টমেটো গাছের সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হলো যেকোনো জায়গায়ই এটা কাণ্ডসহ মূল বা শেকড় তৈরি করতে পারে।
আপনি যদি কখনো টমেটো গাছের কাণ্ডের নিচের দিকের স্ফীত অংশটা দেখে থাকেন, সেগুলি মূলত মূলে পরিণত হওয়ার অপেক্ষায় আছে। এদের বৈজ্ঞানিক নাম ‘রুট প্রিমর্ডিয়া’।
সাধারণত টমেটো গাছ যখন স্ট্রেসড থাকে, তখনই এই স্ফীত অংশগুলির দেখা মেলে। এই কারণে চারা সবসময় মাটিতে গভীর ও ভালোভাবে রোপণ করা উচিত। এই নতুন মূলগুলি থেকে প্রচুর নতুন সুস্থ চারা হবে।
ছেদকৃত পাতা বা কাণ্ড থেকে টমেটোর মূল উৎপাদন করতে পারেন
আমি একবার দুর্ঘটনাবশত একটা টমেটো গাছ দুইভাগ করে ফেলেছিলাম। তখন ওপরের অর্ধেক আবার মাটিতে রোপণ করে গাছটিকে বাঁচিয়েছিলাম।
আপনি যদি তুলে ফেলে চোষক থেকে নতুন টমেটো চারা উৎপাদন করতে চান বা আপনার বন্ধুর কাছে যে বিরল প্রজাতির টমেটো গাছ আছে সেটা উৎপাদন করতে চান, এক্ষেত্রে কিছু ক্লোন তৈরি করে ফেলা খুবই সহজ।
প্রথম ধাপ―টমেটোর চোষক বা পার্শ্ববর্তী কোনো শাখা অপসারণ করুন
উচ্চ ফলনশীল টমেটোর চারা উৎপাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো চোষক বা কোনো পার্শ্ববর্তী শাখা অপসারণ করা। চোষকও পার্শ্ববর্তী শাখা, যা মূল কাণ্ড ও একটি শাখার সংযোগস্থল বা ক্রচ থেকে বের হয়। নিচে যেমনটা দেখা যাচ্ছে:
কাটা অংশ থেকে ক্লোন করার জন্য কাটার আগে চোষককে ৬ ইঞ্চি বা তার বেশি বড় হতে দিতে হবে―যদিও সুস্থ, ফলনশীল টমেটো গাছ উৎপাদনের জন্য চোষক বের হওয়া মাত্রই তা অপসারণ করা উচিত।
দ্বিতীয় ধাপ―টমেটো গাছ থেকে কেটে নেওয়া অংশটি রোপণ করুন
মাটিতে লাগানোর আগে টমেটো গাছের কাটা অংশটিকে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে পারেন, মূল তৈরি হওয়ার জন্যে। অথবা সোজা গিয়ে কাটা অংশ মাটিতে লাগিয়ে দিতে পারেন।
পানিতে রাখবেন না মাটিতে লাগাবেন?
পানিতে টমেটোর চারা লাগানো বেশ সহজ। কমপক্ষে ছয় ইঞ্চি লম্বা অংকুর নিয়ে এক কাপ পানিতে গোড়ার দিকটা রেখে দিন। পানিতে যাতে কোনো পাতা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন, নাহলে পচে যাবে। প্রয়োজনে পাতাগুলি ছিঁড়ে ফেলুন। কান্ডের গোড়াটা শুধুমাত্র পানিতে ডুবে থাকবে।
এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আপনি নতুন মূল দেখতে পাবেন। এবার আপনার বিকশিত চারাটিকে নিয়ে মাটিতে রোপণ করতে পারেন।
যেহেতু টমেটো গাছে প্রাকৃতিকভাবেই কাণ্ডসহ মূল উৎপন্ন হয়, আপনি সহজেই তা আলগা মাটিতে স্থাপন করতে পারবেন। এখন শুধু আপনার নতুন টমেটো ক্লোনটির সময় নিয়ে যত্ন নিন আর নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি দিন।
দুইটা পদ্ধতিই ভালোভাবে কাজ করে, তবে আমি কাটা অংশ সরাসরি মাটিতে রোপণ করতে পছন্দ করি, এতে ঝামেলা কম।
কিন্তু বিশেষ করে কাটা আংশ যদি ছোট হয়, তাহলে হয়ত আমি এটাকে প্রথমে পানিতে রেখে দেব। সরাসরি বাগানে রোপণের আগে বরং একটা পটে আলগা মাটিতে লাগিয়ে কিছুটা বড় করে নিন।
কাণ্ডকে সরাসরি আলগা মাটিতে রোপণ করার সুবিধা হচ্ছে নতুন চারা বড় হতে ও তা থেকে টমেটো উৎপাদন করতে সময় কম লাগে।
একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকের দৈনিক আয় গড়ে এক হাজার টাকা। আর দোকানে কাজ করা আরেকজন লোকের দৈনিক আয় গড়ে ৩০০টাকা। অটোরিকশা চালক নিম্নবিত্ত কিন্তু দোকানে কাজ করা লোকটি মধ্যবিত্ত। আবার রিকশা চালকের দৈনিক আয় ৫০০-৮০০ টাকা। আরেকজন রেমিট্যান্সের উপর নির্ভরশীল বেকার ছেলের দৈনিক আয় শূন্য পয়সা। রিকশা চালক নিম্নবিত্ত কিন্তু বেকার ছেলেটা মধ্যবিত্ত।
আমাদের সমাজে মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্তের মধ্যে পার্থক্য নির্ভর করে কাজের ধরণের উপর। কে কতো টাকা আয় করলো সেটা নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। ত্রাণ বিতরণের সময় এই ব্যাপার খুব বেশী লক্ষ্য করা যায়। আমরা যাদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে গরীবদের ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে থাকি তাদের অনেকের থেকে সেই গরীব লোকের দৈনিক আয় বেশি।
এই সমাজে কাজের শ্রেণির উপর নির্ভর করে ধনী-গরিব নির্ধারণ করা হয়। একজন চা বিক্রেতা যে দৈনিক এক হাজার কাপ চা বিক্রি করে তাকেও চাকরি করা ছেলেটা গরীব মনে করে। আসলে গরীব কে? যে চা বিক্রি করে মাসে ৩০ হাজার টাকা রোজগার করে সে নাকি যে চাকরি করে করে ১৫ হাজার টাকা বেতন পেয়ে খুব ভালো কাপড়চোপড় পড়ে চলা ফেরা করে সে।
করোনা ভাইরাসের জন্য যেদিন থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হলো তখন আমরা রাস্তায় রাস্তায় রিকশা চালকদের ত্রাণ দিয়েছি। কিন্তু যেই ছেলেটা ত্রাণ বিতরণ করছে তার থেকে রিকশা চালকের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক ভালো। রিকশা চালকেরা স্বভাবগত গরীব। আর আমরা হলাম স্বভাবগত ধনী। সে সহজেই হাত পাততে পারে আমরা পারি না।
এই সমাজে কাজের শ্রেণির উপর নির্ভর করে ধনী-গরিব নির্ধারণ করা হয়। একজন চা বিক্রেতা যে দৈনিক এক হাজার কাপ চা বিক্রি করে তাকেও চাকরি করা ছেলেটা গরীব মনে করে। আসলে গরীব কে? যে চা বিক্রি করে মাসে ৩০ হাজার টাকা রোজগার করে সে নাকি যে চাকরি করে করে ১৫ হাজার টাকা বেতন পেয়ে খুব ভালো কাপড়চোপড় পড়ে চলা ফেরা করে সে।
অর্থনীতি আমি তেমন বুঝি না। কিন্তু সমাজে চলতে গিয়ে দেখেছি মানুষ কতটা মিথ্যে অহংকারী। কাজের শ্রেণি বিভাগ করে আমরা কোন কাজকে করেছি ছোট আবার কোন কাজকে করেছি বড়। আর এই কাজের উপর নির্ভর করেই আমরা ঠিক করি কে নিম্নবিত্ত, কে মধ্যবিত্ত আর কে উচ্চবিত্ত। কিন্তু কার দৈনিক আয় কতো সেটা দেখি না।
ফাহাদ মোহাম্মদ। প্রাবন্ধিক।
Post Written by : Admin
Original Post URL : https://ift.tt/3jGD32U
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, জনগণ এমনকি কর্মীদের থেকেও বিচ্ছিন্ন বিএনপি নেতারা। তাঁরা অস্তিত্ব প্রমাণের জন্যই শুধু টিভির পর্দায় কথা বলেন।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক মিয়া আলাউদ্দিন, কার্যনির্বাহী সদস্য আওলাদ হোসেন প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের সরকার দুর্নীতিতে বেসামাল মন্তব্যের প্রতি তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, সীমাহীন দুর্নীতি- দুঃশাসনের কারণে যারা দেশকে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল, একবার অবশ্য আফ্রিকার একটি দেশের সঙ্গে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন, সেই বিএনপির মুখপাত্র হচ্ছেন রিজভী আহমেদ। তাঁরা যখন দুর্নীতির কথা বলেন, তখন লোকে হাসে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, পেট্রলবোমার রাজনীতি করার কারণে তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শুধু জনগণ থেকেই নয়, বিএনপি নেতারা তাঁদের কর্মীদের কাছ থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। টেলিভিশনে উপস্থিতির মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের অস্তিত্বটা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন এবং সেই লক্ষ্যেই বিভিন্ন কথা বলেন, এ ছাড়া অন্য কিছু নয়।
বন্যা মোকাবিলায় সরকারের তৎপরতা সম্পর্কে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বন্যা-দুর্যোগ মোকাবিলায় অতীতেও সক্ষমতা দেখিয়েছেন, এখনো সফলভাবে বন্যা মোকাবিলা করছেন। ১৯৯৮ সালে যে ভয়াবহ বন্যায় দেশের ৭৫ ভাগ স্থল তিন মাস পানির নিচে ছিল, তখনো অনাহারে মানুষ মৃত্যুবরণ করেনি। এবং সেই বন্যাকে সফলভাবে মোকাবিলা করে তিনি বিশ্ববাসীকে তাঁর সক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে গত সাড়ে ১১ বছরে যত প্রাকৃতিক দুর্যোগ-বন্যা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সেগুলো সফলভাবে মোকাবিলা করে দুর্যোগের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করেছেন। এখনো বন্যা মোকাবিলায় তাঁর নেতৃত্বে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়সহ পুরো সরকার কাজ করছে, বন্যার্তদের কাছে সাহায্য পাঠানো থেকে শুরু করে সবকিছু করা হচ্ছে। আর যাঁরা এ নিয়ে টেলিভিশনে বসে বসে কথা বলছেন, তাঁরা কিন্তু বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াননি, মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দলের নেতা–কর্মীরা স্ব স্ব জায়গায় যেখানে বন্যা হয়েছে, সেখানে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি আবারও আমাদের দলের নেতা–কর্মীদের কাছে অনুরোধ জানাব, যত দিন বন্যা থাকবে, তত দিন তারা যেন মানুষের পাশে থাকে।
