসা-বাণিজ্যে মজুদ মালের দাম বৃদ্ধি পাবে।
ধনু [২২ নভেম্বর-২০ ডিসেম্বর]
দাম্পত্য জীবন কটুতায় ভরে থাকলেও বিচ্ছেদের সম্ভাবনা নেই। সহকর্মী ও অংশীদারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত সহযোগিতা আটকে থাকা কাজ সচল হবে। প্রেম রোমান্স বিনোদন ভ্রমণ বিবাহ বিনিয়োগ বন্ধুত্ব শুভ এমনকি সুদূর প্রসারী হবে।
মকর [২১ ডিসেম্বর-১৯ জানুয়ারি]
গৃহবাড়িতে কোনো না কোনো মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। ভাইবোনদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের মতানৈক্যের অবসান ঘটবে। কর্ম ও ব্যবসা-বাণিজ্যে বাড়তি দায়িত্ব ভার আসতে পারে। বিবাহযোগ্যদের বিবাহের কথাবার্তা পাকাপাকি হবে।
কুম্ভ [২০ জানুয়ারি-১৮ ফেব্রুয়ারি]
যে কাজে হাত দেবেন তাতেই কমবেশি সফলতা প্রাপ্ত হবেন। শূন্য পকেট পূর্ণ শুধু নয় ঋণ মুক্তির পথ প্রশস্ত হবে। সন্তানরা আজ্ঞাবহ হয়ে থাকবে। মামলা মোকদ্দমার রায় পক্ষে আসবে। শত্রু ও বিরোধীপক্ষের পাতা ফাঁদে তারা নিজেরাই ঘায়েল হবে।
মীন [১৯ ফেব্রুয়ারি-২০ মার্চ]
দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নস্বাধ পূরণের পথ প্রশস্ত হবে। গৃহবাড়ি ভূমি সম্পত্তি ও যানবাহন ক্রয়ের স্বপ্ন পূরণের দিকে ধাবিত হবে। অংশীদারদের সঙ্গে মতানৈক্যের অবসান ঘটবে। গৃহবাড়ি অতিথি সমাগমে মুখর হয়ে থাকবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন নিয়ে অধিদপ্তরের জরুরি বিজ্ঞপ্তি
এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) জারি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে যেগুলোর নাম শ্রুতিমধুর নয় সেগুলোর নাম পরিবর্তনের করা হবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পলিসি ও অপারেশন পরিচালক খালিদ আহম্মেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশে এমন কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম আছে যা শ্রুতিমধুর নয় এবং ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে সুশােভন নয়। যা নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে হাস্যরসের সৃষ্টি হচ্ছে। এরূপ বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে সামগ্স্য রেখে শােভনীয় নামকরণের প্রস্তাব যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আগামী ৩০ আগস্ট, ২০২০ তারিখের মধ্যে অ অধিদপ্তরে প্রেরণ করার জন্য অনুরােধ করা হল।
বিজ্ঞপ্তিতে নাম পরিবর্তনের উদাহরণ স্বরূপ উল্লেখ করা হয়েছে, ইতোমধ্যে নীলফামারী জেলাধীন সদর উপজেলার মানুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে মানুষ গড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে।
কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের তথ্যচিত্র নির্মাণের দুই সহযোগী সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা রানী দেবনাথকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তাদের পরিবার।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বাসিন্দা শিপ্রার বাবা বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা নবকুমার দেবনাথ বলেন, আমার মেয়ের তো কোনো দোষ ছিল না। সে সবসময়ই চুপচাপ স্বভাবের। নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ তো অনেক পরের কথা। আমার মেয়েকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে ঘটনাস্থলে ছিল না। সে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
