বিশ্ববাসী আজ ২টি প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে পার করছে।একটি বন্যা ও অপরটি করোনা।বাংলাদেশ নদী মাতৃক দেশ,তাই বর্ষাকালে নদীর পানি অনেক বেশী হওয়ার ফলে নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়।নদীর ভাঙ্গনে দেশের অনেক লোক ভিটেমাটি হারা হয়ে যান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার ১নং গোমস্তাপুর ইউনিয়নের নয়াদিয়াড়ী গ্রামের মহানন্দা নদীর ভাঙ্গন ও ড্রেজিং খনন পরিদর্শন আজ বিকালে করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মিজানুর রহমান ও গোমস্তাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন মন্ডল।এই সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মিজানুর রহমান বলেন এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে তার কথা হয়েছে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।তিনি আরও বলেন ড্রেজিং খনন যাতে যথাযথ ভাবে করা হয় তার নির্দেশ দেন।
Post Written by : Rony Islam
Original Post URL : https://ift.tt/2Zs3IIJ
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ
গণমাধ্যম তুমি কার???? জনগণের, না কি বিত্তশালী বৈভব বেশ্যাদের তল্পিবাহক????তুমি কি জনতার কথা বলো? না কি, জি হুজুরনামা রচনায় ব্যস্ত। হে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ তুমি আজ কার ওপর ভর করে চলছো?????—————-অনেকে বলবেন, সরকার বিজ্ঞাপন সেক্টরে হাত দিয়ে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল হাতে নিয়েছে। হতে পারে। তবে এই ভগ্ন দশায় মধু চেটে খাওয়া মৌমাছিদের তো সুদিন ফিরছে।
সম্রাটের নাম যখন চারদিকে সয়লাব, এক টেলিভিশন টকশোতে দেখলাম বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা সাংবাদিক নেতাদের আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ, বটগাছ থেকে জোড়া বটগাছ হওয়ার ইঙ্গিত দেয়ায় সাংবাদিক নেতার সেই চোটপাট-হুঙ্কার। ওই কথায় না কি পুরো সাংবাদিক সমাজকে অপমান করা হয়েছে। না জনাব; আপনি ভুল বুঝেছেন। সেদিন ওই বিএনপি নেতা পুরো সাংবাদিক সমাজকে অপমান করেন নি। শুধু প্রশ্ন রেখেছিলেন। আজ দেখুন কি অবস্থা গণমাধ্যম নামক সমাজ দর্পনের? শুধু ধোঁয়া আর ধোঁয়াশা। দ্বায় নেবেন না?? নাই বা নিলেন।————আমরা গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে লজ্জ্বিত ও বিক্ষুব্ধ।
গণমাধ্যমে ফুটে উঠার কথা ছিলো সেইসব চিকিৎসকের জীবনগাথা, মূল্যবোধ ও সংগ্রামের গল্প, যারা করোনা মোকাবেলা জীবন বিসর্জন দিয়েছেন এবং অদ্যাবধি দিয়ে যাচ্ছেন। করোনা আক্রান্ত সন্দেহে যখন বাবা-মার লাশ ফেলে সন্তানদের পালিয়ে যাওয়ার খবর পাচ্ছি। ঠিক তখনই সমাজে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে গিয়ে প্রায় শতকের ঘরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন বহুল সমলোচিত চিকিৎসক সমাজ।
আমরা শুধু সমালোচনা করেছি। নিজ দেশের চিকিৎসা সেবা পাওয়া যে আমার নাগরিক অধিকার, সেই অধিকার ভুলে বসে পালের গরুর মতো পার্শ্ববর্তী দেশে নগদ টাকায় চিকিৎসা সেবা পেতে নির্লজ্জ্বের মতো ধর্না দিয়েছি বারংবার। কাঁচা রাস্তা আধা পাঁকা হয়েছে; আধা পাঁকা রাস্তা পাঁকা হয়েছে। আবার সেই পাঁকা রাস্তা ভেঙ্গে ব্যবহার অনুপোযোগি হয়েছে। তবুও আমাদের বোধে আসেনি। সব পরিবর্তন হয়েছে, শুধু আমার চিকিৎসা খাতের কোন উন্নয়ন ঘটে নি।
গণমাধ্যম স্বাস্থ্যখাতের ত্রাণ কর্তা হিসেবে রিজেন্ট হাসপাতাল খ্যাত টকশো শাহেদ ও জেকেজি হাসপাতালের ডা. সাবরীনা আরিফ চৌধুরীদের নাম জপেছে। হয়তো জেনে-বুঝে, নয়তো না বুঝেই। খুড়িয়ে খুড়িয়ে টিকে থাকা লড়াইয়ে গণমাধ্যমের ত্রাণ কর্তা হয়েছে রিজেন্ট শাহেদ ও জেকেজি ডা. সাবরীনা আরিফ চৌধুরি। দেশে প্রথম নারী সার্জন হিসেবে ডা. সাবরীনার নামে বিশেষ প্রতিবেদন হয়েছে প্রথম সারির দৈনিকে। ঠিক আছে, সেটি সংবাদযোগ্য। এতেই দায়িত্ব শেষ। আর কিছু নেই। আজ কি ম্যাসেজ দিচ্ছে????
প্রবাসী শ্রমিক ভাইদের পাঠানো রেমিটেন্স আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো। গণমাধ্যমের কল্যাণে ফুলেফেঁপে উঠা এসব ত্রাণ কর্তারা স্বাস্থ্যখাতের বারোটা বাজিয়ে সংকটকালে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা খাতেরও বারোটা বাজালো। দ্বায়ভার কি গণমাধ্যমের উপর বর্তাবে না???? শুধু কি রাজনীতিবিদরাই পচে গিয়ে বিলীন হয়ে গেছে???
কেন সম্রাট, পাপিয়া, শাহেদ ও সাবরীনাদের নামের সাথে সাথে গণমাধ্যমের পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ আসছে??? একি শুধুই অভিযোগ?