করোনা কমলে হল পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত
চলচ্চিত্র শিল্প প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার হাত ধরে ১৯৫৭ সালে যে শিল্পের যাত্রা শুরু, সেই শিল্পের স্বর্ণালি যুগ ফিরে আনতে আমরা কাজ করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে এই শিল্পকে কীভাবে বাঁচানো যায়, কীভাবে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়, কীভাবে আমাদের দেশের বাংলা ছবি আন্তর্জাতিক বাজারেও স্থান করে নিতে পারে, সে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সব সময় চিন্তা করেন, আমাকেও নানা নির্দেশনা দিয়েছেন, আমি তাঁর সাথে আলোচনাও করেছি, জানান হাছান মাহমুদ।
বর্তমান পরিস্থিতিতে সিনেমা হল খোলার প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বন্যা পরিস্থিতি ও করোনার কারণে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার বাধ্যবাধকতার ফলে এ বিষয়ে আরেকটু ধীরে সুস্থে এগোনো ভালো হবে বলে মনে হয়। করোনার প্রকোপ যখন একেবারে কমে যাবে, তখন আমরা সিনেমা হল পুনরায় চালু করার বিষয়টি আবার আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারি। বিপুল দর্শক থাকা সত্ত্বেও এখনো ভারতে সিনেমা হল খুলে দেওয়া হয়নি, পাকিস্তানেও তা–ই।
এ সময় চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাসের প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রী জানান, সিনেমা হলগুলোর বিদ্যুৎ বিল বাণিজ্যিক হারের পরিবর্তে শিল্প হারে নির্ধারণের জন্য ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আর বিদেশি চলচ্চিত্র আমদানির বিষয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্যের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিনেমা হল আধুনিকায়ন ও নতুন করে চালু করার জন্য স্বল্প সুদে ব্যাংকঋণের বিষয়ে অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গেও আলোচনা চলছে।
Post Written by : Admin
Original Post URL : https://ift.tt/3jFqNj7
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ
হায়া সোফিয়া জাদুঘরকে মসজিদে রূপান্তর করায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে গ্রিস। দেশটির বন্দর শহরে তুরস্কের পতাকা পোড়ানো হচ্ছে। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
খবরে বলা হয়, এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার বিবৃতি দিয়েছে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়, গ্রিস কর্তৃপক্ষ জনগণকে উসকে দিয়েছে, পতাকা পোড়ানোর অনুমতি দিয়েছে।
তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হামি আকসায় বলেছেন, আমরা গ্রিসের সরকার ও সংসদ সদস্যদের ঘৃণাজনক বিবৃতির প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তারা জনগণকে উসকে দিচ্ছেন এবং বন্দর শহর থেসালুনিকিতে আমার মর্যাদাপূর্ণ পতাকা পোড়ানোর অনুমতি দিচ্ছেন।
শুক্রবার জুমার নামাজের মধ্য দিয়ে ৮৬ বছর পুনরায় মসজিদ হিসেবে চালু হয় হায়া সোফিয়া। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান যখন হায়া সোফিয়ায় জুমার নামাজে অংশগ্রহণ করেন। সে সময় গ্রিস জুড়ে চার্চগুলোতে শোকের ঘণ্টা বাজানো হয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় তুরস্ক বলেছে, হায়া সোফিয়া নামাজের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার প্রতিক্রিয়া দেখানোর অজুহাতে গ্রিস আবারো ইসলাম ও তুরস্কের প্রতি তার শত্রুতা প্রদর্শন করছে।
Post Written by : Rubel Islam
Original Post URL : https://ift.tt/2EhpFSx
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ
Former Indian batsman Gautam Gambhir stated that English all-rounder Ben Stokes is in a different league and no Indian player is anywhere even close to him.
Earlier this week, Stokes passed Jason Holder and fixed the top spot of the ICC Test rankings for all-rounders. Stokes scored a brilliant century and a quick-fire fifty int he second innings in the second Test and also took three wickets for his team in Manchester. This was after he had grabbed six wickets in Southampton and scored 46 and 43 in the two innings.
“You can’t compare anyone in India at the moment with Ben Stokes. Absolutely not, because Ben Stokes is in his own league. What he has done in Test cricket, what he has done in one-day cricket, what he has done in T20 cricket, I don’t think so there’s anyone, let alone in India, there isn’t anyone who’s even close to him in world cricket at the moment. And that is the kind of impact player you need in every line-up,” Gambhir told to media.
From over the last summer Stokes has been on a hot streak for England. Last year, he led England to a World Cup win with his match-winning performance in the final against New Zealand and in less than two months’ time, Stokes again triumph over Australia in one of the most memorable Test wins against Australia in the Ashes.
Gambhir believes that no other player in the current generation can replace Stokes what he achieve already.
“It would be a dream for every captain to have someone like Ben Stokes – whether he’s batting, whether he’s bowling, whether he’s fielding – and he’s a leader in his own capacity,” Gambhir said.
“You don’t have to be a leader to be a leader, you don’t need to be called a captain to be a captain. You can be a leader by your own performances as well. So, I think there are a lot of guys would be actually looking to be like Ben Stokes, but unfortunately, there’s no one at the moment in world cricket,” he concluded.
Post Written by : Rubel Islam
Original Post URL : https://ift.tt/3f3kAu3
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ
সংসদে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হলেন সোমালিয়ার প্রধানমন্ত্রী হাসান আলী খায়ের। শনিবার (২৫ জুলাই) দেশটির ১৭৮ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ১৭০ জনই তার প্রতি অনাস্থা জানান। এর পরপরই তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেন পূর্ব আফ্রিকান দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আব্দুল্লাহি ফার্মাজিও।
আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সংসদে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হলেন সোমালিয়ার প্রধানমন্ত্রী হাসান আলী খায়ের।
শনিবার (২৫ জুলাই) দেশটির ১৭৮ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ১৭০ জনই তার প্রতি অনাস্থা জানান। এর পরপরই তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেন পূর্ব আফ্রিকান দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আব্দুল্লাহি ফার্মাজিও।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজনীতিতে একেবারে নবীন হাসান আলীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট। কিন্তু, তার বিরুদ্ধে পূর্ণ গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে ব্যর্থতার অভিযোগ তোলেন দেশটির সংসদ সদস্যরা।
১৯৬৯ সালের পর প্রথমবারের মতো আগামী বছর গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পরিকল্পনা করছে সোমালিয়ার সরকার।
