সালিশের আলোচনাকে ‘চাঁদাবাজি’ বলে প্রচার, এমপি কামরুলের মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদকএকটি সালিশী আলোচনাকে চাঁদাবাজি বলে প্রচার-প্রচারণা চালানোয় দুজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে স্থানীয় ফিড অপারেটর আলী আহমদ এবং দেশত্যাগী কথিত সাংবাদিক কনক সারোয়ারের নামে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানায় কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন।
এ বিষয়ে কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশে থাকা আসামি আলী আহমদকে গ্রেপ্তারের প্রস্তুতি চলছে।
জানা গেছে, কামরাঙ্গীরচরের খলিফাবাগ ও রসুলপুর এলাকায় কেবল নেটওয়ার্কের লাইন সংযোগ রয়েছে ঢাকা টোটাল কেবল নেটওয়ার্কের। প্রতিষ্ঠানটির পাওনা টাকা আটকে রেখেছেন ফিড অপারেটর আলী আহমেদ। বিষয়টি নিয়ে তিনি স্থানীয় এমপি অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলামের কাছে নালিশ দেন। তার নালিশের পর আলী আহমেদকে ফোন করে কেন টাকা দিচ্ছেন না তা জানতে চান এমপি কামরুল ইসলাম।
এ কথোপকথনটি রেকর্ড করে তা চাঁদাবাজি হিসেবে উল্লেখ করে অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনলাইনে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রচারণায় রেকর্ডটি সামাজিকমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রকাশ করেন দেশত্যাগী কথিত সাংবাদিক কনক সারোয়ার ও বিএনপির জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্পাদক একেএম ওয়াহিদুজ্জামান।
তবে মামলায় ওয়াহিদুজ্জামানকে আসামি করা হয়নি। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত হিসেবে চিহ্নিত করতে পারা দুজনকে আসামি করা হয়েছে। কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, ভুয়া খবর বা মিথ্যা তথ্য সামাজিকমাধ্যমে শেয়ারকারীও আসামি হবেন।
কামরুল ইসলামের কাছে অভিযোগ করার বিষয়ে ঢাকা টোটাল কেবল নেটওয়ার্কের এমডি ইউসুফ জানান, চুক্তি অনুযায়ী লাইন চার্জের টাকা না দেয়ায় ফিড অপারেটর আলী আহমেদের বিরুদ্ধে তিনি স্থানীয় এমপির কাছে নালিশ করেন। তার পাওনা টাকা আদায় করে দিতেই আলী আহমেদকে ফোন করেন এমপি কামরুল। সেই কথোপকথন রেকর্ড করেই এখন এমপির নামে চাঁদাবাজির অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাকে প্রতি মাসে যে টাকা দেয়। সেই টাকা অনেকদিন যাবত দিচ্ছে না। এই টাকার কথাই আমি কামরুল ভাইকে (এমপি কামরুল ইসলাম) বলেছি, যে আপনি এই টাকাটার ব্যবস্থা করেন।
কামরাঙ্গীরচর থানায় দায়ের করা অভিযোগে অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবেই এলাকার বিভিন্ন ঘটনা, অভিযোগ তাকে সালিশ করতে হয়। সালিশে নিষ্পত্তির কারণেই বিগত ১২ বছরে শত শত ঘটনা-বিষয় মামলা-মোকাদ্দমায় গড়ায়নি।
মামলার আর্জিতে তিনি আরো বলেন, করোনাকালে সামনাসামনি বসে বিবাদ নিষ্পত্তি সম্ভব নয় বিধায় সম্প্রতি আসা অভিযোগটি তিনি টেলিফোনে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেন। তিনি আলী আহমদকে ফোন করে অভিযোগ সম্পর্কে তার বক্তব্য জানতে চান। কিন্তু আলী আহমেদ অসৎ উদ্দেশ্যে এই কথোপকথন রেকর্ড করে জনৈক কনক সারোয়ারকে সরবরাহ করেন। কনক সারোয়ার তা ইউটিউবে ভাইরাল করেন।
কনক সারোয়ার আমেরিকায় বসে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নামে অপপ্রচারে লিপ্ত। দেশে থাকাকালে ২০১৫ সালে পর্নোগ্রাফির মামলায় কারাগারে গিয়েছিলেন কনক সারোয়ার। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাও রয়েছে। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও ঝুলছে।
অন্যদিকে একেএম ওয়াহিদুজ্জামান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ও সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য সম্প্রতি তিনি চাকরিচ্যুত হয়েছেন।
একেএম ওয়াহিদুজ্জামান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পদধারী নেতা ছিলেন। বর্তমান সামাজিকমাধ্যমে তার সবধরনের কার্যক্রম সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী।
পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম
Post Written by :
Original Post URL : https://ppbd.news/national/173327/সালিশের-আলোচনাকে-‘চাঁদাবাজি’-বলে-প্রচার,-এমপি-কামরুলের-মামলা
Post Come trough : PURBOPOSHCIMBD