আজকে দেখি- দুর্নীতিবাজ সরকারী কর্মকর্তা, হালি-গন্ডা হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ আছে, প্রমোশন কিংবা মেডেলের লোভে মৃত যুদ্ধাপরাধীকে জীবিত দেখিয়ে ক্ষমা চেয়ে পার পেয়েছেন, নিম্নবিত্ত (আর্থিক বিচারে) পরিবার থেকে উঠে সরকারী চাকুরির সুবাধে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া এসব কর্মকর্তারা গণমাধ্যমে জবাবদিহিতার কাঠগড়ায় দাড়ায় না। তারা দেবদূত হিসেবে নিজেদের ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে উল্টো গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে। গণমাধ্যমও ব্যবহার হয়। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ আজ বিত্তশালীদের শিড়দাড়া। আর সমাজের দর্পনে চলে আয়নাবাজির খেলা।
একটা সময় ছিলো জনগণ ভেলকিবাজির খেলায় ধরা খেয়েছে, আজ কাঠগড়ায় সংবাদপত্র। আমরা লজ্জ্বিত হতে ভুলে গেছি। আসুন, আমরা লজ্জ্বিত হই। জাতির কাছে ক্ষমা চাই।
আসলাম-উদ-দৌলা
সাধারণ সম্পাদক
রাজশাহী প্রেসক্লাব
ও আহ্বায়ক
অরাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ চাই’
Post Written by : Admin
Original Post URL : https://ift.tt/2Cz4jPG
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ
যুক্তরাজ্যভিক্তিক বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থাটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী করোনায় সর্বোচ্চ ৫৪৫ জন স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়েছে রাশিয়ায়। যুক্তরাজ্যে মারা গেছে ৫৪০ জন। আর যুক্তরাষ্ট্রে ৫০৭ জন।
আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মহামারি করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী ৩ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এমনই তথ্য দিয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিক্তিক বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থাটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী করোনায় সর্বোচ্চ ৫৪৫ জন স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়েছে রাশিয়ায়। যুক্তরাজ্যে মারা গেছে ৫৪০ জন। আর যুক্তরাষ্ট্রে ৫০৭ জন।
করোনার নতুন উপকেন্দ্র ব্রাজিলে প্রাণ হারিয়েছে ৩৫১ জন স্বাস্থ্যকর্মী। মেক্সিকোসহ লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশে মারা গেছে ২৪৮ জন। যদিও মারা যাওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। সংস্থাটি কেবল ৩ হাজার জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একেবারের প্রথম সারির যোদ্ধা হলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সে কারণে তাদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা অনেক বেশি। মৃতের সংখ্যাও উদ্বেগজনক।
প্রথম সারির করোনাযোদ্ধা হিসেবে তাদের যে নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশ প্রয়োজন— অধিকাংশ দেশেই সেটি নেই। তার উপর তাদের কর্মঘণ্টা বেশি, সেই তুলনায় বেতন-ভাতাও কম।
মহামারির এই সময়ে বিশ্বের অনেক দেশই স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে পারছে না। পারছে না ফেস মাস্ক, গাউন, গ্লাভস, সেফটি গগলসহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনীয় মেডিকেল সামগ্রীর পর্যাপ্ত যোগান দিতে। তারপরও করোনা রোগীদের জীবন বাঁচাতে নিরাপত্তার জন্য তাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
অ্যামেনেস্টির পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বের ৬৩টি দেশে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত পিপিই (পার্সোনাল প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট) নেই। স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরাও করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় আবারো স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। সোমবার (১৩ জুলাই) দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৭ জুলাই পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় আবারো স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা।
সোমবার (১৩ জুলাই) দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৭ জুলাই পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। খবর আল জাজিরার।
মূলত শ্রীলঙ্কাতে নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গেল তিনদিনে দেশটিতে প্রায় ৪০০ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি গ্রামেও করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী এই সপ্তাহেই স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। পরিস্থিতি অনুযায়ী আগামী সপ্তাহে আমরা এই সিদ্ধান্তটি পুনরায় বিবেচনা করে দেখবো।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পরার পর গেল মার্চে শ্রীলঙ্কার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসায় গেল সপ্তাহে স্কুলগুলো খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আবার আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করায় স্কুলগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হল।
শ্রীলঙ্কায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ৬১৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ১১ জন। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ৯৪ জন। আক্রান্তদের অধিকাংশই একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রের। কিছু কিছু আছেন যারা বিদেশ থেকে ফিরেছেন।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল পূর্বপশ্চিমে ‘সাবরিনা আরিফ চৌধুরী কেনো গ্রেপ্তার হলো না?’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি নিউজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করায় নাসিম উদ্দীন নামে এক সাংবাদিককে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণাকারী জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠিয়েছেন।
নাসিম উদ্দীন দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ টোয়েন্টিফোরের নাটোর জেলা প্রতিনিধি। ৩ জুলাই সাংবাদিক নাসিম ফেসবুকে দেশের আলোচিত প্রতারক জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? এ সংক্রান্ত একটি নিউজ পোস্ট করেন। যা ডা. সাবরিনার দৃষ্টিগোচর হলে তিনি ৭ জুলাই ব্যারিস্টার সাদিক অ্যাসোসিয়েটসের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খাদিজাতুল কোবরার মাধ্যমে ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠান নাটোরে।
নোটিশে বলা হয়, আমার ক্লায়েন্ট ড. সাবরিনা শারমিন হোসেন একজন সুনামধন্য হৃদরোগ সার্জন। তিনি দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে এ পেশায় নিয়োজিত আছেন। ‘ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করা, সাবরিনা আরিফ চৌধুরী কেন গ্রেপ্তার হলো না’ শীর্ষক সংবাদের মাধ্যমে তাকে সামাজিক ও পেশাগতভাবে মান ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। কেন আপনার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ এবং ২৯ ধারা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে না- নোটিশ পাওয়ার ৩ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হল।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক নাসিম জানান, সংবাদটির তথ্যসূত্র হিসেবে দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল পূর্বপশ্চিম বিডির কথা লেখা থাকলেও তিনি আমাকে নোটিশ পাঠিয়েছেন। করোনা টেস্ট নিয়ে প্রতারণাকারী এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার সঙ্গে জেকেজির চেয়ারম্যান ড. সাবরিনাকে গ্রেপ্তার করায় সরকারপ্রধান এবং পুলিশকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