সোমালিয়ান সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ মুরসাল জানিয়েছেন, ২০২১ সালে ‘একজনে এক ভোট’ পদ্ধতিতে নির্বাচনের পথ সুগম করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী হাসান আলী খায়েরের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট দিয়েছে সরকার। শিগগিরই নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন সোমালিয়ান প্রেসিডেন্ট।
সোমালিয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার থাকলেও তারা পুরো দেশের শুধু একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। দেশটিতে সাম্প্রতিক সময়ে আল-কায়েদা সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী আল শাবাবের প্রভাব বেড়ে চলেছে।
রাহুল গান্ধীকে পটিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছ। সাংস্কৃতিক জগৎ সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে পারে। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ছিলে, ভারতের মতো একটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কীভাবে কাজ করবে? তোমার কোনো অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, যোগ্যতা নেই। এভাবে দিল্লির একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করলেন তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদকে। সময়টা ২০১২ সাল। দিল্লিতে আন্তর্জাতিক মিডিয়া কনফারেন্সে যোগ দিয়েছিলাম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিনিয়র সাংবাদিকরা এতে অংশ নেন। বাংলাদেশ থেকে দুজন। সিনিয়র সাংবাদিক প্রয়াত জাহাঙ্গীর ভাই আর আমি। সাত দিনব্যাপী সম্মেলনের শেষ দিকে এলেন সালমান খুরশিদ। মাত্র দুই দিন আগে তিনি কংগ্রেস সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম সাক্ষাৎ। সিদ্ধান্ত হয় আমাদের সঙ্গে মন্ত্রীর বৈঠকের আগে কথা বলবেন ভারতীয় সাংবাদিকরা। তারপর কনফারেন্সে আসা বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়। ভারতীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আমরা থাকতে পারব। কিন্তু কোনো প্রশ্ন করতে পারব না। শুনতে পারব। আমাদের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রশ্ন করতে পারব যে কোনো বিষয়ে। মতবিনিময় অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আকবর উদ্দিন। তিনি একজন ডাকসাইটে কূটনীতিক। মিডিয়ার সঙ্গে গভীর সম্পর্ক। প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি ভারতীয় সাংবাদিকদের নাম ধরেই প্রশ্ন করার আহ্বান জানাচ্ছিলেন। সাংবাদিকদের কড়া কড়া প্রশ্নবাণে জর্জরিত হচ্ছিলেন সালমান খুরশিদ। উত্তরও দিচ্ছিলেন হাসিমুখে। পাশে বসে থাকা জাহাঙ্গীর ভাইকে বললাম, এমন প্রশ্ন আমাদের দেশে করলে সাংবাদিক হতেন নাজেহাল। আর আকবর উদ্দিনের স্থলে থাকা কর্মকর্তা হতেন বদলি। তিনি হাসলেন। বললেন, যত দিন যাচ্ছে বদলে যাচ্ছে মিডিয়া পরিস্থিতি। অনেক সময় নিজেরাও প্রশ্নের পরিবর্তে তোষামোদে জড়াই আমরা। সমস্যা দুই দিকেই। আবার বাস্তবিক প্রশ্ন করার পর বিষয়টি সংশ্লিষ্টরাও ভালোভাবে নেন না। আমাদের কথার ফাঁকে উত্তর দিলেন সালমান খুরশিদ। তিনি প্রশ্নকারীকে ধন্যবাদ জানালেন। তারপর বললেন, তুমি সঠিক প্রশ্ন করেছ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমার অভিজ্ঞতার অভাব থাকতে পারে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, আমি একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের মন্ত্রী। আমার দলের নির্দিষ্ট ম্যানিফেস্টো রয়েছে। সরকারের রয়েছে নির্দিষ্ট পররাষ্ট্র নীতিমালা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনেক দক্ষ কর্মকর্তা আছেন। তাঁরা সরকারের নীতিমালাগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে আমাকে সহায়তা করবেন। আর সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলো কিনা আমি সমন্বয় ও মনিটরিং করব। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নেব। কেউ ভুল করলে ধরিয়ে দিয়ে সংশোধন করব। আশা করছি মন্ত্রণালয় চালাতে সমস্যা হবে না।
আরেকটি ঘটনা মনে পড়ছে। ২০০৬ সালে স্টেট ডিপার্টমেন্টের আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র গিয়েছিলাম। এক মাসের কর্মসূচি ছিল। এ কর্মসূচিতে আমেরিকার বিভিন্ন বিষয়ে বাস্তবিক অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ দেওয়া হয় বিদেশি সাংবাদিকদের। আমরা দক্ষিণ এশিয়ার সাত সাংবাদিক ছিলাম। স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে পেন্টাগন, বিচার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, কোনো কিছুই বাদ ছিল না। একদিন আমাদের নিয়ে যাওয়া হয় আলজাজিরার ওয়াশিংটন অফিসে। বিখ্যাত সাংবাদিক রিজ খানসহ অনেকের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় হয়। বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করি। একপর্যায়ে আমি জানতে চাই- মার্কিন সরকারের সঙ্গে আলজাজিরার সম্পর্কটা ভালো নয়। ইরাক ও আফগান যুদ্ধকে ঘিরে এ দূরত্ব বেড়েছে। পশ্চিমা মিডিয়া করছে এক ধরনের খবর, আলজাজিরা আরেক ধরনের। বিশ^বাসীর কাছে আলজাজিরা অধিক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। ওয়াশিংটনে বসে কাজ করতে সমস্যা পোহাচ্ছে কিনা আলজাজিরা। জবাবে তারা বললেন, না, কোনো সমস্যা নেই। বরং মজা পান তারা মাঝেমধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে। একদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিসা রাইসকে আলজাজিরার সাংবাদিক মাইক্রোফোন এগিয়ে প্রশ্ন করতে গেলে তিনি বললেন, আই হেইট আলজাজিরা। তারপর কথা না বলে হন হন করে হেঁটে চলে যান। আলজাজিরার সাংবাদিকও এটুকু নিয়েই ফিরলেন, আই হেইট আলজাজিরা। এ ছাড়া তেমন কোনো খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হননি। আলজাজিরা অফিসে দীর্ঘক্ষণ ছিলাম। তাদের কাজের ধরনগুলো দেখলাম।
পুরনো দিনের মিডিয়াস্মৃতি ঘাঁটতে গিয়ে স্মরণ করছি বঙ্গবন্ধুর একটি কথা। ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লিখেছেন, ‘ভাত কাপড় পাবার ও আদায় করে নেবার অধিকার মানুষের থাকবে, সাথে সাথে নিজের মতবাদ প্রচার করার অধিকারও মানুষের থাকা চাই। তা না হলে মানুষের জীবনবোধ পাথরের মতো শুষ্ক হয়ে যায়।’ বঙ্গবন্ধু মানুষকে বুঝতেন। মানুষের মন বুঝতেন। আর বুঝতেন বলেই এত বড় বিশালত্ব তৈরি করতে পেরেছিলেন। হিমালয়-উচ্চতা নিয়ে স্বাধীন করতে পেরেছিলেন এ দেশকে। মানুষের জীবনের সব হিসাব-নিকাশ এক রকম মিলবে না। মত ও পথের অনেক ভিন্নতা থাকবে। কিন্তু সবকিছু নিয়েই চলতে হয় আমাদের। সময় পরিবেশ পরিস্থিতি সব সময় এক রকম থাকে না। কিন্তু সময়কে জয় করে এগিয়ে চলার আনন্দটাই আলাদা। চলার পথে অনেক বাঁক থাকে। কিন্তু বাস্তবতাকে পাশ কাটালে চলে না। জানি, রাজনীতি তার মতো করেই চলবে। সবাই সমান হবে এমনও নয়। নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে যার যার অবস্থান আলাদা থাকতে পারে। কিন্তু নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকাটা জরুরি।
নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকলে ক্ষমতার রাজনীতিতে গতিশীলতা সৃষ্টি হয়। দক্ষ নেতৃত্ব এগিয়ে নিতে পারে। বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীতে পরিষ্কারভাবে তিনি এ বাস্তবতাগুলো তুলে ধরেছেন। এ ব্যাপারে খুলনার একটি ঘটনাও আত্মজীবনীতে উঠে এসেছে। কাজ করার সঙ্গে ক্ষমতার বিষয়টি জড়িয়ে থাকে। ক্ষমতা না থাকলে কীভাবে কাজ করবেন? এখন মন্ত্রীর কাজটি সংসদীয় কমিটির সভাপতি বা সাবেক মন্ত্রীর পক্ষে করা সম্ভব নয়। তাই ক্ষমতাবানদের ধৈর্য নিয়েই কাজে মনোনিবেশ থাকা জরুরি। ক্ষমতায় গিয়ে কাজ করার সৌভাগ্য সবার হয় না। আবার উড়ে এসে জুড়ে বসারা কোনোকালেই আদর্শিক রাজনীতি বাস্তবায়ন করতে পারে না। অনেক সময় প্রতিকূল পরিবেশ অনেককে ক্ষমতার সুযোগও দেয় না। ভাগ্য কিছু মানুষের সঙ্গে খেলে থাকে। এমনই হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আ ফ ম মাহবুবুল হকের ক্ষেত্রে। সারাটা জীবন শুধু লড়াই করেছেন। চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মেলাননি অথবা মেলাতে পারেননি। ডাকসু নির্বাচন করলেন। জয়ী হলেন। ঘোষণা পাননি। ’৯১ সালের ভোটে নোয়াখালীর চাটখিল থেকে পরাজিত হন মাত্র দুই শর কম ভোটে। জয়ী হন বিএনপির সালাহ উদ্দিন কামরান। মাহবুবুল হকের এমপি হওয়া হলো না। ডাকসুর ভিপি হওয়া হলো না। কোনো আফসোস ছিল না জীবনে। রাজনীতি করেছেন আদর্শিক অবস্থান থেকে। কষ্ট করে চলতেন। বুঝতে দিতেন না অন্যকে। বাসে চড়তেন। বন্ধুরা সহায়তা করতে চাইলে নিতেন না। শেষ বয়সটা ছিল ট্র্যাজিক। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। হারিয়ে যায় স্মরণশক্তি। কানাডা নিয়ে গেলেন স্ত্রী, সন্তান। আর ফিরে এলেন না দেশে। বছরখানেক আগে চলে গেলেন চিরতরে।