তিনি বলেন, সম্প্রতি সে অনলাইনে পরীক্ষাও দিয়েছে। সে যদি অবৈধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকতো তাহলে এতদিন ওখানে থাকতে পারতো না। ফিল্ম এর কাজের জন্য জুলাই মাসের তিন তারিখ মেজর সিনহাসহ ওরা চারজন কক্সবাজারে যায়। তারা তিনজনই শিক্ষার্থী। একসঙ্গে লেখাপড়া করে এবং সিনেমার কাজ করে। ৩০ জুলাই রাতে সিনহাকে অস্বাভাবিকভাবে গুলি করে মারা হয়। এবং আমার মেয়ে তখন রেস্ট হাউজে ছিল। ঘটনার দিন রাত ২টায় তার রেস্ট হাউজে গিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালায়। এবং অবৈধভাবে তাকে গ্রেপ্তার করে। আমার মেয়ে প্রতিবাদ করেছিল ‘কেন আপনারা খুন করলেন তাকে। কি অপরাধে খুন করেছেন’।
নবকুমার দেবনাথ বলেন, শিপ্রাকে মাদকদ্রব্য দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। ওর সঙ্গে তাহসিন রিফাত নূর নামে আরেক শিক্ষার্থী ছিল। পুলিশ সদস্যের আত্মীয় হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়। আমার মেয়েকে অন্যায়ভাবে আটকে রেখেছে। আমার মেয়ের সম্পর্কে আমিতো জানি। কারণ আমি একজন সাবেক বিজিবি কর্মকর্তা হিসেবে এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানি। বাবা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করে বলতে চাই, আমার মেয়েকে এই ধরনের চক্রান্ত থেকে রেহাই দেন।
তিনি বলেন, ঈদের দিন সর্বশেষ শিপ্রার সঙ্গে আমার কথা হয়। তখন থানায় ছিল। কিন্তু আমাকে কিছুই জানায়নি। একাধিকবার ফোন দেয়ার পর সে আমাকে জানায়, আমি ভালো আছি। চিন্তা করোনা। একটা সমস্যায় আছি। তখন জানতে চাই কি সমস্যা। আমি হার্ট ও স্পাইনাল সমস্যায় ভুগছি। বাধ্য হয়ে চাকরি ছেড়ে অবসরে এসেছি। শিপ্রার গ্রেপ্তারের বিষয় গণমাধ্যমের বরাতে ৩ আগস্ট জানতে পারি। দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে সে বড়। ছোট ছেলে শুভজিত প্রান্ত শ্রেয় ভারতে আইটি ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ছে। শিপ্রার শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তার মা পূর্ণিমা দেবনাথ। পাঁচদিন ধরে শিপ্রার মায়ের খাওয়া-দাওয়া বন্ধ। স্ট্রোক করার মতো অবস্থা।
জানা গেছে, ঢাকার রামপুরা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন শিপ্রা দেবনাথ।
সিফাতের স্বজনরাও দাবি করেছেন, পুলিশ নিজেদের রক্ষা করতে সিফাতের নামে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। যে জীবনে সিগারেট খায়নি সে মাদক নেবে এমনটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম এন্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী শিপ্রা ও সিফাত। বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি ও নিরাপত্তা চেয়ে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীরা। এতে শিক্ষার্থীরা চারটি দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো- শিপ্রা ও সিফাতের সার্বিক নিরাপত্তা এবং নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে, মেজর (অব.) সিনহা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং মানসিক প্রহসন থেকে মুক্তি দিতে হবে।
শিপ্রা ও সিফাতের সহপাঠী ফয়জুল ইসলাম বলেন, ওরা একটা তথ্যচিত্র বানানোর জন্য যায়। সিফাত-শিপ্রা আমার ব্যাচমেট। আমরা একসঙ্গে অনলাইনে মিডটার্ম পরীক্ষাও দিলাম। শিপ্রা পরিচালক ও সিফাত সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে ওই প্রজেক্টে ছিল। সিফাত ও শিপ্রার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তা মিথ্যা। দ্রুত ওদের মুক্তি চাই।
মানববন্ধনে বলা হয়, গত ৩১ জুলাই কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ রোডে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা রাশেদ খান নিহত হন। তথ্যচিত্র নির্মাণের জন্য সেখানে মেজর সিনহার সঙ্গে অবস্থান করছিলেন সিফাত এবং শিপ্রা রানী। সেখান থেকে দু’জনকেই আটক করে পুলিশ।
‘মাহবুব কবিরের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়েছিল বড় এক কর্মকর্তার’
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলনকে ওএসডি (অন স্পেশাল ডিউটি) করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে (অতিরিক্ত সচিব) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে।