একই সঙ্গে ড. সাবরিনাসহ করোনা টেস্টের জালিয়াতকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও তার স্বামী আরিফ চৌধুরী করোনার ভুয়া টেস্টের মাধ্যমে আট কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এ অভিযোগ ছিল আগে থেকে। জেকেজি হেলথ কেয়ার নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২৭ হাজার মানুষের নমুনা সংগ্রহ করে ১৫ হাজার ৪৬০টি জাল সনদ দিয়ে এ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। আর এ অভিযোগেই রোববার (১২ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও ডিভিশনের উপ কমিশনার (ডিসি) কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার তেজগাঁও থানা পুলিশ সাবরিনাকে আদালতে হাজির করে তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে।
এর আগে ২৩ জুন জেকেজির সাবেক দুই কর্মী হুমায়ুন কবির হিমু ও তার স্ত্রী সিস্টার তানজিনাকে করোনা পরীক্ষার জাল রিপোর্ট তৈরির অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের দেয়া তথ্য মতেই জেকেজির গুলশানের অফিসে অভিযান চালিয়ে ডা. সাবরিনা চৌধুরীর স্বামী আরিফ চৌধুরীসহ প্রতিষ্ঠানের আরো কয়েকজন কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে জেকেজির সিই্ও হলেন আরিফ চৌধুরী ও চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী। যদিও আরিফ চৌধুরীসহ অন্যরা গ্রেপ্তারের পর থেকে সাবরিনা চৌধুরী নিজেকে এই প্রতিষ্ঠানের কেউ না বলে দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু পুলিশ ব্যাপক তদন্ত ও নানা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানতে পারে জেকেজির সঙ্গে সাবরিনার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নারী রোগীকে অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফসারা তাসনিম বুশরা রোববার (১২ জুলাই) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন। তবে অভিযুক্ত চিকিৎসক হাসপতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বুশরার ওই ফেসবুক পোস্টের শিরোনাম ছিল, ‘তোমাকে ধর্ষিত হতে হবে।’ ওই পোস্টে তিনি জানান, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ওই চিকিৎসক তার যৌনাঙ্গের সমস্যা পরীক্ষা করার সময় উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার যখন ২১ বছর বয়সী বুশরা যৌনাঙ্গের ‘ভিজিনিসমাস’ নামক এক অসুস্থতার জন্য স্কয়ার হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শক ডা. কাজী শামসুন নাহারের কাছে যান। তখন ওই চিকিৎসক তাকে তার মায়ের সামনেই অশালীন ভাষায় মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ করেন ওই নারী।
এ নিয়ে রোববার বুশরা ফেসবুকে লেখেন, ‘ডাক্তার কাজী শামছুন নাহার, আপনি একটি অপমান। আপনি পৃথিবীর সকল ডাক্তার যারা জীবন পরিবর্তন করছেন তাদের জন্য একটি অপমান এবং আপনি সকল মানুষের জন্য একটি অপমান কারণ যে আমার রোগ নির্ণয়ের সময় আমাকে ধর্ষণ করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করতে পারেন। জানি বিচার পাবো না আর তুমি হয়তো মুক্ত হয়ে হাঁটবে, কিন্তু এটা একটা মরিয়া প্রচেষ্টা অন্য মেয়েকে তোমার চেম্বারে যেতে বাধা দেওয়ার।’
আফসানা ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘মহিলা (ডা. কাজী শামসুন নাহার) আমার পেশির পরীক্ষা করছিলেন, যা ছিল অত্যন্ত কষ্টদায়ক। আমি তাকে বলেছিলাম, আমি ব্যাথা পাচ্ছি। পরীক্ষার পর তিনি আমার সামনে বসলেন এবং কারও মুখ থেকে শুনলাম এমন ভয়াবহ কথা। তিনি আমাকে বলেছিলেন, যে আমার স্বাস্থ্যের উদ্বেগজনক বিষয়টি সম্পর্কে কারও সাথে কথা বলা উচিত নয় এবং আমার যৌনাঙ্গ ভবিষ্যতের জন্য আমার জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে চলেছে। তার মানে তিনি যৌনশিক্ষার চূড়ান্ত বিরোধী এবং মানুষ তাদের যৌন স্বাস্থ্য নিয়ে কিছু শিখতে চায় না।’
আফসানা আরোা লেখেন, ‘আমি তার পরবর্তী কথাটি উদ্ধৃতিতে রেখে দেব, কারণ এটি আমার কাছে ইংরেজি বা অন্য কোনো ভাষায় প্রকাশ করার মানসিকতা নেই। তিনি বলেন, “এসব মেয়েদের হাজবেন্ড একটু জংলি টাইপের হওয়া উচিত, যাতে তারা একেবারে রেপ করে ফেলে। কারণ এই মেয়েরা তাদের অবস্থার জন্য কষ্ট করে যৌন সম্মতি দিতে চায় না। সুতরাং এটা ঠিক করার জন্য তাদের ধর্ষণ করা উচিত।”
আফসানা লেখেন, ‘কান্নায় তার চেম্বার ছেড়ে জীবনের জঘন্যতম আতঙ্কের আক্রমণে ভেঙে পড়লাম। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমি শুধু কাউকে এই কথা বলার জন্য টাকা দিয়েছি এবং আমি খুব আঘাত পেয়েছি। তাকে কিছু না বলায় নিজের ওপর রাগ হচ্ছিল, কারণ কত মেয়ে এই মহিলার চেম্বার ছেড়ে চলে গেছে কে জানে, এই ভেবে যে তাদেরও ধর্ষিত হওয়া দরকার।’
ওই তরুণী বলেন, ওই চিকিৎসক পাঁচ থেকে ছয় বার জানতে চান, তার বিয়ে হয়েছে কি না বা বিয়ে ঠিক হয়েছে কি না।তিনি আমাকে বলেন, বিয়ে না হলে এ বিষয়ে এত কনসার্নড কেন? সময়ের আগে কোনো কিছু জানা উচিত না। আপনি তো ইন্টারকোর্স করছেন না, তাহলে জানতে চাচ্ছেন কেন? এটা আধুনিকতার লক্ষণ না।
করোনাভাইরাসে মারা গেলে এ ধরনের ‘হাস্যকর ঘটনা’ দেখতে পেতেন না বলেও ওই চিকিৎসক রসিকতা করেছিলেন বলে বুশরা জানান।
এই ঘটনা প্রকাশ করার কারণ ব্যাখ্যায় বুশরা বলেন, এ ধরনের ঘটনা অনেক মেয়ের সাথে ঘটে থাকে। কিন্তু কেউই মুখ খোলেন না। আর একজন নারী ডাক্তার এই ধরনের কথা বলছেন, আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। আমি চাই না অন্য কোনো মেয়ে এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হোক। আমি চাই, এই ডাক্তারকে সবাই বয়কট করুক।
২১ বছরের ওই তরুণী জানান, স্কয়ার হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা নিয়ে এলেও এবারই প্রথম তিনি এই ধরনের আচরণের শিকার হয়েছেন।
বুশরা তার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে পোস্ট দিয়েছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে ডা. শামসুন নাহার একটি লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ‘গত শনিবার বুশরা নামের এক রোগী কিছু সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসেন। রোগীর সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে তার সাথে আলোচনার ভিত্তিতে সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য এবং রোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বোঝার জন্য খুবই যুক্তিসংগত এবং প্রাসঙ্গিক কিছু প্রশ্ন করি। রোগীর শারীরিক অবস্থা বোঝার জন্য (যা রোগ নির্ণয়ের জন্য আবশ্যক) অনুমতি সাপেক্ষে তার মায়ের উপস্থিতিতে শারীরিক পরীক্ষা করা হয় এবং সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘কনসালটেন্সি চলাকালীন সময়ে রোগী এবং তার মায়ের সাথে কথোপকথনে কোনো প্রকার অসঙ্গতি ওনারা পেয়েছেন কি না তা আমার কাছে পরিলক্ষিত হয়নি। তাছাড়া এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে ওনারা আমার বা হসপিটাল কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো প্রকার অভিযোগও করেননি।’
