মহামারি করোনার কারণে সীমিত করা হয়েছে এবারের হজের অংশগ্রহণ। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ৯ জিলহজ (সৌদি আরবে) স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে পালিত হবে পবিত্র হজ।
গোটা পৃথিবীর লাখ লাখ মুসলমানের হজ পালনের চিরায়ত দৃশ্য এবার অবলোকন করা যাবে না। এবার পবিত্র হজ পালন করবেন ১ হাজার হাজী। করোনা মহামারীর কারণে এ বছর সীমিত পরিসরে হজ পালনের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যবিধি জারি করেছে সৌদি আরবের জাতীয় রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।
এ কারণে নিবন্ধনকৃত ১০ হাজার হজযাত্রীর মধ্যে মাত্র ১ হাজার জনকে নির্বাচিত করে গত ২৫ জুলাই থেকে আবাসিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এখানেই শারীরিক সুস্থতাসহ হজের প্রাথমিক প্রস্তুতির কাজ সমাপ্ত করেছেন হাজীরা। এবারই প্রথম সৌদি আরবে অবস্থানকারী বিশ্বের ১৬০টি দেশের নাগরিকরা পবিত্র হজে অংশ নিচ্ছেন।
হজ পালনকারীরা এবার কাবা শরিফ ও কালো পাথরে (হাজরে আসওয়াদ) চুমু খেতে বা স্পর্শ করতে পারবেন না। আরাফাতের ময়দান ছাড়া সব সময় মাস্ক পরিধান করতে হবে। বৃহস্পতিবার এখানে হাজীরা জোহর ও আসরের নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন।
এর আগে বুধবার (২৯ জুলাই) ৮ জিলহজ (সৌদি আরবে) মিনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন হাজীরা। আগামীকাল সারা দিন আরাফাত ময়দানে অবস্থান শেষে মুজদালিফায় যাবেন এবং রাতযাপন করবেন। সেখানে মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন।
পরদিন শুক্রবার ১০ জিলহজ জামারায় শয়তানের উদ্দেশে পাথর ছুড়ে মারবেন। এজন্য আগে থেকে জীবাণুমুক্ত প্যাকেটজাত পাথর ব্যবহার করতে হবে (সৌদি কর্তৃপক্ষ এসব পাথর সরবরাহ করবেন)। তাই এবার মুজদালিফা থেকে শয়তানকে ছুড়ে মারা কঙ্কর সংগ্রহ করতে হবে না। এভাবে পরপর আরও দুই দিন শয়তানের উদ্দেশে কঙ্কর মারতে হবে।
এরপর মাথা মু-ন করে কোরবানি দিতে হবে। এ ছাড়া প্রথম দিনের কঙ্কর মারা শেষ হলে চলমান হজ কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব হাজীকে মিনায় নির্দিষ্ট আবাসনে থাকতে হবে।
হজ পারমিট ছাড়া হজের জন্য পবিত্র স্থান মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতের ময়দানে প্রবেশ গত ২৫ জুলাই থেকে হজের পঞ্চম দিন ১২ জিলহজ পর্যন্ত নিষিদ্ধ থাকছে। হজ পালনকারীরা যেখানেই সমবেত হোন না কেন, দুজনের মধ্যে অন্তত দেড় মিটার দূরত্ব রাখতে হবে। আরাফাত ও মুজদালিফায় হজ পালনকারীদের অবশ্যই নির্ধারিত স্থানে অবস্থান করতে হবে।
কুলাউড়ায় আনুষ্ঠানিক আয়োজনে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির দাফন!
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
কুলাউড়ায় প্রশাসনের অগোচরে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে আনুষ্ঠানিক আয়োজন করে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া আব্দুছ সবুর নামে এক ব্যাক্তির জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করেছেন তার পরিবার। ঘটনাটি উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের মৌলভীগাঁও গ্রামের।
জানা যায়, উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের মৌলভীগাঁও গ্রামের আব্দুছ সবুর কিছুদিন পূর্বে অসুস্থ হয়ে সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন চিকিৎসার জন্য। করোনা উপসর্গ থাকায় সেখান থেকে সিলেটের করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল শহীদ শামছুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে করোনা টেস্টে তার পজেটিভ রেজাল্ট আসে। মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে তিনটায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুছ সবুরের মৃত্যু হয়।
পরিবারের লোকজন সেখান থেকে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে প্রশাসনসহ স্থানীয় লোকজনের কাছে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি গোপন রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাজার আয়োজন করে রাত ৯টার দিকে আব্দুছ সবুরের লাশ দাফন করেন পরিবারের লোকজন ও স্বজনরা।
ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক মমদুদ হোসেন জানান, কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমাকে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে আমি সেই মৃত ব্যক্তির বাড়িতে যাই। তখন পরিবারের লোকজন বিষয়টি অস্বীকার করে আমাকে বলে আব্দুছ সবুর বার্ধক্যজনিত কারণে সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। পরে আমি হাসপাতালের কাগজপত্র দেখতে চাইলে আব্দুছ সবুরের পরিবারের লোকজন বলেন, হাসাপাতালের ব্যবস্থাপত্র ও ছাড়পত্র কোথায় রেখেছেন সেটা খুঁজে পাচ্ছেন না।
তিনি জানান, আমি যখন সেখানে যাই ততক্ষণে আব্দুছ সবুরের লাশের গোসল ও কাফন পরানো হয়ে গেছে। পরে উনার স্বজনদের বলেছি সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করতে।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক জানান, সিলেটের শহীদ শামছুদ্দিন হাসপাতাল থেকে আমাদের জানানো হয় সেখানে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কুলাউড়ার একজন মারা গেছেন। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ব্রাহ্মণবাজারের ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেছি খোঁজ নিতে এবং মৃত ব্যক্তির পরিবারকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করতে। ইউপি চেয়ারম্যান খোঁজ নিয়ে জানান, পরিবারের লোক বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে লাশের গোসলের কাজ সম্পন্ন করেছেন।
সিলেটের শহীদ শামছুদ্দিন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও জয়নমেজয় দত্ত মুঠোফোমে জানান, আমাদের হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া ব্যক্তির দাফন কাজ সম্পন্নের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশ দিয়ে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী পরিবারের লোকজন স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করে সীমিত পরিসরে জানাজার মাধ্যমে দাফন সম্পন্ন করতে হবে।
১. করোনার ভয়াবহতা মুক্ত হয়নি পৃথিবী, প্রিয় স্বদেশ। অক্সফোর্ডের সারাহ গিলবার্টের ভ্যাকসিন আবিষ্কার বড় আশার আলো। আরও দেশ বলছে আশার কথা। বাজারে আসার আগেই কত প্রাণ ঝরে পড়ছে। কত মানুষ কাজ হারাচ্ছে। অর্থনীতি দেশে দেশে কত ভয়ঙ্কর রকম হোঁচট খাচ্ছে! আমাদের আবার মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা, তিন দফা অতিবৃষ্টি পাহাড়ি ঢলে বন্যায় দুর্ভোগে মানুষ। শেখ হাসিনা খাদ্য ত্রাণ অর্থ সাহায্যের উদার হাত মানুষের দুয়ারে বাড়িয়েছেন।
সামাজিকভাবে এখনো বিচ্ছিন্ন আছি। আগের মতো খবরাখবরও পাই না। দেশের চলমান অনেক ঘটনাবলির আগামাথাও বুঝি না। মাঝেমধ্যে মনে হয় ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কী যেন বলতে চায়, হিসাব মেলে না। বেশি ভাবলে চিন্তা দুশ্চিন্তায় পরিণত হয়, ঘুমের ওলটপালট ঘটে। একজন প্রাণবন্ত এমপি নওগাঁর ইসরাফিল আলমও করোনায় হেরে চলে গেলেন। বড় অমায়িক নিরহংকারী মানুষ ছিলেন। বেঁচে থাকাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের প্রিয় অগ্রজ আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর পিতা মুক্তিযোদ্ধা সালেহ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সর্বশেষ বার্ধক্যজনিত রোগে মারা গেলেন। যাওয়া হলো না শেষ বিদায়ে। কানে বাজে অচেতন অবস্থায় মৃত্যুশয্যায় বলছিলেন, ‘তোমার আমার ঠিকানা বঙ্গবন্ধুর জমানা’। এরাই তো বঙ্গবন্ধুর ভক্ত। আল্লাহভীরু পরহেজগার মানুষটিকে দয়াময় বেহেশত নসিব করুন। অবসরে যাওয়া আইন সচিব সৎ দক্ষ কর্মকর্তা আবু সালেহ শেখ জহিরুল হক করোনায় জীবন-মৃত্যুর মুখে। ’৭৫-উত্তর দুঃসময়ে রাকসুজয়ী ছাত্রলীগ নেতা আমাদের প্রিয় দুলাল ভাই সরল স্নেহপ্রবণ গণমুখী ছিলেন। আল্লাহ তাকে হেফাজত করুন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে শূন্য আসনেও নাকি শকুনদের চোখ পড়েছে। আহারে রাজনীতিদরা।
এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার শারমিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নকল মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। ঢাবি কর্তৃপক্ষ তাকে অব্যাহতিও দিয়েছেন। এর আগে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আমিনুল ইসলামের লাইসেন্সে তার এক বন্ধু মাস্ক সরবরাহ করে একই অভিযোগে আটক হন। আমিনও মামলা খেয়েছেন। আমিনের লাইসেন্সে ১৯ লাখ ৩০ হাজার টাকার সরবরাহ কাজ, শারমিনকে ১৯ লাখ টাকার কাজ দেওয়া হয়। কেউই নাকি বিল তোলেননি। এ ছাড়া ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শিশিরকেও নাকি উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমলা সচিবদের দাপুটে শাসনামলে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার আশ্রয়ে আসা সুবিধাভোগীদের রমরমা বাণিজ্য, দম্ভ লুটপাটে, আওয়ামী লীগের এক দশকে একসময়ের নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মীদের অভিমান জমতে জমতে এখন মন পুড়ছে। এ তিন ঘটনায় বাণী ইয়াসমীন হাসি ও শামীমা দোলাসহ ছাত্রলীগ করে আসা সংবাদকর্মী ও দলের পদবিহীন নেতা-কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় তুলছেন। তাদের প্রশ্ন বড় বড় দুর্নীতিবাজ লুটেরাদের না ধরে, সামান্য ক’ টাকার কাজ পাওয়া দলের দুর্দিনের ত্যাগী কর্মীদের বেইজ্জত করার নেপথ্যে দুরভিসন্ধি আছে। জেএমআইকের রাজ্জাক সবার আগে সবচেয়ে বড় মাস্ক কেলেঙ্কারি করেও কীভাবে দাপটে হেঁটে বেড়ান? কেন দুর্নীতিগ্রস্ত স্বাস্থ্য খাতের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটেরাদের ধরা হয় না? কর্মচারী আবজাল বউসহ দেড় হাজার কোটি টাকা লুটে বিদেশ চলে যান? মাফিয়া ডন মিঠুকে কেন ধরতে আইনের হাত ছোট ও দুর্বল? রূপপুরের বালিশ কেলেঙ্কারির দুর্নীতিবাজ কীভাবে পাবনায় এত বড় কাজ পায়? আইন কেন পাকড়াও করে না? আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে পদবি পাওয়া নেতারা হঠাৎ এক দশকে ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়া অঢেল অর্থবিত্তের মালিক হয়েও কেন আইনের ঊর্ধ্বে? মন্ত্রী, এমপি ও জাঁদরেল সরকারি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় অনুপ্রবেশকারীরা কীভাবে বেশুমার লোটে? হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ পাওয়া জি কে শামীমদের নেপথ্য শক্তি কেন আসে না আইনের কাঠগড়ায়? যারা শেয়ারবাজার লুটেছে, ব্যাংক ডাকাতি করেছে, খেলাপি ঋণের পরও বিলাসী জীবনে দেশ-বিদেশে সম্পদ গড়েছে, নানা খাতে যারা বিদেশে অর্থ পাচার করেছে লাখ লাখ হাজার কোটি টাকা সেখানে আইনের হাত লম্বা হয় না কেন? কীভাবে দুর্নীতিবাজরা জামিন পায়, নয় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে? এসব প্রশ্নের যুক্তি তো অনেক শক্ত! কী জবাব আছে। একজন অপরাধীর প্রশ্রয় কত অপরাধীর জন্ম দেয়? অপরাধীদের পক্ষে কারা তদবির করে বেড়ায়?
বিগত বছরের সেপ্টেম্বরে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্যের ধূর্ত শিয়াল লোকমানও আটক হয়েছিল। গোটা দেশ জেনেছিল সেই সংবাদ। মোহামেমেডান ক্লাবের পরিচালক ইনচার্জ লোকমান বললে সবাই যত চেনেন, তার চেয়ে বেশি চেনেন মোসাদ্দেক আলী ফালুর একসময়ের বিশ্বস্তজন হিসেবে। আরও বেশি চেনেন তাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেহরক্ষী হিসেবে। তিনি ২০০১ সালে বিএনপি জোট বিজয়ী হলে সংসদে সংসদ নেতার অফিসকক্ষে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ভাঙচুর করেছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের রক্তে আসা ক্ষমতায় লোকমানদের কারা এত প্রতাপশালী করেছে? কারা বিসিবির পরিচালক করেছিল? কেবল তাকেই নয়, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর বজলুল হুদার শ্যালক হানিফ ভূইয়াকেও কারা বিসিবির পরিচালক করে? সেপ্টেম্বরের সেই অভিযানে ক্যাসিনো বাণিজ্যের অপরাধে কলাবাগান ক্লাবের সভাপতি ফিরোজসহ অনেকে গ্রেফতার হন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকেও ঝড় তুলে গ্রেফতার করা হয়। সে সময় খবর হয় সম্রাট দুঃসময়ের আওয়ামী লীগের রাজপথের কর্মী ও তার আয় নিজের ক্যাসিনো খেলা বাদে দলের কর্মীদের পেছনেই ঢালতেন। দলের কর্মসূচিতেও চাঁদা দিতেন, ব্যাপক কর্মীদের আনতেন এবং নির্বাচনসহ নানা সময়ে অনেক প্রার্থী ও নেতাকে অনুদান দিয়েছেন। ক্যাসিনো বাণিজ্য ঘিরে যুবলীগ নেতৃত্ব ঝড়ের মুখে উড়ে যায়, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতারাও পদবি হারিয়ে বিদায় নেন। এত মাস হয়ে গেল ঢাকা নগরীতে কাদের পৃষ্ঠপোষকতায়, কাদের শক্তিতে কাদের ভাগবাটোয়ারার লোভে এমন অবৈধ ক্যাসিনো বাণিজ্য রমরমা ছিল জানা গেল না! তদন্ত এত দিন কী হলো তবে! বিস্ময়কর বিষয় যে ক্যাসিনো বাজিকর সেই মোহামেডান ক্লাবের শিরোমণি রাতের জুয়ার কারবারি লোকমান ২৫ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হয়ে অদ্ভুতভাবে আদালতের জামিনে এ বছর ১৯ মার্চ জেল থেকে মুক্ত হয়ে বুকভরে শ্বাস নিচ্ছেন! অথচ কোটি কোটি টাকার জুয়ার আয়ই নয়, বিদেশেও অর্থ পাচারের খবর বের হয়েছিল। আর কলাবাগানের ফিরোজ সেই ভাগ্যবান যিনি ২২ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হয়ে এ বছর ১ জানুয়ারি জেল থেকে মুক্ত হন। বাকিদের খবর জানি না। তবে যুবলীগ থেকে বহিষ্কৃত ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও জেলবন্দী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায়ই তার শারীরিক অবনতির খবর পাওয়া যায়। লোকমানরা কেন জেলের বাইরে আর সম্রাটরা কেন ভিতরে এর কোনো যুক্তি মাথায় আসে না। আমরা তো সব অপরাধীর বিচার চেয়েছি, জেনেছি আইনের চোখে সবাই সমান। তাহলে? কোনো অপরাধেই আড়ালের কাউকেই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে দেখলাম না! উল্টো এক দশকে নব্য আওয়ামী লীগারদের রমরমা ক্ষমতা ও সুবিধা ভোগের দাম্ভিক চেহারা দেখেছি। আমরা চাই ছোট-বড় সব দুর্নীতিবাজ লুটেরা ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হোক। যত খুচরা কাচকি আর মলা মাছ ধরা হয়, রাঘববোয়াল বা রুই-কাতলা একটাও জালে ধরা পড়ে না। ধরতে কোথায় যেন বড় অনীহা! এমনকি এক দশকে দল ও ক্ষমতায় আশ্রিত নব্য আওয়ামী লীগার ছাড়াও অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিড বা কাউয়াদেরও তাড়ানোর বা তালিকাবদ্ধ করার উদ্যোগ নেই। জনগণের দল আওয়ামী লীগ ও জনগণের নেত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতার উৎস হবে আদর্শিক কমিটেড নেতা-কর্মী ও জনগণ, কখনই আমলা বা হঠাৎ আসা নব্য আওয়ামী লীগার নয়। নয়া মুসলমান যেমন গরু খায় বেশি তেমনি নয়া আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার চেয়েও বড় আওয়ামী লীগ ও নেত্রী বন্দনা করে। এরাই সর্বনাশা চাটার দল। করোনাকালেও যারা দুর্নীতির মহোৎসবে ভাসে, তারা দেশদ্রোহী বিশ্বাসঘাতক। এদের প্রতি স্বজনপ্রীতি বা এদের রক্ষা করার তৎপরতা যারা করে তারা বেনিফিশিয়ারি অপরাধী। লোভের বিষে বিষাক্ত সব অপরাধী দুর্নীতিবাজ লুটেরা, বড় ছোট সবার জন্যই আইনের কার্যকারিতা সমান করে আজ বিচার ও শাস্তিদান মানুষের দাবি। আইনের গতিকে স্বাভাবিক ধারায় চলতে হবে। দুদক বা আদালতে, পুলিশি তদন্তে কারও হস্তক্ষেপ আরেক ধরনের বেইমানি। ইমানের সঙ্গে ন্যায়বিচারের পাহারাদার হওয়ার সময় এখন সবার।
করোনাকালেও নকল টেস্ট রিপোর্ট, নকল মাস্ক, নকল ডাক্তার, নকল ওষুধ, অবৈধ হাসপাতাল কত কিছু ধরা পড়ছে! অবাক কা- ফাইভ পাস, সিক্স পাস নিউরোলজির ডাক্তার ধরা পড়ে! সাহেদ-সাবরিনাদের টেস্ট জালিয়াতি বিশ্বে মাথা নিচু করেছে। সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানের কন্যা জাল টেস্ট রিপোর্ট নিয়ে আটক হন বিদেশ যাওয়ার সময়! কতটা লজ্জার বিষয়। কত হাসপাতাল চলছে অনুমতি ছাড়া! নিয়ম-নীতিহীন। স্বাস্থ্য খাত দুর্নীতিগ্রস্ত দেউলিয়া ব্যর্থ অতি পুরনো কথা। এসব বিশ্বাসঘাতক কীভাবে এমন সর্বনাশ করেছে?