মেধাবী ও কর্মঠ কর্মকর্তা হিসেবে ব্যাপক সুনাম রয়েছে মাহবুব করিমের। বিশেষ করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি ব্যাপক প্রশংসিত হন। চলতি বছরের ২৫ মার্চ এক প্রজ্ঞাপনে তাকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে বদলির আদেশ দেয়া হয়। এই মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পর বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেছেন আলোচিত এই অতিরিক্ত সচিব। বিশেষ করে রেলের টিকিট, নিয়োগ, বদলি এসব নিয়ে বেশ সোচ্চার ছিলেন। এছাড়া টিকেট কালোবাজারি বন্ধে তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
মাহবুব কবির মিলনকে ওএসডি করার পর সামাজিকমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা দেখা যাচ্ছে। হাজার হাজার মানুষ তাকে ওএসডির প্রতিবাদ করছে। মাহবুব কবির মিলন রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর রেলে পরিবর্তন আনার ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছেন। ১৩০ বছরের রেলে যে পরিবর্তন আসেনি এমন অনেক কাজ করেছেন তিনি। এসব বিষয় নিয়ে রেলের কর্মকর্তারাও তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। এমনকি এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে তার হাতাহাতি হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার তাকে ওএসডি করার পর এমন একটি ঘটনাসহ রেলে মাহবুব কবিরের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সময় টেলিভিশনের সাংবাদিক নাজমুস সালেহী। তার স্ট্যাটাসটি পূর্বপশ্চিমের পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো- ‘ এদেশের মানুষের কাছে এক পরিচিত মুখ মাহবুব কবির মিলন। নিরাপদ খাদ্য থেকে তার দেশ প্রেমের নিদর্শন বাংলার মানুষ দেখেছে। রাত দিন নিরলস পরিশ্রম করে খাদ্য নিরাপদ করতে লড়াই করে গেছেন। সেই সময় জীবন বাজি রেখে নিয়েছেন যুগান্তকারী সব পদক্ষেপ। তার দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত আর দৃঢ়চেতা মনোভাবের কারণে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে সেখানে। যতটুকুই বা সুফল তার সবটুকুই মাহবুব কবিরের অবদান। তখন উনার সাথে আমার খুব বেশী পরিচয় নেই। পত্রিকায় তার খবর পড়তাম আর স্বপ্ন দেখতাম, নিশ্চয় আমার দেশও একদিন ঘুরে দাঁড়াবে। মিলনরা এই ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখাচ্ছেন, উনারাই গড়বেন দুর্নীতি মুক্ত আগামীর বাংলাদেশ। ফেসবুকে তিনি বিভিন্ন অনিয়ম আর দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। অনিয়মের বিরুদ্ধে উন্মুক্ত লেখালেখি করেন। জনমত যাচাই করে শুরু করেন কাজ। অল্প দিনেই ফেসবুকে হুহু করে বাড়তে থাকে তার ফ্যান ফলোয়ার। যে কোন অনিয়ম নিয়ে কেউ একটা কিছু পোস্ট দিলেই তা সমাধানে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। হয়ে ওঠেন আস্থার প্রতীক। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে এত জনপ্রিয় আর কেউ আছেন বলে জানা নাই। উনি যেন অল্প দিনেই হিরো হয়ে ওঠেন। হাজার হাজার মানুষ তার শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে যায়। তার গৃহীত পদক্ষেপ আর সাহসী কাজ কর্মে সহজেই মন জয় করে নেন সবার। ছোট বড় সবাই যে কোন অনিয়মের কথা প্রাণখুলে বলতে পারতেন। সবার কাছে হয়ে ওঠেন প্রিয় "মিলন স্যার"।
তখনও সরাসরি মাহবুব কবির মিলনের সাথে আমার কথা হয়নি। তবে অনলাইনে তার এক্টিভ কাজ কর্ম আর সাহসিকতা দেখে মুগ্ধ হই। চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি তার মত জনপ্রিয় আমলা আর এই মূহুর্তে একটিও নেই। আমার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ কেউ করবে বলে মনে হয়না। গণমাধ্যম কর্মীরা মিলন সম্পর্কে কেউ কোন অভিযোগ তুলতে পারবে বলে মনে হয়না। মিলন খুবই স্বচ্ছ সৎ ও দেশ প্রেমিক একজন কর্মকর্তা হিসেবে ইতোমধ্যেই মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন।