ডা. শামসুন নাহার আরো বলেন, ‘পরবর্তীতে আমি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে জানতে পারি যে, উক্ত রোগী আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মনগড়া একটি অনৈতিক ব্যাখ্যামূলক অপপ্রচার চালাচ্ছেন, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমি একজন অব্স ও গাইনি বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিগত ২২ বছর যাবত নিষ্ঠার সঙ্গে অসংখ্য রোগীর চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত আছি। আমার বক্তব্যে যদি জনাবা আফসানা তাসনিম বুশরার মনে হয়ে থাকে যে আমি চিকিৎসাগত কোনো অসদাচরণ করেছি তাহলে তিনি অবশ্যই আমার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবার পূর্ণ অধিকার রাখেন। তা না করে তিনি আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করা জন্য এবং সামাজিকভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে যে অপপ্রচার চালাচ্ছেন তা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
এ বিষয়ে স্কয়ার হাসপাতালের কাস্টমার কেয়ার ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘এই ঘটনার তদন্ত করা হয়েছে। আমরা আমাদের বিস্তারিত বক্তব্য দিয়েছি।’
ঈদের ছুটিতে বেসরকারি চাকরিজীবীদেরও কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
মহামারি করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে কোরবানির ঈদের ছুটিতে শুধু সরকারি চাকরিজীবী নয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও কর্মস্থলে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে সোমবার (১৩ জুলাই) রাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তার দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহার সময় উক্ত সংক্রমণের বিস্তাররোধে সকল সরকারি/বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঈদের সরকারি বা ঐচ্ছিক ছুটিতে আবশ্যিকভাবে কর্মস্থলে অবস্থানের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো।’
এদিকে করোনা মহামারির মধ্যে কোরবানির ঈদের ছুটি বাড়ানো হবে না বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঈদের সময় যে তিনদিন ছুটি আছে এই ছুটি আর বর্ধিত হবে না। যে যেখানে থাকবেন, যার যেখানে কর্মস্থল তিনি তার হেডকোয়ার্টার ত্যাগ করতে পারবেন না।’
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসেরর কারণে ৩০ মে পর্যন্ত টানা ৬৬ দিন সরকারি সাধারণ ছুটি ছিল। সীমিত পরিসরে কাজের কারণে এখনও অনেক অফিসে ঢিলেঢালা কাজ হচ্ছে। এর মধ্যে ঈদের সময় আর বাড়তি ছুটির চিন্তা-ভাবনা সরকারের নেই। জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা অনুযায়ী এবার আগামী ৩১ জুলাই বা ১ আগস্ট মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে।
আগামী ১ আগস্ট (শনিবার) ঈদুল আজহা ধরে সরকারের ২০২০ সালের ছুটির তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী ৩১ জুলাই, ১ ও ২ আগস্ট (শুক্র, শনি ও রোববার) ঈদুল আজহার ছুটি থাকবে। এক্ষেত্রে দুদিনই চলে যাচ্ছে সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যে। ৩১ জুলাই (শুক্রবার) ঈদ হলে ছুটি থাকবে ৩০ ও ৩১ জুলাই এবং ১ আগস্ট (বৃহস্পতি, শুক্র ও শনি)। এক্ষেত্রেও ছুটির দুদিন চলে যাচ্ছে সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যে।
জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জন ডা. সাবরিনা চৌধুরীর মোবাইল কললিস্ট ধরে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সাবরিনা গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি জব্দ করেছে। পুলিশ তার কল লিস্টে ভিআইপিদের সঙ্গে কথা বলার রেকর্ড পেয়েছে। জেকেজি প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর থেকে গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন মহলের সঙ্গে কথা বলেছেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসক সাবরিনার কল লিস্টে সাবেক এক প্রভাবশালী মন্ত্রী থেকে শুরু করে বর্তমান এমপি, সরকারদলীয় রাজনীতি করেন এমন ব্যক্তি, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে।
পুলিশ ধারণা করছে, জেকেজি কেলেঙ্কারিতে সাবরিনার নাম আসার পর থেকেই সে তার সম্পৃক্ততা ও গ্রেপ্তার এড়াতে সে ভিআইপিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা, প্রবাসীরা তাদের কাছ থেকে জাল সনদ নিয়ে ইতালি থেকে ফেরত আসায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন্ন হওয়াতে শক্ত অবস্থানে ছিল পুলিশ। তাই তার কোনো তদবিরই কাজে লাগেনি।
সাবরিনা চৌধুরীর ব্যবহৃত ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। জেকেজি’র তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে দীর্ঘদিন ধরে তিনি যে মোবাইল নম্বরটি ব্যবহার করছেন সেটি অন্যর নামে রেজিস্ট্রেশন করা।
পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাবরিনার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি যে জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে রেজিস্ট্র্রেশন করা হয়েছে সেটি পারভীন আক্তার নামের এক নারীর। ওই জাতীয় পরিচয়পত্রে তার ঠিকানা দেয়া আছে ঢাকার বাসাবো এলাকার। পারভীন আক্তারকে নিজের রোগী বলে দাবি করেছেন সাবরিনা। তিনি বলেছেন, মোবাইল নম্বরটি আমাকে একজন দিয়েছে। নম্বরটি সম্ভবত আমার কোনো রোগীর নামে রেজিস্ট্র্রেশন করা। শিগগির তিনি নম্বরটি পরিবর্তন করবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ মনে করছে, সাবরিনা কৌশলেই অন্যের পরিচয়পত্র দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন। যাতে করে কোনো অপরাধ করলে সেটি ধরা না পড়ে এবং সহজেই দায় এড়াতে পারেন। এছাড়া একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে পরিবারের সদস্যদের বাইরের কারো পরিচয়পত্র দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করছেন কী উদ্দেশ্য? তাই তদন্তে তার সিম রেজিস্ট্র্রেশনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
জেকেজি হেল্থ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা শারমিন হোসাইন ও তার স্বামী আরিফ চৌধুরী বিষয়ে বেরিয়ে আসছে একের পর এক চমকপ্রদ তথ্য। তদন্তে এই দম্পতির প্রতারণার চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়ে খোদ পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্টরাই হতভম্ব হয়ে যাচ্ছেন। পুলিশ জানিয়েছে, সাবরিনা ও আরিফ দম্পতির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জেকেজি ট্রেড লাইসেন্স হওয়ার আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে করোনার বুথ স্থাপন করে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে আসে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের ১৬ই জুন সিটি করপোরেশন থেকে জেকেজি’র ট্রেড লাইসেন্স নেয়া হয়। অথচ চলতি বছরের ৬ই এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) স্বাক্ষরিত চিঠিতে জেকেজি তিতুমীর কলেজে বুথ স্থাপন করে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি পায়। এছাড়া জেকেজি’র চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা শারমিন হোসাইন বরাবরই দাবি করে আসছিলেন জেকেজি হলো ব্যক্তি মালিকানাধীন ওভাল গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু পুলিশি তদন্তে এখনও ওভাল গ্রুপের সঙ্গে জেকেজি’র কোনো সংশ্লিষ্টতা মিলেনি। কারণ জয়েন্ট স্টক থেকে পুলিশ ওভাল গ্রুপের যে সকল কাগজপত্র সংগ্রহ করেছে সেগুলোতে এই গ্রুপের সহযোগী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নাম ও কাগজপত্র পাওয়া গেলেও জেকেজি হেল্থ কেয়ারের কোনো নাম বা কাগজপত্র পাওয়া যায়নি।