মানুষের জীবনটা খুবই কম সময়ের। আজ আছি, জানি না কাল থাকব কিনা। করোনাকাল অনেক কিছু ভাবিয়ে তুলছে সবাইকে। দুই দিন আগে চলে গেলেন আমার পাশের গ্রামের একজন মানুষ সাইফ উল্লাহ মিয়াজি। বিএনপির রাজনীতি করতেন। কেন্দ্রের দফতর সম্পাদক ছিলেন। বাসা ছিল নয়াপল্টনে। ’৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর একদিন ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার তাকে নিয়ে গেলেন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে। বেগম জিয়া এই মানুষটাকে পছন্দ করতেন। সালাম তালুকদারকে তিনি বললেন, মিয়াজিকে নেপাল, ভুটানের রাষ্ট্রদূত করে দিন। মোস্তাফিজ সাহেবকে আমার কথা বলুন। অনেক কষ্ট করেছে, ঘুরে আসুক। মিয়াজি বললেন, ম্যাডাম! আমি দুঃসময়ে দলের অফিস সামাল দিয়েছি। মহাসচিব যেভাবে বলেছেন, কাজ করেছি। আপনি যা বলেছেন শুনেছি। আমাকে এই ছোটখাটো স্থানে কেন পাঠাবেন! দিলে ভালো কিছু দিন। তিনি ইংগিত করলেন মন্ত্রিসভার দিকে। এ গল্প মিয়াজি সাহেবের কাছে শোনা। তখন কাজ করি ভোরের কাগজে। তিনি আমাদের নয়াপল্টনের অফিসে এলেন। জানিয়ে গেলেন বড় কিছু পাচ্ছি। তাকে বলেছিলাম, ঘরের লক্ষ্মী ঠেলে দিলেন কেন? বাকি জীবন কিছু পাবেন বলে মনে হয় না। ক্ষমতার রাজনীতি বড় জটিল। তিনি আমার কথায় ব্যথিত হলেন। বললেন, আপনাদের পরিবারের সঙ্গে আমাদের পুরাতন সম্পর্ক। আপনি আমাকে অবমূল্যায়ন করেছেন। আমার সম্পর্কে ধারণা নেই আপনার। মিয়াজি সাহেব শেষ পর্যন্ত রাজনীতি থেকে আর কিছু পাননি। কিন্তু বিএনপির রাজনীতি ছাড়েননি। আদর্শিক অবস্থানটা ধরে রেখেছিলেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। সবাই এভাবে পারে না। চাওয়া-পাওয়ার হিসাব-নিকাশ বড় নিষ্ঠুর। হিসাব মেলাতে গিয়ে অনেকে ছিটকে পড়েন। চলে যান অনেক দূরে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীই এখন আক্ষেপ করেন। বঞ্চনার কথা বলেন। সেদিন এক নেতা বললেন ঢাকার উত্তরার শূন্য আসনটি নিয়ে। এ আসনটিও চায় বিজিএমইএ। রাজনীতিতে বিজিএমইএ ভালো করছে। গার্মেন্টের আগামীর চেয়ে বিজিএমইএ নেতারা রাজনীতিতে এখন অনেক বেশি আগ্রহী। সরকারি দলও তাদের প্রাধান্য দিচ্ছে। উত্তরার আসন কে পাবেন জানি না। বিজিএমইএ নেতাদের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হলে বিস্মিতও হব না। নেতা তৈরিতে এখন ছাত্রলীগ, যুবলীগের চেয়ে বিজিএমইএ এগিয়ে আছে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। এমনই হয়। সরকারে এক, বিরোধী দলে আরেক রাজনীতি। আওয়ামী লীগে এখন ব্যবসায়ীদের কদর। মন্ত্রিসভা, সংসদ সবখানে ব্যবসায়ীরাই বেশি। রাজনৈতিক কর্মীদের দরকার হয় বিরোধী দলে থাকতে। সরকারে তাদের না হলেও চলে। সরকার চলে অতি উৎসাহী আমলা, ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদ দিয়ে। আর বিরোধী দলে দরকার কামলা। যা করেন সব কর্মীরা। দুঃসময় এলে তারাই থাকেন। সুযোগসন্ধানীরা থাকে না। ক্ষমতার রাজনীতির খারাপ দিক নেতাদের কোন্দল। পোড় খাওয়া নেতারা পরস্পরের বিরুদ্ধে অকারণে লড়াই করেন। তখন সুযোগটা নেন বহিরাগতরা। সমস্যাটা এখানেই তৈরি হয়। নিজের ঘরের আগুনে পুড়ে রাজনীতিবিদরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। নিজেদের ভুল নিজেরা বুঝতে পারেন না।
রাজনৈতিক সরকারে দরকার দক্ষ কিছু মন্ত্রী। যারা সরকারের নীতিগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করবেন। অনিয়ম-অব্যবস্থাকে কঠোরভাবে মনিটরিং করবেন। সরকারকে সঠিক পথে চলতে কাজ করবেন। মাঠের নেতা-কর্মীদের দরদ দিয়ে আগলে রাখবেন। গণতন্ত্রের স্বার্থে দীর্ঘমেয়াদে রাজনীতিকে রাখতে হয় রাজনীতিবিদদের কাছে। নিজের লোকেদের সঙ্গে গ্যাপ না থাকাই ভালো। ইতিহাস তা-ই বলে। ইতিহাসের নানা মেরুকরণ আছে। হিসাব-নিকাশ আছে। চলার পথে অনেক সংকট আছে। অনেক জটিলতা আছে। তবু পথ চলতে হয় বাস্তবতাকে সামলে। এখানে গরমিল হলেই বিপদ আসে হুট করে; যা সামাল দেওয়া কঠিন হয়।
এই লেখা শেষ করছি মার্গারেট থেচারের বিপাকে পড়ার বাস্তবতা নিয়ে। ক্ষমতার রাজনীতিতে দলের সঙ্গে দূরত্বে সংকটে পড়েছিলেন মার্গারেট থেচার। সবচেয়ে কঠোরতম শাসক বলা হতো তাঁকে। বিরোধী পক্ষ, কঠোর শ্রমিক আন্দোলন মোকাবিলা করেন তিনি হাসতে হাসতে। কিন্তু নিজ দলের সঙ্গে দূরত্বই কাল হয়ে যায় তাঁর। মার্গারেট থেচারকে বলা হতো ব্রিটেনের সর্বকালের সেরা প্রধানমন্ত্রী। ১৯৮১ সালে জনমত জরিপের ফলাফল থেচারের কনফিডেন্স আরও বাড়িয়ে দেয়। থেচার চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করতেন। অবশ্য চ্যালেঞ্জের মাঝেই তাঁর রাজনৈতিক বিকাশ। ১৯৭৫ সালে রক্ষণশীলদের নেতা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ। তাঁর সরকারের শিক্ষামন্ত্রী থেচার। শিক্ষা খাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি লাইমলাইটে আসেন। থেচার হঠাৎ ঘোষণা দেন নেতৃত্ব নিয়ে লড়বেন হিথের বিপক্ষে। হইচই পড়ে যায় ব্রিটেনে। লড়াই শুরু হয় দলের ভিতরে। ব্রিটিশ মিডিয়ার কৌতূহলী চোখ গিয়ে পড়ে থেচারের ওপর। ব্রিটেনে একজন নারীর প্রধানমন্ত্রী পদে লড়ার ঘোষণা অনেকের কাছে ছিল বিস্ময়ের। হিথ তখন বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি না আমার জীবদ্দশায় কোনো মহিলা ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রী হবেন।’ হিথের এ অবজ্ঞা থেচারকে আরও জেদি করে তোলে। তিনি মাঠে নামেন। শেষ পর্যন্ত দলীয় নেতৃত্বের লড়াইয়ে হিথ হারলেন মার্গারেট থেচারের কাছে। দলের নেতৃত্বকে গতিশীল করে ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে থেচার জিতলেন। হলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী হয়েই আর্জেন্টিনার সঙ্গে বিরোধে থাকা ফকল্যান্ড দ্বীপ দখলে নেন। এ যুদ্ধজয়ে মার্গারেট থেচারের জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যায় ব্রিটেনে। এরপর তিনি নজর দেন দেশের ভিতরে। কমিউনিজমের বিপক্ষে শক্ত অবস্থান নেন। জনপ্রিয় করে তোলেন বাজার অর্থনীতি। ১৯৮৩ ও ’৮৭ সালে আাবার ভোটে জয়ী হন। বারবার জয়ে থেচারের বিশাল উচ্চতা তৈরি হয় বিশ^ব্যাপী। কিন্তু ’৮৭ সালে জয়ের পর জনগণ ও দলের সঙ্গে গ্যাপ বাড়তে থাকে। এ নিয়ে একটি সিনেমা তৈরি হয় ‘আয়রন লেডি’। ছবিটি অস্কার পায়। থেচার চরিত্রে সাবলীল অভিনয় করেন মেরিল স্ট্রিপ। বাস্তবতা ও টানটান উত্তেজনা নিয়ে ছবিটি নির্মিত। ছবির কাহিনি ছিল বাস্তবতাকে ঘিরেই।
থেচারের বিপর্যয় শুরু শ্রমিক আন্দোলনে। আর ডালপালার বিকাশ ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধে। দল ও সরকার থেকে সিনিয়র নেতাদের পদত্যাগ ও রাজনৈতিক নিষ্ক্রিয়তা বিপাকে ফেলে থেচারকে। তিনি মনে করতেন সবকিছু সামলাতে পারবেন। তাই তিনি বলেন, ‘আমি লড়াই চালিয়ে যাব। জেতার জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।’ কিন্তু শক্তিশালী দল না থাকলে জটিল পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় না। থেচারের হয়েছিল তাই। শেষ লড়াই তিনি করতে পারলেন না। পদত্যাগ করেন ’৯০-এর নভেম্বরে। ক্ষমতা ছাড়ার পর তাঁর আক্ষেপ ছিল। সংসদে লড়াইয়ের সুযোগ না দেওয়ার আক্ষেপ। তিনি দুঃখ করে বলেছিলেন, ‘রাজনীতি করলে আপনার পিঠে কেউ ছুরি মারবে এমন ঝুঁকি থাকবেই। কিন্তু এটা আমি কখনো ক্ষমা করব না যে, আমাকে পার্লামেন্টের মাধ্যমে বিদায় নিতে দেওয়া হয়নি। এ আমি ভুলব না।’ ক্ষমতা হারানোর পর থেচার এমপি ছিলেন আরও দুই বছর। কিন্তু এ লৌহমানবীর শেষ জীবন কেটেছিল অনেকটা নিঃসঙ্গতায়!