লোকটার সাথে কথা বলার ইচ্ছা বহুদিনের। কিন্ত হয়ে উঠছিলো না। আমার রিপোর্টিংয়ের আগ্রহ বরাবরই রেলপথ মন্ত্রণালয়। নিউজের কাজে মাঝে মধ্যেই রেলভবনে যেতে হয়। একদিন রেল ভবনে গিয়ে দেখি মাহবুব কবির মিলন, লোভ সামলাতে পারলাম না। সালাম দিয়ে আমার পরিচয় দিয়ে কথা বললাম। দেখলাম খুবই বাস্তববাদী ভদ্র এক মানুষ। কথায় ব্যবহারে নেই আমলাসুলভ আচরণ। এক ধরনের সরলতা তাকে জড়িয়ে রাখে। নিরহংকার সাদামাটা একটা মানুষ। তবে কথায় তেজ আছে, আছে দেশপ্রেম। শুনালেন তার পরিকল্পনার কথা।
জানতে পারলাম রেলের কেউ না হয়েও গত ৫/৬ বছর ধরে রেল উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। কখনও যাত্রীদের পক্ষ থেকে "যাত্রীবান্ধব" রেলের জন্য সব অনিয়ম তুলে ধরছেন। আবার কখনও সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দিচ্ছেন পরিকল্পনা। এভাবে তার নিরলস চেষ্টায় ৫/৬ বছরে রেলের অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়। তিনি রেলের কেউ নন, অথচ শুধু দেশপ্রেমের কারণে রেলের উন্নয়নে বিভিন্ন ফোরামে কথা বলে আসছিলেন। এসব কথা প্রথম পরিচয়েই জানালেন তিনি। আমিও ভাবলাম যেহেতু স্যার রেল নিয়ে কাজ কর তার সাথে ভালো সম্পর্কে হলে আমার নিউজে সহায়ক হবে। উনার সাথে অনেক কথা হলো। ভাবলাম এমন একজন লোক যদি রেলে আসে তাইলে কতই না ভালো হত। উনার সাথে সেই দেখার পর আর দেখা নাই অনেক দিন।
অনেকদিন পর হঠাত একদিন পত্রিকায় দেখি রেলের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পাচ্ছেন মাহবুব কবির মিলন। মনটা খুশিতে ভরে উঠলো l ফোনে উনার সাথে কথা হল। বললেন অনেক দিনের ইচ্ছা রেলপথ মন্ত্রণালয় কাজ করার আল্লাহ আমাকে সেই সুযোগ দিয়েছেন তোমরা পাশে থেকো। আমি বললাম স্যার সবসময় আপনার সাথে আছি। আপনার সব ভালো কাজে পাশে পাবেন।
রেলপথ মন্ত্রণালয় মাহবুব কবিরের আগমনের সবাই যেমন খুশি হয়েছিল, তার চাইতে বেশি খুশি হয়েছিল রেল যাত্রীরা। যারা দীর্ঘদিন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল, আর আমরা যারা গণমাধ্যমকর্মী তারাও একটু আশার আলো দেখলাম। অনেক বছর ধরে লোকসানে থাকা প্রতিষ্ঠানটি এবার কিছুটা হয়তো ঘুরে দাঁড়াবে মাহবুব কবির মিলন কে কেন্দ্র করে। উন্নয়ন ঘটবে রেলের এমন আশা করতে থাকলাম সকল গণমাধ্যম কর্মীরা।
রেলপথ মন্ত্রণালয় যোগদান করে মাহবুব কবির মিলন নানামুখী উদ্যোগ নিতে শুরু করলেন। তার ফেসবুকের লেখালেখি থেকে জানতে পারি তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জাতীয় পরিচয় ছাড়া টিকিট নিষিদ্ধ হয়। শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রির চালু হয়। তিনি রেলের ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টার চালুর উদ্যোগ নেন। যাত্রীদের কথা শোনার জন্য আলাদা অ্যাপ চালু করেন। ১৩০ বছর ধরে হাতে হাতে দেয়া হত রেলের বেতন মাহবুব কবির ইএফটি প্রবর্তন করেন। হারিয়ে যাওয়া ভূমি উদ্ধারে আত্মনিয়োগ করেন। মাহবুব কবির মিলনের কাছে শুনেছি কাজ করতে গিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা একজনের সাথে এই সমস্ত বিষয়ে তর্কাতর্কিও হয়েছে তার।
মিলন শুধু অল্প সময়ে যাত্রী সেবার কাজ করেননি রেলের উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছিলেন। মিলনের মত এক জন সৎ কর্মকর্তাকে ওএসডি করায় আশ্চর্য হয়েছি। কষ্ট পেয়েছি।