ডিএমপি’র তেজগাঁও ডিভিশনের এক কর্মকর্তা জানান, জেকেজি কেলেঙ্কারি নিয়ে কথা বলার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের রেজিস্ট্রার চিকিৎসক ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে রোববার ফোন দেয়া হয়। কিন্তু তিনি রোববারে আসতে অপারগতা জানান। পরে তাকে মাত্র আধাঘণ্টা কথা বলে ছেড়ে দেয়া হবে বলে জানানো হয়। পরে তিনি তেজগাঁও ডিভিশনের উপ-কমিশনার (ডিসি) কার্যালয়ে আসেন। ডিসি অফিসের অভ্যর্থনা কক্ষে বসিয়ে তাকে পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সাবরিনা চৌধুরী দেখতে পান টেলিভিশনে স্ক্রলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তখন তিনি উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেন- টিভিতে স্ক্রল দিচ্ছে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর তাকে নিয়ে পাশেই ডিসি’র কক্ষে নেয়া হয়। সেখানে গিয়ে তিনি ডিসিকে বলেন, আমাকে কি আপনারা গ্রেপ্তার করেছেন। তখন ডিসি তাকে বলেন, গ্রেপ্তার করা হয়নি। এখানে সাংবাদিকরা চলে আসছে তাই নিরিবিলি কথা বলার জন্য আপনাকে তেজগাঁও থানায় নেয়া হবে। এ সময় ডিসি তাকে বেশকিছু প্রশ্ন করেন। কিন্তু তিনি কোনো প্রশ্নেরই সদুত্তর দিতে পারেননি। সাবরিনা যখন বুঝতে পারেন তিনি সত্যিই গ্রেপ্তার হয়েছেন তখন তিনি কান্নাকাটি শুরু করেন। জেকেজি বা টেস্ট প্রতারণার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন। পরে তাকে পুলিশ ভ্যানে করে আনা হয় তেজগাঁও থানায়। সেখানে আগে থেকেই নারী ও শিশু সহায়তা ডেস্কের কক্ষটি তার জন্য বরাদ্দ করা হয়। ওই কক্ষের একটি ছোট বিছানায় তিনি রাতে ঘুমিয়েছেন।
তেজগাঁও থানা সূত্রে জানা গেছে, বিলাসী জীবন-যাপনে অভ্যস্ত সাবরিনাকে রাতে তিনজন নারী কনস্টেবল নির্ঘুম পাহারা দিয়েছেন। তাকে যেখানে রাখা হয়েছে ওই কক্ষের আশপাশে বিকাল থেকে কাউকে যেতে দেয়া হয়নি। এমনকি বিকাল থেকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া থানায় বহিরাগত কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। তিনি পুলিশের মেসের খাবারই খেয়েছেন। রাতের খাবারের মেন্যুতে ছিল ভাত, সবজি, ডাল ও মাছ। সকালের নাস্তায় ছিল ভাত আলু ভর্তা, ডিম ও ডাল। গতকালও তাকে থানা পুলিশের মেসের খাবার দেয়া হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তেজগাঁও ডিসি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ থেকে শুরু করে পরের দিন আদালতে হাজিরা পর্যন্ত সাবরিনা পরিবারের কোনো সদস্য আসেননি। কেউ খোঁজও নেয়নি এবং খাবার-কাপড় আসেনি। শুধুমাত্র তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক এসেছিল তাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। রোববার ডিসি কার্যালয়ে তিনি যে কাপড়ে এসেছিলেন আদালতে তিনি একই কাপড়ে যান।
জেকেজি’র সাবরিনা ও আরিফের হেরেমখানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। গুলশান-২ এ কনফিডেন্স টাওয়ারের ১৫ তলায় জেকেজি’র কার্যালয়েই এই হেরেমখানাটি রয়েছে বলে জানা গেছে। ২৩শে জুন জেকেজি’র সাবেক কর্মী সিস্টার তানজিনা ও হুমায়ুন কবির হিমুকে গ্রেপ্তারের পর তাদের দেয়া তথ্য মতেই পুলিশ গুলশানের ওই অফিসে অভিযান চালায়। ছয় কক্ষবিশিষ্ট ওই অফিস থেকে ল্যাপটপ, করোনার জাল সনদ, পরীক্ষার কিটসহ আরো অনেক কিছু জব্দ করে।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানের সময় অফিসের পাঁচটি কক্ষ খোলা থাকলেও একটি কক্ষ তালাবদ্ধ ছিল। কক্ষটি কেন তালাবদ্ধ এমন প্রশ্নে আরিফ পুলিশকে জানায়, এই কক্ষের চাবি আরেক কর্মচারীর কাছে। সে বাইরে আছে। পুলিশ তখন ওই কক্ষের চাবি দেয়ার জন্য আরিফকে চাপ দিতে থাকে। কিন্তু সে কিছুতেই চাবি দিতে রাজি হয়নি। একপর্যায়ে পুলিশের অভিযানিক এক কর্মকর্তা ওই কক্ষের দরজা ভাঙার নির্দেশ দেন। তখন আরিফ চৌধুরী ওই কক্ষের চাবি দেন। পুলিশ সদস্যরা ওই রুমে প্রবেশ করে দেখতে পান ফ্লোরের মধ্যে একটি বিছানা। তার পাশে বিদেশি মদের বোতল। তার পাশেই একটি ব্যাগের মধ্যে ডজনখানের কনডম রাখা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম। এছাড়া আরেকটি ব্যাগের মধ্যে করোনা টেস্টের কয়েক হাজার কিট পাওয়া যায়। পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে, এই কক্ষেই প্রতিদিনই মদ, ইয়াবা ও নারীর আসর বসানো হতো। প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান থেকে নারীরা আসতেন। তাদের নিয়ে নাচ গান বাজনার তালে তালে নেশায় ডুবে থাকতেন আরিফসহ অন্যরা। এই আসরে আারিফের অফিসের কর্মচারী থেকে শুরু করে অংশ নিতেন বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ। পুলিশ জানিয়েছে, আরিফ দাবি করেছে এখানে তার প্রতিষ্ঠানের রোমিও নামের এক কর্মী স্ত্রী নিয়ে থাকতেন। অফিসের মধ্যে একজন কর্মী কেন স্ত্রী নিয়ে থাকতেন এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি আরিফ। পরে তদন্তে নিশ্চিত হওয়া যায় রোমিও আরিফের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। আরিফের সমস্ত অপকর্মের সাক্ষী। সে এই হেরেমখানার দায়িত্বে ছিল। আরিফ চৌধুরীর গ্রেপ্তারের পর সে গা-ঢাকা দিয়েছে। এখন তাকে খোঁজা হচ্ছে। এর বাইরে পুলিশ খোঁজখবর নিচ্ছে ডা. সাবরিনার ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুর। রনি নামের ওই বন্ধু পেশায় ব্যবসায়ী। ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসায় থাকেন। সাবরিনা নিজে গাড়ি চালিয়ে ওই বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন বলে অভিযোগ আছে। রনির সঙ্গে তার কি সম্পর্ক, কেন নিয়মিত তার বাসায় যেতেন, জেকেজি’র প্রতারণার সঙ্গে রনির কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা এসব বিষয় খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এদিকে, জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান সাবরিনা চৌধুরীকে তিনদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। প্রতারণা মামলায় তেজগাঁও থানার তদন্ত কর্মকর্তা সোমবার তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সিএমএম) হাজির করে চারদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। পরে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, জেকেজি হেল্থ কেয়ারের মাধ্যমে ডা. সাবরিনা চৌধুরী স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতেন। টেলিভিশনের বিভিন্ন টকশো এবং বাইরের আরো কিছু অনুষ্ঠানে তিনি নিজেকে জেকেজি’র হয়ে পরিচয় দিতেন। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজ পাওয়ার আগ পর্যন্ত সরকারি সংশ্লিষ্ট কোনো দপ্তরে এই প্রতিষ্ঠানের কোনো রেজিস্ট্রেশন ছিল না। শুধু ১৬ই জুন সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত একটি ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া গেছে। তবে এই লাইসেন্সটিতে সাবরিনা ও আরিফের কোনো নাম নেই। পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে ওই জেকেজি’র লাইসেন্সটি এই প্রতিষ্ঠানের কো-অর্ডিনেটর আ স ম সাঈদ চৌধুরীর স্ত্রী জেবুন্নেসা রীমার নামে। প্রতারণা মামলায় আ স ম সাঈদ চৌধুরীও গ্রেপ্তার আছেন। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া এই প্রতিষ্ঠানের আর কোনো কাগজপত্র নেই।
মাত্র ৬০ সেকেন্ডে ৭১ জনের শরীরে ভাইরাস দিয়েছেন এক ব্যক্তি!
আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
করোনার কোনো উপসর্গ তার মধ্যে ছিল না। শরীরের যে মারণ ভাইরাস বাসা বেঁধেছে, তা তিনি নিজেও জানতেন না। তবে লিফটে চড়ার পরই সব কিছু পাল্টে যায়। মাত্র ৬০ সেকেন্ডে ৭১জনের শরীরে করোনা ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি!