২. জাসদের একাংশের নেতা আ স ম আবদুর রব বলেছেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ কেরানীগঞ্জে রতন গগনদের বাড়ি গিয়ে মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা শোনেন! সিরাজুল আলম খানসহ ছাত্রলীগের নিউক্লিয়াসের সদস্য ছাড়া কোনো বাঙালি স্বাধীনতার কথা চিন্তাই করেননি! স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা আ স ম রবের প্রতি আমার শ্রদ্ধা-ভালোবাসা থাকলেও এ বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। সব স্বাধীনতা সংগ্রামী ও মুক্তিযোদ্ধা এবং অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনীতিবিদদের প্রতি আমি সম্মান রাখলেও ইতিহাসের সন্তান ডাকসু ভিপি রব ভাইয়ের মুখে এমন কথা বেমানান। এতে আমি ব্যথিত এবং তাঁর ব্যাখ্যার সঙ্গে তোফায়েল আহমেদ ও নূরে আলম সিদ্দিকীর ব্যাখ্যা, মতামত চাইছি। স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতা তৎকালীন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজের মৃত্যুতে স্মরণে রব এ কথা বলেন। পরাজিত হানাদার বাহিনীর দোসররা এমনটা বলেনি। পাকিস্তানের নথিপত্র, আন্তর্জাতিক দলিল-দস্তাবেজ, গণমাধ্যম, কোথাও যে মিথ্যা নেই সেখানে ইতিহাসের সন্তান আ স ম রব কীভাবে এমন বলেন! আ স ম রবকে বাদ দিয়ে তো স্বাধীনতার ইতিহাস লেখা হবে না, তাহলে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে কোথায় নির্মোহ সত্য বলে প্রশান্তির মৃত্যুবরণ করবেন, সেখানে তা নয় কেন এমন বক্তব্য? এমনটা স্বাধীনতাবিরোধীদের মুখে তৃপ্তির হাসি তুলে দেয়।
শেখ মুজিবের গড়া ছাত্রলীগের রাজনীতিতে না এলে, বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য কর্মী না হলে, সেই সংগঠনের নেতৃত্বে ইতিহাসের মাহেন্দ্রক্ষণে জায়গা না হলে কি মুজিব বাহিনীর চার নেতা বা স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের চার নেতার নাম ইতিহাসে লেখা হতো? সাম্প্র্রদায়িক পাকিস্তান রাষ্ট্রকে জন্ম থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেনে নিতে পারেননি বলেই স্বাধীনতার লক্ষ্যে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করে, আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হয়ে তার লক্ষ্য অর্জনের সংগ্রাম শুরু করেন। ’৬১ সালেই শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ও শেখ ফজলুল হক মণিকে দিয়ে বিদেশি দূতাবাসে স্বাধীন বাংলাদেশের লিফলেট প্রচার করান গোপনে। সিরাজুল আলম খান তখন তাঁদের কর্মী। ’৬২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মধ্যরাতের পর মানিক মিয়ার মধ্যস্থতায় ভারতীয় উপদূতাবাসের পলিটিক্যাল অফিসার শশাঙ্ক ব্যানার্জির সঙ্গে ভোররাত পর্যন্ত বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বাধীন বাংলাদেশের লড়াইয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত নেহেরুকে চিঠি দেন সমর্থন চেয়ে। সেই চিঠিতে স্বাধীনতার রূপরেখাও দেন। পরে ’৬৩ সালের শুরুতে আগরতলা যান ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে নেহেরুকে বিষয়টি বোঝাতে। নেহেরুও তাঁর বার্তা দেন। সে দীর্ঘ ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুও আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠিত করে তাঁর লক্ষ্য অর্জনে নামেন, ছয় দফা দেন, জনগণকে তাঁর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ করেন। তিনি রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব বা আগরতলা মামলার প্রধান আসামি হন। ৩৮ মাস জেল খেটে ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে মুক্ত হন, আইয়ুবেরও পতন হয়। তিনিই তাঁর স্বাধীনতার স্বপ্নে, নেতৃত্বে, সংগ্রামে, দলকে শক্তিশালী করেন, ’৭০-এর নির্বাচনে জয়লাভ করে একক নেতায় পরিণত হন। বঙ্গবন্ধুই আমাদের মহান স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা, তিনিই নেতা ও সফল মহানায়ক। স্বাধীন দেশের জাতির পিতা। ছাত্রলীগ ষাটের দশকে স্বাধিকার স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধে অনন্যসাধারণ ভূমিকা রেখেছে। ছাত্রলীগ বা ডাকসুর নেতৃত্বে থাকার সুবাদে অনেকে নায়ক হয়েছেন। কিন্তু রাজনীতি ও স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লক্ষ্য ও নির্দেশ পালনে তাঁরা ছিলেন মাঠের সফল ছাত্রনেতা বা কর্মী। বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছা বা নির্দেশের বাইরে তাঁদের কিছুই করার ছিল না। নিউক্লিয়াস স্বীকৃত কিছু নয়, হলে তাঁদের নিজেদের কয়েকজনের চিন্তা। বঙ্গবন্ধু জানলেও চিন্তা করেছেন প্রচার করুক এ তো তাঁরই লক্ষ্য। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ও ভারতে গিয়ে আশ্রয় এবং ইন্দিরা গান্ধীর সমর্থন সবই ছিল বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনায়। মুজিবনগর সরকার, মুজিব বাহিনী সব। সেদিন সিরাজুল আলম খান থেকে আ স ম রবরা অনেক কিছুই যে জানতেন না এটাই তাঁরা জানেন না। পিতাই সন্তানকে জন্ম দেন, পথ দেখান, পিতার নির্দেশ-ইচ্ছাই বড় হয়ে সন্তান পূরণ করে। এখানেও হয়েছে তাই। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা সংগ্রামকে নেহেরুর মৃত্যুর পর তাঁর ক্ষমতাসীন কন্যা ইন্দিরা গান্ধীও তেজের সঙ্গে সহযোগিতা করেন। শশাঙ্ক ব্যানার্জির সঙ্গে লন্ডনের ভারতীয় হাইকমিশনের ফণীন্দ্রনাথ ব্যানার্জি যিনি নাথবাবু নামে পরিচিত তাঁর সঙ্গেও বঙ্গবন্ধুকে যুক্ত করেন। ’৬৯-এ মুক্তির পর বঙ্গবন্ধু লন্ডনে যান, সেখানে নাথবাবুর সঙ্গে তাঁর পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়। সশস্ত্র যুদ্ধের ট্রেনিংয়ের কথাও পাকা হয়। কিন্তু ইয়াহিয়া খান এক ব্যক্তি এক ভোটের নির্বাচন দিলে বঙ্গবন্ধু নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ নেন। গণরায়ে বিজয়ীর বেশে একক নেতার আসনে উঠে আসেন। জানতেন ওরা ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না আর তাঁর চাই স্বাধীনতা, তবে হঠকারিতা নয়। তাই জাতীয় পরিষদ সদস্য চিত্তরঞ্জন সুতারকে পাঠিয়ে দেন কলকাতায়। তিনিই ইন্দিরাসহ সবার সঙ্গে আলাপ করে সব চূড়ান্ত করেন। চিত্তরঞ্জন সুতারের ঠিকানাই তো বঙ্গবন্ধু মার্চ একাত্তরে জানান মুজিব বাহিনীর চার নেতাকে, যা তাঁরা আগে কেউ জানতেন না। বঙ্গবন্ধুর নির্বাচনই জনগণের ঐক্যে স্বাধীনতার সংগ্রামকে মুক্তিযুদ্ধে টেনে নেয়। বঙ্গবন্ধুই স্বাধীন দেশের নাম বাংলাদেশ, স্লোগান জয় বাংলা, জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা চূড়ান্ত করেন। এ নিয়ে ‘আমিই সিরাজুল আলম খান’ বইয়ের বর্ণনার অনেক অসত্য বয়ানকে তথ্য ও সন তারিখসহ তোফায়েল আহমেদ জবাবে অসার করে দিয়েছেন। আর দুনিয়াজুড়ে গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, আটক ও ঢাকার গণহত্যার খবর প্রকাশিত হয়। মেজর জিয়া অনেকের মতো ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। দুপুর ২টায় ভুল করেছিলেন তাই সন্ধ্যা ৭টায় সংশোধন করে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ঘোষণা পাঠ করেন। ২৬ মার্চ দুপুর ১২টায় করেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান। অথচ আ স ম রব ২৬ মার্চ কেরানীগঞ্জ বসে জিয়ার ঘোষণা শোনেন! তাজ্জব লাগে। যে ঘোষণা ফেনী পর্যন্ত শোনা যায়নি। সেটি তিনি শোনেন। অথচ মুজিব বাহিনীর চার নেতা ও স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতাদের সঙ্গে রবও ২৭ মার্চ কেরানীগঞ্জ যান। ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও কামারুজ্জামানও ছিলেন। ৭ মার্চ সিরাজুল আলম খান ও তোফায়েল আহমেদ দুপুরে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যান। সিরাজুল আলম খান বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন, ‘লিডার আজ স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে জনগণ মানবে না’। বঙ্গবন্ধু এক ঝটকায় তাঁদের কাঁধে রাখা হাত সরিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি জনগণের নির্বাচিত নেতা, তাদের আমি নেতৃত্ব দেব, তারা নয়।’ তোমরা কাজে যাও বলে তিনি ওপরে যান। ৭ মার্চের ভাষণে গোটা জাতিকে স্বাধীনতার ডাকে যেমন এক মোহনায় আনেন তেমনি শর্ত দিয়ে পাকিস্তানি সেনবাহিনীকেও আটকে দেন। সেদিন সিরাজুল আলমের কথা শুনলে বঙ্গবন্ধু বিচ্ছিন্নতাবাদী হতেন আর ঢাকায় বোমা হামলায় পাকিস্তানি শাসকরা রক্তগঙ্গা বইয়ে দিত। বঙ্গবন্ধুর ডাকেই ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে সারা দেশে প্রতিরোধের দুর্গ গড়েছিল সামরিক-বেসামরিক বীর জনতা।
সিরাজুল আলম খানের বই নিয়ে তোফায়েল আহমেদদের জবাবের পর আনোয়ার হোসেন মঞ্জুুর বাসভবনে গভীর রাতের আড্ডায় আমি সিরাজুল আলম খানের অনেক কথার জবাবে বলেছিলাম, বঙ্গবন্ধুই আপনাদের জন্ম দিয়েছিলেন, আপনারা বঙ্গবন্ধুর সফল কর্মী ও সংগঠক ছিলেন। বঙ্গবন্ধু সফল না হলে আপনাদের রাজনীতির ইতিহাসে জন্মই হতো না। স্বাধীনতা আপনারা নয়, বঙ্গবন্ধুই দেখেন আর সেই সংগ্রামে কাজে লাগান সবাইকে। এতে তিনি বিরক্ত হন।
একাত্তরের টাইগার সিদ্দিকী খ্যাত কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান ও ’৭৫-এর প্রতিরোধযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম শাজাহান সিরাজকে নিয়ে লিখতে গিয়ে বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত মুজিব বাহিনীর চার প্রধান ও স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের চার নেতার কথা না লিখে স্বাধীনতার ইতিহাস হয় না। স্বাধীনতার পর মত-পথের অমিল ঘটলেও আমিও একমত। শাজাহান সিরাজও বলেছিলেন একবার, ভুল আমরা সবাই করেছি। তিনি নিজ উদ্যোগে সমাবেশ করে অকপটে স্বীকার করেছেন বঙ্গবন্ধুই স্বাধীনতার মহানায়ক। ভুল সবাই করে। এটাও সত্য কারও পাল্লা ভারী কারও হালকা। কিন্তু সদ্য স্বাধীন দেশে জাসদ সৃষ্টি করে মুক্তিযুদ্ধে উঠে আসা আদর্শিক তারুণ্যের সর্বনাশই করা হয়নি, জাতীয়তাবাদী দেশপ্রমিক শক্তিকেই দুর্বল করা হয়নি, বঙ্গবন্ধুর সরকারকে অশান্তই করা হয়নি, দেশের সর্বনাশটাও ঘটানো হয়েছে। জাসদের ব্যর্থ নেতা মেজর জলিল মৌলবাদী হয়ে মরেছেন। সিরাজুল আলম খান পৃথিবীর এক নিঃস্ব ভাসমান মানুষ। শাজাহান সিরাজ বিএনপি-জামায়াত সরকারের মন্ত্রী হয়ে ক্যান্সারে নিঃসঙ্গতায় ভুগে মরেছেন।
প্রিয় রব ভাই আপনি এখন কোথায় কেমন আছেন? দুর্বল জাসদের আদর্শের বাতি জ্বালিয়ে পথ হাঁটছেন হাসানুল হক ইনু। আমি তাঁর পথেরও সমর্থক নই, তবে মুক্তিযুদ্ধ, অসাম্প্রদায়িকতা প্রশ্নে চলাটা সমর্থন করি। কিন্তু আজ প্রায় ৫০ বছর পরও দেখি সিরাজুল আলম খান, আ স ম রব ও শাজাহান সিরাজের বীরত্ব ও গৌরবের ইতিহাস তো বঙ্গবন্ধুর পাদপ্রদীপেই লেখা। তাঁর ছায়া থেকে সরে গিয়ে সাফল্য কই? কেবল ভ্রান্ত নীতি, উগ্র হঠকারিতা, অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক পথে ব্যর্থতা লজ্জা ও গ্লানির। মাঝখানে ভ্রান্ত নেতৃত্বের পেছনে গিয়ে কত আদর্শিক রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর করুণ পরিণতি তো দেশ ও রাজনীতিরই ক্ষতি করেছে। সব ভাঙনই সর্বনাশা, যেমন পদ্মার তেমন রাজনৈতিক দলের। মানুষের কল্যাণ কখনো আনে না। জাসদের চড়া ভুলের মাশুলের মাঝেও অন্তত নিজেদের গৌরব তো সেই জাতির পিতার ছায়ায় থাকা বীরত্বের সময়টাই দিতে পারে, তাই না?