প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাচ্ছেন ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাসের ‘কথিত’ সাক্ষাৎ না হওয়ার প্রসঙ্গে যখন উভয় দেশের মিডিয়া সরগরম ঠিক সেই মুহূর্তে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের তরফে প্রধানমন্ত্রীর অ্যাপয়েনমেন্ট চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সরকার প্রধানের সঙ্গে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের তরফে একটি নোটভারবাল পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চাওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগ কাল বিলম্ব না করে রাষ্ট্রাচার অনুবিভাগের মাধ্যমে সেটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের বিবেচনায় পাঠিয়েছে।
সূত্র বলছে, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপড়েনের যে গল্প প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চলছে, তা অচিরেই ব্যর্থ হবে। ভারতীয় দূত তো বটেই, এ পর্যন্ত যত বিদেশি দূত সাক্ষাৎ চেয়েছেন করোনা পরিস্থিতির খানিক উন্নতি হলেই তারা সরকার প্রধানের মুখোমুখি সাক্ষাৎ পাবেন।
এদিকে রীভা গাঙ্গুলী দাস ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। বাংলাদেশে তার স্থলাভিষিক্ত হবেন বিক্রম দোরাইস্বামী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ চাননি। তার অ্যাপয়েনমেন্ট সংক্রান্ত কূটনৈতিক পত্রে ‘বিদায়’ বিষয়ক কোনো কিছুরই উল্লেখ নেই। ফলে চাহিত সাক্ষাৎকে সৌজন্য সাক্ষাৎ হিসেবেই বিবেচনা করছে সরকার। তাছাড়া চূড়ান্তভাবে বিদায়টি প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে চাওয়া বা নেয়াই রেওয়াজ। রাষ্ট্র প্রধানের অ্যাপয়েনমেন্ট এখনো চায়নি হাইকমিশন। ফলে সরকার প্রধানের প্রস্তাবিত সাক্ষাৎকে সৌজন্য সাক্ষাৎ বলেই বিবেচনা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সাথে বিদায়ী সাক্ষাতে ঢাকায় নিয়োজিত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাস বলেছেন, বাংলাদেশ -ভারত সম্পর্ক এতো হালকা নয়। গত কয়েক বছরে ছিটমহল, সমুদ্র সীমানা বিরোধসহ দু’দেশের মধ্যে জমে থাকা সমস্যার সমাধান হয়েছে। দুই দেশ উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন তারা। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলেও দু’জন আশা প্রকাশ করেন। ভারতীয় হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ণ উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের উপর লিখিত বই হিন্দিতে অনুবাদ করার জন্য অনুরোধ করেন। এছাড়া ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশের জনগণের আনন্দের অংশীদার হতে ভারত ইচ্ছুক বলেও জানান।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হয়, ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস চার মাস ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না। পরে এমন খবর নাকচ করে দেয় সরকারি সূত্রগুলো।
ঢাকার একটি সূত্র ইকোনমিক টাইমসকে বলেছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে যেখানে সাক্ষাতের অনুরোধই করা হয়নি, সেখানে সাড়া না দেওয়ার প্রশ্ন অবান্তর। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী করোনা সংক্রমণ এড়াতে ‘সামাজিক দূরত্ব’ মেনে চলছেন। বিদেশি কোনো ব্যক্তির সঙ্গেই তিনি সশরীরে বৈঠক করছেন না।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনার সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না, শেখ হাসিনার সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ফোনালাপ এবং চীনের ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগে ঢাকা-নয়াদিল্লি সম্পর্কে টানাপড়েন- এ ধরনের অনেক প্রচারণা চলছে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা ও নয়াদিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো এসবকে স্বার্থান্বেষী মহলের ‘অপপ্রচার’ হিসেবে অভিহিত করে তা নাকচ করে দিয়েছে।