তার শরীরে করোনার উপসর্গ ছিল না। বাইরে থেকে ফেরার পর নিজেকে ঘরবন্দিই করে রেখেছিলেন ওই নারী। নিজের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বেরও হননি। খাবারও আনছিলেন বাইরে থেকে অর্ডার দিয়ে। কিন্তু লিফটে চড়তেই তার থেকে দ্রুতহারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে অন্যদের শরীরে।
নভেল করোনাভাইরাস যে কিভাবে, কত তাড়াতাড়ি মানুষের শরীরে সংক্রমণ ঘটিয়ে ফেলে তার জ্বলন্ত উদাহরণ এটি। আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কনট্রোলের (সিডিসি) নতুন সমীক্ষায় জানা গেছে, প্রত্যেক ট্রাভেলারের মধ্যে উপসর্গহীন করোনা দেখা যাচ্ছে। এমনকি তারা যে ভাইরাসের অন্যতম বাহক, তারা তা বুঝতে পারছেন না। আর এটা হয়ে দাঁড়িয়েছে মূল সমস্য়া। এর জেরেই করোনার সংক্রমণের বিস্তার দ্রুতহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আমরা সবাই এতদিনে জেনেছি যে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে হাঁচি-কাশির মাধ্যমে। যার মাধ্যমে শরীর থেকে ড্রপলেট বেড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রথমে প্রকাশ না করলে, পরে স্বীকার করে নিয়েছে যে, করোনাভাইরাস বাতাসের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে করোনা মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধতা কতটা কাজে দিচ্ছে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। কারণ করোনার বায়ুবাহিত হয়ে পড়ায় এর শেষ কোথায় তা বুঝে উঠতে পারছেন খোদ বিজ্ঞানীরাই।
এরই মধ্যে উপসর্গহীন করোনা রোগীই বর্তমানে করোনা ছড়িয়ে পড়ার সবচেয়ে বড় ও বিধ্বংসী অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনার দ্বিতীয় দফার ছোবলে ফের লকডাউনের ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা,দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ড-সহ বিশ্বের বহু দেশ।
সিডিসি স্টাডির তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলের মাঝামাঝি, চীনের হেইলংজিয়াং প্রদেশের সঙ্গে করোনা ভাইরাসের গভীর যোগাযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মার্চের প্রথম সপ্তাহের আগে পর্যন্ত চীনের ওই প্রদেশের নামই নাকি সামনে আসেনি। ২ এপ্রিলে, দুজন ব্যক্তির স্ট্রোক হলে করোনাভাইরাসের উপসর্গগুলো সামনে আসে। কিন্তু তার আগে এই মারণভাইরাসের কোনো পরীক্ষা তাদের করা হয়নি বলে জানা গেছে। হাসপাতালে ভর্তি হলে তিন ছেলেই তার পাশে ছিলেন। ওই রোগী থেকে অজান্তেই ওই হাসপাতলের তিন চিকিত্সক-সহ মোট ২৮ জন নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী সংক্রমিত হয়ে পড়ে। এখানেই শেষ নয়, করোনা পরীক্ষার আগেও ওই ব্যক্তি আরো একটি হাসপাতলে ভর্তি ছিলেন। তার পাশাপাশি মোট ২০ জন করোনায় আক্রান্ত হোন। এইভাবেই ছড়িয়ে পড়ে নভেল করোনাভাইরাস।
এতো জনের মধ্যে মারণভাইরাসের লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর টনক নড়ে প্রশাসনের। অন্য আরেক ব্যক্তির শরীরে মেলে করোনাভাইরাসের লক্ষণ। তার শরীরের নমুনা সংগ্রহ করার পরই জানা যায় তিনি করোনা পজিটিভ। তবে প্রথম রোগীর মধ্যে মারণভাইরাসের লক্ষণ নজরে না পড়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস।
তবে শুধু হাসপাতালেই নয়, করোনা আক্রান্ত তার তিন ছেলে বাজারঘাট সবই করেছেন। সেইসময় লকডাউন জারি করা হয়নি কোনো প্রদেশেই। ফলে কড়াকড়িও ছিল না। দেদার ঘুরে বেড়িয়েছেন যেখানে, সেখানে। পরিবারের সকলে আক্রান্ত তো হয়েছেনই, এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে মারণভাইরাস। পরিস্থিতি শোচনীয় দেখে ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয় লকডাউন। আর তারপর তো গোটাটাই ইতিহাস। সূত্র; ইন্ডিয়া টাইমস।
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার দত্তেরাবাদ গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে বাসর রাতে নববধূ নিখোঁজ হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। সোমবার (১৩ জুলাই) দুপুরে নববধূর ভাই আরিফুল ইসলাম আগৈলঝাড়া থানায় জিডি করেন।
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার (১০ জুলাই) আগৈলঝাড়া উপজেলার দত্তেরাবাদ গ্রামের মৃত নুর আলম হাওলাদারের ছেলে সোহাগ হাওলাদারের সঙ্গে পাবনার আমিনপুর থানার রাজ নারায়ণপুর গ্রামের হারিস শেখের মেয়ে কলেজছাত্রী সুমাইয়া আক্তার মীমের বিয়ে হয়। রোববার (১২ জুলাই) নববধূ মীম, নানি আয়শা খাতুন ও তার ভাই আরিফুল বরযাত্রীর সঙ্গে আগৈলঝাড়ায় সোহাগ হাওলাদারের বাড়িতে আসেন। রোববার বাসর রাতে স্বামীর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন নববধূ মীম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হঠাৎ করে সোহাগ ও মীমের বিয়ে হয়। সোহাগের পরিবার মীমের বিষয়ে আগে থেকে কোনো খোঁজখবর নেয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, মীমের সঙ্গে অন্য কারও সম্পর্ক রয়েছে। নিজের ইচ্ছা না থাকলেও পরিবারের সিদ্ধান্তে সোহাগকে বিয়ে করেছেন মীম। সেজন্য স্বামীর বাড়ি থেকে মীম পালিয়ে গেছেন।
মীমের স্বামী সোহাগ হাওলাদার বলেন, রোববার রাতে খাবার-দাবার খেয়ে বাসর ঘরে গিয়ে দেখি স্ত্রী নেই। এরপর বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিই। সোমবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মীমের সন্ধান পাইনি। ঘরে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা, কয়েক ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল দেখতে না পেয়ে নিশ্চিত হয়েছি মীম পালিয়ে গেছে।
আগৈলঝাড়া থানা পুলিশের ওসি মো. আফজাল হোসেন বলেন, সুমাইয়া আক্তার মীম নামে এক নববধূ নিখোঁজ হয়েছেন বলে সোমবার দুপুরে তার ভাই আরিফুল ইসলাম থানায় জিডি করেছেন। সুমাইয়া আক্তার মীমের সন্ধানে বরিশাল ও পাবনাসহ বিভিন্ন থানায় বেতার বার্তা ও ছবি পাঠানো হয়েছে।
আত্মগোপনে থাকা রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ শাহেদ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে অবস্থান করছে এমন গুঞ্জনে তৎপর হয়ে উঠেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শাহেদ মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার চাতলাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত যেতে পারে সন্দেহে কমলগঞ্জের শমশেরনগরে আকস্মিক পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়। সোমবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে শমশেরনগর চৌমুহনা থেকে ভারতের ত্রিপুরাগামী সড়কের মুখে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা দাঁড়িয়ে যানবাহন তল্লাশি শুরু করেন। সেইসঙ্গে কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন রেস্ট হাউজে অভিযান চালাচ্ছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
শমশেরনগর পুলিশফাঁড়ি সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ থেকে তাদেরকে জানানো হয়েছে রিজেন্ট হাসপাতালের করোনা কেলেঙ্কারির পলাতক প্রধান আসামি মো. শাহেদ কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর সীমান্ত পথে ভারতের ত্রিপুরা যেতে পারেন। তাই সতর্কতা হিসেবে পুলিশ সদস্যদের যানবাহন তল্লাশি। সোমবার বিকাল থেকে সতর্ক অবস্থানে থাকার পর সন্ধ্যা থেকে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আনজির হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল শমশেরনগর চৌমুহনায় দাঁড়িয়ে যানবাহনগুলো তল্লাশি শুরু করেন।
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, শাহেদের মুঠোফোন ট্র্যাক করে দেখা গেছে শাহেদ মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থান করছেন। সর্বশেষ তার অবস্থান ছিল কমলগঞ্জের শমসেরনগরে। তাই সোমবার বিকাল থেকে কমলগঞ্জের শমশেরনগর ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা গেছে মো. শাহেদ চাতলাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা প্রবেশ করতে পারেন। তাই তাকে ধরার জন্য সতর্কতামূলক তদারকি চালাচ্ছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টা পর্যন্ত পুলিশ সদস্যদের শমশেরনগর চৌমুহনায় দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত, বিতর্কিত রিজেন্ট হাসপাতালে র্যাবের অভিযানের পর থেকে পলাতক এর মালিক মোহাম্মদ শাহেদকে গ্রেপ্তারে আদালতের পরোয়ানা জারি হয়েছে। করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ পেয়ে উত্তরায় রিজেন্ট হাসপাতালে পাঁচ দিন আগে র্যাবের অভিযানের পর থেকে শাহেদকে খোঁজা হচ্ছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো জানিয়েছে।
তাকে এখনও আটক করতে না পারার প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল রোববারই বলেন, আত্মসমর্পণ না করলে শাহেদকে ‘ধরে ফেলবে’ পুলিশ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক পরিচয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আসা শাহেদের নানা অপকর্মের খবর এখন প্রকাশ পাচ্ছে।
করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করেই ভুয়া সনদ দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে গত ৬ জুলাই রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরে সাহেদের মালিকানাধীন রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে। পরদিন রিজেন্ট হাসপাতাল সিলগালা করে দেওয়া হয়।
এরপর ৭ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানায় প্রতারণার অভিযোগে শাহেদকে এক নম্বর আসামি করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে র্যাব। ওই মামলায় আটজনকে আটক করা হয়েছে। শাহেদসহ ৯ জন পলাতক। সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তার ব্যাংক হিসাবও জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দুদকও তার সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছে।
সাবরিনার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরে। তার বাবা সাবেক সচিব সৈয়দ মোশাররফ হোসেন। তিনি ঢাকার শ্যামলীর পিসি কালচার রোডের নিজ বাড়িতে বসবাস করেন। তার দুই মেয়ের মধ্যে ডা. সাবরিনা বড়।
নিজস্ব প্রতিবেদক
