চট্টগ্রামঃ দেশের মানুষকে করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করছেন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বয়স ৭৪ বছর। একটি দিন তিনি বসে নেই। প্রতিদিন আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে মিটিং করছেন- নানা নির্দেশনা দিচ্ছেন।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তার (প্রধানমন্ত্রী) কাজের সবগুলো তো আর টেলিভিশনে দেখানো হয় না। আরও অনেক কাজ- যেগুলো তিনি করছেন, সেগুলো আমরা অনেকেই জানি না। একটি দিনও তিনি বসে নেই। তার এই নেতৃত্ব ব্যতিরেকে এই মহামারী মোকাবিলা করা কখনও সম্ভব নয়।’
শুক্রবার (১৭ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ এস আলম গ্রুপের অর্থায়নে হাসপাতালে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা সামগ্রী প্রদান এবং চট্টগ্রাম মেরিন সিটি হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী এইসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা ভাইরাস আমরা যেভাবে মোকাবিলা করেছি, করোনা ভাইরাসের প্রকোপ অন্তত আমরা আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়েছি।
চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালে ৫টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা হস্তান্তর করছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ‘অনেকে অনেক সমালোচনা করেন। যারা সমালোচনা করছেন, তারা টেলিভিশনে উঁকি দিয়ে দিয়ে সমালোচনা করছেন। ঘর থেকেও বের হন না। ঘরের মধ্যে বসে টেলিভিশনে উঁকি দিয়ে সমালোচনা করেন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে স্বাস্থ্যখাতে জেকেজি-রিজেন্টকে সরকারই উদ্ঘাটন করেছে। কোনো পত্রিকার রিপোর্টের প্রেক্ষিতে এটি উদ্ঘাটন হয়নি। বা বিরোধীদল বলেছে- সেই কারণে এটি উদ্ঘাটন হয়নি। সরকারই এটা করেছে।
‘সরকার এইখানে যাতে কোনো অনিয়ম দূর্নীতি না থাকে- সেই জন্য এই কাজটি করেছে। অবশ্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের এই ব্যাপারে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিলো বলে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি। কিন্তু সরকারই এটি উদ্ঘাটন করেছে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ করোনার প্রাথমিক পর্যায়ের চিকিৎসা স্বল্পতা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। এখন আইসিইউ বেড ও হাসপাতালে জেনারেল বেড খালি থাকে। অক্সিজেনসহ অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জামের অপ্রতুলতা দূর হয়েছে। করোনার চিকিৎসা ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারের পাশাপাশি অনেক ব্যক্তি ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান করোনার চিকিৎসায় এগিয়ে এসেছেন। যেখানে স্বামীর মরদেহ স্ত্রী ধরছেন না, বাবার সৎকারে ছেলে আসছেন না সেখানে অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জাতি, ধর্ম, বর্ণ ভেদ না করে মৃত ব্যক্তিদের সৎকার করছেন। তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ তাদের প্রাপ্য।
‘এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মাসুদ ভাইকে ৪০ বছর ধরে আমি চিনি। তিনি প্রচারবিমুখ মানুষ। প্রচারবিমূখ এস আলম গ্রুপ সব সময় জনকল্যাণে এগিয়ে এসেছে। করোনা মোকাবিলায়ও তারা এগিয়ে এসেছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জাম, সুরক্ষা সামগ্রী দিচ্ছে। আশা করি তাদের এ কার্যক্রম দেখে অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানও উৎসাহী হবে এবং এগিয়ে আসবে।
অ্যাম্বুল্যান্সের চাবি হস্তান্তর করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদড. হাছান মাহমুদ বলেন, অতীতে ভাইরাসের আক্রমণে প্রথিবীর পাঁচ ভাগের এক ভাগ মানুষ আক্রান্ত বা মৃত্যুবরণ করেছে। করোনায়ও এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা কোটি ছাড়িয়ে গেছে। ভবিষ্যতে আরো নানা ভাইরাস আসার আশংকা রয়েছে।
‘কাজেই যারা স্বাস্থ্য ব্যয়ের তুলনায় সমর ব্যয় বেশি করে থাকে, তাদের এখন নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করার সময় এসেছে। তাদেরকে মানবকল্যাণে ব্যয় আরও বৃদ্ধি করতে হবে। স্বাস্থ্যখাতে নজর দিতে হবে’
বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদের সভাপতিত্বে এবং জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার, বিএমএ চট্টগ্রামের সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান, সাধারণ সম্পাদক ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, এস আলম গ্রুপের প্রতিনিধি আকিজ উদ্দিন বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে এস আলম গ্রুপের অর্থায়নে করোনা মোকাবিলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে ১০০টি হাই ফ্লো-ন্যাসাল ক্যানোলা প্রদান, চট্টগ্রাম মেরিন সিটি মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল ঘোষণা, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন উদ্বোধন এবং কক্সবাজার জেলায় ২টি অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করা হয়।