করোনার নমুনা পরীক্ষা না করেই মেট্রোরেলের ৭৬ শ্রমিকের ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ায় রিজেন্ট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এর আগে গত শুক্রবার রাতে গোপালগঞ্জের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
শনিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই ইয়াদুর রহমান তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের হেফাজতের আবেদন করেন। শুনানি শেষে মহানগর হাকিম মো. মইনুল ইসলাম তা মঞ্জুর করেন। ২০ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানায় মেট্রোরেলের একটি সাব-কন্ট্রাক্টর প্রতিষ্ঠানের পক্ষে রেজাউল করীম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ও মিজানুরসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, মেট্রোরেলে কর্মরত ৭৬ কর্মীর করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে রিজেন্ট হাসপাতাল। এ জন্য মাথাপিছু সাড়ে ৩ হাজার টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু পরীক্ষা না করেই করোনাভাইরাসের প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ফলে কর্মীদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে।
উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি তপন চন্দ্র সাহা বলেন, মেট্রোরেলে শ্রমিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মামলায় মিজানুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, শ্রমিকপ্রতি সাড়ে তিন হাজার টাকা জমা দিয়ে তারা ৭৬ জনের করোনা পরীক্ষা করান রিজেন্ট হাসপাতালে। তিনজনের ফল পজিটিভ ও ৭৩ জনের নেগেটিভ আসে। পরে তারা জানতে পারেন প্রতিবেদন ভুয়া ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ২০ জুলাই মামলা করেছিল উত্তরা পশ্চিম থানায়।
প্রসঙ্গত, প্রতারণাসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম, সরকারের সঙ্গে চুক্তিভঙ্গ, করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়া ও রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপের দুটি হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাব। গত ৬ জুলাই র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় পরীক্ষা ছাড়াই করোনার সনদ দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। এর পর ৭ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে র্যাব রিজেন্ট হাসপাতাল ও তার মূল কার্যালয় সিলগালা করে দেয়।
একই দিন উত্তরা পশ্চিম থানায় রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এর পর থেকে সাহেদ পলাতক ছিল। ১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরা থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। সাহেদ বর্তমানে র্যাব হেফাজতে রিমান্ডে রয়েছেন। পরে তার সহযোগী রিজেন্ট গ্রুপের এমডি মাসুদ পারভেজকেও গ্রেপ্তার করা হয়। প্রতারণার মামলায় শনিবার গ্রেপ্তার করা হলো হাসপাতালের এমডি মিজানুর রহমানকে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চিত্রনায়িকা পপির শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়েছে। শ্বাসকষ্ট কমেছে তার। শনিবার এমনটাই জানিয়েছেন পপি। তিনি বলেন, আগের চেয়ে ভালো অনুভব করছি। শ্বাসকষ্টের তীব্রতা কমে গেছে। আমার খাওয়াদাওয়া করতে অসুবিধা হচ্ছে না। তবে শরীর প্রচ- দুর্বল হয়ে গেছে। পারিবারিক চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করছি।
এর আগে শুক্রবার করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরটি খুলনা থেকে মুঠোফোনে গণমাধ্যমকে নিজেই জানান তিনি।
পপি বলেন, বেশ কিছুদিন থেকে শরীরে জ্বর ছিল, সঙ্গে কাশি। মাঝে জ্বর কমেও গিয়েছিল। কিন্তু শরীর দুর্বল হওয়ায় কিছুই ভালো লাগছিল না। একসময় শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে আমাকে পরিবারের লোকেরা করোনার নমুনা পরীক্ষা করাতে পরামর্শ দেন। করোনার নমুনা দেওয়ার পর গেল বৃহস্পতিবার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের আগেই পপি বেড়াতে গিয়েছিলেন তার গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুরে। লকডাউনে সেখানে আটকা পড়েন তিনি। নিজের সামর্থের মধ্যে কয়েক দফায় খালিশপুর ও পাশ্ববর্তী এলাকায় অস্বচ্ছল মানুষদের ত্রাণ বিতরণ করেন।
পপির পরিবার জানায়, দিন ছাড়া রাতেও পপি শহরের রাস্তার মানুষদের সাহায্য দিতেন। মানুষকে সহযোগিতা করতে গিয়ে তিনি সংক্রমিত হয়েছেন।
লাক্স আনন্দ বিচিত্রার সুন্দরী প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরিচিতি লাভ করেন চিত্রনায়িকা পপি। এরপর ১৯৯৭ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ ছায়াছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন তিনি। কিন্তু তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র কুলি। মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে তার বিপরীতে অভিনয় করেন ওমর সানি।
ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে গত বছরের ৭ অক্টোবর রাতে বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে একই বছরের ১১ অক্টোবর ক্যাম্পাসে সবধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছিল বুয়েট প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসনের এ নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করেই বুয়েটে আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। বুয়েটের পাশাপাশি ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) এবং স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজেও আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে ছাত্রদল।
শুক্রবার রাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল অনুমোদিত এবং ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বুয়েটে ৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে আসিফ হোসেন রচিকে আহ্বায়ক, ফয়সাল নূরকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং আলী আহমদকে সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া, নওরোজ রহমান ইমন ও মুসাওয়ার আহমেদ শফিককে সদস্য করা হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটিকে এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটিসহ ওইসব কমিটির অধীনস্ত ইউনিট কমিটির তালিকা কেন্দ্রীয় সংসদে জমা দিতে বলা হয়েছে।
বুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও ছাত্রদল কেন কমিটি দিয়েছে- এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অনেকে বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাস রাজনীতির বাইরে থেকেছে ছাত্রদল। দলের হাইকমান্ড থেকে বার বার তাগাদা থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো সক্রিয় হতে পারেনি সংগঠনটি। গতবছর ডাকসু নির্বাচনের কারণে তাদেরকে কিছুটা সক্রিয় হতে দেখা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। অন্য ক্যাম্পাসগুলোতে তারা পর্দার আড়ালেই থেকে যায়।
বুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধের মধ্যে কেন কমিটি দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। আবরার হত্যাকাণ্ডের জন্য বুয়েটে ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ না করে সব ছাত্র সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা ঠিক হয়নি।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগ নামমাত্র কমিটি বিলুপ্ত করলেও তাদের সব কার্যক্রম চলছে। কিন্তু প্রশাসন তাদের কিছুই বলছে না। কারণ, দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম রয়েছে। বুয়েটে স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির জন্য ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন খোকন।
বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত শুরু থেকেই মানতেন না বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির দরকার আছে। আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলার জন্য সেখানে ছাত্র রাজনীতি প্রয়োজন। তাই আমরা সেখানে কমিটি দিয়েছি।
বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নয় ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের প্রয়োজন উল্লেখ করে সাত্তার বলেন, বুয়েটের ঘটনায় যে সংগঠন দায়ী, সেই সংগঠনকে নিষিদ্ধ না করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ছাত্র রাজনীতি। ছাত্রদল এই সিদ্ধান্তকে কখনোই মানেনি। ছাত্রদল মনে করে, দেশের এই পরিস্থিতিতে সেখানে কমিটি প্রয়োজন, তাই সেখানে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিতে থাকা শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিল হবে
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে বুয়েট ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলেও ছাত্রদল কমিটি গঠন করায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইতোমধ্যেই কমিটিতে থাকা শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করা হয়েছে উল্লেখ করে তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন বুয়েটের উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার। তিনি বলেন, যে পাঁচজন শিক্ষার্থী ছাত্রদলের কমিটিতে আছে, তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাব। তাদের ছাত্রত্ব বাতিল হবে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদই কমিটি দিয়েছে উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা বা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের বিষয়ে নয়, আমরা আমাদের ছাত্রদের বিষয়ে বলতে পারি। আমার ছাত্ররা তো জানতো, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদফতরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ছাত্রকল্যাণ পরিদফতরের অনুমোদিত ক্লাব ব্যতিত ছাত্রদের অন্য যে কোন সংগঠনের কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ। এমতাবস্থায় শুক্রবার রাতে বুয়েট ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান আইন অনুসারে রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে নিয়ম শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে ড. মিজানুর রহমান বলেন, ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার কোনো সুযোগ নেই। এরপরও যদি কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালায় তবে তা আইনবিরোধী কাজ বলে বিবেচিত হবে। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ছাত্রদলের কমিটির বিষয়ে ড. মিজান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, নতুন কমিটির কারও কারও ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে। তবে যারা এখনো নিয়মিত ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, আবরার হত্যাকান্ডে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জড়িত থাকায় বুয়েট কমিটি ভেঙে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরপর কোন কমিটি দেয়নি সংগঠনটি। আবরার হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে গত বছরের ১১ অক্টোবর তখনকার উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