শুধু জেকেজি-ই নয়, দ্বিতীয় স্বামীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ওভাল গ্রুপেরও চেয়ারম্যান ছিলেন ডা. সাবরিনা চৌধুরী। তার স্বামী আরিফ চৌধুরী গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে ওভাল গ্রুপের ওয়েবসাইট ডাউন পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু ওভাল গ্রুপের ঢাকা এক্সপো-২০১৯ নামে একটি ওয়েবসাইটে ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে ওভাল গ্রুপের চেয়ারম্যান পরিচয় দেওয়া হয়েছে। সেখানে ১১ বার চেয়ারম্যান হিসেবে তার নাম লেখা হয়েছে। ওভাল গ্রুপের প্রোফাইলেও চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছে সাবরিনার নাম।
প্রকৃত নাম ডা. সাবরিনা শারমিন হুসাইন। বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলে চিকিৎসক হিসেবে তার নিবন্ধন আইডি ১১১৬৭৯। তিনি কখনো ব্যবহার করতেন ডা. সাবরিনা এ চৌধুরী, কখনো আবার সাবরিনা আরিফ চৌধুরী বা সাবরিনা মিষ্টি চৌধুরী নাম। রাজধানীর শেরে বাংলানগরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ও কার্ডিয়াক সার্জন তিনি। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেকেজি (জোবেদা খাতুন সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা) হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরীর চতুর্থ স্ত্রী তিনি।
সাবরিনা সরকারি কর্মচারী হয়েও জেকেজি হেলথ কেয়ার ও ওভাল গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। সাবরিনা যেমন আরিফের চতুর্থ স্ত্রী তেমনি আরিফও সাবরিনার দ্বিতীয় স্বামী। সাবরিনার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরে। তার বাবা সাবেক সচিব সৈয়দ মোশাররফ হোসেন। তিনি ঢাকার শ্যামলীর পিসি কালচার রোডের নিজ বাড়িতে বসবাস করেন। তার দুই মেয়ের মধ্যে ডা. সাবরিনা বড়। সাবরিনা ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ১৯৯৩ সালে এসএসসি ও পরে এইচএসসি পাস করেন। এরপর এমবিবিএস পাস করেন সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে। সাবরিনার প্রথম স্বামীর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, তিনি টেলিফোন সেবা সংক্রান্ত একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। সাবরিনা ২৭তম বিসিএসে স্বাস্থ্য ক্যাডারের চাকরি পাওয়ার পর তার প্রথম পোস্টিং হয় দিনাজপুরে। পরে বদলি হয়ে আসেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। সেখান থেকে যোগ দেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে।
ডা. সাবরিনা বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে স্বাস্থ্যবিষয়ক আলোচনার পরিচিত মুখ। বিভিন্ন টকশোতেও স্বাস্থ্যবিষয়ক আলোচনায় নিয়মিত অংশ নিতেন তিনি। দিতেন সুস্থ থাকা ও করোনামুক্ত থাকা এবং প্রতিরোধের নানা টিপস। তার প্রতিষ্ঠানে করোনা সনদ জালিয়াতির তথ্য ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে এখন আলোচনায় তিনি। গতকাল রবিবার পুলিশ তাকে পাকড়াও করে।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকারি চাকরি করেও তিনি জেকেজি হেলথ কেয়ার ও ওভাল গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন। গতকাল গ্রেপ্তারের পর ডা. সাবরিনাকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার ও কার্ডিয়াক সার্জন পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়ে তাকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলেছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট কর্র্তৃপক্ষ।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আরিফের সঙ্গে বিয়ের পর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন সাবরিনা। দুজনে দেশে-বিদেশে ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ও ঠিকাদারি কাজ পেতে নানামুখী তদবির করেন সাবরিনা। এক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)-এর কয়েকজন নেতাকে কাজে লাগান বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সোমবার তেজগাঁও থানা পুলিশ সাবরিনাকে আদালতে হাজির করে তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন উন্নয়ন প্রকল্পের দুটি হলের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে অবস্থানরত সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে করা মানববন্ধন থেকে।
কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন উন্নয়ন প্রকল্পের দুটি হলের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে অবস্থানরত সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে করা মানববন্ধন থেকে। সোমবার (১৩ জুলাই) বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধন থেকে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমিটির সদস্য শাহীন হোসাইন সাজ্জাদ। দফাগুলোর মধ্যে রয়েছে, ৭ দিনের মাঝে নিম্নমানের কাজ ও সময়ক্ষেপণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত ও রিপোর্ট পেশ, ১৫ দিনের মধ্যে হলগুলো বুঝিয়ে দেওয়ার মুচলেকা দিতে হবে অন্যথায় সব কাজ বন্ধ করা হবে, এলেমেল ও পরিবেশ ধ্বংসকারী মাস্টার প্ল্যান পরিবর্তন করে শিক্ষার্থীদের সমর্থন নিয়ে সুপরিকল্পিত প্ল্যান গ্রহণ করতে হবে, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ঢেকে যায় বা আড়াল হয় এমন স্থাপনা করা যাবে না, নবনির্মিত গেস্ট হাউজের স্থান পরিবর্তন করতে হবে, মসজিদের কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে, ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ ও অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্তে কমিটি গঠন ও ব্যাবস্থা করতে হবে।
অভিযুক্ত পরিকল্পনা দপ্তর প্রধান প্রৌকশলী হাফিজুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের দুটি হলের নির্মাণ কাজ আটকে রেখেছে শিক্ষার্থীরা।
তবে কারা বন্ধ করেছে তাদের নাম বলতে চাননি তিনি। তিনি বলেন, এর আগেও অনেকবার কাজ বন্ধ করা হয়েছে। আর এই করোনার সময় সম্পূর্ণ শক্তিতে কাজ করা যাচ্ছে না। সামাজিক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই কাজ করতে হচ্ছে। তবে আমাদের কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন বাধা আসলে কাজের শক্তি থেমে যাবে। যারা আটকে রেখেছে তাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে আমাদের কাজ করতে দিন অতি দ্রুতই সম্পন্ন করতে পারব আমরা। আমার বিষয়ে তদন্ত হোক তাতে আমার কোনো বাধা নেই আমাদের কাজ করতে দিলেই শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধান সম্ভব।
কাজ কারা বন্ধ করেছে, কেন বন্ধ করেছে প্রশ্নের জবাবে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, কারা এমন করছে তাদের অনুসন্ধান চলছে। করোনার এই সময়ে সরকারি কাজ বন্ধ করা উচিত নয়। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়বে।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অভি সাব্বির মানবন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্যে বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমি একমত পোষণ করি। এটা একটা যৌক্তিক দাবি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বারবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে, যার সঙ্গে কিছু প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাও জড়িত আছে। আমি এর সুষ্ঠ তদন্ত দাবি করছি।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন অগ্নিবীণা হল ছাত্রলীগের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক আশরাফুজ্জামান পারভেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমিটির সদস্য শাহীন হোসাইন সাজ্জাদ। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলা অনুষদ ছাত্রলীগের সভাপতি আবু নাঈম আব্দুল্লাহ।
মানববন্ধনে ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই উন্নয়ন প্রকল্পের দুটি হলের কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
প্রসঙ্গত, দুটি হল নির্মাণ কাজ ২০১৬ সালে শুরু হয়ে ১৮ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। হল নির্মাণে কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভাওয়াল কন্সট্রাকশন। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণও আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল শিক্ষার্থীদের নামে, তবে কোন শিক্ষার্থীরা আটকিয়ে রেখেছিলো প্রশাসন তাদের নাম বলেনি। অন্যদিকে পরিকল্পনা দপ্তর প্রধানের নামে আগেও অভিযোগ করেছিল শিক্ষার্থীরা।
করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসককে হেলিকপ্টারে ঢাকা এনেছে বিমান বাহিনী
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শফিক উর রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়েছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর আইএসপিআর জানায়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ডা. শফিক উর রহমানকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। সোমবার (১৩ জুলাই) বিকাল সাড়ে চারটায় তাকে নিয়ে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারটি ঢাকায় পৌঁছে। পরে তাকে উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ এস এম খবিরুল ইসলাম জানান, ডা. শফিক উর রহমান ৬ জুলাই করোনা আক্রান্ত হয়ে বাসায় চিকিৎসাধীন ছিলেন।তার অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে ফরিদপুর থেকে ঢাকায় এনে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের আইসিউ’তে ভর্তি করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বশেষ বুলেটিন অনুসারে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৮৬ হাজার ৮৯৪ জন। মারা গেছেন দুই হাজার ৩৯১ জন। সুস্থ হয়েছেন ৯৮ হাজার ৩১৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে বিপুলসংখ্যক চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। মৃতদের মধ্যেও রয়েছেন অনেক চিকিৎসক।
West Indies Test captain Jason Holder hailed the win over hosts England in the first Test in Southampton and termed it as one of the best ones triumphed by the team.