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় শাশুড়িকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগে আইয়ুব আলী (৩৭) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শাশুড়ির অভিযোগে আইয়ুব আলীকে গত রোববার (২৬ জুলাই) ঢাকার উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করে মুক্তাগাছা থানা পুলিশ। পরে ওইদিন রাতেই ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়। এরপর গ্রেপ্তারকৃত আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে সোমবার (২৭ জুলাই) কোতোয়ালি মডেল থানায় ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফির দু’টি মামলা দায়ের করা হয়।
নির্যাতিতার পরিবার সূত্রে জানা যায়, মুক্তাগাছা উপজেলার চাপুরিয়া গ্রামের সিরাজ আলীর ছেলে মোটর চালক আইয়ুব আলীর সাথে প্রায় দশ বছর আগে একই উপজেলার নরকোনা গ্রামের শাহজাহান মিয়ার মেয়ে শাহিদার বিয়ে হয়। এর মধ্যে তাদের সংসারে আট বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বছর দেড়েক আগে আইয়ুব আলী তার স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য চাপ দেয়ার পর যৌতুক দিতে না পারায় স্ত্রীও সন্তানকে তার শ্বশুর বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এর পর কোনো যোগাযোগ রক্ষা না করায় স্ত্রী শাহিদা আক্তার তার স্বামীর বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ আদালতে যৌতুক আইনে মামলা দায়ের করেন।
দুই পরিবারের মাঝে কয়েক বছর ধরেই টানাপোড়নের পর এ বছরের রমজান মাসে মেয়ের জামাই আইয়ুব আলী তার ছেলের জন্য নতুন জামাকাপড় ও কিছু নগদ টাকা দিবে বলে শাশুড়িকে ডেকে আনে মুক্তাগাছা শহরে। এরপর ভালো জামা কিনে দেবার কথা বলে শাশুড়িকে নিয়ে যায় ময়মনসিংহ শহরে। পরে একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে সেখানে আটকে রেখে আইয়ুব আলী তার শাশুড়িকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের চিত্র গোপনে ভিডিও ধারণ করেও রাখে।
এ ঘটনার পর মানসম্মানের ভয়ে শাশুড়ি ঘটনাটি সে ওই সময় কাউকে জানায়নি। এরপর আরও কয়েকদিন আইয়ুব আলী তার শাশুড়িকে ফোন করে ময়মনসিংহ যেতে বলে। তাতে সাড়া না দেওয়ায় শ্বশুর বাড়ির এক যুবকের ইমু নম্বরে মোবাইলে ধারণ করা ধর্ষণের ওই ভিডিওটি ছেড়ে দেয়।
এ ঘটনার পর আইয়ুব আলীর শ্বশুর শাহজাহান মিয়া তার স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে ধর্ষিতা বাদী হয়ে এ ঘটনায় মুক্তাগাছা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ভার্চ্যুয়ালি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে ২০২০-২১ শিক্ষার্বষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির কাজ করতে নটর ডেম হলিক্রস, সেন্ট জোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজচজ হচভচয় বলেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।
৯ আগস্ট থেকে ২৪ আগস্টের মধ্যে এভাবে পরীক্ষা নিয়ে ভর্তির কাজ শেষ করে শিক্ষার্থীদের যাবতীয় তথ্য ৩০ আগস্টের মধ্যে বোর্ডকে জানাতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক হারুন অর রশিদ ওই কলেজগুলোর অধ্যক্ষকে লেখা চিঠিতে এই নির্দেশনা দেন।
এর আগে গত ২ জুন ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এক আদেশে এই চারটি কলেজকে ২০ জুনের মধ্যে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তিপ্রক্রিয়া শেষ করে বোর্ডকে জানাতে বলেছিল। কিন্তু তখন করোনার কারণে পরদিনেই তা স্থগিত করা হয়েছিল।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও রেমিট্যান্স ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
জুলাই মাসের মাত্র ২৭ দিনেই ২.২৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। মাসের শেষে এটি ২ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় রপ্তানি আয় কমার পরও প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলারের সবোর্চ্চ রেকর্ড গড়লো।
গত ৩০ জুন বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩৬.০১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে যেটি ছিল সর্বোচ্চ। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে সেটি পৌঁছেছে ৩৭.১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেকর্ডে। গত বছরের ৩০ জুন বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩২.৭১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এদিকে চলতি মাসের মাত্র ২৭ দিনেই ২.২৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশের ইতিহাসে একক মাসে এর আগে কখনো এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি।
গত এক বছরে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। রিজার্ভের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে রেমিট্যান্সের অন্তঃপ্রবাহ।
মারা গেলেন মৌয়ের মা, দেশের প্রথম মডেল ও নৃত্যশিল্পী রাশা ইসলাম
বিনোদন প্রতিবেদক
মারা গেলেন দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী, মডেল ও নৃত্যশিল্পী সাদিয়া ইসলাম মৌয়ের মা এবং অভিনেতা জাহিদ হাসানের শাশুড়ি নাউজিয়া ইসলাম রাশা (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামাতা জাহিদ হাসান। মৃত্যকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
নাউজিয়া ইসলাম রাশা ছিলেন বাংলাদেশের ‘স্টিল অ্যাড মডেলিংয়ের’ পথিকৃৎ এবং বাংলাদেশের প্রথম মডেল ও নৃত্যশিল্পী। ‘রাশা ইসলাম’ নামেই সর্বমহলে পরিচিত ছিলেন তিনি। রাশা ইসলামের পিতা আজফার হাসান মাহমুদ ছিলেন শান্তিনিকেতনের শিক্ষার্থী এবং রবীন্দ্রনাথের ছাত্র।
অভিনেতা জাহিদ হাসান জানান, ‘মা অনেকদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন। আজ দুপুরে হঠাৎ তার শরীরটা বেশি খারাপ হয়ে পড়ে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সবার কাছে মায়ের জন্য দোয়া চাই।’
জাহিদ হাসান আরো জানান, আজ মঙ্গলবার বাদ এশা গুলশান সোসাইটি মসজিদে তার শাশুড়ি নাউজিয়া ইসলাম রাশার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
মৌয়ের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নাউজিয়া ইসলাম রাশা দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন। এতদিন নিয়ম করে তার চিকিৎসা চললেও আজ না ফেরার পাড়ি জমালেন তিনি।
মাস্ক পরতে বলায় সার্জেন্টকে মারধর, যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
মাস্ক পরতে বলায় রোববার (২৬ জুলাই) পুলিশের এক সার্জেন্টকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর পল্লবী ইউনিটের যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানার বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) সকালে পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাপস কুণ্ড ঘটনার সতত্যা নিশ্চিত করেছেন। রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় পল্লবীর কালশী সড়কে এ ঘটনার পর রাতে জুয়েল রানার বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন মো. আল ফারহাদ মোল্লাহ নামের ওই পুলিশ সার্জেন্ট। মামলায় আরও ৩০ থেকে ৪০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা গেছে, আহত অবস্থায় সার্জেন্ট ফরহাদ ইসলামিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি। আমরা নেতাদের বিষয়টি তদন্ত করতে বলেছি। যদি সে (রানা) দোষী সাব্যাস্ত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পল্লবী থানার উপপরিদর্শক জানান, রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সার্জেন্ট ফরহাদ পল্লবী ট্রাফিক জোনের কালশী রোডে দায়িত্বরত থাকাকালে একটি মিনিবাস রাস্তার মাঝে থেমে যাওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট কমাতে অন্য একটি বাসকে মিনিবাসটি ঠেলে সরানোর জন্য বলা হয়। এ সময় যুবলীগ নেতা রানাকে মিনিবাসের চালককে বকা দিতে থাকেন। এ দেখে সার্জেন্ট ফরহাদ এগিয়ে গিয়ে রানাকে সরে যেতে বলেন। এছাড়া তিনি মাস্ক না পরে থাকায় ফরহাদ তাকে মাস্ক পরতে বলেন। এতে যুবলীগের ওই নেতা ক্ষুদ্ধ হয়ে সার্জেন্ট ফরহাদের শরীরে আঘাত করেন। এর এক পর্যায়ে তিনি ফরহাদকে নিজের সঙ্গে থাকা পিস্তল দেখিয়ে হুমকি দেন।
তিনি বলেন, এঘটনার কিছুক্ষণ পরে ৩০ থেকে ৪০ জন সহযোগীকে নিয়ে যুবলীগ নেতা রানা কালশী পুলিশ বক্সের কাছে পৌঁছান এবং ফরহাদকে মারধর করে বডি ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন ও ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলেন। পরে পল্লবী থানা থেকে পুলিশ আসলে রানা সহযোগীদের নিয়ে পালিয়ে যান।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মোবাইলফোনে অডিও বার্তায় তিনি সবার কাছে এ ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। দেশের সব মোবাইল গ্রাহকের কাছে ভয়েস মেসেজ আকারে পৌঁছে যাবে প্রধানমন্ত্রীর এ ঈদ শুভেচ্ছা।