শারমিন জাহান ওরফে জাহানারা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন-১ এর সহকারী রেজিস্ট্রার। এ ছাড়া নিজেকে রাজনীতিবিদ, উদ্যোক্তা, লেখক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠক হিসেবে পরিচয় দেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য নেত্রকোনা-৫ আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এ ছাড়া চাকরির নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে হয়েছেন বেসরকারি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক। প্রতিষ্ঠানের নাম অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে তিনি আম, লিচু, সবজি থেকে শুরু করে মাছ, মাংস, হাঁস- মুরগি বিক্রি করতেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতেন।
২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে পিএইচডি করতে গিয়েছিলেন চীনের উহানে। সেখানে করোনার তাণ্ডব শুরু হওয়ার পরপরই চলে আসেন দেশে। দীর্ঘদিন চীনে থাকার সুবাদে চীনা পণ্যের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গড়ে উঠে সখ্য। তাই দেশে এসে অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি করোনাকালীন সময়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিক্রি শুরু করেন সুরক্ষা সামগ্রী। আদতে তিনি খুচরা বিক্রেতা। বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সুরক্ষা সামগ্রী এনে ফেসবুক ও ঘনিষ্ঠ মহলে প্রচারণা চালিয়ে অল্প কিছু পণ্য বিক্রি করতেন। কিছুদিন পর বেশি লাভের জন্য নতুন ফন্দি বের করেন। নিজের রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও সুরক্ষা সামগ্রী থার্মোমিটার, পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস, ফেইস শিল্ডসহ অন্যান্য পণ্য সরবরাহ শুরু করেন।
গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেই বলেছেন, ঢাকা ডিসি অফিস থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসনেও তিনি নিয়মিত সুরক্ষা সামগ্রী দিয়ে আসছিলেন। তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও বাগড়া বাধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে মাস্ক সরবরাহে। সেখানকার কোভিড চিকিৎসকদের জন্য ১১ হাজার মাস্ক সরবরাহের কাজ পেয়েছিলেন তিনি। এরমধ্যে সরবরাহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪৬০টি। কিন্তু এন-৯৫ মাস্কের আড়ালে তিনি ৯৫৯টি নকল মাস্ক সরবরাহ করেছেন। চিকিৎসকরা বিষয়টি টের পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন। পরে সত্যতা নিশ্চিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোজাফফর আহমেদ বাদী হয়ে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের মালিক শারমিন জাহানকে আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। এই মামলায় পরেরদিন শুক্রবার রাতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম শাহবাগ এলাকা থেকে শারমিন জাহানকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে নিম্নমানের মাস্ক সরবরাহ করে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের মালিক শারমিন জাহানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।শেনিবার ঢাকা মহানগর হাকিম মঈনুল ইসলাম এ রিমান্ডের আদেশ দেন। এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের রমনা জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস আসামিকে আদালতে হাজির করে তিনদিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে তিনি বলেন, শারমিন জাহান জেনেশুনে কোভিড-১০ সম্মুখযোদ্ধাদের মাস্ক সরবরাহে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। এতে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দরপত্রের কোটেশন অনুযায়ী ফেস মাস্ক সরবরাহ করেননি। এর পেছনের সহযোগীদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে এবং তাকে নিয়ে অভিযানের লক্ষ্যে তিনদিনের রিমান্ড প্রয়োজন। রাষ্ট্র পক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করে শুনানি করেন। আর আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট কাজী পনির হোসেন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। জামিন আবেদনে তিনি বলেন, আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। তিনি ট্রেনিংয়ে চীনের উহানে ছিলেন। ট্রেনিং শেষ করে দেশের সেবা করতে এসেছেন। এর আগে তিনি সেখানে ফেস মাস্ক সরবরাহ করেছেন। যে ঘটনার জন্য মামলা হলো সেই ফেস মাস্ক তিনি ঘটনার এক মাস আগে সরবরাহ করেছেন। তখন কোনো অভিযোগ করা হয়নি। এক মাস পরে এসে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলো। বড় ধরনের কোনো অন্যায়কারীকে বাঁচানোর জন্য শারমিন জাহানকে ফাঁসানো হয়েছে।
শুনানির এক পর্যায়ে বিচারকের অনুমতি নিয়ে শারমিন জাহান আদালতকে বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেস মাস্ক সরবরাহ করি। চার লটের মধ্যে দুটোই ভালো। আর যেগুলো খারাপ সেগুলো আমাকে ফেরত দিতো কর্তৃপক্ষ। এক মাস আগে দেয়া মালের অভিযোগ ১৮ তারিখে তারা আমাকে জানিয়েছে। আমি চীনের উহানে ছিলাম। ট্রেনিং শেষে দেশে ফিরে মানুষের সেবা করতে কাজ করছি। এ সময় উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুনানি শেষে আদালত ত্যাগ করার সময় শারমিন জাহান সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আপনারা এর আসল সত্য উদ্ঘাটন করুন।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট ও হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে, শারমিন জাহান রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে হাসপাতাল থেকে মাস্ক সরবরাহের কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। কাজ পেতে তিনি হাসপাতাল প্রশাসনের দুজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশ করেন। এদের মধ্যে হাসপাতালের পরিচালক ও একজন সহকারী পরিচালক রয়েছেন। শুধু মাস্ক নয়, করোনাকালীন সময়ে আরো অনেক কেনাকাটা এই দুই কর্মকর্তাই নিজেদের খেয়াল খুশিমতো করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এও অভিযোগ উঠেছে শারমিনকে কাজ দেয়ার ক্ষেত্রে মানা হয়নি কোনো টেন্ডার প্রক্রিয়া। করা হয়নি মাস্কের গুণগত মানের যাচাই বাছাই। ৭৩০ টাকা দরে প্রায় ৮০ লাখ টাকার মাস্ক সরবরাহের কথা ছিল প্রতিষ্ঠানটির।
তদন্ত সংশ্লিষ্টসূত্র বলছে, শারমিন জাহানের পক্ষে একা এই কাজ করা সম্ভব না। তার সঙ্গে আরো অনেকে জড়িত থাকতে পারেন। মূলত তিনদিনের রিমান্ডে তার কাছ থেকে তার কার্যক্রম, তার সঙ্গে আর কে কে জড়িত, কি উদ্দেশ্যে তিনি এ ধরনের জঘন্য কাজ করেছেন এসব বিষয়ে জানার চেষ্টা করা হবে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ- পুলিশ কমিশনার মিশু বিশ্বাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে গতকাল আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। রিমান্ডে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। নকল মাস্কগুলো পরীক্ষা করে দেখা হবে সেগুলো নকল না আসল। এ ছাড়া এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।
ওদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করে কীভাবে শারমিন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েছেন এই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। কারণ ঢাবিতে চাকরির নীতিমালা অনুযায়ী চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করার সুযোগ নেই। ঢাবি ভিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। যদি সত্যতা পাওয়া যায় তবে শারমিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ব্যবস্থা নেবে হাসপাতাল প্রশাসন: শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নকল মাস্ক সরবরাহের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল কারণ দর্শানোর পর তাদের পক্ষ থেকে যা বলা হয়েছে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনা মহামারিতে সম্মুখসারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ধরনের আপস নয়। ইতিমধ্যে তারা মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তবে মামলা দায়ের ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি আজকের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেবেন। এরপর প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তীতে আরো ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালকে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. জুলফিকার আহমেদ আমিন জানিয়েছেন, মোট চারটি লটে তিন হাজার ৪৬০টি মাস্ক গ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে ত্রুটিপূর্ণ ৯৫৯টি মাস্ক ফেরত দেয়া হয়েছে। আর মাস্ক নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৫০১টি। ৭৩০ টাকা হিসাবে মোট ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৭৩০ টাকার মধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে ৫ লাখ টাকা।
কে এই শারমিন
শারমিন জাহানের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলার শ্যামগঞ্জের গোয়ালকান্দায়। তার পারিবারিক নাম জাহানারা। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। শারমিন স্কুল ও কলেজ দুটোই শেষ করেছেন শ্যামগঞ্জে। ১৯৯৬ সালে এসএসসি ও ১৯৯৮ সালে হাফেজ জিয়াউর রহমান মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাস করেন। এই মহাবিদ্যালয় থেকেই তার ছাত্র রাজনীতি শুরু হয়। ১৯৯৬ সালেই কলেজে ভর্তি হয়েই শারমিন ছাত্রলীগের পক্ষে কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচন করেন। ওই নির্বাচনে তিনি সম্পাদিকা হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর থেকে ক্যাম্পাস রাজনীতির সব কিছুতেই তার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। এইচএসসি’র পর অর্থনীতি নিয়ে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে ভর্তি হন। সেখানে কিছুদিন পড়ালেখার পর ১৯৯৮-১৯৯৯ শিক্ষাবর্ষের ইসলামিক স্টাডিজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। জায়গা হয় তার বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলে।