“One of our best victories. Yesterday was the best day I had in Test cricket. All the bowlers toiled hard yesterday, and it was a hard-fought day of Test cricket. I don’t think any team knew,” said Jason Omar Holder, who produced his Test-best bowling performance that paved the way of the glorious victory with the figures of 6-42.
“We had been sitting at home doing nothing. We had time to prepare, but you never know. John took a blow today, but hopefully he will come through. We knew what was at stake yesterday evening,” Holder told media.
“We knew we had 98 overs, and we had to go to 7PM. Alzarri and I thought we would bowl till 6:30 and the other two would take over. It would’ve been difficult to push for a win if we didn’t bowl extremely well on a flat pitch,” he added.
Holder praised man-of-the-match winner Shannon Gabriel who made a return from an ankle injury, and Jermaine Blackwood, who milked a brilliant 95 from 154 balls that sailed them through.
“Shannon is just one of those guys who keep doing it. He has a massive, massive heart and he’s been through a lot,” captain said of Shannon Gabriel.
“He wants success so badly. His body hasn’t held up the way he would like but to see him back out there fit and well and bowling fast for the West Indies is always a pleasing sight. He deserves every bit of success he’s had in this game. I’m really, really happy for Shannon, I know what he’s been through,” he said further.
“We kept in contact while he was doing rehab. At some stages he was very frustrated by how things were going but he stuck it through,” all-rounder added.
“We all know when Shannon is fit and healthy, he is a handful and he proved it in this game,” he signed off.
Post Written by : Rubel Islam
Original Post URL : https://ift.tt/3h0II1t
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর ভূমি অফিসের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই দুই দুর্ণীতিবাজ কর্মকর্তার মধ্যে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী হোসেনকে তৎকালিন ভূমি প্রতিমন্ত্রী বর্তমানে ভূমি মন্ত্রী একই অফিসে ঘুষের টাকাসহ হাতে নাথে ধরেন। পরে মোহাম্মদ আলী হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেন ও একই অফিসের জয়নাল আবেদিন নামের আরেক কর্মচারীকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। মন্ত্রীর হাতে গত ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিলে বরখাস্ত হলেও কার খুঁটির জোড়ে সেই দুর্ণীতিবাজ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী হোসেন আবার সেই সফিপুর ভূমি অফিসে গত আট মাস ধরে দাপ্তরিক কাজে নানা অনিয়ম ও দুর্ণীতি করেই যাচ্ছে।
ভুক্তভোগি জমির মালিক,ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা জানান, মোহাম্মদ আলী হোসেন গত আট মাসে আবার ভূমি অফিসে এসে যোগ দেন। অফিসে যোগদানের পর পরই নানা অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। ভূমি অফিসের বলিয়াম বইয়ের পাতা ছিলে খাজনা আটকে দেওয়া, খাজনার টাকা অতিরিক্ত আদায় করে রশিদে কম টাকা তুলে দেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই অফিসের এক ওমেদার জানান, সফিপুর মৌজায় প্রতি শতাংশ জমির ভূমিকর ৪০টাকা হলেও উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা সোহেল মামুন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী হোসেনের সাথে যোগসাজসে ৫টাকা করে রশিদ দিচ্ছেন। কিন্তু ৫টাকা হারে রশিদ দিলেও খাজনা বাবদ নেওয়া হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। ফলে সরকার হাজার হাজার টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিলম্বে সফিপুর মৌজার অধিকাংশ ভূমি মালিকরা ওই দুই কর্মকর্তার অপসারণ দাবী করেছেন।
খোজ নিয়ে জানা গেছে,কৌজাকুঁড়ি মৌজার ৪৭৯৭ থেকে ৪৭৯৯ জোতের পুরো বলিয়ামের পাতাই ছেড়ে ফেলা হয়েছে। ওই জোতের মালিকরা খাজনা দিতে আসলে তারা খাজনা নিতে পারবেন না বলেও জানান। ওই সব জোতের মালিকদের পূর্ণরায় খারিজ করতে বলা হয়েছে।
কালিয়াকৈর এসিল্যান্ড থেকে সিরিয়ালে খারিজের প্রস্তাব আসলেও তদন্ত না করেই যারা মোটা অংকের টাকা দেয় তাদের প্রস্তাব নিস্পিত্তির জন্য এসিল্যান্ড অফিসে পাঠানো হয়। এবিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তার জমির খারিজ প্রস্তার বিনা কারণেই বাতিল করে দেওয়া হয়।
সফিপুর মৌজায় ৩৬১২ নং জোতে ২০শতাংশ জমির দলিলে চার একর ৪শতাংশ জমি খারিজ করে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে উপসহকারী ভুমি কর্মকর্তা সোহেল মামুনের বিরুদ্ধে। ওই ভূমি কর্মকর্তা ‘ক’ তফসিলের ৫ শতাংশের দলিলে ৭৮ শতাংশ জমি খারিজ দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
শাকাশ^র এলাকার রফিকুল ইসলাম জানান, ওমেদারের মধ্যমে ৮০ শতাংশ জমির খারিজের জন্য ৮০ হাজার টাকা দিয়েছি। তবে খাজনা দিতে মোটা অংকের টাকা দাবী করছে সোহেল মামুন।
ভূমি কর্মকর্তা মোহাহাম্মদ আলী হোসেন ও ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা সোহেল মামুন জানান, ভাই কি করলে আপনি ধামবেন জানান। পত্রিকায় খবর ছাপলে আমাদের মারাতœক ক্ষতি হয়ে যাবে।
কালিয়াকৈর ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার মোঃ আদনান চৌধূরি জানান, ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উপস্থাপিত হলে খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Post Written by : Subrata
Original Post URL : https://ift.tt/2BYSse8
Post Come trough : Nachole News | নাচোল নিউজ