মোবাইলফোনে পাঠানো ভয়েস মেসেজে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম। আমি শেখ হাসিনা বলছি। বছর ঘুরে আমাদের মাঝে আবার এসেছে পবিত্র ঈদুল আজহা। করোনাভাইরাসের মহামারির এ দুঃসময়ে সব আঁধার কাটিয়ে ঈদুল আজহা আপনার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ।’
অডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসুন, কোরবানির ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করি। আপনাকে এবং আপনার পরিবারের সবাইকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’
ঈদে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাস রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন। ঈদ মোবারক।’
মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা ১ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন অধিকতর উষ্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং উন্নয়নমুখী বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
কাদের বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ ও সুদৃঢ় হলে পারস্পরিক উন্নয়ন এবং অমিমাংসীত ইস্যু সমাধান করা আরও সহজ হবে। ভারত বাংলাদেশের বন্ধুত্ব সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং ৭১ এর রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ।
রীভা গাঙ্গুলীর সঙ্গে বৈঠকে সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন ও গণপরিবহনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভারতীয় ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান সড়ক পরিবহন মন্ত্রী। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্কের সেতুবন্ধন সময়ের পরিক্রমায় দিন দিন নবতর মাত্রায় উন্নীত হচ্ছে।
সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলো এগিয়ে নিতে ভারতীয় হাইকমিশনারের সহযোগিতার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান ওবায়দুল কাদের।
এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘প্রতিটি বিষয়ে সরকারের সমালোচনা ও অপরাজনীতি করা বিএনপির চিরাচরিত ঐতিহ্য। এ কারণেই বিএনপির মহাসচিব বন্যাকে নতজানু পররাষ্ট্র নীতির ফল বলার মতো মিথ্যাচার করেছেন।’
ঘুষ না দেয়ায় কিশোরের সব ডিম ভাঙার ঘটনা বাংলাদেশের নয়
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের বেশ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে সম্প্রতি ‘ঘুষ না দেয়ায় কিশোরের সব ডিম ভেঙে দিল পুলিশ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এই সংবাদের প্রকৃত ঘটনাস্থল ভারতের মধ্য প্রদেশ, যা নিউজের ভেতরেই উল্লেখ আছে। কিন্তু এমন শিরোনামের ফলে ঘটনাটি বাংলাদেশের মনে করে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।
বিষয়টি নজরে এলে মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) এক বার্তায় এমন শিরোনামে আপত্তি জানিয়ে তা পরিহারে আহ্বান জানায় পুলিশ সদরদপ্তর।
‘পূর্ণাঙ্গ সংবাদে ঢোকার আগেই অনেক পাঠক এমন চটকদার শিরোনাম দেখেই উপসংহারে পৌঁছে যান, যা ক্ষেত্রমতে অপূর্ণাঙ্গ ও বিভ্রান্তিকর বার্তা দিতে পারে’- বলে মন্তব্য পুলিশ সদরদপ্তরের।
বিজ্ঞপ্তিতে সদরদপ্তর জানায়, দেশে এ সংবাদটি যদি ‘ঘুষ না দেয়ায় কিশোরের সব ডিম ভেঙে দিল মধ্য প্রদেশের পুলিশ’ শিরোনামে পরিবেশন করা হয়, তবে সহজেই এ বিভ্রান্তি, এ অপূর্ণতা কাটানো যায়।
পুলিশ বলছে, বাংলাদেশ পুলিশ নির্মোহভাবে নাগরিক সেবা প্রদানের নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। পুলিশ প্রধান (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের স্বাপ্নিক ও উদ্ভাবনী নেতৃত্বে এ করোনাক্রান্তিতে বাংলাদেশ পুলিশ জনসেবা দিয়ে মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে। পুলিশের এ মানবিক যাত্রায় সাংবাদিক সমাজ অকৃত্রিম পেশাদারি বন্ধুত্বের পরিচয় দিয়েছে, যা বাংলাদেশ পুলিশ সবসময় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে।
বার্তায় আরো বলা হয়, ‘ছোট ছোট বিভ্রান্তিকর এ ধরনের সংবাদ/শিরোনাম/ছবি প্রকৃত অর্থে যথাযথভাবে উপস্থাপন করলে জনগণ যেমন সঠিক তথ্য পাবেন, তেমনি বস্তুনিষ্ঠ ও পেশাদারি সাংবাদিকতার উন্মেষ ঘটবে। বাংলাদেশ পুলিশ এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা আন্তরিকভাবে প্রত্যাশা করে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ব্রীজের পাশে সাদ্দাম হোসেনের আমবাগানে অভিযান চালিয়ে ১টি বিদেশী পিস্তল, ১টি ওয়ান শুটার গান, ১ টি ম্যাগজিন ও ২ রাউন্ড পিস্তলের গুলিসহ ২ জন শীর্ষ অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে র্যাব-৫ সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যরা এ অভিযান চালায়।
গ্রেপ্তারকৃত শীর্ষ অস্ত্র ব্যবসায়ীরা হচ্ছে, শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের কালীগঞ্জ গ্রামের তানজিল মিয়া ও আনোয়ারা বেগমের ছেলে রিপন মিয়া(৩০) ও মনাকষা ইউনিয়নের তারাপুর উঠা পাড়া ৮ নং ওয়ার্ডের এজাবুল হক ও রাবিয়া বেগমের ছেলে ওবাইদুর ইসলাম (৩২)।
র্যাব-৫, রাজশাহীর সহকারী পরিচালক গণমাধ্যমকে জানান, শিবগঞ্জের একটি আমবাগানে দুইজনের উপস্থিতি ও গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে র্যাব তাদের চ্যালেঞ্জ করে তল্লাশি চালায়। তল্লাসি চালিয়ে ১টি বিদেশী পিস্তল, ১টি ওয়ান শুটার গান, ১টি ম্যাগজিন ও ২ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, নগদ ১ হাজার ৪’শ টাকাসহ অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় শিবগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। – কপোত নবী।
Post Written by : Admin
Original Post URL : https://ift.tt/3f86fMR
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ
দেশে কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষনের জন্য লবনের কোনও ঘাটতি নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। এসময় দেশে বর্তমানে ১১ লাখ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন লবণ মজুদ রয়েছে বলেও জানানো হয়।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মোঃ আবদুল জলিল স্বাক্ষতির এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিবছর ঈদুল আযহায় দেশব্যাপী কোরবানির পশু সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য কম-বেশি ১ লাখ মেট্রিক টন লবণের প্রয়োজন হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী গত ঈদুল আযহায় কোরবানিকৃত পশুর সংখ্যার বিপরীতে লবণের চাহিদা ছিল ৮১ হাজার ৮২০ মেট্রিক টন। ফলে মজুদকৃত লবণ দিয়ে এবারের ঈদুল আজহার চাহিদা মিটিয়ে আরও ৭ থেকে ৮ মাসের লবণের চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে। অন্যদিকে আর মাত্র ৪ মাস পর অর্থাৎ নভেম্বর, ২০২০ হতে লবণ উৎপাদনের নতুন মৌসুম শুরু হবে। ফলে দেশে লবণের কোনো ধরণের ঘাটতির আশঙ্কা নেই।
জানানো হয়, ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে চামড়া সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য দেশব্যাপী নিরবিচ্ছিন্ন লবণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে দেশের ৮টি লবণ জোনে ১৮৬টি নিবন্ধিত লবণ মিলে পুরোদমে লবণ উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে।
Post Written by : Rubel Islam
Original Post URL : https://ift.tt/3hJHAjh
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ
মডার্নার ভ্যাকসিন চূড়ান্ত ধাপে মানুষের দেহে প্রয়োগ শুরু
কোনো রোগের ভ্যাকসিন বা টিকা তৈরির ক্ষেত্রে সাধারণত অনেকগুলো ধাপ পার হতে হয়। চূড়ান্ত ধাপে হাজার হাজার মানুষের দেহে গণহারে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ মূলত দেখা হয় সবার ব্যবহারের জন্য তা কার্যকর ও নিরাপদ কিনা। সফল হলেই ভ্যাকসিনটি গণমানুষের জন্য ব্যবহারের অনুমোদন দেয় কর্তৃপক্ষ।
আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কিন কোম্পানি মডার্নার তৈরি কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটি চূড়ান্ত ধাপে ৩০ হাজার মানুষের দেহে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এর আগে করোনার সম্ভাব্য কোনো ভ্যাকসিন এত মানুষের দেহে পুশ হয়নি।
সোমবার (২৭ জুলাই) পরীক্ষা শুরুর ঘোষণা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বছর শেষেই তাদের ভ্যাকসিন সবাই ব্যবহার করতে পারবে।
কোনো রোগের ভ্যাকসিন বা টিকা তৈরির ক্ষেত্রে সাধারণত অনেকগুলো ধাপ পার হতে হয়। চূড়ান্ত ধাপে হাজার হাজার মানুষের দেহে গণহারে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ মূলত দেখা হয় সবার ব্যবহারের জন্য তা কার্যকর ও নিরাপদ কিনা। সফল হলেই ভ্যাকসিনটি গণমানুষের জন্য ব্যবহারের অনুমোদন দেয় কর্তৃপক্ষ।
মডার্না ও যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের বিজ্ঞানীদের যৌথ প্রচেষ্টায় উদ্ভাবিত করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটির পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে দেশটির ৮৯টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এর আগে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে মডার্নার ভ্যাকসিন করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে বলে প্রমাণিত হয়।