২০০০ সালের ২৫শে মে তিনি হলের প্রচার সম্পাদিকা হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর ২০০২ সালে তিনি এই হল ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও জায়গা হয় শারমিনের। আর সর্বশেষ তিনি আওয়ামী লীগের মহিলা ও শিশু বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটিতে ছিলেন। তার আগের কমিটিতে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটিতে সহ-সম্পাদক পদে ছিলেন। লেখাপড়ায় থাকাকালীন ২০০৫ সালে শারমিন চাঁদপুরের বাসিন্দা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম ভূঁইয়ার ছেলে ব্যবসায়ী শরিফুল আলম ভূঁইয়াকে বিয়ে করেন। শারমিন এক মেয়ে ও এক ছেলের জননী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালে রাজধানীর ধানমণ্ডির বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট থেকে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা শেষ করেন। এরপর ২০১৬ সালে চীন সরকারের স্কলারশিপ পেয়ে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের উপরে পিএইচডি করতে চীনের উহানে যান। উহান হোয়াজাং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে ইতিমধ্যে প্রি ডিফেন্স সম্পন্ন করেছেন। ফাইনাল ডিফেন্স এখনো বাকি ছিল। করোনাভাইরাসের কারণে উহানে লকডাউন শুরু হলে ২৩শে জানুয়ারি তিনি দেশে ফিরে আসেন। চীনে থাকা অবস্থায় তিনি ২০১৯ সালের মার্চ মাসে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলে সরবরাহের ব্যবসা শুরু করেন। ২০১০ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন। চলতি বছরের ২৩শে জানুয়ারি ছুটি থেকে এসে ১৬ই মার্চ আবার কাজে যোগ দেন।
শারমিন জাহান ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকা ইউনিভার্সিটি সোসাইটি ফর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, বিআইএম অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, ইসলামিক স্টাডিজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, বঙ্গবন্ধু সমাজ কল্যাণ পরিষদ, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল, নেত্রকোনা জেলা সমিতি, বৃহত্তর ময়মনসিংহ যুব সমিতি, চায়না আওয়ামী লীগসহ আরো বেশকিছু সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। শারমিনের এমন কর্মকাণ্ড জানাজানির পর এখন বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ আওয়ামী লীগের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে।
প্রশ্নফাঁস চক্রে স্বামী-স্ত্রী, ভাই-ভাতিজাসহ একই পরিবারের ৭ জন
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া মুন্নু, তার স্ত্রী, ভাই, ভগ্নিপতি এবং ভাতিজাসহ একই পরিবারের সাত স্বজন মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রে জড়িত।
গত ১৯ ও ২০ জুলাই রাজধানীর মিরপুর থেকে চক্রের মূল হোতা জসিমসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গ্রেপ্তার অপর চারজন হলেন- সানোয়ার হোসেন, মোহাইমিনুল ওরফে বাঁধন এবং জসিমের ছোট বোনের স্বামী জাকির হোসেন দিপু ও ভাতিজা পারভেজ খান। ২০ জুলাই মিরপুর থানায় সিআইডি বাদী হয়ে প্রশ্নফাঁস চক্রের মূল হোতা জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া ওরফে মুন্নুসহ ১৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ছাড়া ১৫০-২০০ জন অজ্ঞাতপরিচয়কে আসামি করা হয়েছে। জসিমের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার খানবাড়িয়া এলাকায়। তবে তিনি বসবাস করেন রাজধানীর মিরপুরে।
এজাহারভুক্ত অপর আসামিরা হলেন- শারমিন আরা জেসমিন ওরফে শিল্পী, জাকির হোসেন দিপু, আলমগীর হোসেন, পারভেজ খান, সামিউল জাফর ওরফে সেটু, আবদুস সালাম খান, তুরাগের এস এম সানোয়ার হোসেন, নোয়াখালীর চাটখিলের নারায়ণপুরের বাসিন্দা ডা. জেডএমএ সালেহীন ওরফে শোভন, সাভার চাকুরিয়ার আক্তারুজ্জামান খান ওরফে তুষার, শরীয়তপুরের পালং থানার চরযাদবপুরের রাশেদ খান মেনন, নাটোরের মোহাইমেনুল ইসলাম বাঁধন এবং রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারের ডা. মুহাম্মদ ময়েজ উদ্দিন আহমেদ প্রধান। এ ছাড়া একজন শিক্ষার্থীকেও আসামি করা হয়েছে।
জসিমের কাছ থেকে দুই কোটি ২৭ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, দুই কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক এবং পারভেজের কাছ থেকে ৮৪ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করা হয়েছে। জসিম, পারভেজ ও জাকিরকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডি। প্রেসম্যান আবদুস সালাম ও জসিমের স্ত্রী শিল্পীসহ পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সিআইডির অভিযান অব্যাহত আছে।
জানা গেছে, জসিমের অন্যতম সহযোগী তার খালাতো ভাই আবদুস সালাম খান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেসের মেশিনম্যান। প্রেসে ছাপানোর সময়ই তিনি প্রশ্নপত্র বিশেষ কৌশলে বের করে এনে তুলে দিতেন এই চক্রের মূল হোতা জসিমের হাতে। ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা পাঁচ বছর মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে চক্রটি।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল আহসান বলেন, জসিম ও তার চক্রের সদস্যদের সম্পদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তারা অবৈধভাবে সম্পদ গড়ে থাকলে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা হবে। সে মামলায় সরকারের অনুকূলে সম্পদ বাজেয়াপ্তের আবেদন করবে সিআইডি। জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া মুন্নুর প্রশ্নপত্র ফাঁসের এই চক্রে ছিলেন স্ত্রী শারমিন আরা জেসমিন ওরফে শিল্পী, ছোট বোনের স্বামী জাকির হোসেন দিপু, বড় বোনের স্বামী আলমগীর হোসেন, ভাতিজা পারভেজ খান, ভায়রাভাই সামিউল জাফর ওরফে সেটু এবং খালাতো ভাই আবদুস সালাম খান। সালাম মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের প্রশ্নপত্র প্রেস থেকে এনে দিলে জসিম অন্যান্য সদস্যের মাধ্যমে সারাদেশের পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ করতেন। আবদুস সালামের প্রশ্নপত্র ফাঁসের পেছনে অধিদপ্তরের ক্ষমতাবান কর্তাদেরও মদদ ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেসের ম্যানেজার ফাইজুর রহমান বলেন, কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে প্রশ্নপত্র ছাপানো হয়। পুরো প্রেস সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকে। ছাপানোর সময় মেশিনম্যান আবদুস সালাম খানসহ তার আরেক সহকারী থাকতেন প্রেস মেশিনে। এ ছাড়া ছাপাখানায় প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্যরাও থাকতেন। মানিকগঞ্জের সিংগাইরের গ্রামের বাড়ি এলাকার একটি হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় তাকে কয়েক বছর আগে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
তদন্ত সংশ্নিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ২০১৩ সালের ৪ অক্টোবর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। জসিম এর আগের দিন রাতে চক্রের সদস্য সানোয়ারকে মিরপুর ২ নম্বরের প্রশিকার মোড়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন সরবরাহ করেন। এই প্রশ্ন জসিম সংগ্রহ করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেসের মেশিনম্যান সালামের কাছ থেকে। জসিমের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র পেয়ে সানোয়ার মোবাইল ফোনে সেটির ছবি তুলে অন্য সদস্যদের ফেসবুক মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে দেন। ২০১৪ সালেও তারা ৪০-৫০ শিক্ষার্থীর কাছে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেন। ২০১৫ সালেও একইভাবে জসিম সালামের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন। পরীক্ষা শুরুর আগে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে সানোয়ার ও জাকির হোসেন ওরফে দিপুসহ চক্রের অপর সদস্যরা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তাদের ভোটার আইডি কার্ড, প্রবেশপত্রের ফটোকপি, যোগাযোগের জন্য মোবাইল ফোন নম্বর জোগাড় করে জসিমের মিরপুরের বাসায় দিয়ে আসেন। পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা নগদ টাকা এবং চেকও পৌঁছে দেওয়া হয় জসিমকে। পরীক্ষার আগের দিন রাতে ফাঁস করা প্রশ্নপত্র সামিউল জাফর ওরফে সিটু জসিমের স্ত্রী শিল্পীকে পৌঁছে দেন। শিল্পী পরে অপর সদস্যদের কাছে তা সরবরাহ করেন। ২০১৮ সাল পর্যন্ত মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায় একইভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে এই চক্র।
সোহেল তাজ ও ব্যারিস্টার ফরহাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে তোলপাড়
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের পুত্র ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ শনিবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যা সাতটায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ্ আলী ফরহাদের ব্যক্তিগত ফেসবুকে দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন। এ নিয়ে ফেসবুকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ঝড় বইছে।
১৪ ঘন্টা আগে ব্যারিস্টার শাহ্ আলী ফরহাদের সবশেষ পোস্টে দেখা যায়, সেখানে ১০৭২ লাইক, ৪৩ কমেন্টস এবং ৯৬ শেয়ার করা হয়েছে। তার এ সংক্রান্ত আরেকটি পোস্টে ১৪০০ লাইক, ১১৪ কমেন্টস ও ৫৬ শেয়ার হয়েছে। অন্যদিকে সোহেল তাজের ফেবসুক থেকে দেখা যায়, ভিডিওটি দুই লাখের বেশি দর্শক দেখেছেন। এতে ২৭ হাজার লাইক, ২১০০ কমেন্টস এবং ২৩০০ শেয়ার পড়েছে।
এ সংক্রান্ত ফেসবুক পোস্টে (রাত দুইটা পর্যন্ত) ৭৩২ কমেন্টস, সাড়ে আট হাজারের বেশি লাইক ও ৪৬০ শেয়ার হয়েছে।
গত ২৩ জুলাই তাজউদ্দীন আহমদের ৯৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে 'সেতারা' (সেন্টার ফর তাজউদ্দীন আহমদ রিসার্চ এন্ড এক্টিভিজম) এর উদ্যোগে এক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় । এই প্রেক্ষাপটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাজউদ্দিন আহমদের ঐতিহাসিক ভূমিকা আলোচনায় আসে।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ তার ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন যে, ’জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বানানোর অপচেষ্টা আর তাজউদ্দীনকে শেখ মুজিবের থেকে দক্ষ প্রশাসক বা নীতিনির্ধারক দেখানোর কৌশল একই সূত্রে গাঁথা।’’
ব্যারিস্টার ফরহাদ এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে ম্লান করতেই ‘বিকল্প ইতিহাস’ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে দাবি করেন। তার ভাষায়, ‘‘তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা শারমিন আহমদ ও তার সহকারী মঈদুল হাসানের দুইটি ইতিহাস বিকৃতকারী বই থেকেই এই বিকল্প ইতিহাস পাওয়া যায়।’’
ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সোহেল তাজ শনিবার ভেরিফায়েড ফেসবুকে তাজউদ্দিন ও জোহরা তাজউদ্দিনের পরিবারের পক্ষে একটি ভিডিও বিবৃতি দেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ পান ব্যারিস্টার শাহ্ আলী ফরহাদ। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদকে যোগদানের তারিখ থেকে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল অথবা তার সন্তুষ্টি সাপেক্ষে সরকারের উপসচিব পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হলো।
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে তানজিম আহমদ সোহেল তাজ। পিতার জন্মভূমি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত গাজীপুর-৪ আসন থেকে ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দলবল নির্বিশেষে তিনি বাবার মতোই এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সোহেল তাজ আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলেও ২০০৯ সালের ৩১ মে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। ২০১২ সালের ৭ জুলাই সংসদ সদস্য পদ থেকেও পদত্যাগ করেন এবং রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান।
সোহেল তাজ আজ তার বিবৃতিতে বলেন, আমরা খুবই বিস্মিত ও দুঃখিত হলাম, যখন শাহ্ আলী ফরহাদ নামের এক ব্যক্তির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস আমাদের নজরে আসে। (আমরা তার বাপ/দাদা পরিবার বা ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ভদ্রতার খাতিরে এখানে উল্লেখ করছি না) তার স্ট্যাটাসে তিনি এই বিভ্রান্তিমূলক ও আপত্তিকর লেখা লিখেছেন।
সোহেল তাজ প্রশ্ন তুলেছেন, ’স্বাভাবিকভাবেই জনমনে প্রশ্ন আসে, এটা কি তার ব্যক্তিগত অভিমত? এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কি এই ধরনের মতামত সমর্থন করেন? আর যদি সমর্থন না করেন, তাহলে আমরা আশা করবো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই মর্মে একটি বিবৃতি দেয়া হবে।’’
শাহ আলী ফরহাদের স্ট্যাটাস
শাহ আলী ফরহাদের ফেসবুকে একই বিষয়ে দুটি আলাদা পোস্ট পাওয়া যায়। দুটি বিবৃতিই নিচে তুলে ধরা হলো:
১.‘‘বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের প্রশংসা করতে গিয়ে যারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে খাটো করেন, অর্ধ সত্য বা মিথ্যা কিছু মিথের রেফারেন্স দেন, তারা আদতে তাজউদ্দীন আহমদেরও শুভাকাঙ্খী না। জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বানানোর অপচেষ্টা আর তাজউদ্দীনকে শেখ মুজিবের থেকে দক্ষ প্রশাসক বা নীতিনির্ধারক দেখানোর কৌশল একই সূত্রে গাঁথা। মোট কথা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর লেজেন্ডকে ডাইলুট করাই এদের লক্ষ্য। এই অপচেষ্টা রুখতে পড়াশোনার কোনো বিকল্প নাই। একে একে বঙ্গবন্ধুর সময়কার সবাই এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। নতুন প্রজন্মকে অবশ্যই সামনে আসতে হবে এই গুরুদায়িত্ব পালনে।’’
২.“তাজউদ্দীন আহমদ আমৃত্যু নীতির প্রতি আপোষহীন ছিলেন, কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর নীতি বিচ্যুতি ঘটেছিলো”, ‘২৫শে মার্চ তাজউদ্দীন সাহেব বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষণার কথা বললে বঙ্গবন্ধু তাকে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাতে বলেছিলেন, “বঙ্গবন্ধু ইমোশনাল ছিলেন, দক্ষ নেগোশিয়েটর ছিলেন না এর জন্য পাকিস্তান, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক কেউই তাকে ভয় পেতেন না, পেতেন তাজউদ্দীনকে“ - এই ধরণের কথা শুধু আপত্তিকরই হয়, ইতিহাস বিকৃতিরও সামিল। তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা শারমিন আহমদ ও তার সহকারী মঈদুল হাসানের দুইটি ইতিহাস বিকৃতকারী বই থেকেই এই বিকল্প ইতিহাস পাওয়া যায়। মজার ব্যাপার তাজউদ্দীন আহমদ নিজে কখনো জীবিত থাকতে এরকম কোনো দাবিই করেন নাই। বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার আনুগত্য ছিল প্রশ্নাতীত।
এই রেফারেন্সগুলোর একটিও যখন কেউ তাজউদ্দীন আহমদকে সম্মান দেখাতে গিয়ে ব্যবহার করে তখন সেও জেনে না জেনে ইতিহাস বিকৃত করে। আর এখানেই আমাদের সমস্যা। যেমন পরশুদিন দেখলাম তাজউদ্দীন আহমদের জন্মবার্ষিকীতে ভুট্টোর সেই কথিত মন্তব্য অহরহ শেয়ার হতে। যেই মানুষটা প্রায় ৩ দশক পাকিস্তানের একের পর এক মিলিটারি রেজিমদের দৌড়ের উপর রাখলেন, ভুট্টো তাকে এতো তাচ্ছিল্য করবে এই কথা তো ভুট্টো নিজের হাতে লিখে গেলেও বিশ্বাস করতাম না। আরেকজন তাজউদ্দীন আহমদ সম্পর্কে লিখলো ‘স্বাধীন বাংলাদেশের একমাত্র নেতা যিনি আমৃত্যু নীতির প্রতি আপোষহীন ছিলেন’ - তার মানে কি বঙ্গবন্ধু বিকে গিয়েছিলেন ব্যক্তি বা অন্য স্বার্থে? কোনো দরকার আছে অতি ইমোশনাল হয়ে এই রকম মন্তব্যের? যাই হোক, প্রতিবাদ করলাম। পরিষ্কারভাবেই বললাম তাজউদ্দীন আহমদকে সম্মান দেখাতে জাতির পিতার লেগেসিকে খাটো করার তো কোনো দরকার নেই।
কারণ বাঙালিদের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর একচ্ছত্র আধিপত্য কমাতে তার লিডারশিপ স্কিল নিয়ে একটি নয়, কয়েকটি স্বার্থান্বেষী মহল স্বাধীনতার আগ থেকেই প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করছে এবং আজ অব্দি তারা থামেন নাই। ভাসানী, জিয়া, তাহের নামক অনেককেই সেই জায়গায় বসানোর চেষ্টার করা হয়েছে। পঁচাত্তরের বেনেফিসিয়ারিরা বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে যেই প্রোপাগান্ডাটা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছে তা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু ভালো প্রশাসক ছিলেন না। দেশ চালাতে ব্যর্থ ছিলেন। কেউ যখন অন্য কাউকে পারদর্শী দেখানোর জন্য বঙ্গবন্ধুর প্রশাসনিক দক্ষতা বা জ্ঞান নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি করে তখন কিন্তু খুনীদের মৃতপ্রায় প্রোপাগান্ডাই নতুন শক্তি পায়।
তাই লিখলাম যারা এই ধরণের ভুলভাল তথ্য দিয়ে তাজউদ্দীন আহমদের মহত্ব দেখাতে চাচ্ছেন তারা কিন্তু পক্ষান্তরে তাদের পারপাসই সার্ভ করছেন যাদের লক্ষ্য বঙ্গবন্ধু নামক আইডিয়ার শক্তি ক্ষয় করা। কারণ এই পলিটিকাল জায়ান্ট এর আশেপাশেও তাদের নেতারা দাঁড়াতে পারে না। অতিবিপ্লবী বাম, ডান সবারই সমস্যা ওই একজনকে নিয়েই। জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক নামক অপতত্বের জন্ম এই কারণেই। তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় চার নেতার একজন, জাতির পিতার আস্থাভাজন ও ঘনিষ্ঠ সহচর, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক - তার এই পরিচয়ের জন্যই তাকে বাঙালিদের, বাংলাদেশিদের আজীবন শ্রদ্ধা করতে হবে। সাথে শ্রদ্ধা দেখাতে হবে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম সহ বাকি তিন জাতীয় নেতাকেও। বঙ্গবন্ধুর খুনী চক্র জানতো এদের একজনও বেঁচে গেলে বঙ্গবন্ধুর দেশনির্মাণ প্রকল্প অব্যাহত থাকতো। বঙ্গবন্ধুর নীতি অনুযায়ীই দেশ চলতো। তাই চারজনকেই প্রাণ দিতে হলো।
কিন্তু আপনারা কেউ কেউ এই সরল বিষয়টাকে জটিল করে ফেললেন। কয়েকজন সম্মানিত মানুষও যুক্তি তর্কে না এসে শিশুসুলভ চিল্লাচিল্লি করলেন, আজেবাজে ভাষা ব্যবহার করলেন। বঙ্গবন্ধু আর তাজউদ্দীন আহমদকে নাকি আমি মুখোমুখি দাঁড় করালাম। আমি দাঁড় করালাম নাকি অতিআবেগী যারা এসব অর্ধ সত্য বা মিথ্যা রেফারেন্স দেয় তারা মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছে? আমি যেই দোষের প্রতিবাদ করলাম আমাকে সেই দোষেই দোষী করা হচ্ছে?
আবারো বলছি তাজউদ্দীন আহমদকে তার প্রাপ্য সম্মান দিতে হবে। কিন্তু কোনোভাবেই বঙ্গবন্ধুকে খাটো করে নয়। নেতা একজনই হয়। বাংলাদেশের ফাউন্ডিং ফাদার একজনই। বলতে পারেন তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন তার ডান হাত। ইতিহাস বিকৃতি করে কাউকে সম্মান দেখাতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার অপচেষ্টার প্রতিবাদ আমি করেছি। সেটা যদি অপরাধ হয় আমি অপরাধী। আমার অবস্থানে আমি অনঢ় থাকলাম।’’
আমি সোহেল তাজ, তাজউদ্দীন আহমদ এবং জোহরা তাজউদ্দীনের পরিবারের পক্ষে আপনাদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি বিবৃতি দিচ্ছি।
আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। গত ২৩ জুলাই আমাদের বাবা তাজউদ্দীন আহমদের ৯৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে 'সেতারা' (সেন্টার ফর তাজউদ্দীন আহমদ রিসার্চ এন্ড এক্টিভিজম) এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় ভার্চুয়াল আলোচনা, পাশাপাশি স্বতঃস্ফূর্তভাবে পত্র-পত্রিকায় তার কর্ম জীবন এবং অপরিসীম অবদান সম্পর্কে আলোচনা তুলে ধরা হয়।
অতি দুঃখের সাথে আমরা লক্ষ্য করলাম যে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল অসৎ উদ্দেশ্যে এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে অপচেষ্টা চালাচ্ছে, তারা বলছেন - তাজউদ্দীন আহমদ, তার দেশপ্রেম, এবং দেশের প্রতি তার অপরিসীম অবদান নিয়ে অলোচনা করার অর্থ নাকি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটাক্ষ করা।
উল্লেখ্য যে, আমাদের জানা মতে, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত যে সকল আলাপ-আলোচনা ও লেখালেখি হয়েছে, সেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কোনো ধরনের কটুক্তি দৃশ্যমান হয়নি।
বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতির জনক, তিনি জাতির পিতা, এই নিয়ে কোনো সন্দেহ বা বিতর্ক থাকতে পারেনা, অবকাশ নেই। বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু অবিচ্ছেদ্য I যতদিন পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি এবং জাতির পিতা হিসাবে স্বর্ণোজ্জ্বল আলোয় তিনি আলোকিত থাকবেন ।
আমরা খুবই বিস্মিত ও দুঃখিত হলাম, যখন শাহ্ আলী ফরহাদ নামের এক ব্যক্তির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস আমাদের নজরে আসে। (আমরা তার বাপ/দাদা পরিবার বা ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ভদ্রতার খাতিরে এখানে উল্লেখ করছি না) তার স্ট্যাটাসে তিনি এই বিভ্রান্তিমূলক ও আপত্তিকর লেখা লিখেছেন।
এখন বিষয় হচ্ছে যার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব প্রচার করা হচ্ছে, তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি পদে কর্তব্যরত আছেন। স্বাভাবিকভাবেই জনমনে প্রশ্ন আসে, এটা কি তার ব্যক্তিগত অভিমত? এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কি এই ধরনের মতামত সমর্থন করেন? আর যদি সমর্থন না করেন, তাহলে আমরা আশা করবো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই মর্মে একটি বিবৃতি দেয়া হবে। এছাড়াও, যদি এটা কোনো ব্যক্তিগত অভিমত হয়ে থাকে, তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের খতিয়ে দেখা উচিত এইখানে তার কোনো ব্যক্তিগত অসৎ উদ্দেশ্য আছে কিনা। কারণ এসব উস্কানিমূলক কথাবার্তা তারই ইঙ্গিত দেয়।
পাশাপাশি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গবেষণা শাখা সিআরআই এর প্রধান হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরকম অভিমত প্রকাশের মাধ্যমে তিনি সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন, বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃত করছেন এবং বঙ্গবন্ধু ও সোনার বাংলার অবমাননা করছেন। আর যদি আসলেই ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করতে হয় সঠিক তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে ইতিহাসের কাছে যেতে হবে। আমরা মনে করি জাতির স্বার্থে উন্মুক্ত আলোচনা, উন্মুক্ত প্রবাহের মাধ্যমে তা করা প্রয়োজন। যেখানে সংশ্লিষ্ট সকলের অংশ গ্রহণ থাকবে। ধন্যবাদ।’’