অংশগ্রহণকারীদের অর্ধেককে ২৮ দিনের ব্যবধানে দুটি ডোজ দেওয়া হবে। বাকি অর্ধেককে দেওয়া হবে লবণপানির একটি মিশ্রণ। তবে স্বেচ্ছাসেবী বা তাদের ইনজেকশন দেওয়া স্বাস্থ্যকর্মীরা কেউই জানবেন না কার দেহে আসলে কোনটি পুশ করা হচ্ছে। ফলাফল স্বচ্ছ রাখতেই এমন নিয়ম।
ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর বিজ্ঞানীরা নিয়মিত স্বেচ্ছাসেবীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করবেন। বিশেষ করে, যাদের দেহে ভ্যাকসিনটি দেওয়া হয়নি তারা করোনায় আক্রান্ত হন কি না—তা দেখতে চান বিজ্ঞানীরা। সেই তুলনায় ভ্যাকসিন গ্রহণকারীদের মাঝে এর হার কম দেখা দিলে, প্রতিষেধকটি সফল বলে প্রমাণিত হবে।
বৃহৎ পরিসরে এই ট্রায়াল শুরুর বিষয়টি নিয়ে মার্কিন স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ট্রায়ালটি হতে হবে সব বয়সের, সব জাতির অর্থাৎ সব ধরনের মানুষের ওপর। আমরা চাই এর ফলাফল যেনো যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার যে বৈচিত্র তার প্রতিনিধিত্ব করে। এর মাধ্যমেই দেখা হবে ভ্যাকসিনটি সবার জন্য কার্যকর ও নিরাপদ কিনা।
মহামারি করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা সাড়ে ৬ লাখ ছাড়িয়েছে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সোমবার (২৭ জুলাই) পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনায় মৃতের সংখ্যা ৬ লাখ ৫০ হাজার ৯৭ জন। আর আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৬৩ লাখ ৩০ হাজার ৯৭৭ জন।
আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মহামারি করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা সাড়ে ৬ লাখ ছাড়িয়েছে।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সোমবার (২৭ জুলাই) পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনায় মৃতের সংখ্যা ৬ লাখ ৫০ হাজার ৯৭ জন। আর আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৬৩ লাখ ৩০ হাজার ৯৭৭ জন।
মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ওয়ার্ল্ডও মিটারর্সের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৫০ হাজার ৪০২ জন মারা গেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৭ হাজার ৬৭৯ জন মারা গেছে ব্রাজিলে।
তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার ৭৫৯ জন মারা গেছে যুক্তরাজ্যে। মেক্সিকোতে মৃত্যুর সংখ্যা ৪৩ হাজার ৬৮০ জন। ইতালিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে ৩৫ হাজার ১১২ চর।
করোনার নতুন হটস্পট ভারতে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৩৩ হাজার ৪৪৮ জন। ফ্রান্সে মারা গেছে ৩০ হাজার ২০৯ জন। স্পেনে মৃতের সংখ্যা ২৮ হাজার ৪৩৪ জন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমাদের বিনীত নিবেদন, অনুগ্রহপূর্বক বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত জায়গাটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।
ড. মো. লতিফুর রহমান সরকার
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ৪নং বরিশাল ইউনিয়নের ভগবানপুর একটি সাধারণ গ্রাম। কিন্তু দুটি কারণে এ গ্রামটি স্থানীয় সবার কাছেই পরিচিত : স্থানটি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত এবং মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক মরহুম আজিজার রহমান সরকারের এলাকা। আজিজার রহমান সরকার ছিলেন গাইবান্ধা জেলার মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও বালুরঘাট লিবারেশন ক্যাম্পের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি গাইবান্ধা থেকে এমপিএ নির্বাচিত হয়েছিলেন ১৯৬২, ১৯৬৭ ও ১৯৭০ সালে। আজিজার রহমান সরকার নিজ বাড়িসংলগ্ন সরকারি পতিত জায়গায় গড়ে তুলেছিলেন ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, দাতব্য চিকিৎসালয়, কমিউনিটি সেন্টার এবং কৃষি ব্লক সুপারভাইজারের বাসভবন। নিজ হাতে রোপণ করেছিলেন নানা ধরনের গাছপালা।
১৯৭০ সালের নির্বাচনী সফরে বঙ্গবন্ধু রংপুরে এসে কেন্দ্রীয় নেতারাসহ আজিজার রহমান সরকারের বাড়িতে বিশ্রাম নিয়ে দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করেছিলেন। বাড়ি প্রাঙ্গণে উপস্থিত কয়েক হাজার মানুষের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই উপস্থিতি এবং বরিশাল ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে গড়ে ওঠা অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের কারণে ভগবানপুর গ্রামটি পলাশবাড়ীর প্রায় সবার কাছেই পরিচিত। এ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সেবা পেয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় ও নিদারুণ অবহেলায় প্রতিষ্ঠানগুলো আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত।
তবে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বট, পাকুর ও আমসহ অনেকগুলো গাছপালা। এ জায়গায় ইউনিয়ন পরিষদের একটি পাকা ভবন থাকা সত্ত্বেও এক অদ্ভুত কারণে ইউনিয়ন পরিষদ অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, অতি সম্প্রতি জায়গাটিকে পরিত্যক্ত দেখিয়ে এবং এর জনগুরুত্ব বিবেচনা না করে একটি মহল তাদের পছন্দের কয়েকজন ব্যক্তির নামে (ভূমিহীনের কথা বলে) বরাদ্দ দিয়েছে।
এলাকাবাসী এ ঘটনায় অত্যন্ত ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ। তারা বুঝতে পারছেন না কী করে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি সংবলিত এরকম একটি ঐতিহাসিক ও জনগুরুত্বপূর্ণ জায়গা কৃষিকাজের জন্য কয়েকজনকে বরাদ্দ দেয়া যায়। জায়গাটি ১৯৪০ সালের রেকর্ডে উল্লেখ আছে দেবাস্থান এবং ১৯৯৪ সালের রেকর্ডে উল্লেখ আছে ইউনিয়ন পরিষদ এবং কৃষি ব্লক সুপারভাইজারের বাসভবন হিসেবে। এতদিন ধরে এতগুলো জনকল্যাণমূলক কাজে এ জায়গাটি ব্যবহৃত হলেও শুধু ১৯৬২ সালের রেকর্ডে ‘ডাঙ্গা’ কথাটি উল্লেখ আছে- এই দোহাই দিয়ে জমিটি সম্পূর্ণ ব্যক্তিস্বার্থে কয়েকজনকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু এবং তার এক সহযোগীর স্মৃতিবিজড়িত স্থানটি একটি মহল ধ্বংসের চেষ্টা করছে, এটি খুবই দুঃখজনক। জায়গাটি রক্ষার জন্য আমরা এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছি। আবেদনে সুপারিশ করেছেন মাননীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও স্থানীয় নেতারা। হিন্দু-মুসলিম শত শত এলাকাবাসী সম্মিলিতভাবে স্বাক্ষর করেছেন এই আবেদনে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছেন। কিন্তু এক অদৃশ্য কারণে এখন পর্যন্ত ফলাফল শূন্য।
শুধু তাই নয়, এলাকাবাসী উদার মনে উপজেলা প্রশাসনকে (ইউএনও) অবহিত করেছেন যে, তারা প্রয়োজনে কৃষিজমি দিতে প্রস্তুত, তবু এই বরাদ্দ দ্রুত বাতিল করে এ জায়গায় বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির উদ্দেশে জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান যেমন: হাইস্কুল, কলেজ বা কমিউনিটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা অথবা অন্য কোনো জনহিতকর কাজ করা হোক।
জায়গাটিতে যে কোনো সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে উপকৃত হবেন এলাকাবাসী এবং সেই সঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে উপকার করা যেতে পারে ভূমিহীনদের। কিন্তু সেবামূলক কোনো প্রতিষ্ঠান না করে এভাবে এই জনসম্পদকে কয়েকজনের নামে বরাদ্দ দিলে জায়গাটি চিরতরে নষ্ট হয়ে যাবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমাদের বিনীত নিবেদন, অনুগ্রহপূর্বক বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত জায়গাটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।
লেখক, ড. মো. লতিফুর রহমান সরকার, ভগবানপুর, পলাশবাড়ী, গাইবান্ধা।
১৯৭০ সালের অক্টোবর মাসের ২ তারিখ সন্ধ্যায় উঁচু বারান্দা থেকে দ্রুতগতিতে নামতে গিয়ে আমার আম্মা সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনের বাঁ পায়ের হাড় ভেঙে যায়। আব্বু তাজউদ্দীন আহমদ আম্মাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। আমার তখন খুব অল্প বয়স। আম্মার এই অবস্থায় আমার প্রচণ্ড অসহায় লাগতে থাকে। আম্মা যখন ফিরে এলেন, তখন জানতে পারলাম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্লাস্টারের সরঞ্জাম নেই, তাই প্লাস্টার করা সম্ভব হয়নি। যন্ত্রণায় কাতর আম্মার মুখ এবং আমার শিশু মনের অসহায়ত্ব আজও মনে হলে আমাকে ভাবায়।
ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি চিকিৎসার জন্য বলতে গেলে সব সময় আমাদের বাসায় অসুস্থ মানুষের আসা-যাওয়া ছিল অবারিত। আমি তাদের জন্য দোয়া করতাম, সবাই যেন সুস্থ থাকেন। সেই অবুঝ সময়েও তাদের পাশে বসে বুঝতে চেষ্টা করতাম মানুষের অসুস্থতার বেদনা। সেই সময় ঢাকা এবং আশপাশের মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল, ঢাকা মেডিকেল এবং মিটফোর্ড (সলিমুল্লাহ হাসপাতাল) হাসপাতাল। আর ছিল হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল।
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্নে, যে স্বয়ংসম্পূর্ণ সুষম বাংলাদেশের উপস্থিতি, সেখানে স্বাস্থ্য সেবা অন্যতম। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের সময় মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা অত্যন্ত গুরুত্ব পায়। দুই বছরের মধ্যে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (বর্তমান উপজেলা) নির্মাণ অগ্রাধিকার পায়। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এত সুচিন্তিত ছিল, যেন সেই এলাকার মানুষ সেখানেই সবরকম চিকিৎসা পেতে পারেন। মেডিসিন থেকে গাইনি, সার্জারি, অর্থোপেডিকস, নাক-কান-গলা, হার্ট, চোখ, শিশু, দাঁতসহ প্রয়োজনীয় প্রত্যেকটি বিভাগের চিকিৎসা এবং চিকিৎসকের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। কেউ যদি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অর্গানোগ্রাম দেখেন, বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। আমার পরিস্কার মনে আছে, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে সকালে কাপাসিয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চূড়ান্ত কাজ দেখতে যাওয়ার কথা ছিল আব্বুর।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা এবং জেলে আটক জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য থেকে সরে যায় দেশ। স্বাস্থ্যসেবাও এর বাইরে নয়। মৌলিক প্রতিষ্ঠান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গুণগত মানের কোনো উন্নয়ন হয় না। চিকিৎসা বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব অগ্রগতিসহ সময়ের প্রয়োজনে নতুন বহুকিছুর সংযোজন ঘটেছে চিকিৎসা ক্ষেত্রে। কিন্তু বেচারা উপজেলা কমপ্লেক্স তার কোনো সুবিধাই অর্জন করতে পারেনি। উপজেলায় স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি প্যাথলজি নেই। যে কারণে অতি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা এখানে সম্ভব হয় না যেমন- ব্লাড কালচার, ইলেকট্রোলাইট, লিপিড প্রোফাইল, ইউরিন কালচার ইত্যাদি। এ ছাড়া ব্লাড ব্যাংক নেই। কারও শরীরে রক্ত দিতে হলে এর জন্য যে স্ট্ক্রিনিং এবং ক্রস ম্যাচিং প্রয়োজন, তা হয় না। রেডিওলজি ডাক্তারের পদ না থাকায় এক্স-রে রিপোর্ট করা যায় না। আল্ট্রাসনোগ্রাম, বর্তমানে এই বিষয়টি যে কোনো ছোটখাটো ডাক্তারি পরীক্ষা কেন্দ্রে সম্ভব। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আল্ট্রাসনোগ্রাফি হয় না। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করতে হয়, গত প্রায় সাড়ে তিন-চার বছর আগে উপজেলা পর্যায়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এর বিপরীতে সনোলজিস্ট নিয়োগ বা কোনো একজন মেডিকেল অফিসারকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এই কাজটি করার জন্য নিয়োগ বা নির্দিষ্ট করা হয়নি। ফলে মেশিনগুলো বাক্সবন্দি হয়ে অব্যবহূত পড়ে আছে।
এ ছাড়া হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য যে পরিমাণ লোকবল দরকার তা উপজেলায় নেই। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দেশব্যাপী সমন্বিত বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন জরুরি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনায় সব বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিককে অন্তর্ভুক্ত রাখা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে বিপন্ন পরিবেশ থেকে আমরা কেউ রক্ষা পাব না।
যুগের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য সেবার যে পরিবর্তন, সংযোজন হয়েছে তাতে বর্তমানে আমাদের দেশে আরও অনেক বেশি পরিমাণে সামঞ্জস্য প্রয়োজন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হলে এর অ থেকে চন্দ্রবিন্দু পর্যন্ত বিশ্নেষণ করে উন্নত পর্যায়ে নিতে হবে। উপজেলা হলো সেই এলাকার মানুষের প্রাণকেন্দ্র- যেখানে প্রান্তিক মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ অর্থাৎ সব মানুষ যেন চিকিৎসার মতো মানবিক সেবা হাতের নাগালে পায় তার ব্যবস্থা রাখা একান্ত অপরিহার্য।
রাজধানী থেকে শুরু করে বিভাগ, জেলা, উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত চিকিৎসা কেন্দ্রের সব কেনাকাটার পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা, মানসম্মত জিনিসপত্রের কেনাকাটার নিশ্চয়তা ও প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক জিনিসটি সঠিক সময়ে নিশ্চিত করা ইত্যাদি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে ক্রয় পদ্ধতি পরিবর্তন প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে একটি বিশেষ জাতীয় কমিটি এবং ধাপে ধাপে উপজেলা পর্যন্ত এই কমিটি বিস্তৃত হতে পারে। যেখানে বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনসম্পৃক্ততা থাকবে।
উপজেলা পর্যায়ে বেসরকারি ক্লিনিকগুলোর সার্বিক মানোন্নয়ন এবং যাচাই সংক্রান্ত একটি কমিটি আছে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি, কঠিন দেশপ্রেম, নিয়ম এবং দায়িত্বের প্রতি সর্বোচ্চ বিশ্বস্ততা এবং সেই এলাকার মানুষের নূ্যনতম সহযোগিতা ছাড়া এই পর্যায়ে যৌক্তিক কাজ করা প্রায় অসম্ভব। রাজধানীসহ বিভাগ, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে বেসরকারি ক্লিনিক বা হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সার্বিক মানোন্নয়ন এবং যাচাইয়ের জন্য স্তরে স্তরে মানসম্মত কমিটি করে কেন্দ্রীয়ভাবে স্বচ্ছতার মাধ্যমে মূল্যায়নের ব্যবস্থা রাখা একান্ত প্রয়োজন। অনেক সময় দেখা যায় উপজেলা পর্যায়ে বেসরকারি ক্লিনিক অনুমোদন না পেলেও জেলা সিভিল সার্জন অফিস থেকে অনুমোদন নিয়ে আসে। অসুস্থতা একজন মানুষের জীবনের বড় একটি দুঃসময়। এই দুঃসময়ে সাধারণ মানুষ যেন লোভী, দুর্নীতিপরায়ণ কিছু মানুষের দ্বারা শারীরিক এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা নিশ্চিত করার এখনই সময়। বিশেষভাবে টেকসই লক্ষ্যমাত্রা, সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্য অর্জন করতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করা একান্ত জরুরি।
আমার ক্ষুদ্র চিন্তায় আরও মনে হয়, সরকারি যে কোনো পর্যায়ের হাসপাতালে বহির্বিভাগে সরাসরি টিকিটের টাকা জমা না নিয়ে তা যদি দ্রুতগতিতে ব্যাংকের মাধ্যমে জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করা যায়, তবে এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যেত। এ ছাড়া প্রতিটি হাসপাতালে অভ্যর্থনা এবং অনুসন্ধান কেন্দ্র স্থাপন করা গেলে সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে তার প্রয়োজন অনুযায়ী ডাক্তারের কাছে যেতে পারত, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করাতে পারত, এতে একশ্রেণির দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ হতো।
গত ২৮ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির দেওয়া ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের নিয়মিত আলোচনায় আমি কাপাসিয়ার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নমূলক উদাহরণযোগ্য কিছু কার্যক্রমের কথা তুলে ধরি। সেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যবীমা চালু করার বিষয়টি উল্লেখ করেছিলাম। আগামীতে সারাদেশে স্বাস্থ্যবীমা চালু করা হলে সাধারণ মানুষ অনেকটা স্বস্তি পাবে। আরও একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই, সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চিকিৎসার জন্য দরিদ্র বেশ কিছু মানুষকে এককালীন ভালো অনুদান দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে এই অনুদানে সমাজসেবার সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের মাধ্যমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে যুক্ত করলে সরকার যে এত বড় অনুদান দিচ্ছে, তা মানুষ জানতে এবং বুঝতে পারত। প্রাপ্যতার দিক দিয়ে সঠিক মানুষটি নির্বাচন করা সহজ হতো।
বর্তমানে পুরো বিশ্ব এবং আমরা সম্পূর্ণ অজানা-অচেনা এক সময় অতিক্রম করছি। এতদিন আমরা ইতিহাসে গল্প পড়েছি ভয়াবহ মহামারি, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা। এখন তা নিরেট বাস্তবতা। কোনো দেশেরই প্রস্তুতির সুযোগ ছিল না। দীর্ঘদিনের জমে থাকা ত্রুটি-বিচ্যুতি তাই আমাদের সমাজকে নাড়া দিয়েছে বেশ খানিকটা। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আগামীর সুন্দরের স্বপ্ন দেখতে পারি। সংকটের সময়কে সুসময়ের পরিকল্পনায় কাজে লাগাতে হবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনগণের জন্য গভীর ভালোবাসায় সিক্ত একটি মন আছে। তার সুদৃঢ় নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় স্বপ্নের স্বাস্থ্য সেবা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে, এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস।